নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় মগ্ন থাকি। ভালবাসি আমার এই দেশটাকে।
৩৩ বছর ধরে সারা পৃথিবী এক সরকার দ্বারা শাষিত হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীতে এক দেশ, এক সরকার, এক ভাষা, এক ধর্ম। গোটা পৃথিবীর সারা মানুষ আজ বাস করে এক জায়গায় কারণ পৃথিবীর বেশীরভাগ জায়গায়ই বসবাসের অযোগ্য। ঠিক ৩৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০৭৭ সালে নতুন করে এই পৃথিবী শুরু হয়। ২০৭৭ সালের মহামারিতে দুনিয়ার ৯৯% মানুষ প্রাণ হারায়। সেই রোগ সারা দুনিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে পরে যার ফলে বেশীরভাগ জায়গার আবহাওয়া এতই বিষাক্ত হয়ে যায় যে সেসব জায়গা একেবারেই বসবাসের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পরে। এখনো পর্যন্ত সেসব জায়গায় যাওয়াই যায়না। মানুষ যেতে পারেনা আর গেলেও স্পেশাল স্যুট পরে যেতে হয়। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে সেসব জায়গায় এখন শুধু পশু-পাখি বসবাস করছে। অর্থাৎ বর্তমানে পৃথিবীর স্থলভাগের ৯৯% জঙ্গল। বাকি এক ভাগ অল্প একটু জায়গায় মানুষ নতুন করে দালান-কোঠা বানিয়ে বাস করা শুরু করেছে।
যারা বেচে যায় তারা বর্তমানে ঠিক যেই জায়গায় আমি বসবাস করি সেখানে এসে একত্রিত হয়। সেই সময় আমার বয়স ছিল ১০। আজ আমার বয়স ৪৩। ঐ সময় যারা বেচে গিয়েছিল তারা নিজেদেরকে ভাগ্যবান বলেই বিবেচনা করে। যারা বেচে আছে তারা কি যে ভয়াবহ এক সময় পার করেছে সেটা মনে হয় লিখে বা বলে বুঝানো যাবেনা। একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছিলো। কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছিলোনা সেই রোগ। পৃথিবীর সব দেশে সব জায়গায় এই রোগ এমনভাবে ছড়িয়ে পরেছিল কেউই তা থেকে রেহাই পাচ্ছিলোনা। যারা বেচে আছে তারা নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করবেনা তো কি মনে করবে?
আমি একটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক। এখনকার বিশ্ববিদ্যালগুলোতে কয়েকটি বিষয় নিয়েই পড়ানো হয়। চার-পাচটে বিষয় ছাড়া আর বাকি যতো বিষয় আছে সব বাদ। এবং কি ইতিহাসও পড়ানো হয়না। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞানতো একদমই নিষেধ। আসলে এখনতো আগের মতো আর বড় বড় দালানের বিশ্ববিদ্যালয় নেই। সব ধরনের ক্লাস হয় অনলাইনে। বাড়িতে বসে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেই। ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের বাসাতে বসেই আমার ক্লাস করে। সপ্তাহে ৪ দিন ক্লাস নেই। ৩ ঘন্টা করে একেকটা ক্লাস, মাঝে আধা ঘন্টার একটা বিরতি থাকে। সপ্তাহ শেষে ডিজিটাল পেমেন্ট আমার মোবাইল ফোনে চলে আসে। চিন্তা করতেই অবাক লাগে যে ৩৩ বছর আগেও দুনিয়াতে ব্যাংকিং সিস্টেম ছিল। এখন ব্যাংক বলে কিছু নেই। সব ডিজিটাল কারেন্সি।
যাই হোক ঐ যে বলছিলাম এখন পুরো পৃথিবী মিলে এক দেশ এবং এই গোটা পৃথিবী শাষন করছে একটাই রাজনৈতিক দল যে দলের বিরুদ্ধে কোনো মত প্রকাশ করা একদমই যায় না। এখনতো আর আগের মতো গনতন্ত্র, রাজতন্ত্র বলে কিছু নেই। দুনিয়াতে এমনিতেই মানুষজন কম, আর ঐ মহামারির পর মানুষ বেচে থাকা নিয়েই ব্যস্ত ছিল। ঠিক ঐ সময়েই এমন একজন নেতা হিসেবে উঠে আসলো যে কিনা একটা সময়ে সবার জন্য ভরসা হয়ে দাঁড়ালো। নতুন করে সবাইকে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখানো শুরু করলো। সেই থেকে ঐ একটাই দল সারা দুনিয়া শাষন করে যাচ্ছে। ৩৩ বছর ধরে যে শাষন করে যাচ্ছে বর্তমানে তার বয়স হলো ৭৭ অর্থাৎ তার বয়স যখন ৪৪ ছিল তখন সে গোটা দুনিয়া শাষন করার দায়ভার নিয়েছিল। গঠন করেছিল নতুন এক আর্মি। যে আর্মির বেশীরভাগ সদস্যই হলো মানুষের তৈরী রোবট। কয়েক লাখ রোবট পুরোটাই কন্ট্রোল করে সেই নেতা যাকে সবাই মহান নেতা বলে সন্মোধন করে।
