নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বইয়ের নাম : এই আমি
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩
প্রকাশক : কাকলী প্রকাশনী
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৯৩
সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট
কাহিনী সংক্ষেপ :
“এই আমি” একটি ছোট গল্পের বই। এই বইয়ের বেশির ভাগ লেখাতে লেখক নিজের অভিজ্ঞতাকে গল্পের মতো করে উপস্থাপন করেছেন। ছোট ছোট ১৪টি গল্প আছে বইটিতে। সেগুলি -
১ম : এই আমি
লেখকের নিজের গল্প লেখা, গল্পের চরিত্রগুলি সৃষ্টি করা আর সেই চরিত্রগুলি নিয়ে নিজের মাথার মধ্যে ভিন্ন এক জগতের কথা বলা হয়েছে। লেখকের নিজের পরিবার সন্তানদের সাথে গল্পের চরিত্র গুলি কি করে সময় কেড়ে নেয় সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন এই গল্পে। এটা আসলে গল্প না, লেখকের নিজের কথা।
২য় : চোখ
একজন ডাকাতকে ধরা হয়েছে। ধরা পরার পরে বেদম মার দিয়ে তাকে হাত পা বেধে ফেলে রাখা হয়েছে আছরের নামাজের পর তার চোখ খেঁজুর কাটা দিয়ে তুলে ফেলবে বলে। ডাকাতটি অপেক্ষা করে আছে, কেউ একজন উপস্থিত হবে। যার মনে থাকবে দয়া, সে তার চোখ বাঁচিয়ে দিবে।
৩য় : পেট্রিফায়েড ফরেস্ট
লেখক দম্পতি আমেরিকায় থাকার সময়ে তাদের এক প্রতিবেশী দম্পতির সাথে পেট্রিফায়েড ফরেস্টে বেড়াতে যাওয়ার অভিজ্ঞাত আর মানুষের অদ্ভুত ভালোবাসার কথা বলেছেন এই লেখায়।
৪র্থ : উৎসব
উৎসব আর দুঃখ একই সাথে থাকে এই লেখার সেটাই বিষয়বস্তু।
৫ম : উমেশ
আমেরিকায় পড়ার সময় লেখকের পরিচয় হয় উমেশ নামের এক ভারতীয় ছাত্রের সাথে। সেই ছাত্রের সাথে তার কিছু তিক্ত মধুর সময়ের কথা বলেছেন তিনি।
৬ষ্ঠ : সে
কুষ্টিয়ার কুঠি বাড়িতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদের পরিচয় হয় একটি ছেলের সাথে। ছেলেটি নিজের নাম বলে রবি। ছেলেটি দেখতে হুবহু রবীন্দ্রনাথের মত। লেখক প্রথমে দ্বিধায় পরে যায় তার চোখের ভুল মনে করেন। ভাবেন তিনি হয়তো ভুল করছেন, হয়তো তার নিজের কল্পনাতে তৈরি হয়েছে এই রবি। তিনি ছেলেটির সাথে কথা বলেন এবং তাকে বলেন ঢাকায় গিয়ে তার সাথে দেখা করতে। তিনি রবীন্দ্রনাথের উপরে একটি নাটক বানাবেন সেখানে রবি অভিনয় করবে। লেখক নাটক লিখেন কিন্তু নানান কারণে সেটা আর আলোর মুখ দেখতে পায় না। পরে লেখক জানতে পারেন রবি মারা গিয়েছে। সে এক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত অবস্থায় অপেক্ষা করে গেছে একটি নাটকে অভিনয় করার জন্য।
৭ম : নারিকেল মামা
লেখকের নানা বাড়িতে এই লোক কামলা খাটতো। নারকেল গাছে উঠার দক্ষতা আর নারকেল কাটার দক্ষতার কারণে তার এই নাম। একটু মাথায় সমস্যা ছিল। গরমের সময় মাঝে মাঝেই সে দড়ি নিয়ে যেত গলায় ফাঁস দেয়ার জন্য। তবে কখনোই তা করতে পারতো না।
৮ম : পরীক্ষা
বাবা মা বুড় হয়ে গেলে তারা পরীক্ষা করে বুঝতে চেষ্টা করেন তার সন্তানরা তাকে এখনো কতটা ভালোবাসে। লেখকের মাও নানা ভাবে তার সন্তানদের ভালোবাসার পরীক্ষা করেন। সেই কথাই তিনি লিখেছেন।
৯ম : আমার বন্ধু শফিক
লেখকের স্কুল জীবনের বন্ধু শফিক। বিচিত্র একটা কারণে লেখকের সেই বন্ধু তার বেতনের বেশীর ভাগ টাকাই খরচ করে ফেলেন দুস্থ অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার পেছনে। অথচ শফিকের নিজের সংসার চলানোটাই কষ্টের হয়ে যায়। তবুও সে অসুস্থের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে যায়।
১০ম : মিসির আলি ও অন্যান্য
এখানে লেখক তার লেখায় বারবার ঘুরে ফিরে আসা চরিত্র আর নামগুলি নিয়ে সামান্য কিছু লিখেছেন। এদের মধ্যে আছে মিসির আলির কথা। মিসির আলি একজন যুক্তিবাদী মানুষ অলৌকিক কিছুই তিনি মানতে চান না। অলৌকিকের লৌকিক ব্যাখ্যা তিনি খুঁজে বের করেন। এরপর বলেছেন হিমুর কথা। হিমু হচ্ছে মিসির আলির উল্টো অলৌকিক অযৌক্তিক দুনিয়া তার চারপাশে। হিমু যুক্তির ধার ধারে না। এরপর আছে মহামতি ফিহা। হুমায়ূন আহমেদের সাইন্স ফিকশন গুলিতে এনাকে দেখা যায়। তিনি কিন্তু হিমু বা মিসির আলির মত একক চরিত্র নন। একেক গল্পে তিনি একেক জন। কখনো গণিতজ্ঞ, কখন বিজ্ঞানী, কখন পদার্থবিদ। এমন আরো কিছু নাম আছে যেগুলি বার বার ব্যবহার হয়, পরী, জরী, রানু, নীলু, বীলু ইত্যাদি।
১১তম : বর্ষা যাপন
কোন এক অনুষ্ঠানে লেখক আর এক বিদেশির সাথে বর্ষা নিয়ে কথোপকথন এই লেখায় উঠে এসেছে।
১২তম : ফ্রাংকেইনস্টাইন
কোথাও কেউ নেই নাটকটির বাকের ভাই চরিত্রটির ফাঁসি দেয়া নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা আর মানুষের অদ্ভুত ভালোবাসা প্রকাশের কথা এই লেখাতে বলেছেন লেখক।
১৩তম : চান্নিপসর রাইত
লেখকের নানাবাড়ির এক ফাঁকিবাজ কামলার কথা, নাম তার আলাউদ্দিন। চাঁদনি নিয়ে তার বারাবারি রকম ভালোলাগাকে জানিয়েছেন এই লেখায়।
১৪তম : লাল চুল
একজন অবসর প্রাপ্ত জজের কথা। তিনি ঘোর নাস্তিক। নবীজী সম্পর্কে যাচ্ছেতাই ভাষায় কথা বলেন আবার গত ২৫ বছর ধরে তিনি নামাজ পড়ছেন, রোজা রাখছেন। ২৫ বছর আগে তিনি নাস্তিক ছিলেন। সেই সময় তার কোটে একটা কেস আসে। জমি সংক্রান্ত কারণে একটি বাচ্চা মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আসামীদের একজনের ফাঁসী আরেক জনের যাবজ্জীবন রায় লিখে রাতের তিনটার দিকে ঘুমালেন। তখন স্বপ্ন দেখলেন সেই বাচ্চা মেয়েটি বলছে যাদের শাস্তি হচ্ছে তারা তাকে মারেনি বরং মেয়েটির বাবাই ওদের ফাঁসানোর জন্য নিজের মেয়েকে হত্যা করেছে। পরদিন তিনি রায় ঘোষণা না করে পুনঃতদন্ত করার হুকুম দিলেন। পরে মেয়েটির বাবা তার অপরাধ স্বীকার করলো। এরপর থেকে তিনি নাস্তিক হলেও নামাজ রোজা করেন।
----- সমাপ্ত -----
=======================================================================
আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ
আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ
ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: মন্তব্যে চমৎকার আলোচনার জন্য অশেষ ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
কাহিনী ভুলে যাই বলেই মনে করার জন্য এই লেখাগুলি লিখে রেখেছিলাম আমি।
২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২৫
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: নূরের চোখ তুলে নেয়া হবে নাটকে।গল্পটি পড়িনি কিন্তু নাটক দেখেছি।জীবনের একটা অর্থ পাওয়া যায় নাটকে।মনস্তাত্ত্বিক একটা জটিলতা আছে যার জন্য ভাল লাগে।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: হে, এই নাটকটা দেখেছিলামও। শেষ পর্যন্ত চোর বাপ-ব্যাটাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৪
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: জটিল মনস্তাত্ত্বিক গল্প।গ্রামীণ জীবনরে সাবলীল বর্ণনা ।
অবশ্য হুমায়ুন আহমদের সবগুলি বইয়েই দৃশ্য/ঘটনা বর্ণনার সাবলীলতা লক্ষ্য করা যায়। খেজুর কাটা দিয়ে ডাকাতের চোখ তুলে নেওয়া হবে এবং আর সব ঘটনা পাঠক গোগ্রাসে গিলে এবং অপেক্ষা করে পরবর্তী ঘটনার। সবই বাস্তব মনে হয় লেখকের লেখার কল্যানে।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঠিক বলেছে। সহজ সরল জীবনধারা বর্ণনার অসাধারণ দক্ষতা ছিলো উনার।
৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪২
চাঁদগাজী বলেছেন:
বনাগলাদেশের কোন অন্চলে মানুষের চোখ বষ্ট করে দেয়া হয়? আমার মনে হয়, খুলনা ও যশোর এলাকায়? এই অন্ছলের লোকেরা বেশ জংগী ধরণের।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ফরিদপুর আর খুলনার কথা শুনেছি আমি যেখানে ডাকাতদের চোখ নষ্ট করে দেয়া হতো।
কোনো অঞ্চলের লোককে এইভাবে জংগী ধরনের বলাটা কি উচিত?
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৯
পদ্মপুকুর বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: বনাগলাদেশের কোন অন্চলে মানুষের চোখ বষ্ট করে দেয়া হয়? আমার মনে হয়, খুলনা ও যশোর এলাকায়? এই অন্ছলের লোকেরা বেশ জংগী ধরণের।
তীব্র প্রতিবাদ। যশোরবাসী এক হও, আওয়াজ তোলো....
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: একটা জংগী প্রতিবাদ করেন।
৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৯
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের ছোট গল্প অত্যন্ত শক্তিশালী। তবে মিসির আলী যুক্তিবাদী এ কথা বড় ধরণের ভুল। মিসির আলি সিরিজের বইগুলো পড়লেই বোঝা যায় বাংলাদেশের অনেক পাঠক যুক্তি বিষয়টিই বুঝেন না, শুধু কানকথায় মেনে নেয় মিসির আলি যুক্তিবাদী।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্য ও আলোচনার জন্য।
৭| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
পদ্ম পুকুর বলেছেন, " চাঁদগাজী বলেছেন: বনাগলাদেশের কোন অন্চলে মানুষের চোখ বষ্ট করে দেয়া হয়? আমার মনে হয়, খুলনা ও যশোর এলাকায়? এই অন্ছলের লোকেরা বেশ জংগী ধরণের। তীব্র প্রতিবাদ। যশোরবাসী এক হও, আওয়াজ তোলো. "
- যারা মানুষের চোখ নষ্ট করে দেয়, আপনিও তাদের দলে আছেন?
৮| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১০
রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের সব বইয়ের মতো এই বইটাও আমি অনেকবার পড়েছি।
হুমায়ূন আহমেদের ''চোখ'' এবং ''ছায়াসঙ্গী'' এই দুইটা গল্প বাংলা সাহিত্যে আজীবন থাকবে।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য আর মতামতের জন্য।
'ছায়াসঙ্গী পড়েছি আমি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: বাহ, সুন্দর। এই বইটা আমি অসংখ্যবার পড়েছি। আমার সচারচর বইয়ের নাম এবং কাহিনী একসাথে মনে থাকে না। এজন্য আমার একটা লেখায় নবম লেখার শফিকের উদাহরণ দিলেও বইয়ের নামটা দিতে পারিনি।
হুমায়ূনের সব লেখার মতই এই বইয়ের লেখাগুলোও ছুঁয়ে যাওয়া। পেট্রিফায়েড ফরেস্টের ওই মালয়েশিয়ান/ইন্দোনেশিয়ান দম্পতির ভালোবাসা, উমেশের বলতে না পারা আন্তরিকতার গল্প যেমন খুব দ্রুতই পাঠকের মন স্পর্শ করে, তেমনি বর্ষাযাপনের ওই বিদেশী (অরসন সম্ভবত নাম) এবং লালচুলো নাস্তিক-ধার্মিক বয়ষ্ক মানুষটার চরিত্র রুপায়ন খুবই পারফেক্ট।
'আমার আপন আধার' বলে হুমায়ুনের আরেকটা আত্মকথন আছে, সেটাও চমৎকার একটা লেখা। সম্ভবত ওই বইয়েই মাসাউকি খাতাউরা নামে জাপানী এক যুবকের কথা আছে। আমাদের কৈশোরবেলায় এই মাসাউকি খাতাউরা চলতি আড্ডার নিয়মিত অনুসঙ্গ ছিলো।
অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখাগুলোকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।