নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেউলিয়া

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫১


২০১৬ সালের কথা। আমি তখন গুলশান ১নং ডিসিসি মার্কেটে ব্যবসা করি। আমার দোকানের এক কর্মচারী ছিলো, নাম তার জনি। জনি জানতো গ্রামের দিকে বাড়ি করার আমার খুব ইচ্ছে আছে। তো আমার দোকান থেকে চাকরি ছেড়ে যাওয়ার পরে জনি জয়দেবপুরের দেউলিয়া গ্রামে সোয়া চার কাঠা জমি কিনেছিলো। যার কিছু অংশ বায়না করা ছিলো, টাকা পরিশোধ করে নাই। এর মধ্যে জনির স্ত্রী তার বাবার বাড়ির ওয়ারিশ থেকে কিছু জমি পায় নরসিংদীতে। সেখানে বাড়ি করার জন্য টাকা দরকার তাই দেউলিয়ার জমিটুকু কেনার জন্য আমাকে এসে ধরে।

২০১৬ সালের মে মাসের ১৩ তারিখ। আমি আর ইস্রাফীল জনির সাথে রওনা হই জমি দেখতে। বাড্ডা থেকে এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্টে থেকে বাসে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে জয়দেবপুর শিববাড়ি। সেখান থেকে জয়দেপুর রেল ক্রসিং পার হয়ে সিএনজিতে করে কালনি বাজার হয়ে দেউলিয়া গ্রাম। তারপর ৫-৭ মিনিট হেঁটে জমিতে যখন পৌছাই তখন ঘড়িতে সময় ১টা বেজে ১০ মিনিট।

গ্রামের এক পাশে বাড়ির ভিটার অংশের জমি। পাশেই জমির মূল মালিকের বাড়ি। ভিটার পাশের অংশ থেকেই বিক্রি করেছে, এখনই বাড়ি করার উপযোগী জমি। জমি পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা আছে ৬ ফুট, তবে তা এখনো সলিং হয়নি। কাঠাল গাছ-তাল গাছ-কলা গাছ, লেবু ঝোপ, আর অনেকগুলি একাশিয়া বা আকাশমনি গাছে একেবারে জঙ্গল হয়ে আছে। পাশেই ধানি জমি। বর্ষায় বেলাই বিলের জল এসে এই জমি পর্যন্ত পৌঁছায়। জমি ভালো, কিন্তু ঢাকা থেকে দূরুত্ব অনেক। পৌছানো মেলা ঝক্কি।

আমরা পৌছানোর মিনিট ১০ এর মধ্যেই দক্ষিণ আকাশ অন্ধকার করে কালো মেঘেদের বিশাল এক দল এগিয়ে আসতে শুরু করলো ঠিক যেনো রবীবাবুর গানের সুরে তাল মিলিয়ে।

নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে॥
বাদলের ধারা ঝরে ঝরো-ঝরো, আউষের ক্ষেত জলে ভরো-ভরো,
কালিমাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিয়েছে দেখ চাহি রে॥



ঠান্ডা বাতাস গা জুড়িয়ে দিচ্ছে। সেই সাথে বুঝতে পারছি এখনই ঝুম বৃষ্টি নামবে। পাশেই আছে বেণুবন (বাঁশ ঝার), বাতাস তাদের মাঝে ঢেউ তুলেছে, মাঝে মাঝেই মটমট-পটপট বিকট শব্দ করছে।

ওগো, আজ তোরা যাস নে গো তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।
আকাশ আঁধার, বেলা বেশি আর নাহি রে।
ঝরো-ঝরো ধারে ভিজিবে নিচোল, ঘাটে যেতে পথ হয়েছে পিছল--
ওই বেণুবন দোলে ঘন ঘন পথপাশে দেখ চাহি রে॥


