নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রূপনারানের কূলে জেগে উঠিলাম ,জানিলাম এ জগৎ স্বপ্ন নয় ।

রুপ নারানের কুলে জেগে উঠিলাম, জানিলাম এ জগত স্বপ্ন নয়।

আদম_

হিজলের, তাল, বুনোঘাস, গুল্মলতার ঝোপে, কাশবন, বাশঝাড়, ভরা ভাদরের নদীকূলে। ফেলে এসেছি শৈশব আনমনে কোনো এক কালে হারিয়ে ফেলেছি গোধুলি লগ্ন মঙ্গল ধুপে। রাতজাগা চোখে, জোনাকির আলো, কদমের ঘ্রাণ সবকিছু পলাতক সময়ের স্রোতে।

আদম_ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি গিটারের আত্নকাহিনী

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:১২



আমার জম্ন কোনো এক বনেদী গিটার তৈরির কারখানায়। তারপর একটা দোকানের শোকেসে ঝুলে ছিলাম কিছুদিন। তখন আমার কাজ ছিলো শুধুই ঝুলে থাকা। ঝুলে ঝুলে মানুষ দেখতাম।

মানুষ।

বিচিত্র এক প্রাণী বটে। যে প্রাণী স্বজাতিকে খুন করতে পারে তারা আবার গানও গায়। অদ্ভুত। আমাকে কিনতে আসতো বোকা বোকা চেহারার কিছু পুলাপান, যাদের দুচোখে স্বপ্ন গিজগিজ করছে, কিন্তু তারা ঠিক জানেনা তাদের কি করতে হবে।

অবশেষে একদিন গলি থেকে রাজপথ; আমার ঠাই হলো আদমদের মেসে। আর সবার মতো আমিও ভেসে চললাম নিরুদ্দেশের ঠিকানায়।

আমি বাসায় পৌছাতেই সে এক মহা হুলস্থুল কান্ড। সবাই মিলে এমন চিল্লা-পাল্লা আরম্ভ করলো যে তক্ষুণি বাসা ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করলো। সবাই এমন ভাব করতে লাগলো যে মনে হয় যেন একেকজন অতি পাকা গিটারু। আসলে ঘোড়ার ডিম। আদম আর তার বন্ধুদের উতপাদিত অতি উচ্চমাত্রার শদ্বদুষণের কারণে ঢাকার গাছগুলো সেদিন পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগপত্র নিয়ে গিয়েছিলো।

“রাইতে খাওন-দাওনের পর মজমা হপে। আইজ সবার একটা করে গান গাইতেই হপে। কুনো মাফ নাই। নো মারসি।” আদমের এমন ঘোষণার পর আমি প্রমাদ গুনলাম। একেক জনের গলার কন্ডিশন আমার বোঝা শেষ। বেশি আতংকিত হলাম “T” সাহেবের গলা শুনে। এমন মেয়েলী গলার পুরুষ সারা দক্ষিণ এশিয়াতে এই একটাই আছে। গান গাইলে মনে হয় যেন কেউ জামাই-মরা কান্দন কানতাছে।



অত:পর আমার গিটার জনম সার্থক করিয়া শুরু হইলো সেই অতি-বিভতস সংগীতানুষ্ঠান……

প্রথমেই “H” সাহেব গাইলেন “এই বিস্টি বেজা রাতে চলে যাইয়োনা”, “চিরদিন সুকে তাকো তুমি” সহ অনেক জ্ঞানী জ্ঞানী গান। আহ তার কি গলা, কি তার উচ্চারণ্, কি তার সুর !! আমি শুধু একটি কথাই বললাম “কেউ আম্রে মাইরালা”।

অতি কষ্টে “H” সাহেবের কাছ থেকে ফ্লোর ছিনিয়ে নিতে হলো, তিনি আরো প্রায় ডজনখানেক গান গেয়ে শুনাতে চেয়েছিলেন। উপস্থিত শ্রোতা মন্ডলীর ব্যাপক প্রতিবাদের পর তিনি ক্ষান্ত হলেও, শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে এমন এক কুরুচিপুর্ণ বাক্য ছুড়লেন যা এখানে লিখলে সামুর সার্ভার লজ্জায় হ্যাং হয়ে যেতে পারে।

তারপর মঞ্চে প্রাদুর্ভাব ঘটলো “L” সাহেবের। তার গান শুনে আমার একটাই মন্তব্য “যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ”। “L” সাহেবের গাওয়া “জাকা-নাকা, জাকা-নাকা, জাকা-নাকা, দেহু দুলানা” গানটি যদি জেমস শুনতো, আমি নিশ্চিত জেমস এদেশ ছেড়ে চলে যেত। গানের তালে তালে আমার তারের উপর যে অকথ্য নির্যাতন চললো তা মনে হলে আজও আখিতে টির্য়াস চলে আসে………..।

এরপর আসলেন মেয়েলী গলার সেই ঐতিহাসিক পুরুষ “T” সাহেব। আর কোনা গান রেকর্ড করা না হলেও, এটা রেকর্ড করা হবে বলে সবাই মনস্থির করলো, কারণ গান শেষে গানের মর্মদ্ধোর করতে হবে। রেকর্ডিং এর ভার পরলো আদমের ঘাড়ে। সবাইকে বলা হলো গান গাওয়ার সময় কেউ যেন শিল্পির দিকে না তাকায়, কারণ এতে শিল্পি হাসিয়া দিতে পারে। উপরন্তু সম্ভব হলে বাতি নিভানোর পরামর্শ দিলো কেউ কেউ। কারণ অতীতে গান-গাওয়ার সময় নাকি ওনার আলা-জিহ্বা দেখা গিয়েছিলো এবং তা শ্রোতাদের মনযোগ কে অতি মাত্রায় বিঘ্নিত করেছিলো। গান শুরু হলো। নির্দেশমতো আদম “T” সাহেবের দিকে না তাকিয়ে তার গান রেকর্ডিং এ প্রবৃত্ত হলেন। আহ তিনটি মিনিট যেন তিনশটি বছর। গানের মাঝে মাঝে উনি কান্নার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড দিবার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সেই সাথে প্রতিটা লাইন শেষে একটু করে গলা কাপানোর প্রয়াস। উফ! খোদা কি অপরাধ করেছিলাম তোমার দরবারে। সবকিছুরই শেষ আছে। ব্যাপক করতালি সহযোগে এই গানও শেষ হলো। ক্ষীণ স্বরে কেউ কেউ “ওয়ানমোর” বলার দু:সাহসও দেখালেন। গান শেষ হবার পর আদমের মনে পড়লো ভুল করে মোবাইলের রেকর্ড বাটনটি প্রেস করা হয়নি……..



কথিত সরস্বতী আমাকে ছেড়েছেন বহু আগেই, আমি ছাড়িনি এই আবালগুলারে। কিছু মাথাপাগলা তরুণদের সংগীত-নির্যাতন সহ্য করে এভাবেই চলছে আমার দিন-রাত।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭

এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: হা... হা.. হা..
মজা পাইলাম :)

তবে মনে হচ্ছে এটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিখিত, তাই কি ?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:১৭

আদম_ বলেছেন: ধন্যবাদ
হ্যা অবশ্যই সত্য ঘটনা।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

আদম_ বলেছেন: এস কে ফয়সাল আপনি কি গিটারু।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:১৮

আদম_ বলেছেন: এস কে ফয়সাল আপনি কি গিটারু।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:০৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: গানের মাঝে মাঝে উনি কান্নার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড দিবার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সেই সাথে প্রতিটা লাইন শেষে একটু করে গলা কাপানোর প্রয়াস। উফ! খোদা কি অপরাধ করেছিলাম তোমার দরবারে।

শুনে আমারো কান্নার বেগ হচ্ছে ব্যাপক :-B

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:১৩

আদম_ বলেছেন: হাই সাদামন , কেমন আছেন

৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪১

আজীব ০০৭ বলেছেন: মজা পাইলাম ...........

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯

আদম_ বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪১

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: মারাত্মক লিখেছেন।

ভাল লেগেছে

২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২৪

আদম_ বলেছেন: মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো

৬| ২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:২৬

আহসানের ব্লগ বলেছেন: ওরে ভাই হাসতে হাসতে পেট খারাপ ।
কেউ আমারে গিটার দিয়া মাইরালা । :D

২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:০৯

আদম_ বলেছেন: ধন্যবাদ আহসান ভাই।

৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৩

ইমিনা বলেছেন: হা হা হা ...
ভিন্ন মাত্রার আত্নকাহিনী। সেই সাথে ব্যাপক মজা পাইলাম :-B :-B

১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৯

আদম_ বলেছেন: মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.