নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই সব দিন রাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১:৪৫

বইয়ের নাম : এই সব দিন রাত্রি
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ১৯৯০
প্রকাশক : অনন্যা
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩১৪



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট

কাহিনী সংক্ষেপ :
নীলুর প্রথম বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে দ্বিতীয়টি একটি মেয়ে হয়েছে। মুখে মুখে বাচ্চাটির নাম হয়ে গেছে টুনি। টুনির বাবা সফিক চুপচাপ ধরনের মানুষ, কোন কিছুর সাথে পাঁচে থাকে না। সফিকের ছোট ভাই রফিক বড় ভাইয়ের ঠিক উল্টো, চটপটে মিশুক টাইপের। সফিক তার ছোট ভাই-বোন আর বাবা-মা নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থেকে। ছোটবোন শাহানা এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। পরীক্ষায় পাশ করার পরেই তার বিয়ে ঠিক হয়ে যায় খুবই ধনী একটি ছেলের সাথে। কিন্তু সে মনে মনে ভালোবাসে আনিসকে। তবুও একসময় তার বিয়ে হয়ে যায় সেই ধনী পরিবারের ছেলেটির সাথে।


রফিকের ক্লাশমেট শারমিন, খুবই ধনী পরিবারের মেয়ে। বিশাল বাড়িতে শুধু বাবা আর মেয়ে থাকে। সেই ছোট বেলায় শারমিনের মা মারা গেছেন, তারপর শারমিনের বাবা আর বিয়ে করেন নি। রফিক মনে মনে শারমিনকে ভালোবাসে। কিন্তু এ্যামেরিকান প্রবাসী সাব্বীরের সাথে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে শারমিনের। বিয়ে যখন সব ঠিকঠাক, বাড়িতে বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে তখনই হঠাৎ করে শারমিন বিয়ে করে ফেলে রফিককে। এক কাপড়ে উঠে আসে শারমিন বেকার রফিকের বাড়িতে। সময় কাটতে থাকে আর তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়তে থাকে। একসময় দুজনের মধ্যে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়।


তখনই হঠাৎ করে রফিকের পুরনো এক বন্ধু তাকে ব্যবসার লাইন ধরিয়ে দেয়। কোন টাকা পয়সা ছাড়াই সে রফিককে অফিস ভাড়া করে দেয়ে, তার জন্য ম্যানেজার ঠিক করে দেয়। সেই ম্যনেজার নিজে খেটে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে ফেলে। এতো সহজে সব কিছু কিকরে হয়ে যাচ্ছে এটা রফিক বুঝতে পারে পরে, জানতে পারে পিছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছে তার শ্বশুর। এরপরই শারমিন তার বাবার বাড়িতে বেরাতে চলে যায় এবং বিদেশে পড়া শুনা করতে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।


আনিস থাকে নীলুদের ভাড়া বাড়ি ছাদের চিলেকোঠায়। খুবই ভদ্র ছেলে, তবে পড়াশুনায় খারাপ, পরীক্ষায় ফেল করে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছে। বাড়ির মালিকের সাথে আনিসের লতায় পাতায় দূর সম্পর্কের আত্মিয়তা আছে। সে খাওয়া দাওয়া করে তাদের বাড়িতেই। বাড়িওয়ালার একমাত্র মেয়ে বীণা আনিসকে খুব পছন্দ করে। তাই বীণার মা আনিসকে দুই চোখে দেখতে পারেন না।


আনিস বুঝতে পারে পড়াশুনা তাকে দিয়ে হবেনা তাই সে জাদু শিখতে শুরু করে। একসময় বেশ ভালই জাদু দেখাতে শিখে যায়। জাদু শেখার জন্য আনিস নানা যায়গায় ঘুরে বেরায়। এই সময় একদিন বাসে ঢাকায় ফেরার সময় এক জাপানী লোকের সাথে আলাপ হয়। লোকটি আনিসের হাত সাফাইয়ের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়। কদিন পরেই জাপান থেকে আনিসের কাছে একটা চিঠি আসে, সেখানে জাপানে গিয়ে জাদু দেখাবার নিমন্ত্রণ দেয়া হয়, সমস্ত খরচ তারাই দিবে। এদিকে বীণার মার সাথে বীণার কথা কাটাকাটি হয়। বীণা রাগ করে আনিসকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বললে আনিস বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।


নীলুদের বাসায় কবির মামা এসেছে বেরাতে। তিনি এসেছেন তার পুরনো ছাত্রদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নীলগঞ্জকে সুখী নীলগঞ্জ বানাবেন বলে। সেখানে সবার জন্য চাকরি আর দুবেলা খাবার জোগারের ব্যবস্থা তিনি করতে চান। সারা গ্রামবাসী তাকে প্রচন্ড শ্রদ্ধা করে, তার কথা সবাই মানে। তিনিও জীবন দিয়ে সবার জন্য কাজ করেন। স্কুলের পুকুর পরিস্কার করিয়ে তিনি সেখানে মাছ চাষ করিয়েছেন। একদিন সকালে দেখা গেলো সেই সব মাছ বিষ দিয়ে কেউ মেরে ফেলেছে। তিনি সারাদিন পুকুরের পাশে বসে থেকে বিকেলের পরে অজ্ঞান হয়ে পরে গেলেন। শেষে সাতদিন পরে তার জ্ঞান ফিরলো ঢাকার পিজি হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরলেও জ্বর তার ভালো হয় না। তিনি বুঝতে পারেন যে তার মৃত্যুর সময় হয়ে এসেছে। তিনি আর কিছুতেই ঢাকায় থাকতে চাননা। অসুস্থ শরীরে তিনি নীলুর বড় দুলাভাই সোবাহানকে নিয়ে নীলগঞ্জে চলে যান। নীলগঞ্জে প্রববেশের সময় কবীর মামা নিরবে মারা যান। সমস্ত গ্রামের মানুষ জড়ো হয় তখন।


এদিকে এতো বড় সংসার সফিকের একার রোজগাড়ে চলছিলো না। সেই সময় নীলুর দেখা হয় তার কলেজ লাইফের এক বান্ধুবীর সাথে। সেই বান্ধুবীর চেষ্টায় নীলু একটি চাকরি পেয়ে যায়। বছর ঘুরতেই তার বেতন বাড়ে, বোনাস পায় আর সুইডেনে ছয় মাসের জন্য একটি ট্রেনিং এর সুযোগ পেয়ে যায়। সব যখন ঠিকঠাক তখনই নীলু তার বড় সাহেবকে গিয়ে বলে সে ট্রেনিং এ যেতে পারবেন না, কারণ তার স্বামী বিষয়টি ঠিক পছন্দ করছেন না। এরমধ্যে নীলুর বড় বোন মারা গেলে তার একমাত্র ছেলে বাবলুকেও নীলুর কাছে নিয়ে আসতে হয়।


সেইসময়ই সফিকের অফিসের বড় সাহেব বদলি হয়। যে প্রমশন সফিকের হওয়ার কথা সেটা অন্য আরেক জনের হয়ে যায়। কদিন পরে বড় সাহেব সফিককে সাসপ্যান্ড করেন, কারণ এমন অনেকগুলি ফাইল তিনি পেয়েছেন যেখানে সফিকের সিগনেচারে বিল পাশ হয়েছে কিন্তু সেই টাকার কাজ করা হয়নি। বড়সাহেব বুঝতে পারেন যে সফিক কর্মঠ আর সৎ লোক। সফিককে ব্যবহার করে অন্যরা অন্যায় গুলি করেছে। তাই তিনি সফিককে নতুন আরেকটি প্রজেক্টের দায়িত্ব দিয়ে কাজে বহাল করেন। সাথে আরেকটি প্রমশনও দেন।


এদিকে নীলুরও প্রমশন হয় কাজের ব্যস্ততা বাড়ে। তার একমাত্র মেয়ে টুনির সাথে দূরুত্ব বাড়ে, সে এখন স্কুলে পড়ে। এদিকে টুনির মাঝে মাঝেই জ্বর হয়। টুনিকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলে ডাক্তার কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন টুনির একটি খারাপ রোগ হয়েছে লোহিত রক্তকনিকার। এই রোগের তেমন কোন চিকিৎসা নেই, তবে জার্মানিতে কিছুটা ভালো চিকিৎসা আছে। আনেক কষ্টে টুনিকে জার্মানি পাঠানো হলেও সেখানে টুনি মারা যায়।


সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবতর্ন হয়। শাহানা আর তার স্বামী জহিরের সম্পর্কের সমস্যাগুলি মিটে গিয়ে তাদের একটি সন্তান হওয়ার সময় হয়ে আসে। আনিস আর বীণার বিয়ে হয়। রফিক আর শারমিন আলাদা হয়ে যাবার পরে এখন আবার তাদের একসাথে হওয়ার সম্ভবনা দেখাদেয়। কবীর মামা মারা যাওয়ার পরে তার স্বপ্নের সুখী নীলগঞ্জ বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে। শুধু নীলুদের পরিবার টুনির জন্য কষ্ট পুষে রাখে।

----- সমাপ্ত -----


=======================================================================

আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ

আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ২:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



হুমায়ুন আহমেদ'এর কয়েকটি মৌলিক লেখা পরে অনেক বাচ্চা দিয়েছে, মনে হয়!

০৫ ই মে, ২০২১ রাত ২:৪৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের গভীরতা আমার মাথার অনেক উপর দিয়া গেলো।

২| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ৩:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন পড়া মানে সময়টা সুন্দর ভাবে কাটানো।

০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এইটা সঠিক বলেছেন দাদা।

৩| ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৩৬

জটিল ভাই বলেছেন: দারুণ ফ্লেভার.......

০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৫৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি প্রত্যকে দিন দুই তিন পাতা হুমায়ূন পড়ি।

০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৫৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমি এখনও ওডিসি-২ তে ডুবে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.