নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৭

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩১



চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?

অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।

চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ ৯ থেকে ১৫ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। তারপর চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি ১৬ ও ১৭তম পর্বে। ১৮তম পর্বে ছিলো ইন্দু নামের কবিতাংশ গুলি। আর সব শেষে ১৯ মত পর্বে ছিল চাঁদের আরেক নাম বিধু সংক্রান্ত কবিতাংশ। সব মিলিয়ে ১৯ পর্বে ১৮১টি চন্দ্র পংক্তি দিয়েছে।
এবার কাজী নজরুল ইসলাম তার কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদেকে তুলে এনেছেন তার খোঁজ করলাম। প্রথম ১৪টি পর্বে চাঁদ নিয়ে কি কি পেয়েছি সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্রকে নিয়ে কবিতাংশ ১৫ ও ১৬ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। এবার চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি দেখুন।

০১।
তুমি যখন এসেছিলে তখন আমার ঘুম ভাঙেনি
মালা যখন চেয়েছিলে বনে তখন ফুল জাগেনি।।
আমার আকাশ আঁধার কালো
তোমার তখন রাত পোহালো
তুমি এলে তরুণ-আলো তখন আমার মন রাঙেনি।।
ওগো রুদ্ধ ছিল মোর বাতায়ন পূর্ণ শশী এলে যবে,
আঁধার-ঘরে একেলা জাগি হে চাঁদ আবার আসবে কবে।
আজকে আমার ঘুম টুটেছে
বনে আমার ফুল ফুটেছে
ফেলে যাওয়া তোমারি মালায় বেঁধেছি মোর বিনোদ-বেনী।।




০২।
কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন।
তার রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাঁচন।।
কালো মায়ের আঁধার কোলে
শিশু রবি শশী দোলে
মায়ের একটুখানি রূপের ঝলক স্নিগ্ধ বিরাট নীল–গগন।।
পাগলী মেয়ে এলোকেশী নিশীথিনীর দুলিয়ে কেশ
নেচে বেড়ায় দিনের চিতায় লীলার রে তার নাই কো শেষ।
সিন্ধুতে মা’র বিন্দুখানিক
ঠিকরে পড়ে রূপের মানিক
বিশ্বে মায়ের রূপ ধরে না মা আমার তাই দিগ–বসন।।



০৩।
দোলে প্রাণের কোলে প্রভূর নামের মালা।
সকাল সাঁঝে সকল কাজে জপি সে নাম নিরালা।।
সেই নাম বসন-ভূষণ আমারি
সেই নামে ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারি,
সেই নাম লয়ে বেড়াই কেঁদে
সেই নামে আবার জুড়াই জ্বালা।।
সেই নামরেই নামাবলী গ্রহ তারা রবি শশী দোলে গগন কোলে।
মধুর সেই নাম প্রাণে সদা বাজে,
মন লাগে না সংসার কাজে
সে নামে সদা মন মাতোয়ালা।।




০৪।
ফাগুন ফুরাবে যবে —
উঠিবে দীরঘ শ্বাস চম্পার বনে
কোয়েলা নীরব হবে।।
আমারে সেদিন যদি স্মরণে আসে
বেদনা জাগে ঝরা ফুল সুবাসে
আমার স্মৃতি যত ঝরা পাতার মত
ফেলিয়া দিও নীরবে।।
যবে বাসর নিশি ফুরাবে
রাতের মিলন-মালা প্রভাতে মলিন হবে;
সুখ শশী অস্ত যাবে —
আসিবে জীবনে তব বৈশাখী মলিন হবে;
লুটাবে পথের' পরে ভেঙে যাবে ঘর
সেদিন স্মরণে তব আসিবে কি তাহারে
গৃহহীন করিয়াছ যাহারে ভবে।।



০৫।
নাচে নটরাজ, মহাকাল।
অম্বর ছাপিয়া পড়ে লুটাইয়া আলো-ছায়ার বাঘ-ছাল।।
কালো সিন্ধু জলে তাথৈ তাথৈ রব
শুনি সেই নৃত্যের নাচে মহাভৈরব
বিষাণ মন্দ্রে বাজে মাভৈঃ মাভৈঃ রব
প্রাণ পেয়ে জেগে ওঠে মৃত কঙ্কাল।।
গঙ্গা তরঙ্গে অপরূপ রঙ্গে
ছন্দ জাগে সেই নৃত্য-বিভঙ্গে
জোছনা আশিস-ধারা ঝরে চরাচরে
ছাপিয়া ললাট শশী ভাল।।




০৬।
এ কি অপরূপ রূপের কুমার হেরিলাম সখি যমুনা কূলে,
তার এ সুনীল লাবনি গলিয়া গলিয়া ঢলিয়া পড়িছে গগন-মূলে ॥
যেন কমল ফুটেছে সখি, সহস্র-দল রূপে-কমল ফুটেছে,
রূপের সাগর মন্থন করি’ সখি চাঁদ যেন উঠছে। সখি গো —
কালো সে রূপের মাঝে হয়ে যায় হারা
কোটি আলো-রাধিকা-রবি, শশী, তারা,
প্রেম-যমুনার তীরে সই আমি রিবধি দেখি তারে,
দেখি আর চেয়ে রই।
আমি এই রূপ চেয়ে থাকি
সখি জনমে জনমে জীবনে মরণে এই রূপ চেয়ে থাকি।
ঐ মোহন কালোর গহন কাননে হারাইয়া যাক আঁখি ॥



০৭।
দ্বৈত : ওগো নন্দ দুলাল নাচে ছন্দতালে
স্ত্রী : মধু মঞ্জির বোলে মণি কুন্তল দোলে
পুরুষ : চন্দন লেখা শোভে চারুভালে॥
স্ত্রী : রস যমুনায় জাগে ঢেউ উতরোল
পুরুষ : ব্রজগোপিকার প্রাণে লাগে তারি হিল্লোল
দ্বৈত : রাস পূর্ণিমা রাতে শিখী নাচে সাথে সাথে
ফুল দোলে কুঞ্জেরই বকুল ডালে॥




০৮।
মহুয়া বনে বন-পাপিয়া
একলা ঝুরে নিশি জাগিয়া।।
ফিরিয়া কবে প্রিয় আসিবে
ধরিয়া বুকে কহিবে প্রিয়া।।
শুনি নীরবে, গগনে বসি’
কহ যে কথা বিরহী শশী,
তব রোদনে বঁধূ, এ মনে
যমুনা বহে কূল-প্লাবিয়া।।



০৯।
চৌরঙ্গী চৌরঙ্গী চৌরঙ্গী চৌরঙ্গী
চারদিকে রঙ ছড়িয়ে বেড়ায় রঙ্গিলা কুরঙ্গী॥
যে সকলের মন মাতায় কলকাতার চৌমাথায়
ওপারে যে ফিল্মের ঝিল্‌মিল্‌ আলোর দেয়ালি।
এপারে যে পথের ভিখারিনী চোখের বালি।
গোরা কালো সাহেব মেমে মন্দ ভালো বি.এ. এম.এ.
সবাই তাহার সঙ্গী।
যে দক্ষিণ হাত তুলি দক্ষিণা চায়
আলো দেয় রবি শশী, ফুল দেয় দখিনা বায়।
ওকি গোলাপ ফুল নারঙ্গি।
নুয়ে প’ড়ে আকাশ দেখে তাহার নাচের ভঙ্গী॥




১০।
ঘোর ঘন ঘটা ছাইল গগন
ভুবন গভীর বিষাদ মগন।।
নাহি রবি শশী নাহি গ্রহ তারা
নিখিল নয়নে শ্রাবণের ধারা
সৃষ্টি ডুবালো গো’ স্রোতের প্লাবন।।

আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।


=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০১, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০২, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৩, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৪
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৬, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৭, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৮
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৯, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১০ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১১ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১২
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৩ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৪, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১৬,


রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৯

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪০

হাবিব বলেছেন: পংক্তিগুলো অসাধারণ।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: শুকরিয়া প্রিয় হাবিব ভাই।

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



কবি নজরুল ইসলাম অনেক মননশীল মানুষছিলেন; তাই তিনি প্রকৃতির ভালোবাসাটুকু অনুধাবন করেছিলেন।

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



কবি নজরুল ইসলাম অনেক মননশীল মানুষ ছিলেন; তাই তিনি প্রকৃতির ভালোবাসাটুকু ও সৌন্দয্যটুকু অনুধাবন করেছিলেন।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৫৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: নজরুলের লেখা প্রচন্ড কঠিন। আমি সাহস করে পড়তে পারি না।

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভাইজান নজরুলের গল্প উপন্যাস গুলো পড়ুন। প্রথমে একটু কঠিন মনে হলেও- আস্তে আস্তে সহজ লাগবে।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: বেঁচে থাকলে আরো বছর ২-৩ পরে পড়বো ইনশাআল্লাহ

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:১৭

জিকোব্লগ বলেছেন:



@চাঁদগাজী,

এতোই যখন কমেন্ট ব্যান করা নিয়ে বাচ্চা ছেলের মত ভে ভে করছেন,
তো আমাকে কমেন্ট ব্যান করেছেন কেন ?

কমেন্ট ব্যান ওঠান , আমিও আপনার নিন্মমানের লেখার সমালোচনা করি,
দেখেন হজম করতে পারেন কী না !

আমি যদি খারাপ কমেন্ট করি, এডমিন উহা সরায়ে দিয়ে কমেন্ট-ব্যান করবেন, সাসপেন্ড করবেন,
ব্লগারকে কিছু করতে হবে না, এগুলো কমনসেন্স।

কী নিজের বেলায় মানতে কষ্ট লাগছে!

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:২৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গাজী সাহেবের জন্য মন্তব্য আমার পোস্টে এসে !!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.