নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৌলােমপর্বাধ্যায়
৪। ভৃগু-পুলােমা–চ্যবন-অগ্নির শাপমােচন
ব্রহ্মা যখন বরুণের যজ্ঞ করছিলেন তখন সেই যজ্ঞাগ্নি থেকে মহর্ষি ভৃগুর জন্ম হয়েছিল। ভৃগুর স্ত্রীর নাম পুলােমা। তিনি যখন গর্ভবতী ছিলেন তখন একদিন ভৃগু গেলেন স্নান করতে, ঠিক তখন এক রাক্ষস আশ্রমে এসে ভৃগুপত্নীকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। এই রাক্ষসের নামও ছিলো পুলােমা। অনেক আগে এই রাক্ষস ভৃগুপত্নী পুলােমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
ভৃগুর আশ্রমে এসে অগ্নিকে রাক্ষস বললে- "অগ্নি, সত্য বলো এই পুলােমা কার স্ত্রী? এই সুন্দরীকে পূর্বে আমি স্ত্রী হিসেবে বরণ করেছিলাম, কিন্তু ভৃগু অন্যায়ভাবে একে বিয়ে করে নেয়। এখন আমি একে আশ্রম থেকে হরণ করবো।"
অগ্নি ভীত হয়ে ধীরে ধীরে বললেন- "তুমি পূর্বে এই পুলােমাকে বরণ করেছিলে সত্যি, কিন্তু যথাবিধি মন্ত্রপাঠ করে বিয়ে কর নি। ভৃগু আমাকে স্বাক্ষী রেখে একে বিয়ে করেছেন।"
তখন রাক্ষস শূকরের রূপ ধরে পুলােমাকে হরণ করে প্রচন্ড বেগে ছুটে চললো। তাতে পুলােমার গর্ভের শিশুটি গর্ভচুত্য হলো। শিশুটির নাম হয় চ্যবন। সেই শিশুর দৃষ্টির উজ্জ্বলতায় রাক্ষস পুড়ে ছাঁই হয়ে গেলো। পুলােমা তার ছেলে চ্যবনকে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আশ্রমে ফিরে এলেন। পুলোমার চোখের জলেই সৃষ্টি হল এক নদীর। ব্রহ্মা সেই নদীর নাম বধুসরা রাখলেন।
ভৃগু স্নান শেষে আশ্রমে ফিরে স্ত্রীর কাছে সব কথা শুনলেন। অগ্নি তার পত্নীর পরিচয় রাক্ষসকে বলে দিয়ে ছিলো বলে ভৃগু রেগে গিয়ে অগ্নিকে শাপ দিলেন- "অগ্নি তুমি সর্বভুক হবে।"
ভৃগুর দেয়া শাপে দুঃখ পেয়ে অগ্নি অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলেন। অগ্নির অভাবে সকলেই বড্ড অসুবিধায় পরলো। ঋষিদের পূজা আর্চনা সব বন্ধ হতে চললো। তাই ঋষিরা উদবিগ্ন হয়ে দেবতাদের সাথে নিয়ে ব্রহ্মার কাছে গিয়ে সব জানালেন। ব্রহ্মা অগ্নিকে ডেকে মিষ্টি কথায় বুঝালেন।
ব্রহ্মা বললেন - "অগ্নি তুমি সর্বদা পবিত্র, সর্বশরীর দিয়ে তুমি সর্বভুক হবে না, তােমার গুহ্যদেশে যে শিখা আছে এবং তােমার যে মাংসভক্ষক শরীর আছে তাই সর্বভুক হবে। তােমার মুখে যে আহতি দেওয়া হবে তাই দেবতাদের এবং তোমার নিজের ভাগরূপে গ্রহণ কর।"
অগ্নি তখন ব্রহ্মার কথা মেনে নিয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে গেলো। সকলে সন্তুষ্ট হয়ে নিজ নিজ স্থানে চলে গেলেন।
সূত্র :
কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত : অনুবাদক - রাজশেখর বসু
বিশেষ ঘোষণা : হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ মহাভারতের কথা আমরা সকলেই জানি। আমি এটিকে পড়ছি একটি কল্পকাহিনীর সাহিত্য হিসেবে, ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নয়। এই গ্রন্থে প্রচুর উদ্ভট কল্পকাহিনী রয়েছে। সেগুলিই আমি এই সিরিজে পেশ করবো। যারা মহাভারত পড়েননি তারা এখান থেকে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি জেনে যাবেন।
=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
মহাভারতের গপ্পো - ০০১, মহাভারতের গপ্পো - ০০২
২৩ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:২২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে শেরজা তপন দা, মন্তব্য আর মতামতের জন্য।
মুজতবা আলী আর রাজশেখর বসুর বিষয়টা আমার জানা নাই, সরি।
প্রতিটা পর্বে একটি করে গল্প লেখার ইচ্ছে। দুটি গল্প একসাথে এসে গেলে সেটি আবার অনেক বেশী বড় হয়ে যেতে পারে।
পরের পর্ব তৈরি করা আছে। শিঘ্রই পেয়ে যাবেন।
২| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: টিভিতে কার্টুন দেখায় এসব কাহিনী। তাও আবার বাংলায়। আমি আগ্রহ নিয়ে দেখি। এসব কাহিনীতে শিক্ষনীয় কিছু বিষয় থাকে। যদিও এসব কাহিনী বানোয়াট।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:০৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি কার্টুন দেখিনি, বইটা বড়তেছি। খারাপ লাগতেছেনা।
লেখার কারণে পড়ার গতি প্রায় শু্ণ্যের কোথায়, এটাই সমস্যা।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:০৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মন্তব্য করার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
৩| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৫১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রূপকথার গল্পকেও হার মানায় রামায়ণ !!
ধন্যবাদ আপনাকে জলদস্যুভাই
এগুতে থাকুক সিরিজ !!
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:০৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: খুবাই সঠিক বলেছেন। কল্পনার ঘোড়ার লাগাম নেই বললেই চলে মহাভারতে।
৪| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:২৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
মহাভারত মহাকাব্যটি হিন্দুশাস্ত্রের ইতিহাস অংশের অন্তর্গত। মহাভারতের মূল উপজীব্য বিষয় হল কৌরব
ও পাণ্ডবদের গৃহবিবাদ এবং কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলি। তবে এই আখ্যানভাগের বাইরেও দর্শন ও
ভক্তির অধিকাংশ উপাদানই এই মহাকাব্যে সংযোজিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ধর্ম, অর্থ, কাম ও
মোক্ষ এই চার পুরুষার্থ সংক্রান্ত অনেক আলোচনা এতে সংযোজিত হয়েছে । প্রচ্ছদ ছবি খুব সুন্দর হয়েছে।
ভৃগু-পুলোমা-চ্য্ বন-অগ্নির শাপমোচন আখ্যান সংক্সিপ্ত আকারে সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন দেখে
ভাল লাগল । মহাভারতের সকল কাহিনীই পাঠে বেশ উপভোগ্য । স্টার জলসায় বাংলায় মহাভারতের
একটি সিরিয়াল বেশ দর্শক শ্রোতা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৪০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চমৎকার এই আলোচনার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে স্যার।
অনেক কিছু জানা হলো মন্তব্য থেকে।
স্টার জলসা বা অন্য কোথাও কোনো সিরিয়াল দেখা হয় না। তাবে জানি ঐ সিরিয়ালটির কথা।
ভালো থাকবেন, সাথেই থাকবেন।
৫| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৪৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভালো লাগা রইলো। তবে বড্ড ছোট হয়ে গেছে। যদিও ছোট্ট কাহিনী শেষ হওয়াতে আর সাসপেন্সে থাকতে হয় নি এটা বড় প্রাপ্তি।
পোস্টে পঞ্চম লাইক।
শুভেচ্ছা আপনাকে।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: প্রতিটা পর্বে একটি করে গল্প লেখার ইচ্ছে।
দুটি গল্প একসাথে এসে গেলে সেটি আবার অনেক বেশী বড় হয়ে যেতে পারে।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে একাধীক গল্প মিলেমিশে যায়, তখন এক সাথেই দিতে হবে।
পোস্টে লাইক প্রদান ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আশা করি আগামী পর্ব গুলি আরো বেশী ভালো লাগবে।
৬| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:১৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হে হে হে
আজতো পুরাই ভৃগু পর্ব
নিজেই নিজের পিঠটা চাপড়ে নিলুম
তা বেশ লাগলো পড়তে! আহা পুলোমা তুমি কই!!!!!!!!!!
আগের মতো শাপ- শাপান্তের ব্যাপারটা থাকলে মন্দ হতো না। তবে যদিও এই সময়ে শাপান্তগুলোও হতো ডিজিটাল
ওর নেট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক!
ওর ওয়াইফাই অচল হয়ে যাক!!
তোর হার্ডিডস্কের সব ডাটা ক্রাশ খাক!
কিংবা তোর সেলে/পিসিতে পেগাসাস এটাক হোক
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৫৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ডিজিটাল শাপান্তগুলো বেশ বলেছেন।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৭| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৯
কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: অধীর আগ্রহে আগামী পর্বগুলোর প্রতীক্ষায় থাকলাম। আমার এসব নিয়ে আরো কিছু জানার বেশ আগ্রহ। ধন্যবাদ আপনাকে।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:০৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে আগ্রহ প্রকাশের জন্য।
আশা করি নিয়োমিতো প্রকাশিত হবে এই সিরিজ।
৮| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
ছবিটা নিয়ে কথা বলুন।
২৩ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৪২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে মন্তব্যের ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য।
ছবি নিয়ে কিছু বলার নাই, এটি নেট থেকে সংগ্রহ করেছি এইটুকু বলতে পারিশুধু।
২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঊণকৌটী বলেছেন: ছবিটা মহাভারত এর যুদ্ধের সে ক্ষণের কথা অর্জুন যুদ্ধ করার মুহূর্তে এসে তার পরিবারের পরিজন এর দেখে যখন বলে আমি কাদের সাথে যুদ্ধ করবো সবাই তো আমার নিজের পরিজনেরা তখন শ্রী কৃষ্ণ যে কথা গুলি অর্জুন কে বলেছিলেন সেটাই গীতা আজকের আধুনিক সমাজে সেইটাই শিক্ষিত পৃথিবীতে অনুপ্রেরণা সন্দেহ হলে মহাভারত এবং গীতা পড়ুন ধর্মের জন্য বলছিনা শিক্ষার জন্য মানবিকতার জন্য আমার লেখাটা অন্য ভাবে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি শুধু পড়ুন পড়লে জ্ঞান বাড়লে সবারই লাভ
৯| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:০৯
ঊণকৌটী বলেছেন: ছবিটা মহাভারত এর যুদ্ধের সে ক্ষণের কথা অর্জুন যুদ্ধ করার মুহূর্তে এসে তার পরিবারের পরিজন এর দেখে যখন বলে আমি কাদের সাথে যুদ্ধ করবো সবাই তো আমার নিজের পরিজনেরা তখন শ্রী কৃষ্ণ যে কথা গুলি অর্জুন কে বলেছিলেন সেটাই গীতা আজকের আধুনিক সমাজে সেইটাই শিক্ষিত পৃথিবীতে অনুপ্রেরণা সন্দেহ হলে মহাভারত এবং গীতা পড়ুন ধর্মের জন্য বলছিনা শিক্ষার জন্য মানবিকতার জন্য আমার লেখাটা অন্য ভাবে না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি শুধু পড়ুন পড়লে জ্ঞান বাড়লে সবারই লাভ
২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ছবিটি সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য।
বিষয়টি আমার জানা ছিলো না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: এই রাজশেখর বসু কি সেই রাজশখর বসু যাঁকে মুজতবা আলী গুরু মানতেন ?
ভাল লাগল ফের। তবে লেখাটা এবার একটু ছোট হয়ে গেছে