নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় মগ্ন থাকি। ভালবাসি আমার এই দেশটাকে।
মনটা সকাল থেকে কেমন যেন বেশ খারাপ ছিল। ঘুম থেকে উঠার পর থেকেই শরীরটা যেমন মেজমেজে করছিল আবার মেজাজটাও হয়ে ছিল খিটমিটে। খিটমিটে মেজাজটা তখনি ভাল যখন ঘরের পর্দা সরিয়ে দেখি আকাশটা একদম মেঘলা হয়ে আছে। মনে হচ্ছিল আমার মতনই হয়তো আকাশটা মন খারাপ করে আছে, অপেক্ষায় রয়েছে কখন সে বাধ ভেঙ্গে কাঁদতে পারবে। ভারী বর্ষণ যখন হয় তখন সেটাকেতো আমরা আর বলিনা যে আকাশ কাঁদছে কিন্তু আমার কাছে কেমন যেন মনে হয় যে আকাশের যখন মনটা খারাপ থাকে তখন সে আর সহ্য করতে না পেরে কেঁদে ফেলে। আর এই কান্নাটাকেই হয়তো আমরা বলি বৃষ্টি। সে যাই হউক, মেঘলা আকাশ দেখে ক্ষণিকের জন্য হলেও মনটা ভাল হলো। ভাবলাম আজকের দিনটা একটু অভিনব কায়দায় কাটিয়ে দেব। ছাতা ছাড়াই ঘর থেকে বেড়িয়ে পরলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম খালি কোন মাঠে একা একা বসে থাকবো আর বৃষ্টিতে ভিজবো। সেই উদ্দেশ্যই বেড় হয়ে পড়লাম। মাঝ পথে ভাবলাম পার্কে গিয়ে বসে থাকি। ইতোমধ্যে কিন্তু বৃষ্টি ভালভাবেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম আর ইচ্ছেমতো ভিজছিলাম। সবসময়ে, প্রতিটা ক্ষণে জীবনটা যদি এমন হতো যে কোন বাধা বিপত্তি থাকবেনা তাহলে যে কি ভালো হতো তা হয়তো এই মুহুর্তে বোঝাতে পারবোনা।
পার্কে পৌছাতে না পৌছাতে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। মনটা আমার আরো ভাল হয়ে গেল মূষলধারে বৃষ্টি হতে দেখে। জীবনে যা যা কষ্ট আছে তা একেবারেই ভুলে গেলাম। তবে সেই ভুলে যাওয়াটা হয়তো ছিল কয়েক সেকেন্ডের জন্য! পার্কের বেঞ্চে আমি যেই বসতে গেলাম সেই কে যেন আমার নাম ধরে ডেকে বসলো।
হামেদ সাহেব নাকি।
আমি পিছে ফিরে যাকে দেখলাম তাকে দেখা মাত্র আত্মাটা শুকিয়ে গেল। আর কোন জায়গা না পেয়ে তার সাথে শেষমেষ এই পার্কেই দেখা! আর যার কারণেইবা আজকে সকাল থেকে মনটা খিটখিটে হয়ে ছিল ও অস্থিরভাব ছিল তার সাথে যে এমন একটা সুন্দর পরিবেশে দেখা হবে তা জীবনেও কল্পনা করিনি। যাকে এতো এড়িয়ে চলছি গত কয়েকদিন যাবৎ তাকে শেষ পর্যন্ত পার্কে পাবি তা ভাবিনি কখনও।
সালাম, জুলহাস সাহেব। কেমন আছেন।
আমি হাসতে হাসতেই সালামটা দিলাম। জুলহাস সাহেব হলো আমার পাওনাদার। ৫লক্ষ্য টাকা পাবেন। ব্যবসার কারণে ওনার কাছ থেকে টাকাটা নেওয়া হয়েছিল ৩ বছর আগে। পোল্ট্রিফার্ম ও ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসার কাজের জন্য ধার করেছিলাম। ৫% সুদের হার সহ ১ বছরে টাকাটা ফেরৎ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুরগিদের কি যেন এক রোগ দেখা দিল তা তে আমার পোল্ট্রি ব্যবসা লালে লাল হয়ে গেল আর তা তেই ঘটলো সব বিপত্তি।
বিগত কয়েকদিন যাবত জুলহাস সাহেব আমাকে হারিকেন দিয়ে খুঁজছেন। আমিও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছি কারণ উনি যেভাবে অপদস্থ করে ছাড়েন তা তে আর ভালো লাগেনা এইসব ব্যাপার নিয়ে কথাবার্তা বলতে। উনাকে বাড়েবাড়ে বলি যে আমাকে আরো কয়েকটা মাস সময় দিতে হবে কিন্তু কে শুনে কার কথা! এইসব চিন্তা নিয়েই মনটা বেশ খারাপ ছিল গত কয়েকটা দিন। আর যে কারণে খারাপ, যার জন্য এতো দুঃশ্চিন্তা তাকেই অবশেষে পেতে হলো এই পার্কে। কি হাস্যকর এই পৃথিবী!!
(চলবে)
এতটুকু পড়ে কেমন লাগলো আপনাদের?
©somewhere in net ltd.