নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প (শেষ অংশ)

১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:০২

আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা ফরেস্ট গাম্প (প্রথম অংশ) এবং আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা ফরেস্ট গাম্প (দ্বিতীয় অংশের) পর থেকে --




ফরেস্টের কাছে খবর আসে ওর মা অসুস্থ, তার ক্যানসার ধরা পড়েছে। ফরেস্ট সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে তার মায়ের কাছে চলে যায়। কিছুদিন পর ওর মা মারা যায়। এরপর ফরেস্ট আর চিংড়ি ব্যবসায় ফিরে যায় না। ওর বাড়ির কাছে ফরেস্ট একটি মাঠের ঘাস কাটার চাকুরির অফার পায়। যদিও ফরেস্টের টাকার সমস্যা ছিলো না তবুও সে বিনা বেতনে সেই ঘাস কাটার চাকরিটি নিয়ে নেয়। কিছুদিন পর লেফটেন্যান্ট ড্যানের চিঠি আসে ফরেস্টের কাছে। চিঠিতে জানা যায় লেফটেন্যান্ট ড্যান ওদের ব্যবসার আয়ের সব টাকা অ্যাপেল মোবাইল কোম্পানিতে ইনভেস্ট করেছে। যেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে লাভ হয়েছে। বিশাল সেই লাভের আংশ ফরেস্টের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। ফরেস্ট সেই টাকা থেকে কিছু টাকা প্রদান করে একটা হাপাতালে। কিছুটাকা দিয়ে একটি চার্চ তৈরি করে। আরো নানান রকম সেবামূলক যায়গায় ফরেস্ট তার টাকা দান করে। আর তার প্রিয় বন্ধু বুবার মায়ের কাছেও একটা মোটা অংকের টাকা পাঠিয়ে দেয়। সেই টাকায় তাদের ভাগ্য ফিরে যায়।




এতো কিছুর পরেও ফরেস্টের কোনো বন্ধু ছিলো না। ফরেস্টে জেনিকে খুব মিস করতো। হঠাৎ একদিন জানি ফরেস্টের কাছে ফিরে আসে। ফরেস্ট খুব খুশী হয়, সে সারাদিন জেনির সাথে গল্প করত। জেনি ফরেস্টকে একজোড়া নাইকি জুতা উপহার দেয়। একদিন ফরেস্ট জেনিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু জেনি বলে ফরেস্ট জেনির চেয়ে অনেক ভালো কোনো মেয়েকে ডিজার্ভ করে। এই কথা শুনে ফরেস্টের খুবই মন খারাপ হয়ে যায়। সেদিন রাতে জেনি ফরেস্টের রুমে আসে এবং এক সময় দুজনে মিলিত হয়। পরদিন সকালে ফরেস্টকে কিছু না জানিয়ে জেনি আবারও চলে যায়।




জেনি কিছু না বলে চলে যাওয়ার পরে ফরেস্ট আবার একা হয়ে যায়। কোনো কিছুতেই মন বসতোনা তাঁর। মন খুবই খারাপ হয়ে থাকে সব সময়। এসবের মধ্যে হঠাত করেই ফরেস্টের খুব দৌড়াতে ইচ্ছে করে। ফরেস্ট কোনো কিছু না ভেবেই দৌড়াতে শুরু করে। তখন তার পরনে ছিল জেনির দেয়া সেই নাইকির জুতা জোড়া। দৌড়াতে ওর খুবই ভালো লাগছিল। সেদিন ফরেস্ট সারাটাদিন দৌড়াতে লাগলো। ফরেস্ট কোনো কিছু না ভেবেই, উদ্যেশ্যহীন ভাবে দৌড়তে থাকলো। শুধু মাত্র ঘুমানো, খাওয়া আর টয়লেটে যাওয়ার সময়টুকু বাদে মাসের পর মাস দৌড়ে যাচ্ছিল। এই রহস্যময় দৌড়ের জন্য ফরেস্ট আবার ফেমাস হয়ে যায়। মিডিয়া গুলো ওকে কাভার করতে থাকে। সবাই মনে করত ফরেস্টে দৌড়ানো পিছনে কোন একটা উদ্দেশ্য আছে অথবা ফরেস্ট কোনো প্রতিবাদ জানানোর জন্য এমন দৌড়চ্ছে। অথচো কেউ জানতো না ফরেস্টের এই দৌড়ানোর পেছনে কোনো উদ্দেশ্যই নেই। ওর দৌড়তে ইচ্ছে হচ্ছিল বলেই ও দৌড়াচ্ছিল।




