নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় মগ্ন থাকি। ভালবাসি আমার এই দেশটাকে।
‘শবেবরাত’ ফারসি ভাষার দুটি শব্দ। শব মানে রাত বা রজনী আর বরাত মানে মুক্তি, পরিত্রাণ বা ভাগ্য। কোরআন, হাদিস ও তাফসিরের বিভিন্ন গ্রন্থে শবেবরাতের বর্ণনা আছে ভিন্ন নামে, ভিন্ন শব্দে ও ভিন্ন পরিভাষায়। কোরআনের পরিভাষায় শবেবরাতকে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ বলা হয়। হাদিসের পরিভাষায় এটাকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রজনী বলা হয়। তাফসিরের কিতাব, হাদিসের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ও ফিকহের গ্রন্থগুলোতে শবেবরাতের আরো কিছু নাম এসেছে। যেমন, ‘লাইলাতুল কিসমাহ’ বা ভাগ্যরজনী, ‘লাইলাতুল আফউ’ বা ক্ষমার রাত, ‘লাইলাতুত তাওবাহ’ বা তাওবার রাত, ‘লাইলাতুল ইৎক’ তথা জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত, ‘লাইলাতুত দোয়া’ তথা প্রার্থনার রাত।
শবেবরাতের অনেক ফজিলত আছে। এই সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে এসেছে, হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মধ্য শাবানের রাতে—অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিকুলের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষী লোক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’
বরকতপূর্ণ এই রাত সকলের জন্য নয়। কিছু লোক এমন আছে, যারা এ রাতের ফজিলত ও বরকত থেকে বঞ্চিত থাকে। এক. মুশরিক (যে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে)। দুই. হিংসা-বিদ্বেষপোষণকারী। তিন. ডাকাত। চার. মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান। পাঁচ. অন্যায়ভাবে হত্যাকারী। ছয়. জিনা-ব্যভিচারকারী। সাত. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। আট. টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী। নয়. মদপানে অভ্যস্ত ব্যক্তি।
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, “রাসুল (সা.) মধ্য শাবানের রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’-তে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার করতেন।” তিনি বলেন, ‘এ রাতে মহান আল্লাহ বনি কালবের বকরির পশমের সংখ্যার চেয়েও বেশিসংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।’
শবেবরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত ও আমল নেই। তবে এ আমলগুলো করা যায়—এশা ও ফজর নামাজ ওয়াক্তমতো জামাতের সঙ্গে আদায় করা, যথাসম্ভব নফল ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা, সম্ভব হলে অতীত জীবনের কাজা নামাজ ও সালাতুত তাসবিহ আদায় করা। পবিত্র কোরআন বেশি বেশি তিলাওয়াত করা, বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা, বেশি করে দোয়া করা, মাঝে মাঝে শবেবরাতে কবর জিয়ারত করা, পরের দিন রোজা রাখা।
©somewhere in net ltd.