নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় মগ্ন থাকি। ভালবাসি আমার এই দেশটাকে।
আমদের সমাজ নামে মাত্র মসুলমানে ভরে গিয়েছে। প্রকৃত অর্থে ঈমানদার মসুলমান পাওয়া বেশ দুষ্কর হয়ে গিয়েছে। সামনে আর ক'টা দিন পরেই রমজান মাস। রমজান মাস আসার আগেই আমাদের দেশের একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে খাদ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মূল্য বাড়িয়ে দেয়। এবারেও যে তেমন তা হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। রমজান মাস কেন্দ্র করে এ ধরনের অসাধু কাজ বেশি হয়। রমজানে ফলমূল, শাকসবজি, মাছ-গোশতসহ যেসব খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেশি থাকে, সেসব খাদ্যপণ্যের দাম শাঁ শাঁ করে বেড়ে যায়। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি বিত্তবানদের জীবনমানে কোনো ধরনের প্রভাব না ফেললেও এর অসহায় শিকার হয় নিরীহ গরিব-দুঃখী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। যাদের কাছে অনৈতিক বিত্তের প্রাচুর্য নেই। যারা এই ধরনের অসাধু কাজ করে তাদের কি একটি বারের জন্য আখেরাতের কথা স্মরণ করে না? মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কি ভাবেননা যে আজ হোক কাল হোক তাদেরকে এই দুনিয়া ছেড়ে যেতেই হবে তখন তারা আল্লাহর কাছে কি কৈফিয়ত দেবে?
কুরআন কারিমে বলা হয়েছে, ‘সে দিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদের কৃতকর্ম দেখানো যায়। এরপর কেউ অণুপরিমাণ সৎ কর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণুপরিমাণ অসৎ কর্ম করলে তাও দেখতে পাবে’। (সূরা যিলজাল : ৬-৮) হাদিস শরিফে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘কোনো সৎ কাজকে কখনোই তুচ্ছ জ্ঞান করো না। যদিও তা হয় তোমার ভাইয়ের সাথে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় সাক্ষাৎ করা।’ (সহিহ মুসলিম ২/৩২৯)
রমজান মাস মূলত আল্লাহ তায়ালার অবারিত রহমত ও করুণার মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দুর্বৃত্ত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে তার প্রিয় বান্দার ইবাদত-বন্দেগির সুযোগ করে দেন। সেখানে আমরা বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে সেই সুযোগ থেকে রোজাদারদের বঞ্চিত করি। এটা এক দিকে যেমন রোজাদারের জন্য অশনি সঙ্কেত অন্য দিকে মহান আল্লাহ তায়ালার সাথে ধৃষ্টতা প্রদর্শনের শামিল।
খাদ্যদ্রব্য মজুদ রেখে দাম বাড়ানো ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নাজায়েজ। ইসলাম মজুদদারি কালোবাজারির ব্যাপারে কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেয়। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘কেউ যদি মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্যে মুসলমানদের থেকে নিজেদের খাদ্যশস্য আটকে রাখে (মজুদদারি করে), তবে আল্লাহ তার ওপর মহামারী ও অভাব চাপিয়ে দেন।’ (ইবনে মাজা ও বাইহাকি, সূত্র : মিশকাত পৃ: ২৫১) অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি মূল্য বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ৪০ দিন পর্যন্ত খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, সে আল্লাহ তায়ালার দায়িত্ব থেকে মুক্ত এবং আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি অসন্তুষ্ট।’ (মিশকাত পৃ: ২৫১) রাসূলুল্লাহ সা: আরো ইরশাদ করেন, ‘মজুদদার ব্যক্তি খুবই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি। যদি জিনিসপত্রের দাম হ্রাস পায়, তবে তারা চিন্তিত হয়ে পড়ে। আর যদি দাম বেড়ে যায়, তবে আনন্দিত হয়।’ (বাইহাকি, সূত্র : মিশকাত পৃ: ২৫১)
ব্যবসায়ী ভাইদের একটি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত, এই দুনিয়ার ব্যবসাই সব কিছু নয়। আমাদেরও এক দিন হাজিরা দিতে হবে মহান আল্লাহর দরবারে। সে দিন তিনি যদি আমাদের সঙ্কটে ফেলে দেন তাহলে আমাদের কী উপায় হবে? এসব কথা চিন্তায় রেখে ভোক্তাসাধারণের প্রতি কিছুটা সংযমী হন, রোজাদারদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করুন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬
তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: সহমত।