এক সময় দেখা যায় ফরেস্টের সাঙ্গে আরো অনেকেই দৌড়চ্ছে। এইভাবে একটানা তিন বছর দুই মাসেরও বেশী সময় দৌড়ানোর পরে ফরেস্ট হঠাৎ থেমে যায়। দৌড়ানো বন্ধ করে ফরেস্ট ওখান থেকে বাড়ি চলে আসে। বাড়ি ফেরার পরে ফরেস্টে জেনির একটি চিঠি পায়। জেনি ফরেস্টকে চিঠিতে তার ঠিকানা দিয়ে দেখা করতে বলেছে। জেনির বাড়িতে যাওয়ার জন্যই এখন ফরেস্টে এই বাস-স্ট্যান্ডে বসে আছে বাসের অপেক্ষা। ফরেস্টের পায়ে জেনির দেয়া সেই জুতা যা একটানা দৌড়ের ধকলে ছিড়ে ফেটে গেছে।




ফরেস্টের পাশে বসা মহিলা ঠিকানাটা দেখে জানাই এই ঠিকানাটা কাছেই, ফরেস্ট হেঁটেই চলে যেতে পারবে। এটা শোনার পর ফরেস্ট ওখান থেকে দৌড়ে চলে যায় জেনির বাসায়। ওখানে যেয়ে দেখে জেনি একটা হোটেলে চাকরি করে। জেনির একটি ছোট ছেলে হয়েছে। ছেলেটির নাম জুনিয়ার ফরেস্ট গাম্প। অর্থাৎ বাচ্চাটি আসলে ফরেস্টেরই ছেলে।




জেনি ফরেস্টকে জানায় তাঁর একটা কঠিন রোগ হয়েছে, সে আর খুব বেশীদিন বাঁচবে না। তখন ফরেস্ট জেনি আর তার ছেলেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। জেনি রাজি হয় এবং ফরেস্টের বাড়িতে উঠে আসে। একদিন জেনি ফরেস্টকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। ফরেস্ট সাথে সাথে রাজি হয়ে যায়। ছোট একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওদের বিয়ে হয়ে যায়। কিছুদিন পরে জেনি মারা যায়।




ছোটবেলায় ফরেস্ট আর জেনি যে গাছে চরে খেলা করতে সেই গাছের নিচে ফরেস্ট জেনিকে কবর দেয়। ফরেস্ট প্রতিদিন সেই কবরের কাছে এসে একা একা জেনির সাথে কথা বলতো।




ফরেস্ট তার ছেলেকে খুব ভালবাসত। ফরেস্ট তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তী করিয়েদেয়। স্কুলের প্রথমদিন সে তার ছেলেকে স্কুলের বাসে তুলে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে, এমনি ভাবেই ফরেস্টের মাও একদিন তাকে স্কুল বাসে তুলে দিয়ে ছিলেন। স্কুল বাসটি সেখানে উপস্থিত হলে জুনিয়ার ফরেস্ট স্কুল বাসে উঠে চলে যায়, আর তখন ফরেস্ট আবার এক হয়ে যায়.....

----- সমাপ্ত -----


বলিউড অভিনেতা আমির খান এই ফরেস্ট গাম্প সিনেমার একটি বলিউড ভার্সন তৈরি করার ঘোষনা দিয়েছিলেন। সেটির নাম রাখা হয়েছে "Lal Singh Chaddha" (লাল সিং চাড্ডা), সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করবেন আমির খান।


মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৯

জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের জীবনে নেওয়া সিদ্ধান্তরাই যে আমাদের জীবনের গতিপথ ঠিক করে দেয়, তার চমৎকার নিদর্শন এই ছবিটি।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: খুব ভালো বলেছেন দাদা।
সিনেমা দেখে মনে হেছে আমার - ফলাফলের আশা না করে কাজ করতে হবে।

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০১

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: সবগুলো পর্ব পড়েছি।
এই সিনেমার নায়কের গতীময় জীবন বড় ভালো লেগেছে।

সারা সিনেমা জুড়েই নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়েও থেমে না যাওয়া।

এবং একটি সফল জীবন পরিক্রমায় হেঁটে যাওয়া।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই মন্তব্যের জন্য।

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমি গাম্পের মতো ঢাকা শহরে দৌড়াতে চাই।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঢাকা শহরে সেই ভাবে দৌড়ানের উপায় নাই।
তবে প্রতিবছর একটি বিশেষ দিনে বেশ বড় একটা হাঁটার আয়োজন করা হয় ঢাকা।

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০০

স্প্যানকড বলেছেন: দেখা হয় নাই তবে টম হ্যাংক্স এর " Cast away " দেখেছি। আমার প্রিয় ছবির ভেতর একটি। না দেখে থাকলে দেখে নিবেন প্লিজ। ভালো থাকবেন।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমার সর্বাধিকবার দেখা সিনেমা গুলির মধ্যে Cast Away একটি।

৫| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভিয়েতনামে যুদ্ধে দুই পা হারালো তার কথা তো কিছু বললেন না? একসাথে যুদ্ধ গেলো বেঞ্জামিন। সে যুদ্ধে মারা গেলো তার কথাও কিছু বললেন না। তবে দর্শক জেনির মৃত্যুতে ভীষন কষ্ট পেয়েছে।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনি আগে দুটি পোস্টে মন্তব্য করেছে। নিশ্চই ২য় অংশের টিতে আপনি মন্তব্য করলেও সেটি পড়েন নি। সেই অংশেই তাদের দুই জনের কথা আছে।

৬| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:১০

কাছের-মানুষ বলেছেন: তিনটি পর্বই পড়লাম। জেনির মৃত্যুতে আমি কষ্ট পেলাম। কষ্টের ছবি আমার দেখতে ভাল লাগে না, আপনার পোষ্ট পড়ে তৃপ্ত হলাম।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ‌এটি ঠিক কষ্টের ছবি না। না চাইতেই অনেক কিছু পাওয়া এবং অনেক চাওয়অর পরেও একজনে সেই ভাবে কাছে না পাওয়ার ছবি। একটি মূলত কমেডি-ড্রামা সিনেমা।

৭| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৭

বিটপি বলেছেন: জুলভার্নের মন্তব্যে কিছুটা আঁচ করেছি যে এই সিনেমার ভালো লাগার ব্যাপারটি ঠিক কোথায়। সেই হিসেবে বলা চলে এটা একটা ফ্যান্টাসি জনারের সিনেমা। সব মানুষের ভাগ্য ফরেস্টের মত হয়না।

এই সিনেমায় গল্প বলার ব্যাপারটা বেশ বোরিং লেগেছে। দেখা যাচ্ছে ফরেস্ট একটাই গল্প বলে যাচ্ছে কিন্তু তার গল্প এক এক সময় একেকজন শুনছে। এই ব্যাপারটা দিয়ে ডিরেক্টর আসলে কি দেখাতে চায়?

টম হ্যাংকস অভিনীত আমার দেখা সেরা সিনেমা হল 'কাস্ট এ্যাওয়ে'। যার কোন জবা নেই। এছাড়াও টার্মিনাল, দা ভিঞ্চি, ফিলিপস এবং গ্রীন মাইল কেবল মাত্র তার অভিনয়ের গুণে উপভোগ্য সিনেমা হয়েছে।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সব মানুষের ভাগ্য ফরেস্টের মত হয়না।
একেবারে সঠিক মন্তব্য।

কাস্ট এ্যাওয়ে অনেকবার দেখছি।

৮| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩০

রানার ব্লগ বলেছেন: ভালো ভালো মুভি গুলোকে নষ্ট করার তালে থাকে বলিউড !!!!

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কিছু কিছু রিমেইক মুভি কিন্তু বেশ ভালো করে ওরা।

৯| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:১৪

হাসান রাজু বলেছেন: বলিউড কখনো ভালো রিমেক করেছে এমন মনে পড়ছে না।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কিছুদিন আগের ছবি "বদলা"টা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

১০| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৮

হাসান রাজু বলেছেন: আমার পছন্দের দুটি সিনঃ

দৌড় শেষে যখন ফরেস্ট গাম্প বলে, আমি ক্লান্ত। আমি এখন বাড়ি যাব।
ছেলেকে দেখার পর সে যখন জানতে চায়, সে কি স্মার্ট?

খুব ছোট দুটি সিন কিন্তু আমাকে জাস্ট নাড়িয়ে দিয়েছিল।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সিন দুটির কথা আমারও মনে আছে।

১১| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৪২

হাসান রাজু বলেছেন: ফরেস্ট গাম্পের দৌড়টা আসলে উদ্দেশ্যহীন না। যেহেতু সে খুব ভালো ব্যাখ্যা করতে পারে না (!!!) তাই সিনামায় তার মুখে এর কোন কারন ব্যাখ্যা করা হয়নি। কিন্তু পুরো সিনেমা জুড়ে বিভিন্ন যায়গায় তার মানসিক সীমাবদ্ধতা ভেঙ্গে ফেলতে দৌড়ের একটা সিম্বলিক ব্যাপার স্যাপার উপস্থাপন করা হয়েছে। যার শুরু ছিল জেনির রান ফরেস্ট রান থেকে শুরু।

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫২

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: হে, এইখানে সুযোগ আছে দর্শকেরতার নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করার। কে কিভাবে ফিল করলো তার উপরে নির্ভর করে সেই দর্শকের ব্যাখ্যা।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ সুন্দর এই মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.