গোটা সমাজ এখন একটা কনট্রোল্ড সিস্টেমের মধ্যে চলছে। তবে এতে কারোর কোনো অভিযোগ নেই কারণ সবাই বেশ সুখেই আছে। এখন আর ধনী, গরীব বলে কিছু নেই। সবাই সমান। প্রত্যেকেই স্বাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করতে পারছে। অভাব জিনিষটা একদমই নেই। কিন্তু ঐযে বললাম: "কনট্রোল্ড সিস্টেম"। মানুষ হয়েও রোবটের মতো থাকতে হয়।
মাঝে মধ্য নিজেদেরকে ঐ রোবটদের থেকেও নিচু শ্রেনীর মনে হয়। সেটা ভাববার কারণও আছে। রোবট দিয়ে গঠিত আর্মি ও পুলিশ যার বিরুদ্ধে কিছু বলাও যায় না। কোন রকম ভুল ত্রুটি পেলে কোনো রকম কারণ দর্শানো যাবেনা। রোবট পুলিশ এসে যে সাজা দিবে সেটাই মানতে হবে।
একবার খেয়াল আছে পাশের বাড়ির এক ছেলে সে একটু স্পীডে তার প্লেন-কার চালিয়েছিল। তার জন্য তাকে পানির নিচে যে বিশাল জেলখানা রয়েছে সেখানে ৩ বছর থাকতে হয়েছিল। প্লেন-কার হলো এক ধরনের যানবাহন যেটা গাড়ি হিসেবেও ব্যবহার করা যায় আবার প্লেন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
সে যাই হোক, আমার এই কনট্রোল্ড সিস্টেম ভালো লাগেনা। আসলে কোনো কিছুরই অভাব নেই কিন্তু কেমন জানি বন্দি বন্দি লাগে। পার্কে যেতে পারি না, পার্কে যেতে চাইলেও ঐ রোবট পুলিশ থেকে ১ মাস আগে পার্মিশন নিতে হয়। যখন যেটা মন চায় সেরকম বাজার করতে পারিনা কারণ সরকার থেকে বলে দেওয়া আছে কোন সপ্তাহে কি কি বাজার করা যাবে। যেমন আমার যদি পরোটা খেতে ইচ্ছে হয় তাহলে ক্যালেন্ডারের তারিখ দেখতে হবে কোন দিন পরাটা খাবার দিন। মন চাইলো আর বানালাম সেটা হবে না। সব জায়গায় সার্ভেলেন্স ক্যামেরা।
বাড়েবাড়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছি। ঐ যে বলছিলাম ভালো লাগেনা কনট্রোল্ড সিস্টেম। সেটা ভালো না লাগার অনেক কারণ রয়েছে। আমি আমার এই মহান নেতার আদর্শ থেকে সরে আসতে চাই। মন থেকে বলছে কোথাও কোনো একটা গলদ রয়েছে।
(চলবে)
০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৪০
রিনকু১৯৭৭ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আমি জানি বানানে আমার একটু সমস্যা হয় সেগুলো তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। আর প্রযুক্তির ব্যাপারটা মাথায় রাখবো।
২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লাগলো। ঘরে থাকুন। ভালো থাকুন।
৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫২
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: "কন্ট্রোল সিস্টেম" আইডিয়া টা ভালো লাগলো
৪| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: চলুক----
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩২
আলোর_পথিক বলেছেন: লেখাটা ভালো লেগেছে বলেই কিছু সমালোচনা করছি। প্রথমত: লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে আপনার সাথে চন্দ্রবিন্দুর সম্পর্ক একটু খারাপ। দ্বিতীয়ত : ছোট-খাটো কিছু বানান দেখে নিতে পারেন, যেমন-বাড়েবাড়ে। সর্বশেষ : লেখার যে সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে তাতে প্রযুক্তির ধারাবাহিক যে উন্নতিসাধন তা তুলে ধরা হয়নি। প্রযুক্তির বিষয়টি বর্তমান সময়ের জন্য ঠিক আছে, কিন্তু ২০৭৭ সালের জন্য একদম ঠিক নেই।