যদিও বেলা তখন আছে যথেষ্টই। ঘড়িতে তখন দেড়টা বাজেনি। কিন্তু আকাশের ঘনকালো রূপ দেখে তা বুঝার কোনো উপায় নেই। মনে হচ্ছে সন্ধ্যা শেষে বুঝি রাত নমলো বলে। আমরা আশ্রয়ের জন্য জমির মালিক জালাল উদ্দিনের বাড়ির দিকে চলে গেলাম। জালাল উদ্দিন যে ঘরে থাকে সেটির অবস্থা অতি করুন। উঠনের উলটো পাশে তার ছোট ভাই বিল্লালের মাটির দেড় তলা ঘর। বেশ সুন্দর দেখতে। বিল্লাল থাকে সৌদি আরব, তার স্ত্রী-বাচ্চারা থাকে শহরের ঘর ভাড়া করে। আমরা খালি বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিলাম। শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি।



এক সময় বৃষ্টি থামলো, আমরা গ্রামের কর্দমাক্ত পিচ্ছিল মেঠপথে ফিরতি পথে পা বাড়ালাম। আমি তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- এ জমি কিনবো না। কিন্তু জনি খুব করে ধরলো, টাকাটা ওর খুবই দরকার। একমুঠে না দিলেও হবে। বাড়ির কাজ করার সময় দুই তিন দফায় দিলেও চলবে। অন্যদিকে বন্ধু ইস্রাফীলেরও জমি পছন্দ হয়েছে। সেও জমি কেনার পক্ষে তার মতামত দিলো। জমি আমারও পছন্দ হয়েছে, কিন্তু দূরুত্বের কারণে আমি রাজি হচ্ছিলাম না।

জামি দেখে এসে বাসায় জানিয়ে দিলাম জমি কিনবো না, অনেক দূর। (ঢাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার, জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে ৬ কিলোমিটার।) তারপরও কি মনে করে কয়েকদিন পরে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে বড়বোনের গাড়ি ধার নিয়ে চলে গেলাম আবার সেই দেউলিয়াতে। নিজস্ব গাড়িতে যাওয়ার কারণে স্ত্রী-কন্যা পথের দূরুত্ব আর ঝক্কির বিষয়টা বুঝলো না। আর আমার কন্যা সাইয়ারা সবুজ মাঠ আর ঝোপ-জঙ্গল দেখে খুশী হয়ে ঘোষণা করলো- এই জমি আমরা কিনবো। বিবি সাহেবারও পছন্দ হয়েছে জমি। সিদ্ধান্ত হলো দেউলিয়ার এই জমিটুকু আমরা কিনবো। ফাইনাল।

সোয়া চার কাঠা দিয়ে শুরু করে এখন শেষ পর্যন্ত সেখানে জমি কেনা হয়েছে প্রায় ৩২ কাঠা। একটি গ্রামের বাড়ি তৈরি করবো ওখানে।

মন্তব্য ৪৯ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৪৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০১

সোনাগাজী বলেছেন:



চাকুরী করেন না, ব্যবসা করেন না, জমি কিনেই চলছেন; সিক্রেটটা কি?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- পোস্ট না পড়েই মন্তব্য করার স্বভাব আপনার আর গেলো না!!
- সময়টা বলেছি ২০১৬ সালের কথা, আরো বলেছি ব্যবসার কথা। সেগুলি আপনার চোখ এরিয়ে গেলো কেনো?

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৩

নাহল তরকারি বলেছেন: সুপারহিট।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- কিসের সুপার হিট?

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: মরুভূমির জলদস্যু,




চমৎকার করে লিখেছেন কবিতার পাঞ্চ দিয়ে!
শিরোনামে "দেউলিয়া" শব্দটি দেখে আর জমি কেনার ঘটনা শুনে সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি শ্রেষ্ঠ পর্যবেক্ষণ মনে এলো --
"বই কিনে কেউ কখন্ও দেউলে হয়নি"
আর সাথে সাথেই মনে হলো আপনাকে জিজ্ঞেস করি - "জমি কিনে কেউ কখন্ও দেউলিয়া হয়েছে ? " ;)

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
- হাতে টাকা না নিয়ে এবং ধার করে জমি কিনে আমি মোটামুটি দেউরিয়া হয়েছিলাম।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০৮

