নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুকু ও মুনীরের পরকীয়ার বলি শারমীন রীমাঃ হায়রে পরকীয়া !!

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১


পরকীয়া একটি নিষিদ্ধ সম্পর্কের নাম। মানবসমাজে কত ধরণের প্রেমই তো আছে! তবে যত ধরণের প্রেমই থাকুক না কেন ‘পরকীয়া’ প্রেমকে সবাই একটু ভিন্ন চোখে দেখে। নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি মানুষের অমোঘ আকর্ষণ থাকে। বলতে গেলে এটি মানুষের প্রকৃতিজাত বা স্বভাবচারিত অভ্যাস। নিষেধ করলেই আকর্ষণ বেড়ে যায়। নিষিদ্ধ বলেই পরকীয়া সম্পর্ককে অসামাজিক, অনৈতিক, অধর্মীয়, অবৈধ বলে আখ্যায়িত করা হয়। খুকু আর মনিরের পরকীয়ার কারণে যে মৃত্যু মানুষকে হতবিহ্বল করে তেমন মৃত্যু ঘটেছিল শারমীন রীমার। স্ত্রী শারমিন রীমাকে হত্যা করেন মনির হোসেন। স্বামীর সঙ্গে চট্টগ্রাম বেড়াতে গিয়ে খুন হন প্রখ্যাত সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন হোসেনের মেয়ে শারমীন রীমা। ১৯৮৯ সালে বিয়ের মাত্র তিন মাস পর ৯ এপ্রিল পুলিশ নরসিংদীর কাছাকাছি মিজিমিজি গ্রাম থেকে উদ্ধার করে রীমার লাশ। ৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে রওনা হয়ে যাওয়ার দুদিন পরে ফেরার পথে স্বামী মনির হোসেন তাকে হত্যা করে নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি গ্রামের কাছে ফেলে রেখে আসে। বাড়ি থেকে এত দূরে কোনো মেয়ের লাশ পাওয়া গেলে যে কেউই সবার আগে ধরে নেয় হয় স্বামী নিজেও খুন হয়েছে বা নিজেই খুন করেছে। ঘটনার পরদিন ১০ মে গ্রেফতার হন মুনির। তিনি এই মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৯৯০ সালের ২১ মে ঢাকার জেলা ও দায়রা আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর দীর্ঘদিন মামলা চলার পরে নিম্ন আদালতে অপরাধী মুনির হোসেন এবং হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনাদানকারী তার প্রেমিকা হোসনে আরা খুকু দুজনেরই ফাঁসির রায় হলেও উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ে খুকুকে খালাস দেওয়া হয়। মনিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমোদন দেন উচ্চ আদালত। ১৯৯৩ সালের ২০ জুন আপিল বিভাগ ওই দণ্ড বহাল রাখে। স্ত্রী রীমাকে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল মুনিরকে। বিচারিক আদালতে দণ্ডিত হোসনে আরা বেগম খুকু পরে হাইকোর্ট থেকে খালাস পান। আজ থেকে ৩১ বছল আগে ১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ ভোরের আলো মাত্র ফুটে উঠছে। জীবিকার সন্ধানে মানুষ বেরিয়ে যাচ্ছে ঘরের বাইরে। ঠিক তখনই তাদের চোখে পড়ে একটি মর্মান্তিক দৃশ্য। ঢাকা চিটাগাং রোডের মুক্তি সরণির নিকট মিজমিজি গ্রামে যাওয়ার কাঁচা রাস্তার মোড়ে একটি লাশ পড়ে আছে। আরেকটু কাছে গেলে দেখা যায় লাশটা একজন মেয়ে মানুষের। পুরো শরীরে আঘাতের দাগ, চেহারায় আভিজাত্যের রঙ ফুটে আছে তখনও। গায়ে সোনার গহনা দেখে বুঝতে বাকি থাকে না মেয়েটি কোনো অবস্থাসম্পন্ন ঘরের। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরিস্থিতি দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এটা কোনো ডাকাতি বা ছিনতাই নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তা না হলে গায়ে গহনা রেখে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। পাশে খালের মধ্যে পাওয়া যায় রক্ত মাখা প্যান্ট, আরেকটু দূরে দেখা যায় পড়ে আছে একটি ধারাল ছুরি। পুলিশ বুঝতে পারে কেউ তাকে হত্যা করেই ফেলে রেখেছে এখানে। কিন্তু কেন? এই মেয়েই বা কে? উপস্থিত জনতাসহ সকলের মুখে তখন এই একটাই প্রশ্ন। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে খুবই বেদনা-বিধুর এবং নির্মম এক তথ্য। সেই সময় সারা বাংলাদেশে চায়ের দোকানে, অফিস পাড়ায় কিংবা ট্রেনে বাসে সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনা। প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হতে থাকে এই খুনের সংবাদ, বিচারের আপডেট খবর। সব জায়গা থেকে রব ওঠে খুনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। যেন আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে সন্ত্রাসী, সেই দাবিতে চলে নানা স্লোগান প্রতিবাদ। মোটকথা সারা বাংলাদেশ জড়িয়ে পড়ে এই ঘটনায়।

পুলিশের সূত্রে পরিচয় মেলে মেয়েটির। নাম শারমিন রীমা। শহিদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন হোসেনের মেয়ে। যে নিজাম উদ্দিন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মমভাবে নিহত হন, সেই নিজামুদ্দিনের মেয়েকে স্বাধীন দেশে এমন নির্মমতা বরণ করে নিতে হবে তা হয়তো তিনি ভাবেননি। যাকে বিয়ের মাত্র চার মাসের মাথায় নির্মমভাবে হত্যা করে তারই স্বামী। হাত থেকে তখনও যায়নি মেহেদির দাগ, বিয়ের এলবামগুলোতে তখনও জমেনি একটি ধুলো। কিন্তু তারই আগে সে লাশ হয়ে গেল। তার কবরে উঠে গেল ঘাস। পরিচয় পাওয়া যায় রীমার স্বামীরও। মুনির হোসেন সুরুজ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল এবং ডাক্তারদের সংগঠন বিএমএ’র প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ আবুল কাশেম এবং সে সময়ের খ্যাতনামা গাইনি ডাক্তার মেহেরুন্নেসার ছেলে। নিজেও পড়াশোনা করেছেন আমেরিকায় উইসকনসিন ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তাদের বিয়ে হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বর। বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে মুনির দেশে এসে শুরু করেছিলেন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের ব্যবসা। সবকিছু ভালোই চলছিল। বাবা মা তাই ছেলেকে বিয়ে দিতে চান। মেয়ে খোঁজা হয়। রীমাকে পছন্দ হয় তাদের পরিবারের। মেয়ের পরিবারও ছেলের খোঁজ নেন। সম্ভ্রান্ত ফ্যামিলি, দেখতে শুনতে ভালো, ছেলে নিজেও শিক্ষিত এবং ব্যবসায়ী। ব্যাস, আর কী লাগে। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন রীমা এবং মুনির। ভালোই যাচ্ছিল তাদের দিনকাল। কিন্তু কিছুদিন পরে শুরু হয় অন্য যন্ত্রণা। স্বামীর ঘরে মন টেকে না। বউয়ের সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে শুরু হয় ঝগড়া। এরই মাঝে রীমা একদিন দেখতে পান স্বামীর শার্টের মধ্যে লিপস্টিকের দাগ। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, পায়ের তল থেকে সরে যায় মাটি। এ কোথায় এসে পড়লেন তিনি! ভাবলেন যাই হোক, আজকে জিজ্ঞেস করতেই হবে। স্বামী বাসায় আসলে জিজ্ঞেস করেন রীমা, কিছুক্ষণ চুপ থাকেন মুনীর। এরপর এমন পরিস্থিতে পুরুষ যা করে, মিথ্যার পর মিথ্যা বলে এড়িয়ে যেতে চায় ঘটনা থেকে। যখন আর এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না তখন শুরু হয় উচ্চবাচ্য, হাতাহাতি। লাথি মেরে সরিয়ে দেন রীমাকে। রীমা সে রাতে আর ঘুমাতে পারেন না। বালিশ ভেজান কান্নায়। কাকে দুষবেন তিনি, বাবা মাকে, স্বামীকে নাকি তার কপালকে?

