নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ আমি কোথাও যাব না
হুমায়ূন আহমেদ
[color=red]স্পয়লার সতর্কবাণী : রিভিউটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট[/color]
কাহিনী সংক্ষেপ :
শামসুদ্দিন আহমেদ রিটায়ার্ড স্কুল শিক্ষক। বসে আছেন আমেরিকান এ্যাম্বাসিতে, ভিসার জন্য। উনার নাক সুর সুর করছে, এটা হাঁচি আসার পূর্ব লক্ষণ। উনার হাঁচির সমস্যা আছে, একবার হাঁচি শুরু হলে আর থামতে চায় না। একবার উনি ৪৮টি হাঁচি দিয়ে ছিলেন, হাঁচি দিতে দিতে নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়।
এমবাসিতে পরিচয় হয় এক হেংলা পাতলা যুবক জয়নালের সাথে। জয়নাল এবার নিয়ে তৃতীয় বার ভিসার জন্য এসেছে। শামসুদ্দিন সাহেবের ভিসা হয়ে যায়, কিন্তু সেই মুহূর্তেই তার হাঁচি শুরু হয় এবং নাক দিয়ে রক্ত পরতে শুরু করে। তারপরেও তিনি জয়নালের ভিসা হচ্ছে কি না সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত জয়নালের ও ভিসা হয়ে যায়।
শামসুদ্দিন থাকেন তার খালাত বোন রাহেলার বাসায়। মাস শেষে পনেরোশো টাকা তুলেদেন রাহেলার হাতে থাকা খাওয়ার খরচ বাবদ। রাহেলার স্বামী রফিকের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। রফিক খুবই ভালো মানুষ, কিন্তু রাহেলা তাকে খুব সন্দেহ করে এবং কিছু দিন পর পর তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়া করে মাঝে মাঝে রাহেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, কিছু সময় পরে অবশ্য ফিরেও আসে আবার।
শামসুদ্দিন সাহেব আর জয়নাল এক সাথে সারাটা দিন কাটান, বঙ্গ-বাজার থেকে কেনা কাটা করেন অ্যামেরিকার জন্য। দুপুরে খাবার খান জয়নালের বাড়িতে। জয়নাল একটা রুম ভাড়া করে একাই থাকে, তার আর কেউ নেই। দুপুরের খাওয়ার পরে শামসুদ্দিনকে ঘরে রেখে জয়নাল আধাঘণ্টার জন্য বাইরে যায়, কিন্তু রাতের ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরেও সে ফিরে আসেনা। তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছে, বাধ্য হয়ে শামসুদ্দিন সাহেব বৃষ্টি তে ভিজে ভিজে বাড়িতে ফিরেন। বৃষ্টিতে ভেজার কারণে তার রাতেই জ্বর আসে। দুপুরের পরে চোখ মেলে দেখেন জয়নাল এসেছে। গতকাল রাতে সে গিয়ে ছিল তার প্রেমিকা ইতিদের বাড়ি। সেখানে রাতের খাবার খেতে দেরি হয়ে যায়।
জয়নাল খুবই দরিদ্র মানুষ, টিকিট কেনার টাকাটা যোগার করার জন্য সে অনেক লোকের কাছে ধার চায়। কিন্তু কারো কাছ থেকেই তেমন সারা পায় না। শেষ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামের বাড়ি বিক্রি করে দিবে। তার চাচাকে চিঠি দেয় যেন বাড়ি বিক্রয়ের ব্যবস্থা নেয়। কিছুদিন পরে তার চাচার চিঠির উত্তর পায় জয়নাল। সেখানে জানতে পারে যে মারা যাওয়ার আগে তার বাবা নাকি তার বাড়ি চাচার কাছে বিক্রি করে গেছেন। এর পরই জয়নাল আবিষ্কার করে তার পকেটে মানিব্যাগ নাই, শুধু তাইনা মানিব্যাগের সাথে সাথে পকেটে রাখা পাসপোর্টটাও নেই। হতাশ হয়ে সে সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে বেড়ায়। রাতে শামসুদ্দিন সাহেবের কাছে এসে জানায় যে তার মানিব্যাগ আর পাসপোর্ট হারিয়ে গেছে। কিন্তু শামসুদ্দিন সাহেব তার ট্রাংক থেকে জয়নালের পাসপোর্ট বের করে দিয়ে বলেন জয়নাল নিজেই তার কাছে পাসপোর্ট রাখার জন্য দিয়ে ছিল, এখন ভুলে গেছে।
ইতি খুবই বুদ্ধিমতী মেয়ে, সে জয়নালকে বিয়ে করবে ঠিক করেছে। তার বাড়ির কেউ রাজি না কিন্তু সবাইকে রাজি করিয়ে ফেলতে পারবে মনে করে। ইতি সত্যি সত্যিই তার বাসার সবাইকে বিয়েতে রাজি করিয়ে ফেলে। সন্ধ্যায় শামসুদ্দিন সাহেবকে নিয়ে জয়নাল যায় ইতিদের বাড়িতে এবং একপর্যায়ে জয়নাল আর ইতির বিয়ে হয়ে যায়।
শামসুদ্দিন সাহেব অসুস্থ হয়ে পরেন। একনাগাড়ে হাঁচি দিতে দিতে উনার নাক দিয়ে রক্ত পরতে থাকে। নাক দিয়ে রক্ত পরতে পরতে তিনি কাহিল হয়ে পরেন, এদিকে বাসায় তখন কেউ নেই। পরে জয়নাল এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। শামসুদ্দিন সাহেবের শরীর যখন খুব খারাপ করে তখন জয়নাল তার পাসপোর্ট নিয়ে বুড়িগঙ্গাতে ফেলে দিয়ে তার বিনিময়ে আল্লার কাছে শামসুদ্দিন সাহেবের জীবন ভিক্ষা চায়। কিন্তু শামসুদ্দিন সাহেব মারা যান। অনেক বছর পরে জয়নাল একজন সফল ব্যবসায়ী, পরিবারে সবাইকে নিয়ে বেরাতে যায় আমেরিকায়। এয়ারপোর্টে নেমে কান্নায় ভেঙ্গে পরে জয়নাল।
এপিগ্রাম ইন “আজ আমি কোথাও যাব না”
১। কাইকা মাছকে ভেবেছে কুমির।
২। দুর্ভাগ্য যখন আসে তখন একের পর এক আসতে থাকে। সৌভাগ্যের বেলায়ও তাই, একের পর এক আসতে থাকে।
৩। আগে ঠিকঠাক করে না রাখলে মিথ্যা বলা খুব কঠিন।
৪। একজন মানুষের জন্য অন্য একজন মানুষের যে অস্থিরতা তারই নাম হয়তো ভালোবাসা।
৫। রাতের বারটার পর সব নিষেধই খানিকটা দুর্বল হয়ে যায়।
প্রথম প্রকাশ: ঝিঁঝি পোকা
এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।
©somewhere in net ltd.