নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি আর বলবো নিজের সম্পর্কে! কিছুই বলার নাই।

I love politics. I want death of those who killed our Army officers.

রিনকু১৯৭৭

দেশ নিয়ে খুব চিন্তায় মগ্ন থাকি। ভালবাসি আমার এই দেশটাকে।

রিনকু১৯৭৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেচারী বুড়ি

০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৪

১৯৬৫ সালে পাকিস্তান আমলের সময়ে, পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছে ঠিক সেই সময়ে আরমানিটোলার ১২ নম্বর রোডের ৬৯ নম্বরের "চম্পা ভিলা" নামের তিন তলা বাসাতে যে তরুনীটি থাকতো তার নাম ছিল জমিলা। জমিলা হায়দার। বয়স ছিল মাত্র ১৯। আদর করে তার বাবা-মা তাকে চম্পা বলেই ডাকতো। তাই বাড়ির নাম ছিল চম্পা ভিলা। টগবগে যুবতী।



জমিলার বাবা ছিলেন একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এখানে বলে রাখা ভালো যে জমিলার বাবা, অর্থাৎ কামরুল হায়দার কিন্তু জমিলার জন্মদাতা বাবা নন। জমিলার মা বেশ সুন্দরী মহিলা। জমিলার জন্মের কয়েকদিন আগেই তার স্বামী, অর্থাৎ করিম রহমান মারা যান। আর এই মারা যাবার কথা শুনেই আশপাশের সব লোকজন হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পরে জমিলার মা কে বিয়ে করার জন্য। ব্যাপারটি মনে হয় এমনই ছিল যে আশেপাশের সবাই অস্থির হয়ে প্রতিদিন জমিলার মা কে চিন্তা করে হস্ত-মৈথুন করতো ও করিম সাহেবের জন্য প্রতি নিয়ত বদ-দোয়া দিত কবে সে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে। করিম সাহেব যেদিন মারা যান সেদিন অনেকেই তার জানাযার নামাজ পড়তে এসেছিল আর প্রতেকেরই ঠোটের কোণায় ছিল দুষ্ট হাসি। অবশেষে, কামরুল হায়দার নামের এক নারী খেকো লোকের সাথেই জমিলার মা'র পূনর্বিবাহ হয়।



৬০দশকের দিকে নাকি মেয়েদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই ছিলনা। অনেক ঝক্কি-ঝামেলার ভেতর সময় পার করতে হতো নারীদের। আর সে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হউক বা ধনী পরিবারের মেয়েই হউক!! কেউই সাচ্ছন্দ্যভাবে চলাফেরা করতে পারতো না। আর পড়াশুনা!!! ওরে বাবা! এটাতো মানে হাতের কাছে চাঁদ পাবার মতো ব্যাপার। বাঙ্গালী তরূণীদের জন্য পড়াশুনা করাটা ছিল বেশ কষ্টদায়ক। বাঙ্গালী মেয়েদের জন্য যে পড়াশুনার ব্যবস্থা যে ছিল না তা নয়। নির্দিষ্ট দামের ওপরে আরোপ করা আরো ২৫% দাম দিয়ে যাদের পড়ার ইচ্ছে একমাত্র তারাই পড়তে পারতো।



যদিও জমিলা বড়লোকের মেয়ে কিন্তু একমাত্র বাঙ্গালী হবার সুবাদে তার পড়াশুনা করা হয়ে উঠেনি। আর এতো দামে পড়াশুনা করেও বা সে করবেটা কি!!! বাসা থেকেই সে বের হতে পারে না! শুধু যে বাঙ্গালী হবার কারণেই যে সে পড়াশুনা করতে পারিনি তা নয়, শুধু যে আরো ২৫% এ্যাক্সট্রা ফি দিতে হবে দেখেই যে সে পরাশুনা করতে পারিনি তাও না, তার বাবারও চরম নিষেধ আছে বাসা থেকে বের হওয়া। অথচ, এই সেই কামরুল হায়দার, যে কিনা জমিলার জন্মদাতা বাবা মারা যাবার ১মাস পরেই জমিলার মা কে সবার সামনে কোলে তুলে নিয়ে কাছের এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ ন্যাংটা করে মজা নিয়ে ছিল। জমিলার ঐ সময় মাত্র ১মাস বয়স। তার মায়ের তখনও গর্ভধারণের সময়ে যেসব ব্যাথা হয় সেসব ব্যাথা দূর হয়নি। অথচ বাচ্চা প্রসবের ১মাসের মাথায়ই তাকে নিয়ে লীলা খেলা খেললো কামরুল হায়দার, অর্থাৎ জমিলার বর্তমান পিতা।



