নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
একনিষ্ঠ সাহিত্য সাধক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী। মনের খেয়ালে একের পর এক সৃষ্টি করে গেছেন নানা গল্প, নানা উপন্যাস। তবুও তিনি সম্পূর্ন আলাদা এক ব্যক্তিত্ব – এক 'নিঃসঙ্গ লেখক'। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী দীর্ঘদিন গল্প উপন্যাস লিখছেন , তার ছােট গল্প (বাধ. হয় বাস্তবতার দিক দিয়ে, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুসারী—অথচ সেই বাস্তব,. জীবন-সংগ্রামে অন্তর্লিপ্ত গল্পগুলির মধ্যেই কবিতার ছত্র (যন পৰম্পৰা রাত. হযে স্বতােৎসারিত হয়েছে, যা তার সমকালীন অন্য কোনো লেখকেব বচনায়. পাওয়া যায় না একমাত্র কমলকুমার মজুমদার ছাড়া। কেউ তাঁকে বলেন ‘সুন্দরের কারিগর’, কেউ বলেন, ‘শব্দের জাদুকর’। কারও ভাবনায় চমক দেয় তাঁর প্রগতিশীলতা, কেউ খুঁজে পান মর্বিডিটি। কারও কাছে তিনি আত্মমগ্ন, কারও কাছে উত্তরণের দিশা। বাংলা সাহিত্যের বহু বিতর্কিত কিন্তু উপেক্ষিত ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীকে আজও কোনও সমগ্রতায় পাওয়া যায় না বইপাড়ায়। ছোটগল্পকার জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী প্রায় এক সাম্রাজ্যের অধীশ্বর। কিন্তু সাহিত্যের সেই ঔজ্জ্বল্য জীবনে ছিল না তাঁর। তিনি যেন এক ‘মলিন মানুষ’, এমনকী, পত্নীর স্মৃতি জানাচ্ছে, তিনি বিয়ে করতেও গিয়েছিলেন ময়লা ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে! অধুনা বাংলাদেশের কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শৈশব-কৈশোর কেটেছে, পড়েওছেন ওখানকার স্কুলে। বি এ পাশ করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী আমাদের সাহিত্যে ছোট গল্পের এক বিরল শিল্পী। আমাদের মনের আলো অন্ধকার, যৌনতা ও রূপ অরূপের, সৌন্দরযের নানা অনুষঙ্গের রূপকার। তাঁর গল্প পড়ে জীবনের অতিসূক্ষ্ম মুহূর্তগুলোকে আমরা অনুভব করতে পারি। স্থুল কাহিনীর রূপকার ছিলেন না তিনি। যদিও বাংলা সাহিত্যে তাঁদের দাপটই বেশি ছিল সেই সময়। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর গল্প ব্যর্থ মানুষদের নিয়ে। আবার তারাই জীবনের রূপ-অরূপকে চিনতে পারে। অনুভব করতে পারে। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর ছােটগল্পে প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক বিন্যাস নানান তাৎপর্য. নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। আজ বাঙালী সাহিত্যিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮২ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। নিঃসঙ্গ লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী ১৯১২ সালের ২০ আগষ্ট অধুনা বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল ধনু। পিতা অপূর্বচন্দ্র নন্দী ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন, তাঁর মায়ের নাম চারুবালা দেবী। অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেছিলেন তিনি। ১৯৩২-এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করে ওই কলেজেই স্নাতক স্তরে ভর্তি হলেন জ্যোতিরিন্দ্র এবং ১৯৩৫ সালে প্রাইভেটে বিএ পাশ করেন তিনি। ১৯৩৬ সালে কর্মসূত্রে কলকাতা আসেন তিনি ও প্রথম চাকরি পান বেঙ্গল ইমিউনিটিতে। তারপর টাটা এয়ারক্রাফ্ট, জে ওয়ালটার থমসন-এর পাশাপাশি কাজ করেছেন যুগান্তর সংবাদপত্রের সাব এডিটর হিসেবে এবং মৌলানা আজাদ খান সম্পাদিত দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। তার কর্মক্ষেত্রে ছিল ইন্ডিয়ান জুটমিলস অ্যাসোসিয়েশনের ইংরেজি ও বাংলা ভাষার মুখপত্র মজদুর ও জনসেবক পত্রিকা। বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে লেখকের সংখ্যা শত শত। কিন্তু শিল্পী? কর গোনা। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী সেই বিরলতমদের একজন। শুধুমাত্র ঘাস, ফুল, ফড়িং কি ভাঙাচোরা মানুষ নিয়ে একের পর এক কাব্যসুষমামন্ডিত চারুকলাসম গল্প বুনে গেছেন বলেই নয়; কালের অবশ্যসম্ভাবী সমাজচিত্রের ‘দ্রষ্টা’ হিসেবেও তিনি অনন্য, একক।
ছোটবেলা থেকে তিনি সাহিত্যচর্চ্চা করতেন। স্বদেশি আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৩১ সালে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এক বছর গৃহবন্দী থাকাকালীন তার সাহিত্যচর্চার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। জ্যোৎস্না রায় ছদ্মনামে সোনার বাংলা ও ঢাকা থেকে প্রচারিত বাংলার বাণী পত্রিকায় তাঁর লেখা কয়েকটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। কলকাতায় এসে তিনি সাগরময় ঘোষের সান্নিধ্যে আসেন ও দেশ পত্রিকায় ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় ছোটগল্প রাইচরণের বাবরি। মাতৃভূমি, ভারতবর্ষ, চতুরঙ্গ, পরিচয় পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। প্রেমেন্দ্র মিত্রের নজরে আসে জ্যোতিরিন্দ্রর লেখা। তাঁর লেখা ছোটগল্প ভাত ও গাছ, ট্যাক্সিওয়ালা, নীল পেয়ালা, সিঁদেল, একঝাঁক দেবশিশু ও নীলফুল এবং বলদ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়। ১৯৪৮ সালে দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক উপন্যাস সূর্যমুখী প্রকাশিত হয়। এর পর থেকে তিনি সাহিত্যচর্চাকেই জীবিকা হিসাবে বেছে নেন। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী ১৯৬৫ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সুরেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার ও ১৯৬৬ সালে আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত হন। তাকে কল্লোল যূগের অন্যতম শ্রেষ্ট ছোটগল্পকার বলে মনে করা হয়। তাঁর উপন্যাসের সংখ্যা ২০টি ও গল্পগ্রন্থ আছে তিপান্নটি।
তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসঃ
১। সূর্যমুখী, ২। মীরার দুপুর, ৩। গ্রীষ্ম বাসর, ৪। নিশ্চিন্তপুরের মানুষ, ৫। হৃদয়ের রং, ৬। প্রেমের চেয়ে বড়, ৭। সর্পিল, ৮। তিন পরী ছয় প্রেমিক ৯। নীল রাত্রি ১০। বনানীর প্রেম। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর ছোট গল্প সমুহঃ ১। খেলনা, ২। শালিক কি চড়ুই, ৩। চন্দ্রমল্লিকা, ৪। চার ইয়ার, ৫। গিরগিটি, ৬। মহিয়সী, ৭। খালপোল ও টিনের ঘরের চিত্রকর, ৮। বন্ধুপত্নী, ৯। নদী ও নারী, ১০। পাশের ফ্ল্যাটের মেয়েটা, ১১। দিনের গল্প রাত্রির গান, ১২। জয়জয়ন্তী, ১৩। সমুদ্র, ১৪। তারিণীর বাড়িবদল, ১৫। ছিদ্র, ১৬। ক্ষুধা, ১৭। বুনোওল, ১৮। আজ কোথায় যাবেন, ১৯। আম কাঁঠালের ছুটি, ২০। ভাত, ২১। ট্যাক্সিওয়ালা, ২২। গাছ, ২৩। চোর, ২৪। পার্বতীপুরের বিকেল, ২৫। ছুটকি বুটকি, ২৬। বনের রাজা ও আরো অনেক। বাংলা ছোটো গল্প যে কজন রচনাকারের সৌজন্যে যথার্থ বিশ্বমানের দাবিদার, তাঁদেরই অন্যতম জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী৷ অজস্র লেখেননি, কিন্তু মিতায়তন রচনার মধ্যেই নির্ভুল ধরে রেখেছিলেন নিজস্ব স্বাক্ষর৷ তাঁর গল্পগুলি এতকাল বিভিন্ন সংকলনে ছড়িয়েছিটিয়ে ছিল, তার বেশ কিছু অধুনা দুষ্প্রাপ্য৷১৯৮২ সালের ৩ আগষ্ট মৃত্যুবরণ করেন সাহিত্যিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী। আজ তার ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। নিঃসঙ্গ লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪
সাহিত্যিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর
‘বারো ঘর এক উঠোন ‘ উপন্যাসটি
পড়ার জন্য।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: সাহিত্য সাধক কে শ্রদ্ধা জানাই।
০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ খানসাব
সাহিত্যিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
‘
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: নিজের ছবি বদলে পাখির ছবি দিলেন যে!
০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নিজের ছবিতো অনেক দিন ছিলোনা!
স্টে হোম এর সাইন ছিলো কিন্তু কেউ
ঘরে থাকেনা তাই পাখিকে বেছে নিলাম।
পাখি কখন জানি উড়ে যায়
একটা বদ হাওয়া লেগে খাঁচায়।।
খাঁচার আড়া পড়লো ধসে
পাখি আর দাঁড়াবে কী সে।
ঐ ভাবনা ভাবছি বসে
চমক জ্বরা বইছে গায়।।
আগে যদি যেত জানা
জংলা কভু পোষ মানে না।
তবে উহার প্রেম করতাম না
লালন ফকির কেঁদে কয়।।
পাখি কখন জানি উড়ে যায়
একটা বদ হাওয়া লেগে খাঁচায়।।
৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪২
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: এই লেখকের কোনো লেখা পড়েছি বলে মনে পড়ে না। আপনাকে ধন্যবাদ লেখককে চিনিয়ে দেবার জন্য।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:১৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি
ইচ্ছা থাকলে তার লেখা
উপন্যাস পড়ে দেখতে
পারেন।
৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১:২৩
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে
..........................................................
আমার গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ২:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে স্বপ্নের শঙ্খচিল ,
সাহিত্যিক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ ভোর ৪:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
এঁদের সম্পর্কে আপনি আগেই কিছু জানতেন?
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জানতাম বলেই লিখলাম
না জানলে কি লিখা যায়!!
৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ৩ নং মন্তব্যের উত্তরে যা লিখেছেন সেটা কি আপনার লেখা?
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: তার ‘বারো ঘর এক উঠোন ‘আমার পড়া উপন্যাস গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি।