নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব?
তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পূর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর?
তাঁরা বললেন, না ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে?
সবাই বললেন, না।
তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমারও আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, যে যার উপাসনা করত সে যেন তার অনুসরণ করে।
তাই তাদের কেউ সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর অবশিষ্ট থাকবে শুধুমাত্র এ উম্মাহ, তবে তাদের সাথে মুনাফিকরাও থাকবে।
তাঁদের মাঝে এ সময় আল্লাহ্ তা’আলা শুভাগমন করবেন এবং বলবেনঃ “আমি তোমাদের রব।
তখন তারা বলবে, যতক্ষণ পযন্ত আমাদের রবের শুভাগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তার যখন শুভাগমন হবে তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব।
তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা’আলা আগমন করবেন এবং বলবেন, “আমি তোমাদের রব।”
তারা বলবে হ্যাঁ, আপনই আমাদের রব।
আল্লাহ তা’আলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতুপথ (পুলসিরাত) স্থাপন করা হবে। রাসূল গণের মধ্যে আমিই সবার আগে আমার উম্মত নিয়ে এ পথ অতিক্রম করব। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না।
আর রাসূলগণের কথা হবেঃ ইয়া আল্লাহ্ রক্ষা করুন, রক্ষা করুন।
আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সাদান কাঁটার মতো। তোমরা কি স’দান কাঁটা দেখেছ?
তারা বলবে, হ্যাঁ দেখেছি।
তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে সাদান কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জনানে না। সে কাঁটা লোকের আমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু রোক ধ্বংস হবে আমলের কারণে। আর কারোর পায়ে যখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত হবে, তারপর নাজাত পেয়ে যাবে। জাহান্নামীদের থেকে যাদের প্রতি আল্লাহ্ পাক রহমত করতে ইচ্ছা করেবন, তাদের ব্যাপারে ফিরিশতাগণকে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহর ইবাদত করত, তাদের যেন জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হয়। ফিরিশতাগণ তাদের বের করে আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেওয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বনী আদমের সব কিছুই গ্রাস করে ফেলবে।
অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তাদের উপর ’আবে-হায়াত’ ঢেলে দেওয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। এরপর আল্লাহ্ তা’আলা বান্দাদের বিচার কাজ সমাপ্ত করবেন। কিন্তু একজন লোক জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তার মুখমন্ডল তখনও জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যাক্তি।
সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম থেকে আমার চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়া আমাকে বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে যন্ত্রনা দিচ্ছে।
তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবেন না তো?
সে বলবে, না আপনার ইজ্জতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত আল্লাহ তা’আলাকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ্ তা’আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের দিক ফিরিয়ে দিবেন। এরপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৗন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা সে চুপ করে থাকবে।
তারপর সে বলবে, হে আমার রব! আপনি জান্নাতের দরজার কাছে পৌছে দিন।
তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না বলে তুমি কি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দাওনি?
তখন সে বলবে, হে আমার রব! তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাই না।
আল্লাহ তাতক্ষণিক বলবেন, তোমার এটি পুরন করা হলে তুমি এ ছাড়া কিছু চাইবে না তো?
সে বলবে না, আপনার ইজ্জতের কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। এ ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযাযী অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতি দেবে।
সে যখন জান্নাতের দরজায় পৌঁছবে তখন জান্নাতের অনাবিল সৌন্দর্য ও তার আভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি ও আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তা’আলার ইচ্ছা করবেন, সে চুপ করে থাকবে।
এরপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও!
তখন পরাক্রমলালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কি আশ্চয! তুমি কত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অীঙ্গকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, তোমাকে যা দেওয়া হয়েছে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না?
তখন সে বলবে, হে আমার রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না।
এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন। এরপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি তার চাওয়ার আকাংখা ফুরিয়ে যাবে। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও, ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাংখা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ বলবেনঃ এ সবই তোমার, এ সাথে আরো সমপরিমাণ (তোমাকে দেওয়া হল)।
সূত্র :
সহীহ বুখারী : (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) হাদীস নাম্বার : ৭৬৯ এবং আন্তর্জাতিক হাদীস নাম্বার : ৮০৬
ঘোষণ :
শিরনামে "গল্প" বলতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতৃক বর্ননাকৃত ঘটনাকে বুঝানো হয়েছে।
ছবি : সংগৃহীত
=================================================================
হাদীসের গল্প : ০০১ : জাস্সা-সাহ ও দাজ্জাল
হাদীসের গল্প : ০০২ : দোলনায় কথা বলা তিন শিশু
হাদীসের গল্প : ০০৩ : তিন যুবকের গল্প
হাদীসের গল্প : ০০৪ : যামিনদার হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট
হাদীসের গল্প : ০০৫ : খাযির (আঃ) ও মুসা (আঃ) এর ঘটনা
হাদীসের গল্প : ০০৬ : মি’রাজ
হাদীসের গল্প : ০০৭ : কিয়ামতের দিন
হাদীসের গল্প : ০০৮ : নবীজির পানি পান করারনো ঘটনা
হাদীসের গল্প : ০০৯ : নবীজির দুধ পান করারনো ঘটনা
=================================================================
২| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার গল্পটি শেয়ার করার জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ।
কে প্লাস দিলো তা বুঝবার তরিকা কী?
১২ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৫২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
প্লাস কেউ দিলে প্লাস চিহ্নের বামপাশে সংখ্যা উঠে।
সেই সংখ্যায় ক্লিক করলেই কে কে প্লাস দিয়ে তার তালাকা দেখা যায়।
৩| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৬:০৭
কামাল৮০ বলেছেন: এতো দিন জানতাম আল্লাহ নিরাকার।আজকে বুঝলাম আল্লাহর মুখ আছে এবং আমাদের মতো হাসে।
১২ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
হা হা হা
জ্বী আল্লাহ নিরাকার। কারণ আপনার আমার দৃষ্টি আল্লাহ দর্শন যোগ্য নয়।
হয়তো কেয়ামত পরবর্তীতে আমাদের চোখে সেই যোগ্যতা দান করা হবে।
আল্লাহ আকার সম্পর্কে আর নানান তথ্য আছে হাদিসে।
৪| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১০:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: ভালো লাগলো।
১২ ই আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১২:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সম্ভবত এ হাদিসগুলোর পরেই আসবে বান্দারা কীভাবে পুলসিরাত পার হবে তার বর্ণনা। সেই সাথে এও থাকবে, পুলসিরাত পারের আগে আল্লাহ মুঠি ভরে বান্দাদের বেহেশতে নিক্ষেপ করবেন। পাপীদের মধ্যে যারা অবশিষ্ট থাকবে, তাদেরকেই পুলসিরাত পার হতে হবে। যারা পার হতে পারবে, তারা বেহেশতে যাবে। বাকিরা দোজখে। এ বর্ণনা আমি সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম উভয় হাদিস শরীফেই পড়েছি।
সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আকারের চাইতেও বহুগুণ বড়ো হওয়ার কথা আল্লাহর অবয়ব। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পুরোটা জুড়েই মহান সৃষ্টিকর্তার অবস্থিতি। তাকে দর্শন করা মানে তিনি কোনো এক স্থানে আবির্ভুত হবেন, তার মাথার উপরে বিশাল ব্যাপৃত আকাশ, মহাশূন্য। অবয়বে তিনি কি এত ক্ষুদ্র হতে পারেন? তাঁর চেহারা কীসের মতো হবে, কোনো আইডিয়া আছে?
১২ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
আল্লাহর আকার আকৃতি নিয়ে হাদিস আর কোরআন থেকে বেশ কিছু জিনিস পুরিষ্কার পাওয়া যায়। তবে সেটা গোটা কোনো বিষয় নয়। বরং খন্ডত চিত্র। আসলে আল্লাহর আকৃতি আর দর্শন সম্পর্কে সঠিক কিছু বলার কোনো উপায় নেই।
ধরুন আমাদের পায়ের কাছ যে ছোট পিপড়াটি আছে সেটি হয়তো আমার আকার সম্পর্কে সামান্য ধারনা করতে পারে। কিন্তু আমার শরীরে থাকা অসংখ্য আনুবিক্ষণীক জীবকি কোনো ভাবেই আমার আকার বা অস্তিত্ব বা কাঠামো সম্পর্কে থারনা করতে পারবে?
৬| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৪৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সঠিক ও সত্য পথে চলার তৌফিক দান করুন।
১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৪৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
আমিন।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
৭| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৪৮
আমি তুমি আমরা বলেছেন: পোস্টে ভাল লাগা রইল।
১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৫০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
শুকরিয়া
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১২:৩৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
সামুতে মাইনাস দেয়ার অপশন না থাকাতে সোনাগাজী সাহেব এই পোস্টে প্লাস দিয়েছেন।
প্লাসটিকে মাইনাস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ সোনাগাজী সাহেবকে।