শেরজা তপন বলেছেন: আজকে লেখায় তাড়াহুড়োয় ছিলেন মনে হয়- আর একবার রিভাইস করেন।

এখনো সব জমি আছে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- লেখাটি অনেক দিন আগেই তৈরি করা ছিলো। আজকে পোস্ট করালাম। বেশ কিছু টাইপো ঠিক করলাম। আরো কিছু রয়ে গেলো কিনা জানি না।
- অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে ভুলগুলির বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য।
- ৬ দফায় ৩ জনের কাছ থেকে প্রায় ৩২ কাঠা জমি কিনেছি। সব এক যায়গায় হলেও তেড়াবেড়া অবস্থা। জমি সবটুকুই আছে। এখন একটি বাঁশ ঝার সহ আরো ৮ কাঠারমতো জমি রয়েছে সেখানে। সেটিও কেনার ইচ্ছে আছে।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩১

শ্রাবণধারা বলেছেন: পোস্ট আর ছবিগুলো মিলে খুব ভালো লাগলো পড়তে।

যদিও জমি কেনার মতো একটা নিছক জাগতিক বিষয় কিন্তু আপনার লেখার গুনে, দেখার গুনে এই জাগতিক বিষয়টাও বেশ কাব্যিক হয়ে উঠেছে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
- ঐদিন দেখার মতোই পরিবেশ ছিলো। তাছাড়া গ্রাম আমার অতি প্রিয়।

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৮

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: বাস্তব ঘটনাগুলি আপনি খুব সহজে প্রাঞ্জল ভাষায় লিখে ফেলেন, দারুন হয়েছে !

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- দেখা জিনিস লেখা সহজ। মন দিয়ে শোনা জিনিসও লেখা সহজ। নিজের মন থেকে গল্প লেখা কঠিন। আমি কঠিন কাজ মোটেও পারি না।

৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১১

শাহ আজিজ বলেছেন: ভালো লাগলো । রিসোর্ট করতে চাও । জমি রেকর্ডের কাজ আগেই করে রাখবে । আমি জয়দেবপুর হাসপাতালের কাছেই আর্টিস্ট ভিলেজ গড়ার জন্য জমি দেখেছিলাম । জমি ভিতরে , রাস্তা নেই বা সংযোগ নেই , বাদ দিয়েছি পরে ।


আশ্রম কি ওটাই ?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
- না, আমি রিসোর্ট করবো না। আমার কোনো রতফেই গ্রাম নেই। নানা-নানীর দিক থেকে, দাদা-দাদীর দিক থেকে-শ্বশুর-শ্বাশুড়ির দিক থেকে, কোনো দিক থেকেই আমাদের গ্রাম নেই। তাই আমি গ্রামের বাড়ি বানাবো।
- কাগছের কিছু কাজ বাকি আছে। সেরে ফেলতো হবে।
- আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। নিশ্চয়ই ভালো কোনো জমি আপনি পেয়ে যাবেন।

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৫

অপ্‌সরা বলেছেন: পুরো ঘটনাই কিন্তু দেখতে পেলাম।

শুনতেও পেলাম বৃষ্টির ঝমঝম!

ভাইয়া তুমি তো একালের জমিদার!

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আরো ঘটনা আছে, জানাবো ধীরে।
- যার জমি আছে সেই জমিদার। B-)

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪৫

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


ব্যবসা ও দেউলিয়া দেখে ভেবেছিলাম 'ব্যাবসায় লাল বাতি। পরে দেখি কাহিনী ভিন্ন। আমি দেউলিয়া হয়ে আপনার ক্রয়কৃত দেউলিয়ায় যাবো।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- হা হা হা। না এখনো দেউলিয়া হই নাই। তবে বাড়ির কাজ শুরু করেছি, দেউলিয়া হতে খুব বেশী সময় লাগবে না।

১০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


বাপ রে! আপনার তো অনেক জমি!

যে জায়গার কথা বলছেন, সেখানে কাঠা প্রতি মূল্য কেমন হবে?

