নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিখ্যাত ফরাসি কবি গল্পকার ও ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ। তিনি ছিলেন গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, এমিল জোলা, আলফস দোঁদে-দের উত্তরসূরী। যাকে আধুনিক ছোটগল্পের অন্যতম জনক মনে করা হয়। রবিন্দ্রনাথকে বাদ দিলে প্রায় তাবৎ বাঙ্গালী লেখকের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মোপাসার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। যাকে ছোট গল্প বলে, অর্থ্যাৎ এক বিশেষ ধরনের আঙ্গিকের আধারে মানুষের জীবন, কাহিনী, চরিত্র ও চিন্তার একাংশ লেখকের মায়ামুকুরে যে বিচিত্র বর্ণালী সৃষ্টি করে, তার জট বহু দূরে ব্যাপ্ত হলেও ইউরোপের উনবিংশ শতাব্দীর আগে তার কলারূপ পূর্ণতা লাভ করেনি। আমাদের দেশে রবীন্দনাথের পূর্বে কেউ ছোটগল্পের নব পরিপ্রেক্ষিত ও কলাকৌশল সম্মন্ধ্যে সচেতন ছিলেন না। গী দ্যা মোপাসার জীবনকথা বিচিত্র কিন্তু বিশাল না। আনন্দোজ্বল হলেও বিষন্নতা ও নৈরাশ্যের কুহেলিকায় আচ্ছন্ন। মানসিক সংবেগের দিক থেকে তিনি অতিশয় হৃদ্য ও বলিষ্ঠ, যা অনেক সময় বেপরোয়া ধৃষ্টতা বলেই মনে হবে। আবার অপরদিকে তিনি মনের সুস্থ্যতা ও ভারসাম্য হারিয়ে বেশ কিছুদিন পাগলাগারদে অবস্থান করেছিলেন। এইভাবে বিপরীতে, বিষম্যে, কান্না হাসিতে তার সমগ্র চেতনা আবিষ্ট। চাতুর্যপূর্ণ গল্পের প্লট তার লেখার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, যা ও হেনরি এবং সামারসেট মমের মতো লেখককে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। ১৮৮০ সালে একটি কাব্যগ্রন্থ (De Ver) প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তাঁর সাহিত্যজগতে পদার্পণ। মাত্র এক দশকের সংক্ষিপ্ত সময়ে তিনি তিনশ' ছোট গল্প, ছয়টি উপন্যাস, বেশ কিছু কবিতা এবং তিনটি ভ্রমণকাহিনী লেখেন। তার বিখ্যাত গল্প ‘লা পারুর’ বা ‘দ্য নেকলেস’। দুর্ভাগ্যবশত তারুণ্যের শুরুতেই তিনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন, যা তাঁকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। ১৮৫০ সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন গি দ্য মোপাসাঁ। আজ তার ১৭০তম জন্মবার্ষিকী। প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
(কিশোর বয়সে গি দ্য মোপাসাঁ)
১৮৫০ সালের ৫ আগস্ট ফ্রান্সের নরম্যান্ডির এক মধ্যবিত্ত ঘরে জন্মগ্রহণ করেন গি দ্য মোপাসাঁ। তার বার বছর বয়সের সময় পিতা মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মায়ের কাছেই তার বাল্য শিক্ষা সমাপ্ত হয়। মায়ের কাছে তিনি শেকসপিয়রের অনুবাদ পড়েছিলেন। রুইয়েন এর উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া সমাপ্ত করেন। ঐ বিদ্যালয়ের এক সাহিত্যরসিক শিক্ষাক বোলহেতের কাছে মোপাসা সাহিত্যরসভোগ দিক্ষিত হন। ১৮৬৯ সালে মোপাসঁ প্যারিসে আইন বিষয়ে লেখাপড়া শুরু করেন, কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে ফরাসি-প্রুশীয় যুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয় । যুদ্ধের অভিজ্ঞতা গল্প ও উপন্যাস রচনায় তাকে বিশেষ সাহায্য করেছিল। এরপর ১৮৭২ থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত তিনি সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে ফ্রান্সের নৌ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। ১৮৮০ সালে একটি কাব্যগ্রন্থ (De Ver) প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তাঁর সাহিত্যজগতে পদার্পণ। বইটি খুব বেশি জনপ্রিয়তা পাননি। এ সময় প্যারিসের তরুণ সাহিত্যিকদের লেখা নিয়ে ‘লেস সভরেস দ্য মাদেন’ নামে একটি সাহিত্যিক সঙ্কলন প্রকাশ হয়। সঙ্কলনে তার প্রথম বড় গল্প ‘ব্যুল দ্য সুইফ’ প্রকাশিত হয়। গল্পে ছিল ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের পটভূমিতে এক পতিতার কাহিনী। ‘ব্যুল দ্য সুইফ’সহ তার বেশকিছু গল্প বাংলাদেশে অনুদিত হয়েছে। সাহিত্যের নানান ধারায় কাজ করলেও তিনি ছোটগল্পের জন্য বেশি পরিচিত। তার গল্পে অতিবাস্তবতা, কল্পনা, অতিপ্রাকৃতিক, মনস্তাত্ত্বিক বিষয়সহ বিভিন্ন মানবিক সঙ্কটের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। তাকে বিখ্যাত লেখক গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, এমিল জোলা ও আলফস দোঁদের যোগ্য উত্তরসূরি ধরা হয়। ১৮৮৩ সালে প্রকাশিত আরেকটি বিখ্যাত গল্প ‘মাদমোয়াজেল ফিফি’। এর পর প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘আন-রি’। উপন্যাসটি সরকারি রোষানলের শিকার হয়। এর পর ১৮৮৫ সালে লেখেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘বেল আমি’। তবে গি দ্য মোপাসাঁ ছোটগল্পকার হিসেবে যতটুকু পারদর্শী ছিলেন, উপন্যাসে তিনি ততটা ছিলেন না।
ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ সর্ম্পকে একটি মজার তথ্যঃ
গি দ্য মোপাসাঁ আইফেল টাওয়ার অপছন্দ করতেন। তবুও তিনি প্রায় প্রতিদিন আইফেল টাওয়ারে অবস্থিত হোটেলে নাশতা করতে যেতেন এই কারণে যে, প্যারিসের একমাত্র এ জায়গা থেকেই আইফেল টাওয়ারটিকে দেখা যায় না। স্বল্পভাষী লাজুক স্বভাবের মানুষটি দুরারোগ্য বিষাদ-ব্যধির শিকার ছিলেন। পারিবারিক ও বংশগত এই রোগের হাত থেকে তিনি কখনও নিস্তার পান নি।তারুণ্যের শুরুতেই তিনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন, যা তাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। মারাত্মক মানসিক বৈকল্যের শিকার হয়ে ১৮৯২ সালের ২ জানুয়ারি কণ্ঠনালি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্যারিসের একটি প্রাইভেট অ্যাসাইলামে ভর্তি করা হয়। সেখানেই পরের বছর অর্থাৎ ১৮৯৩ সালের ৬ই জুলাই, মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই প্রতিভাবান সাহিত্যিক। আজ তার ১৭০তম জন্মবার্ষিকী। প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তমাল আপনাকে ধন্যবাদ
সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য।
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫১
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার পোষ্টে সবসময়েই নতুন নতুন কিছু পাই।ছোট গল্পের জনক মোঁপাসা আমার খুব প্রিয় একজন গল্পকার। ধন্যবাদ আপনাকে প্রতিদিন এত কষ্ট করে এত এত সুবিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য। ভালো থাকুন- আরো লিখুন
০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ তপন
আশা করি আগামীতেও
সাথে থাকবেন।
৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আগে বলেন আপনি সময় সময় আমার সাথে সাথেই থাকেন কেন?
আমি পোস্ট দিলেই আপনি পোষ্ট দেন। বুঝি আমি কাকতালীয় ব্যাপার। হয় আমার আগে, অথবা আমার পরে। এর কোনো একটা রহস্য অবশ্যই আছে।
০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রহস্য ভেদ করা খানসাবের কাজ
আমার না।
গোয়েন্দ খান
সমাধান দেন!!
৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪৭
নাসরীন খান বলেছেন: নতুনকে জানাহল।
০৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ নাসরীন খান
একসাথে পেলাম আজ দুই খা্ন।
একজন রাজীব আর এক নাসরীন খান
উভয়েরর আমার ব্লগে রহিলো নিমন্ত্রণ ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১৩
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: রবীন্দ্রনাথের প্রথম দিকের গল্পগুলোতে মোঁপাসা ও চেকভের রচনারীতির প্রভাব ছিল।পরবর্তী সময়ে তিনি সেটা কাটিয়ে উঠে নিজের ধারা সৃষ্টি করেন। মোঁপাসা খুবই শক্তিশালী লেখক।চমৎকারভাবে মানুষের মনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারতেন।