নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৩০-৩১ সাল। কলকাতার বেনে পুকুর লেইনে হক সাহেবের বাসা। লণ্ডন গোল টেবিল বৈঠকে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। বাসায় সন্ধ্যায় মিলাদ মজলিসের আয়োজন হল। জন দশেক মওলানা সমবেত হলেন।
মিলাদ যথা নিয়মে হয়ে গেল।
তখন হক সাহেব ঘরে গিয়ে একটা হারমোনিয়াম নিয়ে এসে মজলিসে রাখলেন।
মওলানা সাহেবদের চোখ তো কপালে।
একজন হক সাহেবকে জিঙ্গাসা করলেনঃ ওটা দিয়ে কি হবে হুজুর?
গায়ক আব্বাস উদ্দিন মজলিসের এক কোণে চুপচাপ বসে ছিলেন। হক সাহেব মুচকি হেসে আঙুল দিয়ে তাঁকে দেখিয়ে বল্লেনঃ আপনার মিলাদ পড়া তো শুনলাম এবার হারমোনিয়াম দিয়ে ওঁর গলার একটু মিলাদ পড়া শুনতে চাই।
মৌলভী সাহেবেরা ব্যথিত কণ্ঠে উত্তর দিলেনঃ আপনার মুখ দিয়েও এমন কথা শুনলাম?
হক সাহেব বল্লেন ঃ দেখুন এটা আমার সাধ। আপনাদের কারো আপত্তি থাকলে তিনি বাইরে যেতে পারেন।
ক্ষুন্ন হয়ে তারা একে একে উঠে দাঁড়ালেন, কিন্তু খুব ধীরে।
হক সাহেব বল্লেন ঃ চালাও আব্বাস।
হারমোনিয়াম বেজে উঠল।
আব্বাস উদ্দিন শুরু করলেনঃ
তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে
মধুপূর্ণিমারই সেথা চাঁদ দোলে
আব্বাসউদ্দিনের কন্ঠ হতে মধু ঝরতে লাগল। হক সাহেব তন্ময় হয়ে শুনতে লাগলেন।
মওলানা সাহেবরা দরজা পর্যন্ত গিয়ে ঠাঁয় দাঁড়ালেন। তারপর তাঁরা ধীরে ধীরে এসে ফের বসলেন।
আব্বাস উদ্দীন একে একে চার পাঁচ খান হামদ ও নাত গাইলেন।
মাওলানা সাহেবদের ঠোঁটে খুশীর হাসি ফুটে উঠল।
হক সাহেব মাওলানা সাহেবদের দিকে চেয়ে জিঙ্গাসা করলেনঃ আচ্ছা বলুন তো-- এ গান কি নাজায়েজ?
মাওলানা সাহেবরা লজ্জায় চুপ রইলেন। হক সাহেব ফের বল্লেনঃ দেখুন, যা না জানেন সে কথা বলে আমাদের পল্লীর ভাইদেরে ভুল পথে নেবেন না।
(শতাব্দী-১৩২পৃঃ)
©somewhere in net ltd.