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- খুব বেশীতো বলা যাবে না।
- কাঠা প্রতি মূল্য ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
বাপ রে! আপনার তো অনেক জমি!


প্রায় ৩২ কাঠা। কাঠার হিসাব একেক এলাকায় একেক রকম। আমাদের হিসাবে ১.৬৫ শতাংশে ১ কাঠা। সেই হিসাবে ৫২ শতাংশের মতো জমি আছে আমার ঐখানে।

১১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১০

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



লেখক বলেছেন:
- খুব বেশীতো বলা যাবে না।
- কাঠা প্রতি মূল্য ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ।
==========================
তাও ৫০-৬০ লক্ষ টাকার মামলা!!! বাপস!!!

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:১৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমি যখন কনেছি তখন উচু জমি সোয়া এক লাখ পরেছে। নিচু জমি ৮০ করেও কিনেছি। ডোবা ৪৫ পরেছে। তখনবার হিসেবে গড়ে ৮০-৮৫ কাঠা প্রতি পরেছে ধরা যায়, কিংবা কিছু কম। এখন কিছুটা বেড়েছে উচু জমির দাম।

১২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৩৩

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: গুড, ফাইনালি কেনা হয়ে গেলো।

আচ্ছা ঐখানকার দরদাম কেমন? আমি যোগাযোগ করেছিলাম জয়দেবপুরের মৈরানে! এখন কেমন দরদাম জানি না। বর্তমান দরদাম কেমন?


১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- হে, প্রথম কিনেছি ২০১৬ তে তারপরে কয়েক দফায় কিনেছি।
- দরদাম নির্ভর করে ভূমির অবস্থান, পারিপার্শিক অবস্থা, চাহিদা, অবকাঠামোগত সুবিধা, মালিকের আর্থিক প্রয়োজনীয়তা, দালাল ইত্যাদির উপরে। আমি কিনেছি দাদাল ছাড়া, সরাসরি মালিকের কাছ থেকে। তাই কিছুটা সস্তা হয়েছে।
- আমি যখন কিনেছি তখন উচু জমি সোয়া এক লাখ পরেছে। নিচু জমি ৮০ করেও কিনেছি। ডোবা ৪৫ পরেছে। বর্তমানে ২০-২৫ হাজার করে বেড়েছে।

১৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪৯

অপু তানভীর বলেছেন: দেউলিয়া শিরোনামে আমি ভাবলাম হয়তো আপনি জমি কিনতে গিয়ে ধরা খেয়ে দেউলিয়া হয়েছেন । পড়ার পর বুঝলাম আসলে গ্রামের নামই দেউলিয়া । দেউলিয়া যে গ্রামের নাম হতে পারে ভাবি নাই । তবে প্রথমে দেউলিয়াতে জমি না কেনার পক্ষে আপনার মনভাবের কারণ ছিল কোনটা? জমি দেখতে গিয়ে তীব্র বৃষ্টিতে আটকা পড়েছিলেন, এটা নাকি অন্য কোন কারণ? নাকি কেবল দুরুত্বই প্রধান কারণ? নিজেস্ব গাড়ি থাকলে কিন্তু ঢাকা ৩০ কিলোমিটার কোন দুরত্বই না ।