রীমার বিয়ের বছর খানেক আগের কথা। মুনিরের মা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মেহেরুন্নেসার ছিল একটি ক্লিনিক। সেখানে প্যারালাইজড হয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম পোর্টের ইন্সপেক্টর আবু জাফর। সাথে আসেন তার চল্লিশোর্ধ্ব স্ত্রী খুকু। দেখতে শুনতে খুব একটা মন্দ নয়। এ বয়সের শান্ত সচেতন নারীদের মতো তারও ছিল আকর্ষণীয় দেহাবয়ব। মুনীরের সাথে এখানেই পরিচয় ঘটে খুকুর। এ বয়সের নারীদের প্রতি অনেক তরুণের দুর্বলতা থাকে। অনেকে অনেক রকমের ফ্যান্টাসিতে ভোগে। দীর্ঘদিন সংসার যাপন করার ফলে একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে নারীরাও ক্ষেত্র বিশেষে এসব পুরুষদের সান্নিধ্যে আসে। অন্যতম কারণ হয়তো ঘরে থাকা সঙ্গী তার কথা শুনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। মুনীর-খুকুও নিজের দুঃখ শোনানোর, নিজের গল্প ভাগ করার একজন মানুষ পেলে একটু নির্ভার বোধ করত। কিন্তু কথা বলতে বলতে অনেক ক্ষেত্রেই সেসব সম্পর্ক আর খালি কথার ভেতর আটকে থাকে না। আর তখনই শুরু হয় বিপত্তি। মুনীর-খুকুর বেলাতেও ঘটেছিল এমন বিপত্তি। অসুস্থ স্বামীকে চিকিৎসা করাতে আসা খুকুকে নানা বিষয়ে সাহায্য করে মুনির। বেশ খানিকটা সময় তারা গল্প গুজব করেন প্রতিদিন। এতে মুনীরের যেমন ভাল্লাগে, খুকুর তেমন সময় কেটে যায়। কিন্তু কথা একটা সময় আর কথা থাকে না। হাসপাতালের বাইরেও তারা দেখা সাক্ষাত শুরু করেন। জড়িয়ে পড়েন সম্পূর্ণ অনৈতিক একটা সম্পর্কে। সহজে যোগাযোগের জন্য মুনীর, খুকুকে লাললামটিয়ায় একটা বাসাও ভাড়া করে দেন। চলতে থাকে তাদের এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, যেটাকে আমরা পরকিয়া হিসেবে জানি। এই পরকিয়ায় আসক্ত মুনীর বিয়ের প্রথম দিকে তার বউকে নিয়ে সুখে থাকলেও কিছুদিনের মধ্যেই আবার খুকুর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। আর এর ফলেই ধরা পড়েন রীমার কাছে। তাদের আর বনাবনি হয় না একেবারেই। রীমা কাঁদতে থাকেন দিনের পর দিন। স্বামীর অবহেলা তিনি সহ্য করতে পারেন না। পাশাপাশি চলতে থাকে বিভিন্ন শারিরীক নির্যাতন। বেঁচে থাকাকে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ঙ্কর মনে হতে থাকে তার।

কিন্তু এর কিছুদিন পরে ঘটে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। বদলে যেতে থাকে মুনীর। বাসায় এসে আর স্ত্রীকে মারধর করে না। রোজই কিছু না কিছু নিয়ে আসে তার জন্য। কথা বলে, গল্প করে, স্বামীসুলভ আদর সোহাগও করে। রীমাও খুশি হয়। স্বামীর এমন বদলে যাওয়া দেখে সে খুবই খুশি হয়। সেও আর পারতপক্ষে আগের কথা তোলে না। একপাশ থেকে ভালোবাসা আসলে অপর পাশ থেকে মানুষ দায়িত্ববোধ আশা করে। রীমাও তার ব্যত্যয় করে না। সে তার দায়িত্ব পালন করে অক্ষরে অক্ষরে। ভালোবাসার বিনিময়ে সেও আগলে রাখে তার স্বামীকে। মুনীর নিজেই রীমাকে বলে খুকুকে সে ছেড়ে দেবে। তার সাথে আর কোনো যোগাযোগ রাখবে না। এর কিছুদিন পরে মুনীর খুকুকে তার অফিসে আসতে বলে। রীমাও সেখানে উপস্থিত ছিল। সেখানে রীমা খুকুকে তার স্বামীর সাথে মিশতে বারণ করে। খুকু কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়। যাওয়ার সময় সে রীমাকে বলে যায়, আমি তোমাকে দেখে নেব। দেখব কে জেতে আর কে হারে। সেই রাত্রে মুনীর রীমার ইস্কাটনের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে। একদিন রাতে এমনই পাশাপাশি শুয়ে দুজন। মুনীর রীমার পাশ ঘেঁষে শোয়। তার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে। মুনীর রীমাকে বলে, তোমাকে নিয়ে তো আসলে খুব বেশি কোথাও যাওয়া হয়নি আমার। তাই চলো দুজন মিলে চিটাগাং ঘুরে আসি। রীমা খুশি হয়। তার ভেতরের কোনো এক পুকুরে ফোটে ওঠে একশো একটা পদ্মফুল। সেই ফুল দুলতে থাকে বাতাসে, যেই বাতাস এসে শীতল করে দেয় রীমার মনটাকেও। পরদিন তারা রওয়ানা হয়। সারাদিন এখানে সেখানে ঘোরাঘুরি করে রাতে আশ্রয় নেয় হোটেল সৈকতে। সেখান থেকে ফিরে আসে পরেরদিন রাতে। বসন্ত আর হলুদ যেমন মাখামাখি, তেমনই বসন্তের সাথে বাতাসেরও আছে একটা গভীর সম্পর্ক। ১৯৮৯ সালের এপ্রিলের নয় তারিখ, বাংলা ক্যালেন্ডারে তখন বসন্ত বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এগিয়ে আসছে নতুন আরেকটি বৈশাখ। এমনই এক বাতাস ভরা রাতে খোলা আকাশের নিচে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল মুনীর এবং রীমা। গাড়ি যখন নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি গ্রামের কাছে এসে পৌঁছল, তখন গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দিল মুনীর। রীমা কারণ জিজ্ঞেস করল। মুনীর চুপচাপ নেমে গেল গাড়ি থেকে। চুপচাপ ফিরে এলে রীমা জিজ্ঞেস করল শরীর খারাপ কিনা। মাথা টিপে দিতে চাইল রীমা। কিন্তু মুনীর ঝটকা মেরে সরিয়ে দিলেন তার হাত। গাড়িতে থাকা একটি বোতল দিয়ে সজোরে আঘাত করলেন মাথায়। রীমা কিছুই বুঝে উঠতে পারল না। তার স্বামীর কী হলো হুট করে! সে পড়ে গেল ঘোরের ভেতর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দ্বিতীয় আঘাত। রীমার পুরো দুনিয়া তখন ঘুরতে থাকে। চোখের সামনে হয়তো ভেসে ওঠে সকল ঘটনা। তার শহিদ বাবার কথা হয়তো ভেসে আসে মনে, কিংবা আদর করে মুখে তুলে মায়ের খাইয়ে দেওয়ার কথা। আটলান্টায় স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকা বোনটার কথাও হয়তো চোখে ভাসে। মৃত্যুর সমইয় নাকি এমনই হয়। প্রিয়জনদের আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকতে চায় সবাই। যে আত্মহত্যা করে মারা যায়, সেও নাকি বেঁচে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে মুনীর গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। টেনে হিঁচড়ে নামায় রীমাকে। গাড়িতে রাখা একটা ধারাল চাকু দিয়ে পেটের মধ্যে আঘাত করতে থাকে। রীমা একবার হাতে ধরে, একবার পায়ে। এদিক সেদিক তাকায়, গভীর অন্ধকার ছাড়া তার চোখের সামনে আর কিছু ভাসে না। হাতে পায়ে ধরে রক্ষা হয় না মেয়েটার। খুকুর সাথে পরকিয়ায় আসক্ত মুনীরের আঘাতে জর্জরিত হয়ে একটা সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

মৃত্যু নিশ্চিত হলে মুনীর গাড়ি স্টার্ট দেয়। একটু দূরে ডোবায় গিয়ে নিজের পরনের প্যান্ট এবং রক্তাক্ত জামা ছুড়ে ফেলে ডোবায়। হাতে থাকা ছুরিটা ছুড়ে মারে আরেকটু দূরে। গাড়ি নিয়ে আগায় যাত্রাবাড়ির দিকে। নিজের গাড়িটি ফেলে রেখে যায় সায়েদাবাদের বাস টার্মিনালের উল্টো দিকে। গাড়িটি তালাবদ্ধ করে রাখে সে। অপরাধী যতই অপরাধ করুক, সে একটা না একটা চিহ্ন ফেলে যায় সবসময়। মুনীরও সেই কাজ করল। রক্ত মাখা সব জামা ফেলে দিলেও একটি গেঞ্জি রয়ে যায় গাড়ির ভেতর। আর গাড়ির গায়ে রয়ে যায় রক্তের কিছু চিহ্ন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গাড়িটি যখন পুলিশের হাতে আসে তখন পুলিশের কাছে বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। মুনীর গিয়ে আশ্রয় নেয় হোটেল বদরে। সেখানে সে বিশ্রামের জন্য গেলে হোটেলের দারোয়ান আলী হোসেন তাকে ২০৩ নাম্বার রুমে নিয়ে যায়। ডাঃ মেহেরুন্নেসার ছেলে পরিচয় পাবার পর আলী হোসেন তাকে জিজ্ঞেস করে বাসা ছেড়ে সে হোটেলে কেন এসে উঠল। মুনীর তার স্ত্রীকে হত্যার কথা বলায় কিছুটা ভয় পেয়েই হয়তো আলী হোসেন চলে যায়। এরমাঝে হোটেল কক্ষে সে আত্মহত্যা করার জন্য বিছানার চাদর গলায় বেঁধে উপরে ফ্যানের সাথে ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করলে পাশের রুমের লোকেরা তালা ভেঙে ভেতরে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সে তার মায়ের সাথে ফোনে আলাপ করে এবং একজন আইনজীবী নিয়ে হাসপাতালে আসতে বলে। এর মধ্যে পুলিশ তার খোঁজ পেয়ে যায়, তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পর মুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। যেখানে সে বলে—যেদিন খুকুর সাথে তার অফিসে রীমার দেখা হয় সেদিন রীমা খুকুকে তার সাথে মিশতে মানা করলে খুকু তার কাছে জানতে চায় সে কী করবে। মুনীর তখন কোনো জবাব দেয় না। খুকুর চোখ বেয়ে টলটল করে জল নামে। এরপর যখন খুকু রীমাকে হুমকি দিয়ে মুনীরের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে যায় তখন তার খুব মায়া হয়। খুকুর প্রতি তার ভালোবাসা আবার জেগে ওঠে। আর যার ফলে সে তার জীবন থেকে রীমাকে সরিয়ে দিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। জেরা, শুনানির পর ১৯৯০ সালের ২১ মে আদালত এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মুনীর ও খুকুকে। মোট ৬৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রদানের মাধ্যমে রায় হয় মামলাটির। কিন্তু পরে মামলাটি আবার হাইকোর্টে ওঠানো হলে আদলত মুনীরের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখলেও খুকুকে বেকসুর খালাস দেন। তখন সারা দেশেই এর প্রতিবাদ হয়েছিল। লোকে মুনীরের সাথে খুকুরও ফাঁসি চেয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত সে সব দাবি আমলে নেননি। এরপর মুনীরের প্রাণ রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পুনঃ পুনঃ আবেদন করা হলেও প্রেসিডেন্ট সে আবেদনে সাড়া দেননি। মুনীর খুকুর এই ঘটনা এতটাই আলোচিত হয়েছিল যে এটা নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মঞ্চনাটক, যাত্রা পালা এবং অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়। ১৯৯৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মুনিরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সমাপ্ত হয় আলোচিত ওই হত্যার বিচারের। এ ঘটনাটা সে সময় ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সব পত্রিকায় বড় বড় স্টোরি ছাপা হয়। এটাকে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত খুনের মামলা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ৫৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নজসু বলেছেন:



আস সালামু আলাইকুম।
আমার খুব ছোটবেলার ঘটনা ছিলো এটি। মুনীর, খুকু, শারমিন রীমা আবছা আবছা মনে পড়ে।
সম্ভবতঃ আমাদের এলাকার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক করতোয়ায় প্রতিদন "শারমিন রীমা হত্যা রহস্য" শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপতো।
পরবর্তীতে এদের নিয়ে নাটক, ভিডিও দেখেছি এবং পড়েছি। আমার কম্পিউটারে ওদের জারিগান ডাউনলোড করে রেখেছি। এখনো আছে।
প্রেম আসলে কিছু মানেনা। আর এই না মানার নীতি অনুসরণ করে রীমাদের মতো অনেক ফুল অকালে ঝরে যায়।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ওয়ালাইকুম্ আস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
হ্যা প্রায় ৩১ বছর আগের ঘটনা, অনেকেই
বিস্মৃত হয়েছেন। এরকম আর একটি চাঞ্চল্যকর
পরকীয় বলি ছিলো সালেহা বেগম। ১৯৭৮ সালে
কাজের মেয়ের সাথে পরকীয়ার কারনে ডাঃ ইকবালের
হাতে খুন হয় ছালেহা।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৮

নজসু বলেছেন:



তখন শুনেছিলাম মুনিরের নাকি ফাঁসি হয়নি।
গোপনে বিদেশে পালিয়ে গেছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

গুজবে কান দিতে নেই।
অনেক কিছুই তখন শোনা যেতো
তবে তা ছিলো ভিত্তিহীন। একজন
স্বনামধন্য সাংবাদিকের মেয়ে বলেই
সু বিচার পাওয়া গেছে।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ঐ সময়কার সবথেকে আলোচিত ঘটনা।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

জ্বি, তবে এখনো তা আলোচিত হয়।

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৩

আকন বিডি বলেছেন: পিচ্চি কালে বড়দের মুখে এই ঘটনা নি ব্যাপক আলোচনা শুনতাম। পত্রিকার জন্য সবাই অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতো। মুনিরের নাকি ফাসি হয় নাই, তার মত একজনকে ফাসি দিয়েছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ আকন বিডি
তখন এটা ছিলো টক অব দ্যা কান্ট্রি!!
ছোট বড় সবাই এই ফাঁসির ব্যাপারে
কৌতুহলী ছিলেন। তবে গুজব গুজবই।
তার কোন ভিত্তি নাই।

৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫

তারেক ফাহিম বলেছেন: জানা ছিল না।
অবশ্য না জানারই কথা, জন্মইতো হয়েছে ৯২তে

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

জানার ইচ্ছা থাকলে জানতে কোন
সমস্যা নাই। আমরা ২০০ বছর আগের
ইতিহাসও জানি। এটাতো মাত্র ৩১ বছর আগের
ঘটনা। তবে বিস্মৃত হন অনেকে তাই মাঝে মাঝে
মনে করিয়ে দেওয়া !!

৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: টঙ্গীর গাছা নামক স্থানে মুনিরের কবর আমি নিজে দেখে এসেছি।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ সাজ্জাদ ভাই
আনেকের ভ্রান্তি বিলোপ হবে।

৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪

শাহ আজিজ বলেছেন: আমি প্রবাসে । দুতাবাস থেকে পত্রিকা আনি প্রতি সপ্তাহে । এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেশ আলোড়িত আমরা । পরে ফাসি হয়ে গেল । শফিপুরের দিকে কোন একসময় দেখেছি মুনিরের পিরামিড সাদৃশ্য কবর । বাবা , মা এত বড় ডাক্তার হয়েও তাদের নৈতিকতা এত বিশৃঙ্খল ছিল যে লম্পট সন্তানকে জায়গা করে দিতেন বাড়িতে মাস্তি করার জন্য । ধনবান হলে সন্তান যে অনেকক্ষেত্রে চরম বিপথগামী হয় মুনির তাদের একজন ।

খুব সাড়া জাগিয়েছিল ওই ঘটনা তখন ।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আজিজ ভাই
ওই ঘটনা আমাদের বিবেককে
প্রচণ্ডভাবে নাড়া দিয়ে ছিলো।
সরল সহজ একজন বধুকে এমন
নৃশংস ভাবে হত্যার কথা তখন চিন্তাই
করা যেতোনা। পারিবারিক অবক্ষয়ের
রুদ্র মূর্তি লম্পট মনির।

৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৫

অপু তানভীর বলেছেন: আমি তখন অনেক ছোট । ভাসা ভাসা আমার কিছু মনে আছে । বিশেষ করে মুনীর ফাঁসীর ব্যাপারটা !

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ স্মৃতি আপনার সাথে
বেঈমানী করে নাই। স্মৃতিতে এখনো ধরে
রেখেছে মুনীরের ফাঁসি !!

৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৭

তানজীল ইসলাম বলেছেন: মেহেরুননিসা ক্লিনিক এখনও আছে... সেই আগের যায়গায়

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এর পরিচালক কে?
ডাঃ মেহেরুননিসা কি
এখনো জীবিত আছেন ?

১০| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৯

তানজীল ইসলাম বলেছেন: সঠিক জানি না,
কিন্তু ঐখানেই আশির দশকে জন্ম তাই মাঝে মধ্যে ঐদিক দিয়ে যা্ওয়ার সময় একবার তাকাই

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ তানজীল ইসলাম ভাই
ওখানে যখন আপনার জন্ম তখন
আপনি আমার চেয়ে ঢের বেশী জানবেন।

১১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪১

তানজীল ইসলাম বলেছেন: আপনি হুমায়ুন চেয়ারম্যানের বাড়ীর কাছের?

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বিনা ভাই !!
আমি হুমায়ুন চেয়ারম্যানকে
চিনিনা !

১২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বিস্মৃতপ্রায় একটি ঘটনা এই যুগের মানুষের সামনে নিয়ে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ নুরু ভাই।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আবুেহেনা ভাই
কালের ইতিহাস হয়ে আছে ওই দুঃখ জনক ঘটনা।
তাই বিস্মৃতির আড়াল থেকে তুলে আনলাম পাঠকদের
জন্য।

১৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৬

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: খুকু এখন চট্টগ্রামের হালিশহরে থাকে বলে শুনেছি।ওই সময়কার ঘটনা অল্প অল্প মনে আছে।ইত্তেফাকে সানগ্লাস পরা খুকুর ছবি ছাপা হতো।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ জাহিদুল ভাই
খুকুর সর্বশেষ আপডেট
দেবার জন্য।

১৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: খুনী মুনীরের দ্রুত বিচার সে সময়ে সম্ভব হয়েছিল, কারণ সাংবাদিক-জনতা সে সময়ে খুনী মুনীরের বিচারের দাবীতে সোচ্চার হয়েছিল, একাট্টা হয়েছিল। গণ-অসন্তোষ সৃষ্টিকারী কোন অপরাধের তদন্ত শুধু থানা পুলিশ আর আদালতই করবে, এমন কোন কথা নেই। সেটা হয়তো বিচারিক কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু সাংবাদিকগণ সমাজের বড় বড় অপরাধগুলো জনসমক্ষে উন্মোচন করার জন্য দেশের জনগণের নিকট দায়বদ্ধ। মুনীরের স্ত্রী ছিলেন দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে জীবন দানকারী একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকের কন্যা। সতীর্থের পরিবারে এই বীভৎস হত্যাকান্ড ঘটাতে সে সময়ের সাংবাদিকগণ সংক্ষুব্ধ হয়ে যে যেভাবে পেরেছিলেন, তথ্য উদঘাটন করেছিলেন। তাদের রিপোর্ট পড়ে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছিলেন। এমতাবস্থায়, অপরাধীকে কেউ বাঁচাতে পারেনি, তার মা বাবা অঢেল সম্পদশালী হওয়া সত্ত্বেও পারেনি।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সাংবাদিক আর পুলিশ যদি চায় তা হলে
অপরাধী অপরাধ করে পার পায়না। কোন
অন্যায়ের বিরুদ্ধে জখন গণেজোয়ার সৃষ্টি
হয় তখন তার পতন ঠেকানো সম্ভব না।

১৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: "সাংবাদিক আর পুলিশ যদি চায় তা হলে অপরাধী অপরাধ করে পার পায়না" - সাংবাদিক এবং জনতা যখন জাগ্রত থাকে, সোচ্চার হয়, তখন পুলিশ অপরাধীকে ধরতে না চাইলেও সে অপরাধী পার পায় না, হয়তো এতে একটু বেশি সময় লাগতে পারে।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাংবাদিক জনতা সবাই জাগ্রত এবং
প্রতিবাদ প্রতিরোধ করেও সাংবাদিক
দম্পতি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার
কোন সমাধান বের করতে পারেনি আজও।
এখানে ব্যার্থতা কার !!! যা হোক সময় লাগলেও
সুষ্ঠ বিচার প্রত্যাশা আমাদের।

১৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: সেই সময় আমি মনে হয় হাফ প্যান্ট পড়ি। এত আগের ঘটনা কিছুই জানি না। অবশ্য তখন এত মিডিয়া ছিলো না।

০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সে সময় হাফ প্যান্টে কি ফিতা বাধা থাকতো?
আমাদের সময় হাফ প্যান্টে ফিতা থাকতো।
অনেক সময় গিট্ট লেগেেযেতো, অনেক সময়
ফিতা খুলে যেতো, এক হাত দিয়ে ধরে থাকতে
হতো!!

১৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৩

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




বাংলাদেশে সম্ভবত এতো আলোচিত পরকীয়া আর এতো আলোচিত হত্যা আর হয়নি! আর এতো আলোচিত সিভিলকোর্ট বিচারও বাংলাদেশের ইতিহাসে আর হয়নি - না আর হবে!

খায়রুল আহসান ভাইয়ের দুইটি মন্তব্যই ১০০% একমত পোষন করছি। নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই আপনার কাছে এই ধরনের পোস্ট আশা করছি। ধন্যবাদ।


০৮ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ডাঃ ইকবালের ফাঁসিও কম আলোচিত ছিলোনা।
বাংলাদেশে পরকীয়ার কারেন এ দুটি ফাঁসি বেশ
চাঞ্চল্যকর ছিলো।

১৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৮

মিরোরডডল বলেছেন:

তারপর খুকুর কি হলো ?

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: খুকু এখন চট্টগ্রামের হালিশহরে থাকে বলে শুনেছি।

১৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


মর্মান্তিক

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

নির্মম, মর্মান্তিক এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনা

২০| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:৫০

কাছের-মানুষ বলেছেন: আমি তখন অনেক ছোট ছিলাম। মুনির খুকির ঘটনা এখনো আবছা আবছা স্মৃতিতে আছে। তখন আমি শুনেছিলাম মুনিরকে নাকই বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। এটা বাংলাদেশের আলোচিত ঘটনা।

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

গুজবে কান দিতে নে্ই।
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: টঙ্গীর গাছা নামক স্থানে মুনিরের কবর আমি নিজে দেখে এসেছি।

২১| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:০৭

কালো যাদুকর বলেছেন: যেখানে মনির খুন করার পরে উঠেছিল, সেই "বদর" হোটেল ছিল আমাদের বাসার সামনেই। প্রতিদিন নিউজ ফলো করতাম। খুকুর ফাসি হয়নি দেখে হতাশ হয়েছিলাম। অনেক আগের ঘটনা মনে করে দিলেন, অনেক ধন্যবাদ।

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ কালো যাদুকর
আপনি আপনার যাদু দিয়ে তাকে
ধরিয়ে দিতে পারতেন !!! =p~
যা হোক খুনির ফাঁশি হওয়াতে
সবাই খুশি হয়েছে।

২২| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:২৭

হাসান রাজু বলেছেন: মৃত্যু দণ্ড কার্যকরের পর। সম্ভবত সাপ্তাহিক সুগন্ধায় অথবা উন্মাদ এর প্রচ্ছদ এ একটা কার্টুন ছিল - কফিনের ভিতর থেকে কলা গাছ উঁকি দিচ্ছে। অনেক কে বলতে শুনেছি আদালত থেকে যে কফিনে করে মুনিরকে আনার কথা ছিল সেটাতে ছিল কলা গাছে আর মুনিরকে সরকার দেশের বাহিরে চালান করে দিয়েছে। হা হা হা ..... ক্লাস সিক্সে পরতাম তখন।

