নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উনিশ শত পঁচাত্তরের আগষ্ট এবং দুই হাজার চব্বিশের আগষ্টের মধ্যে অনেকটা মিল খুঁজে পেলাম। উনিশ শত চুয়াত্তুরের দুর্ভিক্ষের কারণে মানুষ ক্ষুধায় অমানুষিক কষ্ট করেছে। তখন পর্যাপ্ত পরিমাণ সাহায্য সহযোগিতাও ছিল না। চাউলের দাম দেড় টাকা থেকে এগারো টাকা হলো। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেল। মানুষের ছিল না কোন রোজগার। সারাদিন দিনমুজুরি করে পেত দুই টাকা। দুইটাকায় আধাপোয়া চাউলের দামও হতো না। গৃহস্থরাও অভাবে থাকায় দিনমুজুরি নিতে পারতেছিল না। দিন মুজুররা কাজ কর্মহীন হয়ে না খেতে খেতে হাড্ডিসার হয়েগেল। অনেক মানুষ অনাহারে মারা গেল।
তখন যাদের রেশন কার্ড ছিল তারা অনেকটা ভালো চলতো। কম দামে রেশন পেত। সেই রেশন কার্ড সাধারণ পাবলিক পায় নাই পেয়েছিল আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা। প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে নোঙরখানা খোলা হয়েছিল। সেই নোঙর খানার দায়িত্বেও ছিল আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী। সাধারণ পাবলিককে নোঙরখানা থেকে জন প্রতি সারাদিনে দুইখান করে পাতলা রুটি দেয়া হতো। এই দুইখান রুটির জন্য অভুক্ত শরীরে মানুষ দুই তিন মাইল হেঁটে গিয়ে সারাদিন নোঙর খানায় বসে থাকতো। এতো অভাবের মাঝেও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা সরকারি সাহায্য জনগণকে না দিয়ে লুটপাট করে খেত। অভাবের কারণে চারিদিকে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেল। একদিকে খাদ্যাভাব অন্যদিকে গৃহস্থ বাড়িতে রাতে হয় ডাকাতি। মানুষ এক দিকে ভাত পায় না অন্য দিকে রাতে ডাকাতের ভয়ে ঘুমাতে পারে না।
এমন অবস্থায় মানুষের কথা বলার সুযোগও বন্ধ করা হয়েছিল। মিছিল করতে গেলেই রক্ষীবাহিনী ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করতো। একদিকে অভাব অন্যদিকে রক্ষীবাহিনীর নির্যাতনে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।
এই অবস্থায় আওয়ামী সুবিধাভোগী ছাড়া সব মানুষ শেখ মুজিবরের পতন কামনা করতে লাগল। মানুষের এই মনোভাবকেই কর্নেল ফারুক, রসিদ কাজে লাগিয়ে পচাত্তুরের পনোরই আগষ্ট শেখ মুজিবের পুরো পরিবারকে হত্যা করে। শেখ মুজিবকে হত্যা করার পর পুরো দেশে স্বস্তি নেমে আসে, সারা দেশে আনন্দ উল্লাস হৈ হুল্লোড় শুরু হয়ে যায়। আর্মিদের দ্বারা এমন ঘটনা ঘটায় সাধারণ পাবলিক ট্যাংকের মাথায় ফুলের মালা জড়িয়ে দেয়। দেশের পট পরিবর্তনে কাদের সিদ্দিকী ছাড়া আওয়ামীলীগের এমন কোন নেতাকে দেখি নাই তারা এর প্রতিবাদ করেছে। পরে কাদের সিদ্দিকীও প্রাণ ভয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। আওমীলীগ পতনের পর দেশে এমন অবস্থা হয়েছিল আওয়ামীলীগের নাম নেয়ার মতো কোন লোক খুঁজে পাওয়া যায় নাই।
দুই হাজার চব্বিশের আন্দোলনটা শুরু হয়েছিল ছাত্রদের কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এই আন্দোলনের পিছনে সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ কাজ করছিল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর চুয়াত্তুরের সেই পরিবেশ আবার ফিরে আসে। আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্যরা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। বিভিন্ন আইন কানুন দ্বারা মানুষের কথা বলা বন্ধ করা হয়। কথা বললেই জেল জুলুম শুরু হয়ে যেত। নেতা কর্মীদের অঢেল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলেও তাদের কোন রকম বিচার করা হতো না। আওয়ামীলীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে দমনের জন্য রক্ষীবাহিনীর মতো পুলিশকে ব্যবহার করা হলো। চাকরির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। দশ টাকা সের চাউল খাওয়ানোর কথা বলে সত্তুর আশি টাকা মূল্য হলো। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম বেড়ে গেল। মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যায় বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ মনে মনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। কিছু চাটার দল শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝানোর কারণে মানুষের বুকে চেপে রাখা ক্ষোভ বুঝতে পারে নাই।
ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল চাকরির কোটা নিয়ে। সেই আন্দোলনে সাধারণ জনগণ যোগ দেয়ায় সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়ে যায় এবং সরকার পতন হয়। হাসিনা সরকারের পতন ও নেতা কর্মী ফেলে রেখে পালায়ন কেউ কল্পনা করে নাই। সরকার পতনের পর দেশের যে অবস্থা শুরু হয়েছে সেটা পঁচাত্তুরে হয় নাই। সারা দেশে যেভাবে আওয়ামী সমর্থকদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর হলো পঁচাত্তুরে কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে নাই। তবে তখনকার মতই এবারও সাধারণ পাবলিক সৈনিকদের সাথে হাত মিলিয়ে আনন্দ উল্লাস করেছে। এখন সারা দেশে আওয়ামী পরিচয় দেয়ার মতো কোন লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রী এমপিরাও গা ঢাকা দিয়ে পালিয়েছে। আগামীতে এই আওয়ামীলীগ আবার কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে কিনা সন্দেহ। কারণ আওয়ামী নেতা কর্মীরা ক্ষমতার মাত্রাতিরিক্ত অপব্যাবহার করায় কিছু স্বার্থবাদী আওয়ামী সমর্থক ছাড়া সাধারণ পাবলিকের অন্তর থেকে আওয়ামী নামটি ঘৃণায় পরিণত হয়েছে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৩৯
পবন সরকার বলেছেন: এর আগে কিছু ঘটলে সেটা হয়তো রাজনৈতিক চেষ্টা ছিল এবার তো অরাজনৈতিক আন্দোলন জনগণের ক্ষোভের চোটে রাজনৈতিক আন্দোলনে রুপ নিয়েছে।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৪২
রানার ব্লগ বলেছেন: লেখক বলেছেন: এর আগে কিছু ঘটলে সেটা হয়তো রাজনৈতিক চেষ্টা ছিল এবার তো অরাজনৈতিক আন্দোলন জনগণের ক্ষোভের চোটে রাজনৈতিক আন্দোলনে রুপ নিয়েছে।
কাঠাল ভাঙ্গা বোঝেন ?
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:৫৯
পবন সরকার বলেছেন: কাঁঠাল ভাঙা বুঝি কিন্তু জীবনে কখনও খাওয়ার সুযোগ হয় নাই শুধু দেখে যাচ্ছি। আপনি ভাঙা কাঁঠাল খাইছেন নাকি?
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৫৪
রাসেল বলেছেন: ১৯৭৪ সালের অজানা ইতিহাস তোলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:০০
পবন সরকার বলেছেন: এখানে চুয়াত্তুরের খুবই সংক্ষিপ্ত বর্ননা দেয়া হয়েছে। বিস্তারিত বর্ননা অনেক মর্মান্তিক।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০৮
বিষাদ সময় বলেছেন: ১৭ জুলাই থেকেই এ আন্দোলনের ব্যাক এন্ড রাজনীতিবিদদের হাতে চলে গেছে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:০২
পবন সরকার বলেছেন: জামাত, জাতীয় পার্টি, নুরু, বিএনপি সবাই তো শেষে এসে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে যে কারণেই পতন দ্রুত হলো।
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:০৯
রাসেল বলেছেন: লেখক বলেছেন: এখানে চুয়াত্তুরের খুবই সংক্ষিপ্ত বর্ননা দেয়া হয়েছে। বিস্তারিত বর্ননা অনেক মর্মান্তিক।
বিস্তারিত লিখলে কৃতজ্ঞ হব।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:০৪
পবন সরকার বলেছেন: আগামীতে হয়তো চুয়াত্তুরের বর্ননা পাবেন। এতোদিন ডিজিটাল আইনের ভয়ে সত্য ঘটনাগুলোও লেখার সাহস পাই নাই এখন লিখবো।
৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬
রানার ব্লগ বলেছেন: লেখক বলেছেন: কাঁঠাল ভাঙা বুঝি কিন্তু জীবনে কখনও খাওয়ার সুযোগ হয় নাই শুধু দেখে যাচ্ছি। আপনি ভাঙা কাঁঠাল খাইছেন নাকি?
দর্শক হিসাবে আমি বেস্ট !!!
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:০৫
পবন সরকার বলেছেন: রাজনীতির কাঁঠাল না খেয়ে থাকলে অবশ্যই আপনি আমি বেষ্ট।
৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:৫১
নয়া পাঠক বলেছেন: ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। অন্যায় চিরদিন করা যায় না। অহংকার পতনের মুল।
হাসিনা সরকারের এই সব গুণগুলো ছিল মারাত্মকভাবে। বাধ দিয়ে যেমন বানের জল আটকানো যায় না, ঠিক তেমনি দু'য়েকজনকে মেরে গণআন্দোলন রোখা যায় না। ফলাফল কি হয়েছে? সেটা সবাই চাক্ষুস দেখেছে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮
পবন সরকার বলেছেন: ক্ষমতা কখনই চির দিন থাকে না। একদিন না একদিন চলে যায়। ক্ষমতার অপব্যাবহার কারীরা নিকৃষ্ট অপমানজনকভাবে বিদায় নেয়।
৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:০০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এবার আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দিনের জন্য বিলুপ্ত হতে পারে। একটি দল স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে রাজাকারের চেয়েও নিকৃষ্ট হতে পারে তার দৃষ্টান্ত এই দল। মানুষ ক্ষোভে নিজেকে রাজাকার বলাকে আওয়ামী লীগ বলার চেয়ে শ্রেয় মনে করে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৫:১০
পবন সরকার বলেছেন: চুয়াত্তুরে আওয়ামীলীগের জন্য কিছু মানুষের সমর্থন থাকলেও এবার অনাচার, অবিচার আর ছাত্র হত্যার কারণে পুরোটাই হারিয়েছে।
৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার মনে হয় মুসলিমলীগের দশা হবে আওয়ামীলীগের। আওয়ামীলীগকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার মত কেউ আওয়ামীলীগে নেই। কাউয়া, সাদ্দাম, হাসান মাহমুদ, আরাফাত, নানক, দিপু মণি আওয়ামীলীগকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে না। পুতুল, শেখ রেহানা, জয়ও পারবে না।
০৮ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:২৬
পবন সরকার বলেছেন: কাউয়ারা কেউ দেশে এসে মূল্যায়ন পাবে না, তার কারণ তাদের মুখ বিকৃত করে বিরোধী দল বা সংবাদপত্রের প্রশ্নকারীকে আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলার কারণে মানুষ বিরুক্ত হয়ে আছে। বরঞ্চ তারা দেশে আসলে অপমানিত হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:২৯
রানার ব্লগ বলেছেন: হ্য আছে তো !! এই আগস্টের কাহিনী এর আগে বহুবার ঘটাতে চেয়েছে । ২৪ এ এসে ঘটলো ।