নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ না আমি কেউ না

খাঁজা বাবা

বল বীর – বল উন্নত মম শির! শির নেহারি’আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!

খাঁজা বাবা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আফগানিস্তান ও শতাব্দির ইতিহাসঃ পর্ব ১

২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৪:৫৩



আমি এখানে মূলত আফগানিস্তানের গত ১০০ বছরের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করব। বেশ কিছুদিন যাবত ব্লগে আগগানিস্তান ও তালিবান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থান ও সফলতার কারন বুঝতে হলে আফগানিস্তানের ইতিহাস প্রথমে বুঝতে হবে। আমি লেখাটি ২-৩ পর্বে শেষ করার চেষ্টা করব। কোন ভুলত্রুটি হলে ধরিয়ে দেয়ার অনুরোধ রইলো।

আফগানিস্তান মধ্য এশিয়ার একটি দেশ যার চারদিকে রয়েছে ইরান, পাকিস্থান, চীন, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান। ভারতীয়দের মতে আফগানিস্থানের সাথে ভারতের ও সীমান্ত রয়েছে যেহেতু পুরো কাশ্মীর তারা ভারতের ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করে। গত ২৫০০ বছরের ইতিহাস দেখলে আফগানিস্তান কখনো গ্রীক, কখনো ভারতীয়, কখনো পার্সিয়ান শাসনে বা কখনো মংগোল, ভারতীয় রাজা বা সোভিয়েত নিয়ন্ত্রনাধীন ছিল।

আফগানিস্তানের আয়তন ৬,৫২,৮৬৭ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ৩ কোটী ৮০ লাখ। প্রধান জাতীগুলোর মধ্যে রয়েছে পশতু, তাজিক, উজবেক, আইম্যাক ও বেলুচ। পশতুন অন্যতম ভাষা হলেও সবার বোধগম্য ভাষা হচ্ছে ডারি। আফগানিস্তানের ভূমিরুপ দেখলে দেখা যায় এর উত্তরে রয়েছে সমভূমি যা কৃষি প্রধান অঞ্চল, মধ্যাঞ্চল পার্বত্য উচ্চভূমি এবং দক্ষিনাঞ্চল মরুভূমি। দেশটি ৩৪ টি প্রদেশে বিভক্ত যার রাজধানী কাবুল।

১৭৫১ সালে আহমেদ শাহ দুররানী সর্বপ্রথম সমগ্র আফগানিস্তানকে একত্র করেন। এর আগে আফগানিস্তান বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত ছিল। এ সময়ই এ অঞ্চলের নাম করন করা হয় আফগানিস্তান। ১৮৭৮ সালে ২য় এংলো আফগান যুদ্ধে বৃটিশরা আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ী হয় এবং তারা সমগ্র আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রনে নিতে না পারলেও আফগান শাষকদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয় এবং বৈদেশিক নীতি নিয়ন্ত্রনের সুযোগ লাভ করে। এসময়ে বৃটিশ ও রাশিয়ার চুক্তির মাধ্যমে বর্তমান আফগানিস্তানের সীমানা নির্ধারিত হয়।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে আফগানিস্তানের আমির হাবিবুল্লাহ খান নিরপেক্ষ থাকলেও অক্ষ শক্তির সাথে যোগাযোগ শুরু করেন পূর্ন স্বাধীনতার জন্য। ফলস্বরুপ ১৯১৯ সালে তিনি আতোতায়ির হাতে নিহত হন। এর পর ক্ষমতায় আসেন আমীর আমানুল্লাহ খান।
আমানুল্লাহ খান আফগানিস্তানের পরিপূর্ন স্বাধীনতার লক্ষ্যে ৩য় এংলো আফগান যুদ্ধ শুরু করেন এবং একই বছর, অর্থাৎ ১৯১৯ সালের ১৯ আগষ্ট স্বাধীন আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আফগানিস্তানকে এমিরেটস অফ আফগানিস্তান হিসেবে ঘোষনা করেন এবং নিজেকে দেশের আমির হিসেবে ঘোষনা দেন। তিনি আফগানিস্তানের আমির হলেও সারা দেশ তার নিয়ন্ত্রনে ছিল না। সে সময়ে মানুষ গ্রামের মোড়ল বা উপজাতীয় নেতাদের কথায় চলত। তাই তখনকার শাষকরা স্থানীয় এসব নেতাদের বেশ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতেন।

আমানুল্লাহ খান ১৯২৩ সালে দেশের প্রথম সংবিধান প্রনয়ন করেন। দেশ আধুনিকায়ন ও পূর্ন নিয়ন্ত্রনের উদ্দেশ্যে তিনি সংবিধানের মাধ্যমে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে চান। সংবিধানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয় এবং রাজ পরিবারের সদশ্যদের অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা বাতিল করা হয়। তিনি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থা প্রচলন করেন যা সরিয়া আইন থেকে অনেকটা সরে এসে পশ্চিমা অনুকরনে তৈরি। এতে স্থানীয় নেতাদের বিচারিক ক্ষমতা খর্ব হয়। তিনি নারী শিক্ষার প্রতি জোড় দেন এবং সবার প্রাথমিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেন। দাশ প্রথা বাতিলের ব্যবস্থা নেন।

এছাড়াও তিনি হিজড়ি ক্যালেন্ডার বাদ দিয়ে দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করেন। তিনি ঐতিহাসিক রাজধানী কাবুল থেকে সরিয়ে দারুল আমানে স্থাপন করেন এবং ইউরোপিয় ঢঙয়ে ব্যবহুল প্রাসাদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মান করেন। দীর্ঘদিনের প্রচলিত নিয়ন ও সংস্কৃতির এসকল পরিবর্তনে শহুরে মানুষ মানিয়ে নিলেও গ্রামের বা দূরের মানুষ মেনে নিতে পারে নি। ফলে রাজার বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালে আলিজায় ও ১৯২৪ সালে খোস্ত এ বিদ্রোহ দেখা দেয়। যদিও রাজা এ বিদ্রোহগুলি ভাল ভাবেই সামলে নেয়।

আমানুল্লাহ খান ১৯২৬ সালে আফগানিস্তান কে কিংডম অফ আফগানিস্তান হিসেবে এবং নিজেকে কিং হিসেবে ঘোষনা দেন। ১৯২৭-২৮ সালে তিনি ৮ মাস ব্যপী তুরষ্ক ও ইউরোপ সফর করেন। এ সময় দেশের গুজব রটে তিনি ইউরোপে গিয়ে মদ ও শুকরের মাংস খেয়ে পাগল হয়ে গেছেন এবং ধর্মান্তরিত হয়েছেন। ইউরোপ সফর শেষে তিনি দেশে ফিরে আরো বেশ কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন। যার মধ্যে অন্যতম নারীদের বোরকা নিষিদ্ধ করা, পুরুষদের পশ্চিমা পোষাক পরতে ও দাড়ি কাটতে বলা। একে একে বেশ কিছু সহশিক্ষা স্কুল চালু হতে থাকে। এতে গুজবকে মানুষ সত্যি হিসেবে মেনে নেয়। ফলশ্রুতিতে ২৭-২৮ সাল ব্যপী গৃহযুদ্ধ চলে এবং আমানুল্লাহ খান ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
এরপর হাবিবুল্লাহ কালাকানি ১৯২৯ সালের জানুয়ারীতে ক্ষমতা দখল করেন এবং আফগানিস্তানকে আবার এমিরেটস অফ আফগানিস্তান ও নিজেকে আমির ঘোষনা করেন। কিং আমানুল্লাহ এর চাচাত ভাই মোহাম্মাদ নাদির শাহ কালাকানিকে পরাজিত করে একই বছরের অক্টোবরে কাবুল দখল করেন এবং নিজেকে কিং ঘোষনা করেন।

চলবে……

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:০০

সোনাগাজী বলেছেন:



তালেবানদর সফলতার কি কি আপনার চোখে পড়ছে?

২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:০৩

খাঁজা বাবা বলেছেন: ক্ষমতা দখল

২| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:২১

শাহ আজিজ বলেছেন: আমানুল্লাহ কম করে হলেও যে আধুনিকতা এনেছিলেন তালেবানরা ঠিক তার উল্টো রাস্তায় হেটেছে ।

২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:২৪

খাঁজা বাবা বলেছেন: আমানুল্লাহ প্রচলিত নিয়ম ভেংগে রাতাতারি আগগানিস্তানকে ইউরোপ বানাতে চেয়েছিলেন, যাতে আফগানদের বদ হজম হয়েছে।

৩| ২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: গতকাল অনেক সময় ধরে ইউটিউবে আফগানিস্তান দেশটা দেখলাম।
খুব দরিদ্র একটা দেশ। এই দেশের নারীরা খুব কষ্টে আছে। এরচেয়ে সৌদির নারীরা কিছুটা ভালো আছে।

২৮ শে মে, ২০২২ বিকাল ৫:৩৯

খাঁজা বাবা বলেছেন: আমি সৌদিতে দেখেছি মেয়েরা ডাকাতের মত। কাউকে পরোয়া করে না।

৪| ২৮ শে মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সোজা-সাপ্টা ইতিহাস না লিখে এতে কিছুটা রস ঢালেন, পড়তে বেশী ভালো লাগবে।

যে সকল শাসকরা জনগনের পালস বোঝে না, তারা বেকুব। এদের বেকুবীর ফল জনগন ভোগ করে, আর দিনশেষে এরাও বাদ যায় না। আমানুল্লাহ সম্ভবতঃ কামাল আতাতুর্কে শিষ্যত্ব গ্রহন করেছিল, নিজের দেশের জনগনকে ঠিকমতো না বুঝেই।

সৌদির মেয়েরা কি দেখতে ডাকাতের মতো, নাকি আচার আচরণে? ভোজালী নিয়ে ঘোরে?? :P

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৮:৩০

খাঁজা বাবা বলেছেন: পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। রশিয়ে লেখার চেষ্টা করব।

সৌদিতে মেয়েরা দোষ করলেও তাদের দোষ দেয়া হয় না খুব একটা, দোষ বেশিরভাগ সময়ই পুরুষের।
ধরেন তারা রাস্তা দিয়ে এমন ভাবে হাটবে যেন তার বাপের রাস্তা। হাটতে গিয়ে যদি কোন পুরুষের সাথে ধাক্কা লাগে তো ঐ পুরুষের দোষ। তাই মহিলারা সামনে পড়লে পুরুষরা প্রায় রাস্তার বাইরে দিয়ে হাটে।

আবার ধরেন ১২০ স্পিডের রাস্তা। মহিলারা সিগনালের থোরাই কেয়ার করে হুট করে রাস্তায় নেমে পড়বে রাস্তা পার হতে। গাড়ি ধাক্কা দিলে ড্রাইভারের দোষ। মহিলার কোন দোষ নেই। কিন্তু একই কাজ কোন পুরুষ করলে তার খবর আছে।

মহিলারা সেখানে কিছু এক্সট্রা সুবিধা পায়।

৫| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৮:০০

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


আফগান মাটির শরীয়া আইনের চুম্বকীয় শক্তি সবসময় বেশি।

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ৮:৩১

খাঁজা বাবা বলেছেন: মাথার উপর দিয়া গেল :(

৬| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:২৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: আফগানরা অদরকারী পরিশ্রম বেশি করে মনে হয়, এদের ব্রেন ওয়াশ করা মনে হয় পৃথিবীর অন্য সব দেশের মানুষ থেকে সহজ।

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:৩৮

খাঁজা বাবা বলেছেন: আফগানরা একটু ঘাড়তেড়া জাতী। সহজে হার মানতে চায় না, তাতে লাভ হোক আর ক্ষতি। ব্রেইন ওয়াশ করে এদের কিন্তু কমিউনিজম খাওয়ানো যায় নাই।

৭| ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:৩৬

আগন্তুক৬৯ বলেছেন: আগামীতে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে বলে মনে করেন। সব সময় এই মারামারি কাটাকাটি চলবে। নাকি স্থিতিশীল দেশ হতে পারে ভবিষ্যতে।

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১১:৪০

খাঁজা বাবা বলেছেন: আফগানিস্তানের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ব্যতিত কোন বৃহত শক্তি আফগানিস্তানে স্তিতিশীলতা চায় না। ভবিষ্যত কি হবে তা বিশ্ব ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে।

৮| ২৯ শে মে, ২০২২ রাত ১২:৩৯

নাজনীন১ বলেছেন: একবার কিং, একবার আমির! ভালই। সাথে থাকবার চেষ্টা করছি। পোস্ট প্রিয়তে।

২৯ শে মে, ২০২২ সকাল ৯:২২

খাঁজা বাবা বলেছেন: ধন্যবাদ,
আজ ২য় পর্ব আসবে। :)

৯| ২৯ শে মে, ২০২২ সকাল ৮:৪৫

বিটপি বলেছেন: কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ বাধানোর জন্য গান্ধারী তার ভাই গান্ধাররাজ শকুনিকে দায়ী করেন এবং তাকে এই অভিশাপ দেন যে গান্ধারবাসী কখনও শান্তিতে থাকবেনা। তার সর্বদা বাইরে থেকে আক্রমণ এবং লুটপাটের শিকার হবে।

২৯ শে মে, ২০২২ সকাল ৯:২৩

খাঁজা বাবা বলেছেন: আফগান কি কুরুক্ষেত্র? :|

১০| ৩০ শে মে, ২০২২ সকাল ১০:২৯

বিটপি বলেছেন: না, আফগান কুরুক্ষেত্র নয়। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ বাধানোর ক্ষেত্রে যে দুই ভিলেন সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছিল, তাদের একজন হলেন গান্ধার রাজ সুবলের পুত্র শকুনি। এই গান্ধার রাজ্যের বর্তমান নাম হল কান্দাহার, যা অনেক বছর ধরে আফগানিস্তানের রাজধানী ছিল। কুরু রাণী গান্ধারীর অভিশাপ এই কান্দাহার তথা আফগানিস্তানের মানুষ যুগ যুগ ধরে বয়ে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

৩০ শে মে, ২০২২ দুপুর ১২:২২

খাঁজা বাবা বলেছেন: জানা ছিল না, জানলাল।
ধন্যবাদ। :)

১১| ০২ রা জুন, ২০২২ রাত ৯:৩৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কমেন্ট করেছি আগে তৃতীয় পর্বে।
প্রথম পর্বে পাঠ শেষ করে নিয়ম রক্ষা কমেন্ট করলাম।
বেশ চলতে থাকুক।
পোস্টে লাইক।
শুভেচ্ছা আপনাকে।

০২ রা জুন, ২০২২ রাত ১০:২৪

খাঁজা বাবা বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.