নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ১৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র দিবস। ১৮৩৯ সালে প্রথম ফরাসি সরকার ১৯ আগস্টকে বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তখন থেকেই বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস বা ‘ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফি ডে’ তে সবাই ফটোগ্রাফির প্রতি নিজের সব ভালোবাসা ও নেশা প্রকাশ করে দিনটি আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করে। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ফটোগ্রাফির অগ্রযাত্রায় যে সকল মানুষ নিরলস কাজ করে গেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই দিনটি পালন করা হয়। বিশ্বে ১৭০ টিরও বেশি দেশে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। জানা গেছে, ১৮১৬ সালে জোসেফ নিপসে প্রথম স্থির আলোকচিত্র তোলার ক্যামেরা আবিষ্কার করেন। এরপর ১৮৩৩ সালে নিপসের মৃত্যুর পর তার অংশীদার লুই ডাগুয়েরে গবেষণা চালিয়ে যান এবং ১৮৩৭ সালে প্রথম ফটোগ্রাফিক পদ্ধতি তৈরি করেন। ১৮৩৯ সালের আজকের দিনে ফ্রান্স সরকার ডাগুয়েরে ফটোগ্রাফি পদ্ধতি পেটেন্ট ক্রয় করে। তারপর থেকেই এই দিনটিকে বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। এই শৈলির উদ্ভাবন করেছিলেন জোসেফ নিপসে ও লুই ডাগুয়েরে। সময়ের আবর্তনে হারিয়ে যায় অনেককিছু। যুগে যুগে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে , হচ্ছে। যখন ক্যামেরা তৈরি হয়নি এমনি কি কাগজও তখনও মানুষ মাটি, পাথর বা কাঠে খোদাই করে বিভিন্নভাবে ছবি এঁকে নানা দৃশ্য ধরে রাখত। আধুনিক যুগে বাংলাদেশে আলোকচিত্রের ধরণটাই অনেকখানি বদলে গেছে। এখন অনেক নাম করা ফটোগ্রাফার বাংলাদেশে আছেন। আলোকচিত্র একটি সৃজনশীল কাজ। ফটোগ্রাফি শুধু এখন আর শখই নয়, অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। এই শিল্পকে আরও প্রতিষ্ঠিত করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে ফটোগ্রাফিক সোসাইটি। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ফটোগ্রাফি অনেক প্রাধান্য পায়। এই আলোকচিত্র নিয়ে হয় অনেক প্রতিযোগিতা। ফটোগ্রাফির অগ্রযাত্রায় যে সকল মানুষ নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
(শিউলি তলাঃ সৌজন্যে কাজী ফাতেমা ছবি)
মূলত আলোকচিত্র বা ফটোগ্রাফি বলতে কোন আলোকসংবেদী তলের উপর আলো ফেলার মাধ্যমে তৈরি ছবিকে বোঝায়। আলোকসংবেদী তলটি ফটোগ্রাফিক ফিল্ম হতে পারে আবার সিসিডি বা সিমস চিপের মত কোন ইলেকট্রনিক ছবি নির্মাণকারীও হতে পারে। সাধারণত ক্যামেরা দিয়ে আলোকচিত্র নেয়া হয়। এখানে ক্যামেরার লেন্স বড় ভূমিকা পালন করে। এই আলোকচিত্র নেয়ার বা তোলার পদ্ধতিকে ফটোগ্রাফি বলে। একে আলোকচিত্র শিল্পও বলা যায়।পৃথিবীর সভ্যতার উৎকর্ষে যে কয়টি মাধ্যম অন্যতম, তার মধ্যে ফটোগ্রাফি স্বতন্ত্র অবস্থানে। বিভিন্ন সময়ে অনেক ফটোগ্রাফার তাদের নিজেদের তোলা ছবি দিয়ে বিশ্বে আলোচনার জায়গা করে নেন। কিছু কিংবদন্তি মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন ত্যাগ, শ্রম ও এই শিল্পের প্রতি অগাত ভালোবাসায় বিনির্মিত হয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- হেনরী কার্টিয়ার ব্রেসো, রবার্ট কাপা, সেবাস্তিও সালগাদো, রঘু রায়, কেভিন কার্টার, ম্যালকম ব্রাউনি, নিক আট, আলবার্ট করদা ও অনেকেই। আলোকচিত্র (ছবি বা ফটোগ্রাফ) হচ্ছে সময়ের দর্পণ। এমনকি ইতিহাসের সাক্ষী। একটি ছবির অনেক ক্ষমতা। কিছু না বলেও একটা ছবি দিয়ে অনেক সত্যিকে তুলে ধরা যায়। ফটোগ্রাফি হলো এমন একটি বড় উদ্ভাবন যা বিশ্বকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। আজকের দুনিয়ায় মিডিয়া থেকে শুরু করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও ফটোগ্রাফি তথা আলোকচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, কথার চেয়ে ছবি দিয়ে মনের গভীর অভিব্যক্তি আরো সুদৃঢ় হয়ে ওঠে। সময়ের আবর্তে হারিয়ে যায় অনেককিছু। বাস্তবতার পর্দায় ঢেকে যায় পুরনো স্মৃতি। তারপরও জীবনের স্বর্নালী মুহূর্তকে ধরে রাখতে কার না মন চায়। বিজ্ঞানের অবদানে আর প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় পর্যায়ক্রমে মানুষের হাতে পৌঁছেছে নানা মাত্রিকতার অত্যাধুনিক ক্যামেরা। সাটার টিপে দিলেই ক্লিক ক্লিক ফ্রেমে বন্দী হয় অসংখ্য ছবি। ক্যামেরা শব্দটি এসেছে একটি ল্যাটিন শব্দ ‘কামারা’ থেকে। যার বাংলা অর্থ ঘর। আর যেই যন্ত্রটি আজ ক্যামেরা নামে পরিচিত হয়েছে তার নাম আসলে ক্যামেরা অবস্কুরা। এটিও একটি ল্যাটিন শব্দ। যার বাংলা অর্থ অন্ধকার। অর্থাৎ ‘অন্ধকার ঘর’ কিন্তু ফটোগ্রাফি একটি ইংরেজি শব্দ। যার বাংলা মানে “আলো দিয়ে আঁকা”। গ্রিক শব্দ ‘ফস’ ও ‘গ্রাফ’ শব্দ থেকেই ফটোগ্রাফি শব্দটি এসেছে।
(চায়ের পাতা তোলাঃ সৌজন্যে রাজীব নূর খান)
ফটোগ্রাফির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ মূলত বেগার্টের হাত ধরেই বাংলাদেশে আসে। পরবর্তীতে আলোকচিত্রাচার্য মঞ্জুর আলম বেগ নিজ উদ্যোগে ১৯৭৫ সালে বেগার্টের ১৫তম জন্মদিনে ‘বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি’ (BPS) প্রতিষ্ঠা করেন। দীপ্ত পথচলায় একটা সময় বিপিএস ফটোগ্রাফিবিষয়ক আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংগঠন ‘ফিয়াপ’ (The International Federation of Photographic Art)-এর সদস্যপদ লাভ করেন। একইভাবে তাঁর নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফটোগ্রাফি আন্দোলন তথা চর্চা প্রসারিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের আলোকচিত্র শিল্পও হয়ে ওঠেছে অত্যাধিক সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশে ফটোগ্রাফি চর্চার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে আলোকচিত্রাচার্য মঞ্জুর আলম বেগ জার্মানিতে ফিয়াপের সর্বোচ্চ সম্মাননা ইএসফিয়াপ (Excellence for Services rendered FIAP) লাভ করেন। তাঁর লেখা বই ‘আধুনিক ফটোগ্রাফি’ দুই বাংলাতে ব্যাপক সমাদৃত এবং জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই আলোকচিত্রীকে ২০০৭ সালে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের আলোকচিত্রশিল্পকে এগিয়ে নিতে যেসকল কীর্তিমানরা অসামান্য অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- মৃণাল সরকার, সাঈদা খানম, বিজন সরকার, রশিদ তালুকদার, আনোয়ার হোসেন, ড. শহীদুল আলম এবং মোহাম্মদ আলী সেলিম। এছাড়াও সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ফটোগ্রাফিকে জনপ্রিয় করার জন্য নওয়াব আলী (ময়মনসিংহ), মর্তুজা তৌফিকুল ইসলাম (চট্টগ্রাম), মওদুদুল আলম (চট্টগ্রাম), রঞ্জিত দাস (চট্টগ্রাম), তৌহিদুন নবী (বগুড়া), ফরিদ আক্তার পরাগ (রাজশাহী), কামাল আহমেদ (নারায়ণগঞ্জ), তাপস রায় (নারায়ণগঞ্জ), নীতিশ রায় (শেরপুর), ফকরুল ইসলাম (সিলেট), ওবায়েদুল আল মামুনেরা (ব্রাক্ষণবাড়িয়া) অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন।এদেশে নারীরাও ফটোগ্রাফিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। বাংলাদেশে নারী ফটোগ্রাফারদের মধ্যে প্রথমে আসে সাঈদা খানমের নাম। সেই পথ ধরে খ্যাতিমান হয়েছেন অনেকেই। মনিরা মোর্শেদ মুন্নী, ফারজানা খান গোধূলি, সামিরা হক, স্নিগ্ধা জামান, কাকলী প্রধানপ্রমুখ। বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রামাণ্যচিত্রকে ফটোগ্রাফির অনন্য জায়গায় নিয়ে এসেছেন অনেকেই। তাঁদের কাজের ক্ষেত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– শিশুশ্রম, এসিড দগ্ধ, পতিতালয়, তৃতীয় লিঙ্গ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, পরিবেশ এবং অন্যান্য। এ ক্ষেত্রে যাদের নাম আসে শুরুতেই তারা হচ্ছেন রশীদ তালুকদার, মোহাম্মদ আলম, আব্দুল মতিন, জামিল আহমেদ, আলহাজ জহিরুল হক, পাভেল রহমান, মুফতি মুনির, ড. শহীদুল আলম, আজিজুর রহিম পিউ, শফিকুল আলম কিরণ, জিএমবি আকাশ, আবীর আবদুল্লাহ, আল ইমরুন গর্জন, জিয়া ইসলাম, মুনেম ওয়াসিফ, দীন মোহাম্মদ শিবলী, রাহুল তালুকদার, সরকার প্রতীকসহ আরও অনেকেই অনেকেই স্বমহিমা এগিয়ে চলছেন নান্দনিক, সম্ভামনাময় এই শিল্পে। আজ বিশ্ব আলোকচিত্র দিবসে সামুর ছবি আপু, পাগলা জগাই, কামাল ভাই ও রাজীব নূর খানসহ ফটোগ্রাফির অগ্রযাত্রায় যে সকল মানুষ নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
উৎসর্গঃ ছবিআপু, পাগলা জগাই, সাদামনের মানুষ ও রাজীব নূর খান
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার জন্য শুভকামনা ও শুভেচ্ছা
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২
অজ্ঞ বালক বলেছেন: সুন্দর ও তথ্যবহুল পোস্ট। পেলাচ।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবা্দ বিশেষ !!! অজ্ঞ বালক
সাথে থাকার জন্য।
৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আসসালামু আলাইকুম।
একসময় খেয়ে না খেয়ে সারাদিন ক্যামেরা নিয়ে পড়ে থাকতাম। প্রতি সপ্তাহে দল বেঁধে দুই দিন ফোটো ওয়ার্কে যেতাম। হাজার হাজার ছবি তুলতাম।
প্রতিদিন ছবি না তুললে ভালো লাগতো না। আর এখন ক্যামেরা হাত দিয়ে ছুয়েও দেখি না।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সে কারনেই লেখাটি কিঞ্চিত আপনার নামে
উৎসর্গ করেছি। সম্পূর্ণ করতে না পারার জন্য
দুঃখিত। কারণ ছবি আপু,পাগলা জগাই, কামাল
ভাইর দারুন ছবির হাত! আবার শুরু করুন।
আপনার পেয়ারা, ফুলের ছবি দারুন !!
৪| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: বেরাবার সময় ছবি তুলি স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। ছোট ছোটো অনেক কিছুই টানে ছবি তুলতে।
নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই অশেষ ধন্যবাদ অধমকে মনে রাখার জন্য।
২০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা
আমি ব/যসের কারণে সবাইকে হয়তো
মনে করতে পারিনা তবে অল্প সংখ্যক যাদেরকে
আমি স্মরণে রাখি তাদের মাঝে আপনি একজন।
তবে পাগলা জগাই না, আপনার সাথে আমার মেল বন্ধন
মরু ভুমির জল দস্যু দিয়ে। ভালো থাকবেন দাদা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫
নিয়াজ সুমন বলেছেন: ভালোবাসা থাকলো আপনার জন্য।