নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার খান জাহান আলী মাজার থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত একটি পুরাকীর্তি এই জিন্দা পীর মসজিদ। এখানে জিন্দা পীরের মাজার ও মসজিদ পাশাপাশি অবস্থিত।
বাগেরহাটের খান জাহান আলী মাজার এর পশ্চিম পাশের রাস্তা ধরে এক কিলোমিটার এগিয়ে গেলে ঠিক রাস্তার পাশেই এই জীন্দা পীর মসজিদ ও মাজারটি দেখতে পাওয়া যায়। জিন্দাপীরের মাজার ও মসজিদ একই প্রাচীরের বেষ্টনির ভিতরে অবস্থিত। একগম্বুজ বিশিষ্ট মধ্যযুগীয় এই ছোট্ট মসজিদটি জিন্দা পীর মাজার চত্তরের উত্তর-পশ্চিম কোনায় অবস্থিত।
ইটের তৈরি মসজিদটি বর্গাকৃতির। মসজিদটির বাইরের কোণার অষ্টভুজ বুরুজসহ প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ৭.৬২ মিটার এবং ভেতরে প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ৪.৮৮ মিটার। দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় ১.৫২ মিটার।
মসজিদের পূর্ব দিকের দেয়ালে তিনটি খিলান যুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। মাঝের প্রবেশপথটি পার্শ্ববর্তী অন্য দুটি প্রবেশপথের চেয়ে বড়। এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ দিকে আরো একটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে।
পশ্চিমের কিবলা দেওয়ালে তিনটি মেহরাব আছে। মাঝের মূল মেহরাবের দেওয়ালের বাইরের দিকে আয়তাকার অভিক্ষেপসহ একটি খিলান মিহরাব আছে। মূল মিহরাবটি পুরনো পোড়ামাটির ফলকে অলংকৃত।
এক সময় মসজিদের ইটের তৈরি একমাত্র গম্বুজটির উপরের অংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এমনকি মসজিদের অলংকৃতি কার্নিসও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। জড়াজির্ণ হয়ে পরা মসজিদটি এবং তার গম্বুজটি ২০০২ সালে সংস্কার করা হয়। মেরামতের সময় মসজিদটি এটির প্রাচীনতা অনেকাংশেই হারিয়েছে।
মসজিদের চার কোণার অষ্টাভুজাকৃতির মিনার বা বুরুজগুলিতে নিয়মিত বিরতীতে আলঙ্কারিক বন্ধনী আছে।
মসজিদের নির্মান রীতি ও দেয়ালে পোড়াটির চিত্র খান-ই-জাহানী রীতির সাথে মিলে না। অনেকে মনে করেন এই মসজিদটি খানজাহান আলীর পরবর্তীকালের। সম্ভবতো মসজিদটি হোসেন শাহ বা তার পুত্র নুসরত শাহর আমলে নির্মিত হয়েছিল।
জিন্দাপীরের প্রকৃত নাম নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে তার নাম আহমদ খা, কেউ কেউ বলেন আহমদ আলী, আবার অন্যেরা মনে করেন তার নাম ছিল সৈয়দ আহমদ শাহ ওরফে জিন্দাপীর। মসজিদের প্রাঙ্গনে বেশকিছু পুরনো কবর আছে। কোন কবরেই কোনো নামফলক না থাকায় এসব কবর সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে কিছু জানা যায় না। মাযারের উত্তর পাশের পাকা কবরটিকে জিন্দা পীরের পুত্রের কবর বলে মনে করা হয়।
জনশ্রুতি আছে- একজন বুজুর্গ ব্যাক্তি এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন যিনি কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা অবস্থায় একদিন অদৃশ্য হয়ে যান। একারণে মনে করা হয়ে থাকে যে ঐ ব্যাক্তি এখনও জীবিত আছেন আর তাই তাঁকে জিন্দা পীর বলা হয়। মনে রাখতে হবে এইসব গল্পের কোনো বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থাকে না।
ছবি তোলার তারিখ : ২৪/১১/২০১৪ইং
অবস্থান : বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 22°39'42.4"N 89°45'14.4"E
তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া ও উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল
=================================================================
মসজিদ দর্শন : ০১ : মহজমপুর শাহী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০২ : ষাট গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৩ : বিবি বেগনী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৪ : চুনাখোলা মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৫ : নয় গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৬ : জিন্দা পীর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৭ : সিঙ্গাইর মসজিদ
=================================================================
আরো দেখুন -
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ১ম পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ২য় পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ৩য় পর্ব
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০১
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০১
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০৩
=================================================================
০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ রাত ১:১৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ,জিন্দাপীর মসজিদ ছাড়াও আরো অনেক দর্শনীয় স্থাপনা বিভিন্ন সময় দেখার সুযোগ হয়েছে। আপনি অত্যন্ত সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ।
০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন, ঐ এলাকায় অনেক পুরনো দর্শনীয় স্থাপনা রয়েছে। আমি অল্প কিছু দেখেছি।
৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:০৯
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ষাট গম্বুজের ছাদে উঠেছেন কখনও? কিংবা ষাট গম্বুজ লাগোয়া দিঘিতে গোসল বা সাতাঁর কেটেছেন?
০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি ৩ বার গিয়েছি ষাট গম্বুজ মসজিদে। প্রথমবার বেশ ছোট ছিলাম, সম্ভবতো ৭-৮ বছরের। কোনোবারই ছাদে উঠার সুযোগ হয়নি।
আমি সাঁতার জানি না। আর ঐ এলাকায় থাকিনি কখনোই, তাই গোসলও করা হয়নি।
খানজাহান আলীর মাজারের দিঘিতে গোসল করতে দেখেছি অনেককে।
৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: জিন্দাপীর বলে আসলে কেউ নেই।
সব বানোয়াট।
০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এই জিনিসটা বুঝতে আপনার এতো সময় লাগলো?
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৫৫
গরল বলেছেন: দেখেই বুঝা যায় মূঘল আমলের স্থাপত্য এবং সেই সময় এটা তৈরী করতে অনেক টাকাই খরচ করতে হয়েছে। অতএব জমিদার শ্রেণীর কেউ ছাড়া এটা তৈরী করা সম্ভব হবে না। ভালো বিষয় যে এটা সংরক্ষিত, দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা।