নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের দেশসহ উপমহাদেশের মুসলিমরা খুব ঘটা করে ১২ই রবিউল আউয়াল নবী মুহাম্মাদ সাঃ এর জন্মদিন হিসাবে “ঈদে মিলাদুন্নবী” পালন করে থাকে। অথচ মহানবী এবং সাহাবী, তাবিঈ, তাবে-তাবিঈ কারো এই ঈদ সম্পর্কে জানা ছিলো না।
তাহলে কোথায় থেকে এলো এই ঈদ?
সুলতান সালাহুদ্দিন আইউবী (র) ৫৩২-৫৮৯ হিজরী ইরাকের ‘এরবল’ এলাকার গভর্নর হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন আবু সাঈদ মুযাফফরুদ্দীন কুকুবুরী কে। সর্বপ্রথম মুযাফফরুদ্দীন কুকুবুরী ৬০৪ হিজরীতে মিলাদের প্রচলন ঘটান। সময়টি ছিল রাসুলের মৃত্যুর ৫৯৩ বা ৬১৪ বছর পরে।
[আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ (দারুল ফিকর, ১৯৮৬ পৃঃ ১৩/১৩৭।]
লক্ষ্যনীয় যে প্রথম দিককার সেই মিলাদে কিন্তু আজকের মত নবীর রূহের আগমন কল্পনা করে তার সম্মানে উঠে দাঁড়িয়ে ‘ইয়া নাবী সালামু আলায়কা’ বলা, জিলাপী বিতরণ টাইপের ‘মিলাদ মাহফিল’ এমন কিছুই হত না। ছোট্ট বিদআত আস্তে আস্তে ডালপালা মেলে বিশাল আকার ধারণ করল, একেবারে “ঈদে” পরিনত হল। বিদআতী সুফীদের দ্বারা আস্তে আস্তে বিভিন্ন শির্কী আকিদাও এর সাথে যুক্ত হল।
মহানবী বলেন—
‘তোমরা দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি করা হতে সাবধান থাক। নিশ্চয়ই প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদআত ও প্রত্যেক বিদআতই পথভ্রষ্টতা’ এবং প্রত্যেক পথভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম’।
—আবু দাউদ, তিরমিযী
অনেকেই মনে করেন যে ১২ই রবিউল আউয়াল নবীর জন্মদিন। অথচ — রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্মদিবস ৯ রবিউল আউয়াল সোমবার। ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার ছিলো না।
আবু কাতাদা আনসারি (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবারে রোজা রাখার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন: এ দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছে অথবা এ দিনে আমার উপর (অহি) নাযিল হয়েছে।
—সহিহ মুসলিম ১১৬২
কিন্তু এটা প্রমাণিত যে ১২ রবিউল আউয়াল রাসুলের সাঃ মৃত্যুদিবস। অথচ ১২ রবিউল আউয়াল রাসুল সাঃ মৃত্যুদিবসেই তাঁর জন্মবার্ষিকী বা ‘মিলাদুন্নবী’ অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। যে দিনে রাসুলে করিম (সা) ইন্তেকাল করলেন সে দিনে আনন্দ উৎসব করা কি নবিপ্রেমিক কোন মুসলমানের কাজ হতে পারে?