আমাদের এলাকাতে কাঠার হিসাব । ২০ কাঠায় এক বিঘা হয় । সেই হিসাবে দেড় বিঘার একটু বেশি জমি । অনেক মানে অনেক জমি বাড়ি করার জন্য। একটা পুকুর কাটিয়েন । শান বাঁধানো পুকুর থাকবে গ্রামের বাড়িতে । ব্যাপারটার ভাবই আলাদা হবে ।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- বৃষ্টি আমার খুবই প্রিয়। সাথে অতিরিক্ত জামা থাকলে বৃষ্টি ভিজতাম। প্রথমে কিনতে না চাওয়ার সাথে বৃষ্টির সম্পর্ক নেই।
মূল কারণ ছিলো দূরুত্ব ও যোগাযোগের হ্যাপা। জনি আমাকে বলেছি মূল রাস্তা থেকে ৬ ফুট রাস্তার পাশেই জমি। ফলে আমার মাথার মধ্যে অন্যরকম একটি চিত্র তৈরি হয়ে ছিলো। বাস্তব চিত্রের সাথে সেটি ১০০% উলটা ছিলো। নিজস্ব গাড়িতে ৩০ কিলোমিটার কোনো বিষয়ই না। তবে আমি যখন গিয়েছি তখন প্রথমে লোকাল বাসে বাড্ডা থেকে এয়ারপোর্ট, সেখান থেকে আরেকটি বাসে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ি, সেখান থেকে ৮-১০ মিনিট হেঁটে রেলস্টেশান, সেখান থেকে সিএনজিতে করে দেউলিয়া গ্রাম। তারপর হেঁটে গ্রামের ভিতর দিয়ে জমিতে। জমি পর্যন্ত রাস্তার কোনো অস্তিত্ব নেই, ঝোপ-ঝার ছাড়া। এবার বুঝুন অবস্থা।

- জমির হিসাব ঠিক আছে। ৫২ শতাংশের মতো। পাশাপাশি দুটি ডোবা আছে। আগামীতে সেখানে ঘাটলাপুকুর হবে।

১৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:২০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সত্য ঘটনা সুন্দর করে সাজিয়ে লিখেছে । ভালো লাগলো পড়তে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৫৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

১৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১:৪৪

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমি জমি-জমার হিসাব বুঝি না। কাঠা-শতাংশ বোঝার কোন প্রশ্নই নেই। বড় ভাই ৭/৮ শতাংশ জায়গা কিনেছেন, তাতেই ৫তালা বাড়ি বানিয়েছেন। সেই হিসাবে বুঝি আপনার ৫২ শতাংশ অনেক।

আমার কোন জমি নেই। পিতার গ্রামে যা আছে, তা খুব সম্ভবত চাচারা দিবে না আমাদের, আনতে গেলে মারামারি হবার সম্ভাবনা আছে। আর শহরে যা আছে, তাদের আমাদের ভাই বোন সবাই ভাগ করলে কেউ একটা মুদি দোকানও দিতে পারবে না। তাছাড়া আমরা ভাই হিসাবে বোনটাকে তেমন কিছুই কখনও দেই নি। আমাদের দু-ভাইয়েরই ইচ্ছা ঐ জায়গাটা বোনকে গিফট করে দিবো। তার স্বামীর টাকা আছে, সে বাড়ি করে নিতে পারবে।

আমি প্রচলিত অর্থে মোটামুটি জায়গা জমিহীন একজন মানুষ। আলহামদুলিল্লাহ, আমার এতে আফসোস হয় না। শুনেছি দেশের ৬০% এর উপরে মামলা নাকি জায়গা জমি সংক্রান্ত!

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: - ঢাকার ৭/৮ শতাংশ মানে অনেক মূল্য। গ্রামের ৫২ শতাংশ তার কাছে কিছুই না। আমার বাড্ডায় পৈত্রিক ১৪ শতাংশ আছে, যার ৭.৪২৫ শতাংশে এইমুহুর্তে ৮ তলা বড়ির কাজ শুরু করেছি। এখানের ১ শতাংশ জমি বিক্রি করলে ঐখানে ২০০+ শতাংশ জমি কেনা যাবে।

- আমি পৈত্রিক জমি পেয়েছি ৮.৫ কাঠা বাড্ডাতে। বাকি ৩২ কাঠা জয়দেবপুরে এবং ৫.২ কাঠা নাগরির আশ্রমে কিনেছি। জমি কিনে দেনায় পরে আছি।

১৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ ভোর ৫:৪২

সোহানী বলেছেন: বাড়ি তোলার পর খবর দিয়েন, নেক্সট দেশে গেলে খুঁজে দাওয়াত নিবো :P

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ঢাকায় থাকার বাড়ি নির্মাণে হাত দিয়েছি। দেউলিয়াতে বাড়ি করতে দেড়ি আছে। তবে নাগরির আমাদের আশ্রমে চাইলেই চলে যেতে পারেন, প্রায় সকল ব্যবস্থাই আছে।

১৭| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:৩০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার এই পরিকল্পনাটা আমার ভালো লেগেছে। সবাই শহরমুখী হয় আর আপনি গ্রামমুখী। এটা ভালো।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমার কোনো দিক থেকেই গ্রাম নেই। তাই গ্রামের প্রতি আকর্ষণ বেশী।

১৮| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:১৩

বাংলার এয়ানা বলেছেন:

লিখার বর্ননায় দারুণ ভাবে সব ফুটে উঠেছে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আমি খুব ভালো লিখতে পারি না, শুধু চেষ্টা করেছি সবটুকু উপস্থাপন করতে।

১৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দেউলিয়া হয়েছেন ভেবে সহানুভূতি জানাতে এসেছিলাম। হিসেব দেখি উল্টো।

লেখাটা দুর্দান্ত হয়েছে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- হা হা হা, দেউলিয়া শিরনামটি তাহলে ক্লিক করে গেছে বলছেন।

২০| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩৩

অপলক বলেছেন: শুভাশীষ রইল। ভাগ্যে থাকলে কোন এক বর্ষায় আপানার বাটিতে বসে চা খাব আর মন ভরে বৃষ্টি দেখব...

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: - আপাততো দেউলিয়াতে বাড়ি করা হচ্ছে না। তবে নাগরিতে আমাদের আশ্রমে যে কোনো সময় চলে যেতে পারেন। খারাপ লাগবেনা গেরান্টি।

২১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আপনার গ্রামের বাড়ি তৈরী হলে ঘটা করে পোস্ট দিবেন, বেড়াতে যাওয়ার খুব ইচ্ছে ওখানে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- দেড়ি হবে তৈরি হতে। কারণ এখন ঢাকায় নিজের থাকার বাড়ি করায় ব্যস্ত। তবে যখন দেউলিয়ায় গ্রামের বাড়ি তৈরি হবে তখন অবশ্যই জানাবো পোস্ট করে।

২২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে জমির নেশা পেয়ে বসেছে। আরেহ ভাই দুনিয়াতে আমরা কয়দিন আছে?
শেষ ঠিকানা তো সাড়ে তিন হাত মাটি। জমিজমা, টাকা পয়সা কিচ্ছু নিয়ে যাওয়া যাবে না।
তাই আয়ু থাকতে থাকতে কিছু করুণ সমাজের জন্য।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আপনার কেনো মনে হচ্ছে আমি সমাজের জন্য কিছু করছি না?
- শেষ ঠিকানায় কয়হাত মাটি লাগবে সেটি আমি জানি। আমি যেমন জমিজমা, টাকা পয়সা নিতে পরবো না ঠিক তেমনি আপনিও নিতে পারবেন না। তাহলে আপনার বাড়িটি বিক্রি করে সমাজের কল্যাণে ব্যয় করছেন না কেনো? আপনার বেলায় বহুতল ভবনের মালিক হওয়া, প্রাইভেট কার রাখা, ঝাকি ভরে বাজার করা জায়েজ। আর অন্যের বেলায় মৃত্যুর কথা স্বরণ করা!!

২৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: দেউলিয়া গ্রামের ছেউরিয়া আখড়া (গাছপালা সাথে মাটির ঘর ) , এক কথায় চমতকার।

আমারও খুব ভাল লাগে ভাইজান এরকম পরিবেশ ও প্রাকৃতিক আবহ। যদিও সুযোগ হয়নি সেভাবে জায়গা কিনার তবে রাজেন্দ্রপুর (আর পি গেট) ৪ কাঠা জমি কিনেছিলাম কিন্তু সেখানে বৃষ্টিবিলাসের সুযোগ নেই ইট-পাথরের ভিড়ে।

