নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাণ্ডবরা একচক্রা নগরে সেই ব্রাহ্মণের ঘরে বাস করতে লাগলেন। তাঁরা ভিক্ষা করে যা আনতেন, কুন্তী সেই সমস্ত খাদ্য দুই ভাগ করতেন, এক ভাগ ভীম একাই খেতেন, অন্য ভাগ অপর চার ভাই ও কুন্তী খেতেন। এভাবে অনেকদিন পার হল। একদিন যুধিষ্ঠিররা ভিক্ষা করতে গেছেন। শুধু ভীম আর কুন্তী ঘরে আছেন, এমন সময় তাঁদের আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণের ঘর থেকে আর্তনাদ শুনতে পেলেন। কুন্তী ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখলেন, ব্রাহ্মণ তাঁর স্ত্রী পুত্র ও কন্যার সঙ্গে নিজেদের মৃত্যু নিয়ে আলাপ করেছেন।
কুন্তী ব্রাহ্মণের কাছে তাদের বিলাপ করার কারণ জানতে চাইলেন। তখন ব্রহ্মণ জানালেন তাদের নগরের কাছে বক নামে এক মহাশক্তিশালী রাক্ষস বাস করে, সেই এদেশের রাজা। কারণ দেশের প্রকৃতরাজা নির্বোধ ও দুর্বল। বক রাক্ষস এই দেশ রক্ষা করে। তার মূল্য হিসেবে প্রতিদিন একজন লােক প্রচুর খাদ্য ও দুইটি মহিষ সঙ্গে নিয়ে যায়। বক সেই মানুষ মহিষ আর খাদ্য খায়। আজ ব্রাহ্মণের যাবার পালা, দরিদ্র ব্রাহ্মণ স্ত্রী পুত্র কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে রাক্ষসের কাছে যাবে ঠিক করেছে।
কুন্তী ব্রাহ্মণকে আশ্বস্ত করে বলে যে তাদের পরিবর্তে ভীম যাবে সেই রাক্ষসের কাছে।
পরদিন মার আদেশে ভীম রাক্ষসের খাবার-দাবার নিয়ে রাক্ষসের বনে গেলেন এবং রাক্ষসকে নাম ধরে ডাকতে লাগলেন। বক রাক্ষস দৈড়ে এসে দেখে ভীম বসে বসে রাক্ষসের খাবার গুলি নিজে খেয়ে ফলছে। তাই দেখে রাক্ষস রেগে গিয়ে ভীমের পিঠে আঘাত করলো, কিন্তু ভীম গ্রাহ্য করলেন না। রাক্ষস একটা গাছ তুলে নিয়ে এসে আক্রমণ করতে এল। ভীম খাওয়া শেষ বাম হাতে রাক্ষসের গাছটি ধরে ফেললেন। তারপর দুজনের মধ্যে লড়াই শুরু হলো। ভীম বক রাক্ষসকে মাটিতে আছড়ে ফেলে গলা চিপে ধরে হত্যা করলেন।
রাক্ষসের চিৎকার শুনে তার আত্মীয় পরিজন ভয় পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। ভীম তাদের বললেন, তােমরা আর কখনও মানুষদের অত্যাচার করবে না। যদি করো তবে তােমাদেরও প্রাণ যাবে। রাক্ষসরা ভীমের আদেশ মেনে নিলে। তারপর ভীম রাক্ষসের মৃতদেহ নগরের প্রবেশ পথে ফেলে দিয়ে ব্রাহ্মণের ঘরে ফিরে গেলো।
নগরবাসীরা আশ্চর্য হয়ে ব্রাহ্মণের কাছে জানতে চাইলো সে কি করে রাক্ষসটিকে হত্যা করেছে। তখন ব্রহ্মণ তাদের জানালো যে একজন মন্ত্রসিদ্ধ মহাত্মা দয়া করে আমার পরিবর্তে রাক্ষসের কাছে অন্ন নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনিই তাকে বধ করে সকলের উপকার করেছেন।
====================================================================
বিশেষ ঘোষণা : হিন্দুদের ধর্মীয় সাহিত্যের মহাকাব্য মহাভারতের কথা আমরা সকলেই জানি। আমি এটিকে পড়ছি একটি কল্পকাহিনীর সাহিত্য হিসেবে, ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নয়। আমি মনে করি "যার যার বিশ্বাস তার তার কাছে। অন্যের বিশ্বাস বা ধর্মানুভূতিতে খোঁচা দেয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।" এই গ্রন্থে প্রচুর কল্পকাহিনী রয়েছে। সেগুলিই আমি এই সিরিজে পেশ করবো। যারা মহাভারত পড়েননি তারা এখান থেকে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি জেনে যাবেন। মনে রাখতে হবে আমার এই পোস্ট কোনো ভাবেই ধর্মীয় পোস্ট নয়।
