নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নানান যায়গায় বেড়াবার সময় বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট-বড় নানান ধরনের নবাব-জমিদার-ব্যবসায়ী-বনিক-বাবু-ঠাকুরদের শত-শত বাড়ি ঘর দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। তাদের কিছু ছবিও তুলেছি নানান সময়ে। বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্রের প্রতি পর্বে ৫টি করে জমিদার বাড়ির ছবি থাকবে, আর কিছু না।
০১১ : রামচন্দ্র সাহা বাড়ি
রামচন্দ্র সাহার তৈরি করা এই চমৎকার বাড়িটি কিনে নিয়েছে বর্তমানের একজন ধনকুবের। তার পুত্রদের জন্য নতুন করে রিইনোভেট করা হচ্ছে। এই বাড়িটি সম্পর্কে কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে রামচন্দ্র সাহার ও তার স্ত্রী প্রতিমা সুন্দরীর একটি জোড়া মঠ (স্মৃতি মন্দির) রয়েছে সরারচরেই।
ছবি তোলার স্থান : সরারচর, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 24°12'41.7"N 90°54'02.0"E
ছবি তোলার তারিখ : ২২/০২/২০১৭ ইং
=================================================================
০১২ : শিবনাথ সাহা বাড়ি
শিবনাথ সাহা কটিয়াদীর ও বাজিতপুর অঞ্চলের একটি পরিচিত নাম। ১২৫৫ সালের ১৭ আষাঢ় জোয়ারিয়া কুড়িখাই গ্রামে শিবনাথ সাহা জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম কার্তিক চন্দ্র সাহা, দাদা যাত্রাবর সাহা। শিবনাথ সাহারা ছিলেন দুই ভাই শম্ভুনাথ সাহা ও শিবনাথ সাহা। শিবনাথ সাহার বাবা ও ঠাকুরদার আমলে অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভাল ছিলনা। তার সময়ই অর্থনৈতিক প্রসার ঘটে এবং তিনি তালুকদার হন। তিনি বাজিতপুরের আলিয়াবাদে বিয়ে করেন।
স্ত্রীর নাম কালীসন্দুরী সাহা। তার পারিবারিক উত্তরসূরীগণ (বর্তমানে কটিয়াদী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবু দিলীপ কুমার সাহা, রতন কুমার সাহা, উত্তম সাহা , বিশ্বনাথ সাহা, কৃষ্ণ পদ সাহা প্রমূখ) মনে করেন এক মাহেন্দ্রক্ষণে মনুষ্য রুপী দুই দেব-দেবী কালি ও শিবের মিলন ঘটে। কিন্তু তাদের কোন পুত্র সন্তান হয়নি। বাবু শিবনাথ সাহা ও কালি সুন্দরীর ঘরে তিন কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করেন। তাদের নাম বিদ্যাসুন্দরী সাহা, জগৎতারা সাহা ও জয়াদূর্গা সাহা। পুত্র সন্তানের জন্য হয়তো এই দম্পতির অন্তরে একটু দীর্ঘশ্বাস লুকানো ছিল, তাই শিবনাথ সাহা তার অগ্রজ শম্ভুনাথ সাহার ৪র্থ ছেলে সুরেন্দ্রনাথ সাহাকে দত্তক আনেন।
বাবু শিবনাথ সাহা অনেক জনহিতকর কাজ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্ত্রীর নামে বাজিতপুরে কালিতারা পাঠশালা, বনগ্রামে পিতার নামে কার্তিক চন্দ্র সাহা লাইব্রেরী, ধুলদিয়ায় শিবনগর, কামালপুরে পূজামন্ডপ এবং ইংরেজী ১৯১৮ সনে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন যা পরবরতীকালে সরারচর শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় নাম ধারণ করে। তিনি ১৯২০ সনের ২০শে সেপ্টম্বর একটি ট্রাষ্ট গঠন করেন। এই শিক্ষানুরাগী শিবনাথ সাহা বাংলা ১৩৩১ সনের ১৭ই আষাঢ় নিজ বাসভবনে মৃত্যু বরণ করেন। তার বাড়ীর পাশেই নদীর পাড়ে শিবসাহা শ্মশানঘাট। সেখানেই দীর্ঘ উঁচু শিবসাহা মঠ।
তথ্য সূত্র : নেট
ছবি তোলার স্থান : পিপুলিয়া, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 24°16'14.6"N 90°50'12.7"E
ছবি তোলার তারিখ : ২২/০২/২০১৭ ইং
=================================================================
০১৩ : বেতিলা জমিদার বাড়ি
এখানে পাশাপাশি প্রায় একই রকম দেখতে দুটি বাড়ি আছে। এ বাড়ির সঠিক ইতিহাস তথ্যগত অভাবের কারণে তেমন জানা যায়নি। মানিকগঞ্জ জেলার বেতিলা খাল ব্যবহার করে নানান বজরা, মহাজনী নৌকা আসা যাওয়া করতো। নিরাপদ নৌরুট বেছে নিয়েছিলেন বড় বড় অনেক বণিকেরা। লোককথায় জানা যায় জ্যোতি বাবু নামের এক বণিক ছিলেন এই জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষ। তিনি ছিলেন মূলত পাটের বণিক।
জ্যোতি বাবু বা সত্য বাবুর বসতবাড়ি নামে পরিচিত বেতিলা জমিদারবাড়ি বর্তমানে সরকারী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
ছবি তোলার স্থান : মানিকগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 23°50'14.7"N 90°01'28.3"E
ছবি তোলার তারিখ : ২৫/১১/২০১৬ ইং
=================================================================
০১৪ : লক্ষণ সাহা জমিদার বাড়ি / ডাংগা জমিদার বাড়ি / উকিল বাড়ি
জমিদার লক্ষণ সাহা এই জমিদার বংশের মূল গোড়াপত্তনকারী, তিনিই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন । তবে কবে নাগাদ এই জমিদার বংশ এবং জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। মূলত তিনি ছিলেন প্রধান জমিদারের অধিনস্থ সাব-জমিদার। তবে তাদের কখনো ব্রিটিশ সরকারকে বা অন্য কাউকে খাজনা দিতে হয়নি। কারণ এই জমিদারী এলাকাটি ওয়াকফা বা দেবোত্তর সম্পত্তি ছিল।
লক্ষণ সাহার তিন পুত্র সন্তান ছিল। তারা হলেন নিকুঞ্জ সাহা, পেরিমোহন সাহা ও বঙ্কু সাহা। এদের মধ্যে ছোট ছেলে বঙ্কু সাহা ভারত ভাগের সময় ভারতে চলে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে বড় ছেলে নিকুঞ্জ সাহা ভারতে চলে যান। থেকে যান মেঝো ছেলে পেরিমোহন সাহা। পেরিমোহন সাহার ছিল এক পুত্র সন্তান, যার নাম ছিল বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা। এই বৌদ্ধ নারায়ণ সাহাই পরবর্তীতে আহম্মদ আলী উকিলের কাছে উক্ত বাড়িটি বিক্রি করে দেন। তাই বর্তমানে অনেকে এই বাড়িটিকে উকিল বাড়ি নামেও চিনে। লক্ষ্মণ সাহার বংশধরের একাংশ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করছে।
পথের হদিস : নরসিংদী হইতে বাসে পাঁচদোনা মোড়। পাঁচদোনা মোড় থেকে সিএনজি করে ডাংগা বাজার। ডাংগা বাজার থেকে ১ কি:মি: ভিতরে এই জমিদার বাড়ি অবস্থিত।
ছবি তোলার স্থান : ডাংগা, পলাশ, নরসিংদী, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 23°53'56.8"N 90°35'41.4"E
ছবি তোলার তারিখ : ২৮/০৪/২০১৭ ইং
=================================================================
০১৫ : সত্যজিৎ রায়ের আদি পৈত্রিক ভিটা
রায় পরিবারের ইতিহাস থেকে জানা যায় তাঁদের এক পূর্বপুরুষ শ্রী রামসুন্দর দেও (দেব) নদীয়া জেলার চাকদহ থেকে ভাগ্যাণ্বেষণে পূর্ববঙ্গের শেরপুরে আসেন। শেরপুরের জমিদার বাড়িতে তার সাক্ষাৎ হয় যশোদলের জমিদার রাজা গুণীচন্দ্রের সাথে ৷ রাজা গুণীচন্দ্র রামসুন্দরের সুন্দর চেহারা ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দেখে মুগ্ধ হন এবং রামসুন্দরকে তার জমিদারিতে নিয়ে গিয়ে জমিজমা, ঘরবাড়ি দিয়ে তার জামাতা বানান ৷ রামসুন্দরের বংশধররা সেখান থেকে সরে গিয়ে বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন ৷
মসূয়া গ্রামে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি এখনও রয়েছে। এখানেই সত্যজিতের পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এবং বাবা সুকুমার রায় জন্ম নেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের অনেক আগেই উপেন্দ্রকিশোর সপরিবারে কলকাতা চলে যান।
বর্তমানে তাঁদের প্রায় ৪ একরের এই বিশাল জমি ও বাড়ি বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব বিভাগের অধীনে থাকলেও তার বেশীর ভাগই বেদখল হয়ে গেছে।
সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ হরিকিশোর রায় চৌধুরী প্রায় ২০০ বছর আগে মসূয়া গ্রামে শ্রীশ্রী কালভৈরব পূজা উপলক্ষে একটি মেলার আয়োজন করেছিলেন। এখনও প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শেষ বুধবার এই মেলা পালিত হয়।
সূত্র : উইকিপিডিয়া।
ছবি তোলার স্থান : কটিয়াদি, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 24°16'45.3"N 90°44'35.1"E
ছবি তোলার তারিখ : ২৪/০২/২০১৭ ইং
=================================================================
=================================================================
হেরিটেজ ট্যুর ২৫ : আড়াইহাজার - সোনারগাঁও
হেরিটেজ ট্যুর ২৬ : মানিকগঞ্জ - নাগরপুর
হেরিটেজ ট্যুর ২৮ : চাঁদপুর
হেরিটেজ ট্যুর ৬৫ : নারায়ণগঞ্জ - মুন্সিগঞ্জ
=================================================================
আরো দেখুন -
মসজিদ দর্শন : ০১ : মহজমপুর শাহী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০২ : ষাট গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৩ : বিবি বেগনী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৪ : চুনাখোলা মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৫ : নয় গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৬ : জিন্দা পীর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৭ : সিঙ্গাইর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৮ : গোয়ালদি মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৯ : আবদুল হামিদ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ১০ : পুরান বাজার জামে মসজিদ
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ১ম পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ২য় পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ৩য় পর্ব
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০১
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০৩
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০১
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০২
=================================================================
মরুভূমির জলদস্যুর ভ্রমণ বিলাস
সিলেট ভ্রমণ : হযরত শাহজালাল ও শাহপরান দরগাহ, চাষনী পীরের মাজার, বিছনাকান্দি, লালাখাল, জাফলং, হরিপুর পরিত্যাক্ত গ্যাস ফিল্ড
শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ : লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক,
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ : আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, শতবর্ষী বটগাছ, ঝুলন্ত সেতু, অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ : সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার
বান্দরবান ভ্রমণ : নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, স্বর্ণ মন্দির
কক্সবাজার ভ্রমণ : রঙ্গীন মাছের দুনিয়া, আগ্গ মেধা ক্যাং, বিজিবি ক্যাম্প মসজিদ, ভুবন শান্তি ১০০ সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি, রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, ইনানী সৈকত, টেকনাফ সৈকত, মাথিনের কুপ, টেকনাফ জেটি, সেন্টমার্টিন, ছেড়া দ্বীপ
নারায়ণগঞ্জ ভ্রমণ: ১নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির, টি হোসেন বাড়ি, কদম রসুল দরগাহ, সোনাকান্দা দূর্গ, হাজীগঞ্জ দূর্গ, বাবা সালেহ মসজিদ, বন্দর শাহী মসজিদ, সিরাজ শাহির আস্তানা, কুতুববাগ দরবার শরিফ, বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ী, পালপাড়া মঠ, বীরেন্দ্র রায় চৌধুরী বাড়ি, মহজমপুর শাহী মসজিদ
দিনাজপুর ভ্রমণ: রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি, স্বপ্নপুরী, কাঠের সেতু, সীতাকোট বিহার
=================================================================
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ওয়াও!! কোথায় কিভাবে যেতে হয় জানাবেন। GPS coordinatesটা দিয়ে দিলে আরো ভালো হয়। সময় সুযোগ হলে অবশ্যই দেখে আসবো রাজীব নূর ভাই।
২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আপনার পোস্ট গুলো প্রিয়তে রাখার মত!
এটাও খুব ভালো লাগলো। ++
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভালো লাগা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ সৌরভ দা।
৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৭
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভালোলাগা রইলো।
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ভালো লাগা জানানোর জন্য ধন্যবাদ হক ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: ভাই আমাদের গ্রামের বাড়িটাও কিন্তু জমিদার বাড়ি।
সেই বাধানো ঘাট। সেই পুতারন বাড়ি দোতলা বাড়ি। অবশ্য বাড়ির অবস্থা খুব নাজুক। বাধানো ঘাটও প্রায় ভেঙ্গে গেছে। একদিন আসবেন।