এখন কি রকম দাম ও সুযোগ আছে কি ২/৪ কাঠা কিনে আপনার প্রতিবেশী হয়ে একসাথে বৃষ্টিবিলাস করার।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
- রাজেন্দ্রপুরের যে যায়গার কথা বললেন সেটিতো বেশ দাম হওয়ার কথা।
- কয়েক মাস আগে একজন তার বাড়ির ভিটার কিছু জমি বিক্রি করতে চেয়ে ছিলো। আমার জমি থেকে কয়েক টা জমি পরেই। সম্ভবত ২ লাখ করে কাঠ বা শতাংশ চেয়ে ছিলো। আমার জমির সাথে লাগানো নয় বলে আমি আগ্রহ দেখাইনি।

২৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
- আপনার কেনো মনে হচ্ছে আমি সমাজের জন্য কিছু করছি না?
- শেষ ঠিকানায় কয়হাত মাটি লাগবে সেটি আমি জানি। আমি যেমন জমিজমা, টাকা পয়সা নিতে পরবো না ঠিক তেমনি আপনিও নিতে পারবেন না। তাহলে আপনার বাড়িটি বিক্রি করে সমাজের কল্যাণে ব্যয় করছেন না কেনো? আপনার বেলায় বহুতল ভবনের মালিক হওয়া, প্রাইভেট কার রাখা, ঝাকি ভরে বাজার করা জায়েজ। আর অন্যের বেলায় মৃত্যুর কথা স্বরণ করা!!

ভাইসাহেব আপনি আমার মন্তব্যটি সঠিকভাবে বুঝেন নাই।
আপনি আচরন করছেন জিকো, আরইউ, মিডোরল ওদের মতো। ইহা দুঃখজনক। আপনার কাছে আমি এরকম আচরন আশা করি না। আপনাকে আমি অনেক উপরে রাখি।

দেখুন বাড়ি বা গাড়ি টা আমার নিজের নয়। আমি কখনও গাড়ি, বাড়ি, জমি করবো না। পকেটে যে কটা থাকে বাজার করি। পরিবার নিয়ে খাই। ব্যস শেষ। সমাজের জন্য কিছু এখনও করি নাই। কিন্তু ভালো কিছু করার ইচ্ছা আছে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে জমির নেশা পেয়ে বসেছে। আরেহ ভাই দুনিয়াতে আমরা কয়দিন আছে?
শেষ ঠিকানা তো সাড়ে তিন হাত মাটি। জমিজমা, টাকা পয়সা কিচ্ছু নিয়ে যাওয়া যাবে না।
তাই আয়ু থাকতে থাকতে কিছু করুণ সমাজের জন্য।


আপনার এই মন্তব্যের কোন অংশটি আমি সঠিক বুঝিনাই ভাইজান?

আপনি আচরন করছেন জিকো, আরইউ, মিডোরল ওদের মতো। ইহা দুঃখজনক। আপনার কাছে আমি এরকম আচরন আশা করি না। আপনাকে আমি অনেক উপরে রাখি।
অন্য কারো সাথে আমাকে এক দলে ফেলার চেষ্টা করবেন না দয়া করে। ব্লগে আপনারা যারা যারা দল করে চলেন আমি তাদের কোনো দলেই নেই। আমি খুব সাধারণব্লগার এবং খুবই সাধারণ মানুষ। তাই আমার আচরণও খুব সাধারণ। যদিও আমি ফালতু বই পড়ি, যদিও আমি ফালতু পোস্ট করি, যদিও আমি দাড়ি রাখা বিপদজনক মানুষ তাই আমার কাছ থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ আপনি প্রকাশ্য ঘষণা করে অনেক উপরে রেছেন।

দেখুন বাড়ি বা গাড়ি টা আমার নিজের নয়। আমি কখনও গাড়ি, বাড়ি, জমি করবো না। পকেটে যে কটা থাকে বাজার করি। পরিবার নিয়ে খাই। ব্যস শেষ।
আপনার পকেটে টাকাটা সম্ভবতো আলাদ্দিনের চেরাগের দৈত্য এনে দেয়।

সমাজের জন্য কিছু এখনও করি নাই। কিন্তু ভালো কিছু করার ইচ্ছা আছে।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো। আমি অতি তুচ্ছ মানুষ সমাজের জন্য বড় বড় চিন্তা করা আমার পোষায় না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.