নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রেমিকার চিরশত্রু
কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে একনাগাড়ে মোবাইলে ফেসবুকিং করেই যাচ্ছে নিশা! নিশা এবার দ্বাদশ শ্রেণিতে ঢাকার নামকরা বেসরকারি কলেজে পড়ে। মোটামুটি ধনী পরিবারের মেয়ে। চেহারাও খারাপ না। ইদানিং নিশা মাত্রাতিরিক্ত ফেসবুকে থাকে। নতুন নতুন বন্ধু, ১০/১২ ছেলেকে পিছনে ঘুরানো ইত্যাদি তার নেশা হয়ে উঠেছে! প্রায়ই ওর মা ওকে শাসন করে কিন্তু এতে নিশা বিন্দু মাত্র বিচলিত হয় না! বর্তমানে মায়ের অনেকটা অবাধ্য মেয়ে সে!
এখন নিশা আবার কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান শুনছে। পাশে ওর মা ওকে অনেকবার শাসাচ্ছেন কিন্তু মেয়ে সেটা কানেই নিচ্ছে না! এবার মা রেগে গিয়ে কান থেকে ইয়ারফোন কেড়ে নিয়ে মোবাইলসহ ছুড়ে ফেলে দেয়! নিশার ছিল স্মার্টফোন। ছুড়ে ফেলে দেয়ার কারণে ফোনের ডিসপ্লে ভেঙে যায় এবং ইয়ারফোন ছিড়ে যায়! ছেড়া ইয়ারফোন আর ভাঙা ফোন দেখে রাগে কটমট করে মায়ের দিকে তাকায় সে! আর তারপর,
-দিলে তো এক ঢিলে দুই পাখি মেরে! এবার শান্তি হয়েছে মনে?
মেয়ের এমন কথা শুনে মা অবাক হয়ে যায়! মেয়ের এমন পরিবর্তন তিনি মেনে নিতে পারছেন না! মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
-আমার চেয়ে মোবাইল বেশি গুরুত্ব পায় তোমার কাছে?
-ফালতু কথা বল না আম্মু। যা বলার তাড়াতাড়ি বল।
-ফালতু কথা!
-তো কি? আমি এখন ফ্রেন্ডদের সাথে কানেন্টিং থাকবো কি করে?
-আমি তো তোমার সাথে পারবো না। তুমি থাকো মোবাইল আর কানের দুল নিয়ে!
-উফফফ! আর না! অনেক বলেছো।
মা চুপচাপ বের হয়ে গেল! কোন কথা বললেন না মেয়ের সাথে! তিনি মেয়ের এমন পরিবর্তনের কারণ খুজে পাচ্ছেন না! রাতে ঘুমানোর সময় মা বাবা দুইজন নিশার ব্যাপারে কথা বলছিলেন! মা যদিও সিরিয়াসলি কথা বললেও বাবা তেমন গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন না! সোজা কথায় বললেন, "এ বয়সে এমন একটু রাগ জিদ হয়! পরে এগুলো ঠিক হয়ে যাবে!"
বাবা এমন কথা শুনে থেমে থাকতে পারে কিন্তু কোন মা থেমে থাকতে পারেন না! মা সারারাত নিশার ব্যাপারে ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলেন জানেন না! নিশার বাবা খুব সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন! মা সকালে উঠে দেখেন নিশা তখনও ঘুমিয়ে আছে আর কলেজের সময়ও চলে যাচ্ছে! মা গিয়ে নিশার পাশে বসে কপালে হাত বুলিয়ে কোমল আওয়াজে ডাকলেন। ধীরে ধীরে চোখ খুলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো সাড়ে আটটা বেজে গেছে! একটা ছেলে ঘুম থেকে সাড়ে আটটায় উঠে কলেজে যেতে পারে কিন্তু একটা মেয়ের পক্ষে তা সম্ভব নয়! নিশা ঘুম থেকে উঠেই,
-আম্মু, আগে ডাকতে পারো নি? বাজে কয়টা দেখছো?
-আমি ডেকে তুললাম বলে উঠতে পারলি না হলে তাও উঠতে পারতিস না!
-হয়েছে হয়েছে, আর আমার দোষ ধরতে হবে না। ফোনটা ভাল থাকলে এলার্ম দিয়ে রাখতে পারতাম।
একটু রেগেই বললো নিশা তারপর ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল! ওদিকে নিশার মা ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে মেয়ের ভাঙা মোবাইলের দিকে তাকালো!
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে কলেজের জন্য তৈরি হল। কোনরকম এক গ্লাস পানি আর একটা পাউরুটি মুখে নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে গেল! গেটের সামনে দাড়িয়ে একটা রিক্সা ঠিক করল নিশা। রাস্তার মোড় পার করে রিক্সা থামালো নিশা! কিছুক্ষণ পর একটা ছেলে এসে নিশার সাথে রিক্সায় উঠলো! ছেলেটার নাম রাশেদ। একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে।
-আজ কলেজে যেতে হবে না।
-কেন?
-কলেজে যে সময়টা থাকো সে সময়টা আজ আমাকে দিবা।
-না আমি পারবো না।
-দেখ আমিও ক্লাস বাদ দিয়ে তোমার কাছে এসেছি! তাই আজ আমার সাথে তোমার থাকতে হবে! আর তোমার ফোন অফ কেন?
-আর বল না! আম্মু ভেঙে ফেলছে।
-তাড়াতাড়ি নতুন ফোন কিনে ফেল। বারবার তোমার খোজে দৌড়াদৌড়ি করতে ভাল লাগে না।
-দেখি ফোন রিপেয়ার করতে পারি কিনা।
-মামা, রিক্সা ঘুরাও। বেইলি রোড চলো।
রাশেদের জোরাজুরিতে নিশা কলেজে না গিয়ে রাশেদের সাথে রিক্সায় নিয়ে ঘুরতে চলে গেল! এদিকে কলেজের ছুটিরঘণ্টা পেরিয়ে গেছে কিন্তু নিশার কোন হদিস নেই! সারাদিন রাশেদের সাথে ঘুরাঘুরি করে সময়ের দিকে তাকাতে মনে ছিল না নিশার!
নিশার মা প্রাইভেট কার নিয়ে মার্কেটে এসেছেন! হাতে মেয়ের ভাঙা ফোনটা! সার্ভিসিং সেন্টারে ফোন রিপেয়ার করতে দিলেন। রিপেয়ারম্যান বললেন তিন থেকে চারদিন সময় লাগবে! নিশার মা ফোনটা সার্ভিসিং সেন্টারে দিয়ে নিশার জন্য একটা ইয়ারফোন কিনে মার্কেট থেকে বের হয়ে যান। কারে ঢুকবেন এমন সময়ে তার চোখ এক রিক্সায় আটকে যায়! তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না! তিনি দেখলেন নিশার সাথে একটা ছেলে বসে আছে আর ছেলেটার একটা হাত নিশার কোমড়ে রয়েছে! জ্যামে পরার কারণে তিনি এটা দেখতে পেলেন! চোখে চোখে ভেসে উঠছে নিশার ব্যবহার আর স্পষ্ট হচ্ছে বদলে যাওয়ার কারণ! নিশার মা স্তব্ধ হয়ে গেলেন মেয়ের এ কাণ্ড দেখে! চোখের কোণে হালকা পানি জড় হয়েছে! তিনি ড্রাইভারকে বললেন অন্য রাস্তা ধরে বাসায় নিয়ে যেতে! সারাটাক্ষণ নিশার কথা ভাবছেন নিশার মা! ভাবছেন ওর বাবাকে কিভাবে বলবে এ ঘটনা! একথা সেকথা ভাবতে ভাবতে নিশার আগেই বাসায় পৌছে গেলেন তিনি! বাসায় পৌছেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলেন তিনি!
বাসার সামনের রাস্তার মোড়ে এসে রাশেদ নেমে যায়। যাওয়ার আগে আগে একটা সেট দিয়ে যায় নিশার হাতে! রাতে কথা হবে, এই বলে চলে যায় রাশেদ। নিশা বাসায় ফিরে প্রথমে ফোনটাকে সেফ জায়গায় লুকিয়ে ফেলে! এরপর ফ্রেশ হয়ে খাওয়ার জন্য যায়। মা নিশার অপেক্ষায় আছেন! আজ নিশাকে অনেক কথার উত্তর দিতে যে!
খাওয়ার টেবিলে,
-আজ এত দেরি করলি কেন?
-এমনি আম্মু। কলেজ থেকে ফেরার পথে বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম।
-সত্যি করে বল!
-আমি মিথ্যা বলবো কেন?
-আজ রিক্সায় যে ছেলেটা ছিল সে কে? তোর কি হয়?
মায়ের এ প্রশ্নে নিশা থমকে যায়! তাহলে কি আম্মু একসাথে আমাদের দুজনকে দেখেছে? ভাবতে ভাবতে নিশার কপালে ঘামের বিন্দু জমে গেছে!
-রিক্সায় তো আমি একাই ছিলাম! আর কেউ না! ও আচ্ছা আমার সাথে আমার বন্ধু ছিল!
নিশার মা এবার রেগে যাচ্ছেন! মেয়ের একটার পর একটা মিথ্যা কথা বলার সাহস দেখে অবাক হচ্ছেন তিনি! শেষ পর্যন্ত রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মেয়ের গালে একটা সশব্দে চড় বসিয়ে দেন! মা মেয়ে দুজন একে অপরের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন! নিশা প্লেট, গ্লাস ইত্যাদি ছুড়ে হাত ঝারা দিয়ে একরাশ রাগ নিয়ে উঠে গেল! মা ওদিকে টেবিলে স্থির হয়ে বসে আছেন! তার হাতটা কাঁপছে! এই প্রথম তিনি মেয়ের গায়ে হাত তুললেন! যে হাত মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিত, যে হাত দিয়ে মেয়েকে লালন পালন করার কাজে আসতো, সে হাত দিয়ে তিনি আজ মেয়েকে চড় মারলেন! ভাবতে ভাবতে দু তিন ফোটা অশ্রু খাওয়ার প্লেটে পরলো!
সেদিন রাতে নিশার মায়ের মুখে আর খাবার যায় নি! মেয়েকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে রাত কেটেছে! নিশার বাবা অফিসের কাজে চট্টগ্রাম আছেন। চিন্তা করছেন মেয়েকে কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায়! ভবিষ্যতের কথা ভেবে ছোটকাল থেকে মানুষ করে আসছে মা বাবা! দুই দিনের এক ছলনার ভালবাসা নিশাকে মা বাবার কাছে থেকে আলাদা করে দিবে আর সেটা নিশার মা চেয়ে চেয়ে দেখবেন, তা হতে পারে না! নিশার কথা ভাবতে ভাবতে মায়ের বুকে হঠাৎ একটা মোচড় দিয়ে উঠল সাথে কিছুটা শ্বাস কষ্টও! ড্রয়ার থেকে ইনহেলার বের করে মুখে নিলেন। সেদিন নিশার সাথে আর কোন কথা বলেননি তিনি! নিশাও রাগ করে মায়ের কাছে আসে নি! দুইদিন এভাবে মান অভিমানে কেটে যায়! নিশা জেদি টাইপের মেয়ে তাই জেদ কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় ওর। কিন্তু তাইবলে মা তো আর জেদ করতে পারেন না! দুইদিন পর সন্ধ্যায় মা নিশার রুমে যান! মাকে দেখেও নিশা কোন কর্ণপাত করে নি! পরে মা নিশাকে কাছে ডাকলো, নিশা মায়ের দিকে তাকাতেই মায়ের ভিতরটায় একটু ধাক্কা লাগে! মা দেখলেন মেয়ের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে! কেঁদে এমন করেছে নিশা! মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো সে! পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে আপন আর কেউ নেই। তিনিও মেয়েকে ধরে কেঁদে ফেললেন! তারপর মেয়েকে অনেক বুঝালেন তিনি! তারপর নিজেকে স্বাভাবিক করে নিশার ফোন আর নতুন ইয়ারফোনটা নিশাকে দিলেন! ইয়ারফোন আর মোবাইল ফিরে পেয়ে নিশা খুব খুশি হল। সেদিন আর পড়াশোনা হয় নি নিশার। মাকে রান্নার কাজে সাহায্য করতে করতে পড়ায় মন বসায় নি! পরেরদিন নিশার বাবা বাসায় ফিরে আসে। মেয়ের জন্য বিভিন্ন ড্রেস এবং মেকআপ বক্স নিয়ে আসেন! এরপর সপ্তাহ দেড়েক রাশেদের সাথে খুব কম।যোগাযোগ করেছে। মাঝে মাঝে রাতে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রাশেদের সাথে কথা বলেছে সে।
সপ্তাহ তিনেকপর,
নিশার বাবা তৈরি হচ্ছেন সিলেট যাওয়ার জন্য। দুই দিনের অফিসিয়াল মিটিং ফিক্স হয়েছে। তবুও তার খুব চিন্তা হচ্ছে স্ত্রীর জন্য। কারণ নিশার মার শরীরটা ভাল না! কয়েকদিন হল শ্বাস কষ্ট বেড়েই চলছে! ডাক্তার বলেছেন বেড রেস্টে থাকতে। কাজের বুয়াকে বলে রেখেছেন যেন সারাদিনই নিশার মার পাশে থাকে। আর নিশাকে কলেজ চালিয়ে যেতে বললেও নিশা মানা করে দেয়! এরপর নিশার বাবা বের হয় যান।
রাতে একটা অজানা নাম্বার থেকে কল আসে নিশার মার ফোনে! কলটা নিশা রিসিভ করতেই ওপাশের কান্না জড়িত কণ্ঠে এক লোক বললেন,
-হ্যালো, আপা! আরজুর মারে যত তাড়াতাড়ি পারেন হাসপাতালে পাঠায়া দেন। ওর ছোড পোলার অ্যাক্সিড্যান্ট হইছে!
নিশা কি বলবে বুঝতে পারছে না! মার কাছে গিয়ে দেখে তিনি ঘুমাচ্ছেন! নিশা কি।করবে বুঝতে পারছে না!
-ঠিক আছে! আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
বুয়াকে ছুটি দিয়ে দিল নিশা। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে নিশার মায়ের চেক আপ করে। ডাক্তার সবকিছু স্বাভাবিক জানায়। ডাক্তারকে বিদায় দিয়ে নিশা নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরে! রাত সাড়ে বারোটার দিকে নিশার মোবাইলে কল আসে! কলটা রাশেদের ছিল! অনেকদিন পর রাশেদ ফোন দিয়েছে! নিজ ইচ্ছায় ফোন রিসিভ করে নিশা! তারপর শুরু হয় কথাবার্তা! এরপর তা বর্ধিত হয় গভীর রাত পর্যন্ত! কথা বলার সময় নিশার রুমের দরজাটা খোলা ছিল! তখন নিশার মায়ের ঘুম ভাঙে! পানির জন্য টেবিলের দিকে আগাতেই নিশার রুম থেকে কথাবার্তার আওয়াজ শুনতে পান তিনি! প্রথমে মনে করেছিলেন হয়ত ওর বাবার সাথে কথা বলছে! কিন্তু কয়েক মুহূর্ত পরেই মায়ের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে যায়! তাদের কথাবার্তা আড়াল থেকে শুনে মায়ের ভিতরটায় আবারও মোচড় দিয়ে উঠে! নিঃশব্দে তিনি শুয়ে পরলেন আর আল্লাহর নাম নিলেন!
রাত দুটো,
অনেকদিন পর রাশেদের সাথে কথা বলে মনটা ফ্রেস মনে হচ্ছে নিশার! ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে কাটা দুইয়ের ঘর পার করে ফেলেছে! এরপর উঠে মায়ের রুমে গেল নিশা! দেখলো মা ঘুমাচ্ছেন! কিছুক্ষণ মায়ের পাশে বসে থাকলো নিশা! একসময় ঘুমে হেলে পরতে লাগলো নিশা! নিজের রুমে এসে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে শুয়ে পরলো! পরে গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পরল নিশা!
ভোর সাড়ে পাঁচটা,
তারাভরা কালো আকাশ ধীরে ধীরে আলোকিত হচ্ছে। ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে মাত্র সাড়ে পাঁচটা বাজে! কোনরকম আলসেমি করে উঠল নিশা। দরজার দিকে তাকাতেই দেখে একটা ভাঙা কাচের প্লেট পরে আছে! কাচের প্লেটের সামনে গিয়ে দেখে আরও অনেকগুলো গ্লাস প্লেট ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে! এগুলো দেখে মনে হালকা ভয়ের সৃষ্টি হল নিশার! ধীর পায়ে সামনে আগাতে থাকে সে! মায়ের রুমে ঢুকে দেখলো বিছানা পত্র সব এলোমেলো হয়ে আছে! হঠাৎ নিশা দেখল মা মেঝেতে পরে আছেন! দৌড়ে মার কাছে গেল নিশা! মায়ের হাতটা ধরে দেখলো ঠাণ্ডা হয়ে আছে! নিশা কব্জিতে আঙুল রাখলো কিন্তু কোন স্পন্দন পেল না! বুঝতে বাকি রইল না যে ওর মা আর পৃথিবীতে নেই! ধীরে ধীরে চোখদুটো ঝাপসা হয়ে আসছে নিশার! মায়ের মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করছে নিশা! মুহূর্তের মধ্য পাগলের মত হয়ে গেল নিশা! হাউমাউ করে কেঁদে উঠল সে! বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাসার বাতাস ভারী হয়ে উঠল! মামা, খালা, চাচাসহ আরও দুর দূরান্তের আত্মীয়রা এসে কান্নার রোল জুড়ে দেয়! আশেপাশে সবাই বসে সান্ত্বনা দিচ্ছে কিন্তু নিশার মনে পরছে মায়ের প্রতিটা শাসন, নিষেধ! অনুভব করছে মায়ের ভালবাসাকে! ভাবছে কতটা কষ্ট দিয়েছিল মাকে! বুঝতে পারছে কতটা একা হয়ে গেল সে! মেঝেতে পরে থাকা কাচের প্লেট গুলো বলে দিচ্ছে নিশাকে যে ওর মা বাঁচতে চেয়েছিলেন। হয়ত মৃত্যুর আগে নিশাকে এক পলক দেখার জন্য চেয়েছিলেন তাই প্লেট গুলো ওর দরজার দিকে ছুড়ে মেরেছিলেন! বাবা এসে বিরহে বিছানার এক কোণায় অশ্রু ঝরাচ্ছিলেন! মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখেন সে কোন কথা বলছে না! মূর্তির মত স্তব্ধ হয়ে বসে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে সে!
[কিছু কথা: কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শোনা কোন বিরাট কিছু না কিন্তু কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে এমন ঘটনার সম্মুখীন হওয়া বেদনাদায়ক। এটা আপনার, আমার হয়ত বা আমাদের সকলের জীবনে ঘটে যেতে পারে। তাই ইয়ারফোনের শব্দ এতটা উচ্চ করবেন না যাতে আপনার আপন কেউ এর দ্বারা আপনার কাছ থেকে দুরে চলে যেতে পারে।
গল্পটা কারও জীবনের সাথে মিলে গেলে ক্ষমা করবেন এবং ভুল ভ্রান্তি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]
২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:১৮
দর্পণের প্রতিবিম্ব বলেছেন: গল্পটা কাল্পনিক। ইয়ারফোনের জন্যে কি হতে পারে তারই একটা উদাহরণ
৩| ১৫ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৬
মীর শাহেদুর রহমান বলেছেন: My Favourite Wireless EarbudsMy Favourite Wireless Earbuds
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ২:২৮
নতুন বলেছেন: ইয়ারফোন লাগিয়ে রাস্তায় চলতে গিয়ে দূঘটনায়ও পড়েছেন অনেকেই...
আপনার গল্প সত্যি হলে আসলেই বেদনাদায়ক..