মিলাদ উদযাপনকারী ভাইদের মিথ্যা ও জাল হাদীস বর্ণনার দুঃসাহস দেখলে শরীর শিউরে ওঠে। সেখানে এই সব লোকেরা কেউবা জেনে-শুনে, কেউবা অন্যের কাছে শুনে ভিত্তিহীন সব কল্পকথা ওয়াজের নামে মিলাদের মজলিসে চালিয়ে যাচ্ছেন ভাবতেও অবাক লাগে।
১) নবি করিম (সা) এর জন্ম দিবস বা মিলাদ পালনের কথা কোরান হাদিসের কোথাও নেই
২) 'তোমরা আমাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, যেভাবে খ্রিষ্টানগণ ঈসা (আ) সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করেছে। বরং তোমরা বল যে, আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল।’’
—সহীহ বুখারী ৩৪৪৫
৩) নবি করিম (সা) এর জন্মদিন পালনের প্রস্তাব সাহাবায়ে কেরাম রাজিয়াল্লাহু আনহুম কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
৪) জন্ম দিবস কেন্দ্রিক উৎসব-অনুষ্ঠান খৃস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্যান্য অমুসলিমদের ধর্মীয় রীতি। যেমন বড় দিন, জন্মাষ্ঠমী, বৌদ্ধ পূর্ণিমা ইত্যাদি। তাই এটা মুসলিমদের জন্য পরিত্যাজ্য। বিধর্মীদের ধর্মীয় রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠান যতই ভাল দেখা যাক না কখনো তা মুসলিমদের জন্য গ্রহণ করা জায়েজ নয়
৫) মক্কা মদীনা, দেওবন্দ সহ গোটা বিশ্বের সকল হক্কানী আলিমগণ এ মিলাদ ও ঈদে মিলাদুন্নবীকে বিদ‘আত আখ্যা দিয়েছেন।
৬) ইমাম মালিক (র.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো বিদ‘আহ আবিষ্কার বা পালন করেও বলে যে এটা ‘বিদ‘আহ হাসানা বা উত্তম বিদ‘আহ’ সে যেন দাবী করলো যে মুহাম্মাদ (স.) তাঁর রিসালাতের দায়িত্ব পালনে খিয়ানত করেছেন”।
আল্লাহ আমাদের এহেন জঘণ্য পাপাচার থেকে বিরত থাকার তাওফিক করুন। আমীন।
৭) এভাবে ইসলামে কারো জন্ম দিন পালন করার বিধান নেই।
৮) যে দিন অতিবাহিত হয়ে যায় সে দিন আবার ফিরে আসে না।
Source:
১) বিশ্বনবী—গোলাম মোস্তফা
২) ঈদে মিলাদুন্নবী—ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৩) মীলাদ প্রসঙ্গ—ড আসাদুল্লাহ গালিব
৪) সহীহ মুসলিম
৫)https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mawlid
৬) Click This Link
৭)https://www.banglanews24.com/cat/news/bd/86128.details
৮)http://askislambd.weebly.com/igk61.html
৯)https://islamqa.info/amp/bn/answers/89693
১০)https://m.somewhereinblog.net/mobile/blog/myousufs/29106262
১১) Definition of mawlid | Dictionary.com
১২)https://en.banglapedia.org/index.php/Muhammad_(Sm),_Hazrat
১৩)https://en.m.wikipedia.org/wiki/Muhammad
২| ২০ শে অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৯
নতুন বলেছেন: পীর মাজার ব্যবসায় এখন আয় কমে গেছে। আগের মতন মুরিদান দান করেনা। তাই নতুন নতুন দিবশ বানাতে পারলে আয়ের পরিমান বাড়ানো যাবে।
কিছু পীর ইদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে পীরের দরবারে দান করাটা ফরজ বলে মুরিদদের বোঝায়।
৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: এই দিনে মিছিল কেন করতে হবে? মিছিলে দেখা যায় এক হুজুর গাড়িতে বসে আছে। সেই গাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো। মানে কি এসবের? মসজিদ মাদ্রাসা কেন লাইটিং করতে হবে?
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০০
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ধীরে ধীরে দুইটি ধারা তৈরী হয়ে যাচ্ছে। একদল এখন এর বিরোধীতা করছে; আর একদল কেক কাটা থেকে শুরু করে রাস্তায় ট্রাকে গান বাজিয়ে নাচানাচি করছে।
সুন্দর একটা পয়েন্ট ধরেছেন যে ছোট একটা বিদাত এখন ডানা মেলিয়ে বিশাল হয়ে গিয়েছে।
আল্লাহ আমাদের এই ফেৎনা থেকে রক্ষা করুন। আমিন।