নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
স্যার থমাস শন কনারি যিনি শন কনারি নামেই সমধিক পরিচিত। শন কনারি একজন একাডেমি পুরস্কার, গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা পুরস্কার বিজয়ী স্কটল্যান্ডীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য। আমাদের মধ্যে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কস্টসাধ্য যে কিনা এখনো বন্ড সিরিজেরে কোন চলচিত্র দেখে নাই। ১৯৬২ সালের ১৬ই জানুয়ারি, অর্থাৎ প্রায় ৫৩ বছর আগে জামাইকায় শুরু হয়েছিল ‘ডক্টর নো(Dr.No)' ছবির শুটিং ৷তখন থেকেই ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভ' এর সেরা এজেন্ট ‘জেমস বন্ড জিরো জিরো সেভেন' অমর হয়ে রয়েছেন ৷জেমস বন্ড ০০৭ নামটি শুনলেই আমাদের সামনেই চলে আসে এমন এক মানুষের নাম যে কিনা অসাধারণ গতিময়তা এবং উপস্থিত বুদ্ধি দ্বারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে সমর্থ। প্রয়োজনে মানুষ খুন করারও বিশেষ অনুমতি রয়েছে ৷ দুর্বলতা বলতে শুধু নারী ৷ সুন্দরী নারীদের সঙ্গ ছাড়া তার চলে না, তা সে নিজের দপ্তরের মিস মানিপেনিই হোক, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হোক, এমনকি একেবারে শত্রু শিবিরের কোনো নারী হোক ৷প্রখর বুদ্ধি, অসামান্য রসবোধ, শারীরিক শক্তি ও আত্মরক্ষার কৌশলও তার রপ্ত ৷ আর অবশ্যই রয়েছে তার হাতে ‘কিউ'এর তৈরি প্রযুক্তির নতুন চমক, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বন্ড'এর গাড়ি। জেমস বন্ড'কে অল্প কথায় এভাবেই বর্ণনা করা যেতে পারে ৷বন্ড ছবি ছাড়াও তিনি মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আজ এই অভিনেতার ৯০তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩০সালের আজকের দিনে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনে জেমস বন্ড খ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা।
(শিশুকালে শন কনারি)
বন্ড নায়ক শন কনারি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩০ সালের ২৫ আগস্ট। তাঁর বাবা ছিলেন একজন কারখানা শ্রমিক। পরে সে কাজ ছেড়ে তিনি লরি চালানো শুরু করেন। আর তার মা ছিলেন ধোপা। শন নিজেও তার কর্মজীবন শুরু করেন দুধওয়ালা হিসেবে। এরপর তিনি নেভিতে যোগ দিলেও আলসারের কারণে তাকে নেভি থেকে চাকরিচু্যত করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে তিনি লরি চালক, শ্রমিক, এডিনবার্গ আর্ট কলেজের এক শিল্পীর মডেল ও কফিন বিক্রির কাজ করেছেন। তিনি যে অভিনেতা হবেন, তাই বা কে জানতো? একদিন বন্ড হয়ে তিনি দুনিয়া মাতাবেন, তা ছিলো সবারই ধারণার বাইরে। ১৯৫১ সালে টাকার খোঁজে তিনি কিং'স থিয়েটারে যোগ দেন। এখানে তিনি ব্যাকস্টেজে অভিনেতাদের সাহায্য করতেন। এখানে কাজ করতে গিয়েই তিনি অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন। শুরু হয় তার অভিনয় জীবন। শন কনারি সবচেয়ে বেশি পরিচিত লাভ করেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় বন্ড চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয়ের জন্য। ব্রিটিশ লেখক ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সাড়া জাগানো গোয়েন্দা চরিত্র এই জেমস বন্ড। উপন্যাসে বন্ডকে দেখানো হয় রয়্যাল নেভির একজন কমান্ডার হিসেবে, পরে যাকে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৯৫ সালে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের নাম পরিবর্তন করে এমআই৬ রাখা হয়, যার মানে অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস। জেমস বন্ডের কোড হচ্ছে ০০৭। ০০ কোড শুধু তাদেরই দেওয়া হয় যারা প্রয়োজনে হত্যা করার লাইসেন্সপ্রাপ্ত। ফ্লেমিং জেমস বন্ডকে নিয়ে ফেঁদেছেন ১২টি উপন্যাস আর দুটি ছোটগল্পের সংকলন।
(যৌবনে শন কনারি)
ফ্লেমিংয়ের মৃত্যুর পর জেমস বন্ড চরিত্রটিকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র, উপন্যাস, কমিকস, ভিডিও গেমস ইত্যাদি । ১৯৫৪ সালে ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট থ্রিলার চরিত্র জেমস বন্ডকে নিয়ে প্রথম টিভি সিরিয়াল তৈরি করা হয়। তখন থেকেই ফ্লেমিং চিন্তা করছিলেন বন্ডকে নিয়ে ছবি বানানোর। কিন্তু কোনো প্রযোজকই রাজি হচ্ছিলেন না। অবশেষে ১৯৫৯ সালে অ্যালবার্ট ব্রোক্কোলি রাজি হলেন বটে, কিন্তু তার পার্টনার বেঁকে বসলেন। ১৯৬১ সালে ব্রোক্কোলির সঙ্গে বন্ডের প্রযোজক হিসেবে গাঁটছড়া বাঁধলেন হ্যারি শার্ল্টজম্যান। তারা কাহিনী হিসেবে প্রথম ছবির জন্য পছন্দ করলেন 'ডক্টর নো'। আর বন্ড খুঁজে বের করার জন্য 'ফাইন্ড জেমস বন্ড' শিরোনামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বসলেন। সেই প্রতিযোগিতায় ২৮ বছর বয়সী পিটার অ্যান্থনি নামে এক মডেল জয়ী হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো, তাকে বন্ড চরিত্রের সঙ্গে ঠিক মানাচ্ছে না। সুতরাং, তাকেও বাদ দেয়া হলো। শেষমেশ প্রথম বন্ড হিসেবে শন কনারিকেই বেছে নেয়া হলো।
১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত শন কনারি মোট ৭টি বন্ড ছবিতে অভিনয় করেছেন। বন্ড চলচ্চিত্রের প্রথম পাঁচটি ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিগুলো হলোঃ ড. নো (১৯৬২), ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থাণ্ডারবল (১৯৬৫) এবং ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস (১৯৬৭)। তারপর পুণরায় তিনি ডায়মণ্ডস আর ফরএভার (১৯৭১) এবং নেভার সে নেভার এগেইন (১৯৮৩) ছবিতে বণ্ড হিসেবে পুণরায় অংশগ্রহণ করেন। বণ্ড সিরিজের সাতটি চলচ্চিত্রই বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি দ্য আনটাচেবল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও মেরিন, ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুসেড, দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর, ড্রাগনহার্ট, দ্য রক প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে বন্ড'এর চমকও বাড়ছে ৷ কিন্তু বন্ড কখনোই পুরানো হন না ৷১৯৬২ সালে শুরু হয়েছিল জেমস বন্ডের সেলুলয়েড-কাল। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত চলমান এই জনপ্রিয় সিরিজে জেমস বন্ড হিসেবে দেখা গেছে হলিউডের নিজ নিজ সময়ের সেরা ছয় হার্টথ্রবকে। গত ৫ দশকে অভিনেতা বেশ কয়েকবার বদলে গেলেও পরিচিত বন্ড'কে দেখতেই বার বার দর্শকরা ভিড় করেন সিনেমা হলে ৷শন কনারি, রজার মুর, জর্জ ল্যাজেনবি, টিমথি ডালটন, পিয়ার্স ব্রজন্যান ও হালে ড্যানিয়েল ক্রেগ জেমস বন্ড'এর ভূমিকায় অভিনয় করে এসেছেন ৷ সবাই পেয়েছেন সাফল্য। তবে সেই সাফল্য কি জেমস বন্ডের খ্যাতিতেই এসেছে, নাকি তারকাদের যোগ্যতায়? যদি তারকাদের যোগ্যতার বিচার করা হয়, তাহলে ছয় বন্ডের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাবেন যে কেউ। কারণ কাকে রেখে কার কথা বলবেন? ড্যানিয়েল ক্রেইগ অবশ্য বিব্রত হলেন না মোটেও। উল্টো আরো ঘোষণা দিয়েই বলে দিলেন, 'শন কনারিই সেরা বন্ড। জেমস বন্ড সিরিজের প্রথম ছবিতেই শন কনারি অভিনয় করেছিলেন বন্ড হিসেবে। আর তখন থেকেই তিনি অনবদ্য' এবং তিনি নিজস্ব একটা ভাবমূর্তি তৈরি করতে পেরেছিলেন।' এমনটাই দাবি ক্রেইগের।
শন কনারির সময়কার জেমস বন্ডের ছবিগুলো এখনো মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। ১৯৬২ সালে ‘ডক্টর নো’ ছবির শুটিং’এর মধ্য দিয়ে জেমস বন্ড’এর যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকেও সেই সাফল্য বজায় রয়েছে আজ এই অভিনেতার ৯০তম জন্মবার্ষিকী। আরও অনেক কাল ধরে আমরা শুনতে চাই তাঁর সেই বিখ্যাত সংলাপ, "মাই নেম ইজ বন্ড, জেমস বন্ড" ৷সেই প্রত্যাশা নিয়ে জেমস বন্ড খ্যাত অভিনেতা শন কনারির জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
২| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:১৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শুভেচ্ছা
৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:২০
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি মুভি দেখেন? কি ধরনের মুভি আপনার পছন্দ। দুই একটা নাম বলেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমার পছন্দের একজন অভিনেতা