বেশ ইচ্ছে ছিল পড়াশুনা করে ভাল চাকরী করবে জমিলা। কিন্তু ভাগ্যে সেটা তার হয়ে উঠেনি। যাই হউক, ওই যে বলছিলাম পড়াশুনা করা বাঙ্গালী মেয়েদের জন্য ছিল চাঁদ পাবার মতো ব্যাপার, সেই চাঁদে যাবারই স্বপ্ন দেখতো জমিলা। সারাক্ষণ সে এই স্বপ্নের জগতে ডুবে থাকতো। যেখানে পড়াশুনা ক্লাস ৮ পর্যন্ত করেই বন্ধ সেখানে সে কিভাবে চাঁদে যাবার কথা চিন্তা করতে পারে তা বোধগম্য নয়। আর ১৯৬৫ সালেতো চাঁদেই কেউ যায়নি। দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বটে প্রস্তুতি নিচ্ছে চাঁদে লোক পাঠানোর।



হঠাৎ জমিলা এতো এই চাঁদের যাবার জন্য উদ্গ্রীব কেন? কেনই বা হবেনা। তাকে সারাক্ষণ "ক্ষেপা ছাদী" বলে পাশের বাড়ির এক যুবক জ্বালাতন করে। জমিলা যখনই ছাদের কাপড় মেলতে যায় তখনই এই ক্ষেপা ছাদী লুঙ্গি উচিয়ে তার বাসার ছাদের ওপর দাড়িয়ে থেকে জমিলাকে তার যৌনাঙ্গটা দেখায়। জমিলা না তাকার ভান করে কোন মতে কাপড় মেলে চলে আসে।



কে এই ক্ষেপা ছাদী? তার আসল নাম নূর সাদী। প্রচন্ড গরম মেজাজের কারণে তাকে সবাই ক্ষেপা উপাধী দিয়েছে আর যেহেতু সে যখন তখন ছাদে গিয়ে কোন কারণে-অকারনে বসে থাকে তাই তার নাম সাদী থেকে ছাদী দিয়েছে তার বন্ধুরা। ক্ষেপা ছাদী যে কেন ছাদে যায় সেটাতো আর কেউ জানেনা।



এইভাবেই সে নানানভাবে উত্যক্ত করতো জমিলাকে। জমিলা কারোর সাথেই ব্যাপারটি শেয়ার করতে পারতোনা। তাই অতিষ্ঠ হয়েই জমিলা স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল যে সে যদি দূরে কোথাও চলে যেতে পারতো, যেখানে ক্ষেপা ছাদীর মতো কোন নারী লোভী থাকবেনা, যেখানে সে নিশ্চিন্তে ঘোরাফেরা করতে পারবে, সেরকম কোন জায়গায় গিয়ে সে অল্প একটু শান্তি পেলেও আরাম করে থাকতে পারতো। এমন কোন জায়গা দুনিয়াতে আছে বলে বিশ্বাস হয় না জমিলার। তাই সে চাঁদটাকেই পছন্দনীয় স্থান হিসেবে মনে করলো।



চার বছর পরের ঘটনা। জমিলা এখন আমেরিকায়। অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে তার জীবনে। সে একটি কূপন জিতেছিল কয়েক লাখ টাকার আর সেই টাকা দিয়েই তার বাবাকে না বলেই আমেরিকা পাড়ি দিল। আমেরিকায় যে আসবে সেটা খালি জমিলার মা জানতো। সে কোন বাধা দেয়নি। জমিলা আমেরিকার নাসায় একটি চিঠি দিয়ে জানালো তার নারী অধিকারের কথা। নাসা তার অনুরোধ গ্রহণ করলো।



জমিলা অবশেষে চাঁদে যাচ্ছে। শুধু যাচ্ছেই না, ওখানে সে থেকেই যাবে। অবশেষে জমিলা চাঁদে গেল। সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলো ২০১৩ মার্চ মাস পর্যন্ত।



ঐ যে সে বহুবছর আগে ক্ষেপা ছাদীকে দেখেছিল, তাকে সে চাঁদে আবার দেখতে পেল। ওমা!!!! একিভাবে সম্ভব!! জমিলার কথা কি এখনও ক্ষেপা ছাদী ভুলে নাই??



..............অচেতন অবস্থায় জমিলা উঠে দেখে সে অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে চাঁদের এক অন্ধকার জায়গায় পরে আছে। কিছুদিন পর সে টের পেল সে অন্তঃসত্বা!!!!!!! বুড়ি হয়েও সে ক্ষেপা ছাদীর কাছ থেকে রেহাই পেলনা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৫২

অচেনা বন্ধু বলেছেন: ভাই রে.....পারলিক রে একটু শান্তি তে থাকতে দেন, আর কত খাইশটামি করবেন?

২| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০১

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: হেব্বি, হেব্বি!!
কোন কথা হবে না!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.