লেখার সূত্র : কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত : অনুবাদক - রাজশেখর বসু।
ছবির সূত্র : এই সিরিজে ব্যবহৃত সকল ছবি বিভিন্ন সাইট থেকে সংগৃহীত।
=================================================================
মহাভারতের গপ্পো : এক নজরে সকল পর্ব
=================================================================
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সহী, সঠিক বলেছেন।
২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৫
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ট একটি বই মহাভারত। মহাভারতের সাথে তুলনা করার মতো গল্প উপন্যাস আর আছে বলে জানা নেই।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: রূপকথার সাথে সাথে মহাভারতে এতো এতো বৈচিত্র এবং নানান ধরনের বিষয়বস্তু কাহিনীর এবংকাহিনীর ভিতরে এতো বৈচিত্র রয়েছে যা অন্য কোথাও পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আসলেই রূপকথার মিশেল।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: পুরটাই রূপকথা।
৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:১৩
সোবুজ বলেছেন: পড়লাম এবং জানলাম।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৫
জুল ভার্ন বলেছেন: মহাভয় আমিও পড়েছি উপন্যাস হিসেবে।
২৬ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি এখনো পড়ছি।
৬| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:০৬
বিটপি বলেছেন: ভীম কি একজন সুপার হিরো ছিল? নইলে মানুষ হয়ে সে কিভাবে এত এত রাক্ষস মেরে বেড়ায়? রাক্ষসীকে বিয়ে করে আবার রাক্ষস জন্ম দেয়? ধৃতরাষ্ট্রের ১০০ পুত্রকে সে একাই মেরেছিল। তার মানে হল, তাকে কেউ পরাজিত করতে পারতনা। এরকম একজন থাকলে তো যুদ্ধ এমনি এমনিই বিজয় হবার কথা। তাহলে কুরু যুদ্ধে পাণ্ডবেরা এত শঠতা করল কেন?
২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি যতটুকু পরেছি তাতে মনে হয়েছে বেশীর ভাগ চরিত্রেরই সুপারপাওয়ার আছে। এবং প্রত্যেকেরই কিছু কিছু দূর্বলতার রয়েছে। ফলে সবসময় কিছু না কিছু ব্যালেন্স থেকেছে।
৭| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: রামায়ক বেদ মহাভারত ইত্যাদি আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে একসময় মানুষ কত বড় নির্বোধ ছিলো।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কাউকে কাউকে হয়তো সাহায্য করেছে, সকলকে না।
বরং আমার কাছে মনে হয় রূপকথা পড়ে সেই সময়ের মানুষের বুদ্ধি সম্পর্কে ধারনা করার চেষ্টাটাই নির্বুদ্ধিতা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৩
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: অত্যাচারি যত শক্তিধর কিংবা ক্ষমতাশালীই হোক না কেন - একসময় তার ক্ষমতার অবসান হয় বা অন্যভাবে বললে সকল কিছুরই শেষ আছে তা শক্তি কিংবা ক্ষমতা । তা সে মহাভারত কিংবা বাস্তবতা যাই হোক না কেন।