নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের অন্যতম পথিকৃৎ, জনপ্রিয় শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। আশির দশক থেকে শুরু করে প্রায় তিন যুগ ধরে এমন কার৷ একজন লিভিং রকস্টার৷উপমহাদেশের সেরা গিটারিস্টও ছিলেন তিনি৷ দেশে-বিদেশে গিটারিস্ট হিসেবে তাঁর ছিল অনেক কদর৷ তিনি রক ব্যান্ড এল আর বি এর গায়ক ও গীটারবাদক হিসেবে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তাকে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতের ধারায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী এবং গীটারবাদক বলা হয়। মূলত রক ঘরানার কন্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল সঙ্গীত এবং লোকগীতি দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে কয়েক যুগ ধরে জনপ্রিয়তার তালিকায় শীর্ষে ছিলেন তিনি৷ মুখে মুখে ফিরেছে তাঁর গান৷ ‘বস’ বা ‘এবি' ব্যান্ড সংগীতের চর্চা শুরু করেন নব্বইয়ের দশকে৷ তাঁর গান যেমন দর্শক নন্দিত হয়েছে, তেমনি তাঁকে দুই বাংলাতেই করেছে সমান জনপ্রিয়৷ ‘সেই তুমি’, ‘রুপালি গিটার’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘ফেরারী এই মনটা আমার’, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘একদিন ঘুমভাঙা শহরে’, ‘চল বদলে যাই’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘হাসতে দেখ, গাইতে দেখ’র মতো অসাধারণ সব গান তিনি উপহার দিয়েছেন৷আজ সঙ্গীতশিল্পী ও গীতিকার আইয়ুব বাচ্চুর ৫৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৬২ সালের আজকের দিনে তিনি চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জনপ্রিয় ব্যান্ড এলআরবি'র প্রতিষ্ঠাতা আইয়ুব বাচ্চুর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
আইয়ুব বাচ্চু ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম রবিন। অত্যন্ত গুণী এই শিল্পী তাঁর শ্রোতা-ভক্তদের কাছে তিনি বস (Boss) ও এবি (AB) নামেও পরিচিত। তার বাবা ইশহাক চোধুরী এবং মা নুরজাহান বেগম। তাদের পরিবার ছিল একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার। আইয়ুব বাচ্চু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধীন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন। বাচ্চু ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে কলেজ জীবনে "আগলি বয়েজ" নামক ব্যান্ড গঠনের মাধ্যমে তার সঙ্গীত জীবনের সূচনা করেছিল। ১৯৭৭ সালে তিনি "ফিলিংস" (বর্তমানে "নগর বাউল" নামে পরিচিত) এ যোগদান করেন এবং ব্যান্ডটির সাথে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিলেন। একই বছরে তিনি জনপ্রিয় রক ব্যান্ড সোলস-এর প্রধান গীটারবাদক হিসেবে যোগদান করেন। সোলসের সঙ্গে তিনি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত, সুপার সোলস (১৯৮২), কলেজের করিডোরে (১৯৮৫), মানুষ মাটির কাছাকাছি (১৯৮৭) এবং ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট (১৯৮৮) চারটি অ্যালবামে কাজ করেছিল। এরপর ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল তিনি তার নিজের ব্যান্ড লিটল রিভার ব্যান্ড গঠন করে, যা পরবর্তীকালে লাভ রান্স ব্লাইন্ড নামে বা সংক্ষেপে এল আর বি নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৯৫ সালে এল আর বি এর ঘুমন্ত শহরে অ্যালবামের পর বাচ্চু নিজের অ্যালবাম কষ্ট রেকর্ড করার জন্যে অডিও আর্ট স্টুডিও তে যান, যেখানে তার ব্যান্ডের অ্যালবামটি রেকর্ড করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের অক্টোবরে অ্যালবামটি সাউন্ডটেক ইলেকট্রনিকস থেকে বের হয়। অ্যালবামটি বের হওয়া মাত্রই প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে। অনেকের মতে এটি বাচ্চুর সবচেয়ে সেরা অ্যালবাম। "কষ্ট পেতে ভালোবাসি", "কষ্ট কাকে বলে" এবং "জেগে আছি একা" এর মতো জনপ্রিয় কিছু গান আছে অ্যালবামটিতে। আজম বাবু ছিলেন অ্যালবামের প্রযোজক আর বাচ্চু ছিলেন সহ-প্রযোজক। বাচ্চুর ব্যান্ড এল আর বি এর সদস্য এস আই টুটুল এই অ্যালবামে কীবোর্ডস বাজিয়েছিল এবং ফিলিংস ব্যান্ডের এহসান এলাহি ফান্টি অ্যালবামটিতে ড্রামস বাজিয়েছিল। এক বছরের ভেতরেই অ্যালবামটির ৩ লক্ষ কপি বিক্রিত হয়েছিল। আইয়ুব বাচ্চু তার মৃত্যু অবধি ২৭ বছর ধরে এল আর বি ব্যান্ডটির সঙ্গে ছিলেন।
(চট্টগ্রামে আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে নির্মিত স্টিলের পাত দিয়ে তৈরি রুপালি গিটার যার উচ্চতা ১৮ ফুট)
ব্যক্তিগতজীবনে আইয়ুব বাচ্চু ১৯৯১ সালের ৩১শে জানুয়ারি তার বান্ধবি ফেরদৌস চন্দনা কে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান আছে: মেয়ে ফাইরুজ সাফরা আইয়ুব (জন্ম ১৯৯৪) এবং ছেলে আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব (জন্ম ১৯৯৬)। আইয়ুব বাচ্চুর ফুসফুসে পানি জমার কারণে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা গ্রহণের পর তিনি সুস্থ হন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১৮ই অক্টোবর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে যাঁর সাংগীতিক জীবন শুরু, সেই কন্ঠই ইতিহাস রচনা করে চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায়। আইয়ুব বাচ্চু মানেই শুধু, গান বা ব্যান্ড সঙ্গীত নয়। আইয়ুব বাচ্চু মানে একটি গল্প। যে গল্পের প্রতিটি উপাদান, চরিত্র মানুষের মনে দাগ কেটেছে বহু বছর ধরে। আইয়ুব বাচ্চুর একটি জনপ্রিয় গান, ‘এই রুপালি গিটার ফেলে, একদিন চলে যাব দূরে- বহুদূরে..’ তিনি তার কথা রেখেছেন। রুপালী গিটার ফেলে তিনি আজ বহু দুরে। তবে তার প্রয়াণের পরেও তাকে স্মরণ করার পাশাপাশি ভক্তদের স্মরণে বার বার ঠাঁইও পেয়েছে রুপালি গিটার। মাত্র ৫৬ বছর বয়সের প্রয়াণকে খুব সহজে মেনে নিতে পারেনি ব্যান্ড প্রেমিক এবং তার ভক্তরা। কথায়, গানে, সামাজিক মাধ্যমে বারবার উঠে এসেছে ‘সেই তুমি’ বা ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’। আর চট্টগ্রাম শহরের সড়ক দ্বীপে ঠিকই আইয়ুব বুাচ্চুর স্মরণে স্থান করে নিয়েছে রুপালি গিটার আরেকবার। আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতি ধরে রাখতে চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবর্তক মোড়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই ‘রুপালি গিটার’। তাই এখনও আইয়ুব বাচ্চু মানে শুধু এলআরবি নয়, শুধু ব্যান্ড সঙ্গীত নয়। আইয়ুব বাচ্চু মানে রুপালি গিটার, যা বার বার ফিরে আসে তাকে ধারণ করে। আজ সঙ্গীতশিল্পী ও গীতিকার আইয়ুব বাচ্চুর ৫৮তম জন্মবার্ষিকী। জনপ্রিয় ব্যান্ড এলআরবি'র প্রতিষ্ঠাতা আইয়ুব বাচ্চুর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
ফেসবুক
[email protected]
১৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ পদাতিক দাদা
তাঁর গান যেমন দর্শক নন্দিত হয়েছে, তেমনি তাঁকে দুই
বাংলাতেই করেছে সমান জনপ্রিয়৷
বছর সাতেক আগে কিংবদন্তি ব্যান্ড শিল্পীকে আইয়ুব বাচ্চুর হাত ধরে বাংলাদেশে শুরু
হয়েছিল ব্যান্ড ফেস্ট। দেশের সেরা ব্যান্ডগুলির শিল্পীরা হাজির হতেন এই আসরে।
সেই দিন আজ অতীত।
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:২৪
শায়মা বলেছেন: আজ তার জন্মদিন নাকি!!!!!!!!!
জানতাম না তো!!!
মৃত্যুর ওপারেও ভালো থাকুক এই শিল্পী!
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপু,
না জানা দোষের নয়।
সবার সব্ কিছু স্বরণ থাকারও
কথা নয়। তাই মাঝে মাঝে স্মরণ
করিয়ে দেওয়া। শুভ রাত্রি
৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৪৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
ভালো গীটার বাজাতেন।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ গাজীসা্ব
মন্তব্য প্রদানের জন্য।
৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:৪৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আহা, কত কত অসাধারণ গান দিয়ে গেছেন।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ পাগলা জগাই দাদা
তার অসাধাণ গানের জন্যই
তিনি অমর হয়ে আছেন।
৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:৩১
ঢুকিচেপা বলেছেন: আমাদের দেশের একজন, শুধুই একজন- “এবি”
শুভেচ্ছা রইল জন্মদিনে।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ঢুকিচেপা
এবি কে জন্মদিনে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:৫১
ঘরহীন বলেছেন: এশিয়ার সেরা গীটার বাদক বলা হয় তাকে।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি তিনি এশিয়ার সেরা গীটারিস্ট
৭| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২০
নীল আকাশ বলেছেন: আমার খুব পছন্দের একজন গায়ক। ভাল থাকুন উনি, ঐপাড়ে।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে নীল আকাশ
৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: মুরব্বী একসময় রাত জেগে আইয়ূব বাচ্চুর গান শুনতাম।
১৭ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এখন কি কারো ভয়ে সেই অভ্যাস
পরিবর্তন করেছেন ?
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৩৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আহা! ওস্তাদ লোক। আমার অন্যতম প্রিয় একজন শিল্পী। বিশ্ববিদ্যালয় ফেস্টে উনি আমেরিকার থেকে সরাসরি এসেছিলেন। মঞ্চ মাতিয়ে গান করেছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে আমরা বন্ধুদের একে অপরের হাত ধরে হাতের চেইন করে ওনার গানের তালে তালে সুর মিলিয়ে নিচে ছিলাম। কি অসম্ভব গলার ভয়েস যা আজও ভোলার নয়।
অন্তরের অন্তস্থল থেকে জানাই শ্রদ্ধেয় শিল্পীর প্রতি ফুলের শুভেচ্ছা।