এর আগে/পরে আরেকটি হত্যাকাণ্ড বেশ আলোড়ন তুলেছিল। তাজুল নামক গ্রাম্য প্রতাপশালীর হাতে পুরো পরিবার হত্যা নিয়ে।

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ হাসান রাজু ভাই
ঘটনা যখন ঘটে তখন তার প্রচুর
ডাল পালা গজায়! তকে সময়ে স্রোতে
গুজব ভেসে যায় কালের গর্ভে। সত্য থাকে
মাথা উচু করে। যা হোক আপনি যে ঘটনার কথা
বলেছেন সেটি ছিলো নিদারাবাদ ট্র্যাজেডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার (বর্তমান বিজয়নগর উপজেলা)
নিদারাবাদ গ্রামে ১৯৮৭ সালের ১৬ অক্টোবরের ঘটনা।
শশাঙ্ক দেবনাথের স্ত্রী ও পাঁচ অবুঝ সন্তানকে হত্যা করে তাজুল।

২৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১৪

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: হাসান রাজু বলেছেন:
এর আগে/পরে আরেকটি হত্যাকাণ্ড বেশ আলোড়ন তুলেছিল। তাজুল নামক গ্রাম্য প্রতাপশালীর হাতে পুরো পরিবার হত্যা নিয়ে।


এটা সম্ভবত : সিলেট অঞ্চলের ঘটনা;

----নূরু ভাই; তখনকার সময়ের সংবাদ ও সাংবাদিকতায় জনগনের তথা সব মানুষর বিষয় মাথায় রেখে প্রকাশ করা/প্রতিবাদ/ফলোআপ করা হতো ....আর এখনতো ---

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মুরব্বীদের সেই কথাই প্রাধান্য পায়
যায় দিন ভালো আসে দিন খারাপ।
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!!

২৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

হাসান রাজু বলেছেন: কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত)
না। ঐ ঘটনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার।

০৯ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ হাসান রাজু ভাই
আপনি সঠিক বলেছেন।
সময় সুযোগ হলো আামি
ও্ই খুনের ব্যাপারে বিস্তারিত
জানাবার আশা রাখি

২৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: আমার জীবনে আমি কোনো দিন পায়জামা পড়ি নাই।
এবং ফিতা দিয়ে প্যান্টও পড়ি নাই।
এইসব ফিতা টিতা বাধতে পারি না।

১০ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমরা ফিতা আলা যে হাফ প্যান্ট পড়তাম তার নাম ছিলো
ইংলিশ প্যান্ট !! চেন থাকতো আর ফিতা দিয়ে বাধতে হতো।
প্যান্টের চেন নিয়ে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো।

২৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১৭

কালো যাদুকর বলেছেন: নুরু ভাই, আমি তখোনো যাদুকরি শুরু করিনি। :) :D

১০ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ওই সময় আপনি থাকলে
ওদের খবর আছিলো !!

২৭| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: তখনকার সময়ের সবচেয়ে আলোচিত পরকীয়া ও হত্যার ঘটনা।

একঘেয়ে জীবনে বৈচিএের জন্য মানুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পরিবার ও সমাজে ভয়ানক অস্থিরতা তৈরীর পাশাপাশী নানা রকম সামাজিক সমস্যা তৈরী করছে। পরকীয়া এক ভয়ানক ব্যাধি হিসাবে সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে।
আমদের সবাইকে এ ব্যাধি থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করা উচিত।

১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:


পরকীয় প্রাচীন যুগেও ছিলো, এখনো আছে।এটি শুধু এশিয়ায় নয় সারা
পৃথিবীতেই ঘৃণার চোখে দেখা হয়। কারণ বিশ্বাসঘাতকতা করে অপরের
সঙ্গে সম্পর্ক কখনোই কেউ মেনে নেয় না। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট
বিল ক্লিন্টনের সঙ্গে হিলারির সম্পর্ক বিচ্ছিদ হয়ে যাচ্ছিল। বিল আর মনিকার
কাণ্ড সারা বিশ্বজুড়ে আলোচিত একটি পরোকীয়ার ঘটনা।
তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই অপরাধবোধে ভুগতে
শুরু করেন। সঙ্গীকে সব কথা খুলে বলার মতো মানসিক জোরও থাকে না অনেকের।
বিশেষজ্ঞেরা বলেন এ ক্ষেত্রে মন খারাপ করে না থেকে বিশ্বাসযোগ্য কোনো মানুষকে
সবটা খুলে বলা ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.