নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিশ্বের বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের প্রবাদপ্রতিম চরিত্র নেলসন রোলিহালালা ম্যান্ডেলাঃ
নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার গণতন্ত্রের জনক বলে বর্ণনা করা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যালঘিষ্ঠ শ্বেতাঙ্গ শাসক গোষ্ঠী যে অমানবিক বর্ণবাদীনীতির মাধ্যমে রাস্ট্র শাসন করেছে, তারই বিরুদ্ধে অবিশ্রান্তভাবে দীর্ঘকাল দুঃসাহসিক সংগ্রাম করেছেন নেলসন ম্যান্ডেলা। তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতন্ত্রের জনক, কিংবদন্তী নেলসন ম্যান্ডেলা বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনকে নতুন গতি দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ভয়ঙ্কর রবেন আইল্যান্ডের কাল কুঠরিতে বন্দী দশা কাটান তিনি। তা সত্বেও দমে যায়নি তাঁর আন্দোলন। তাঁর আন্দোলনের জেরেই দক্ষিণ আফ্রিকা আজ একটি রামধনুর দেশ। যেখানে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে আছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মুক্তির অগ্রদূত নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী মিঃ ম্যান্ডেলার আজ ১০২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯১৮ সালের আজকের দিনে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করেন।[ বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নেলসন রোলিহালালা ম্যান্ডেলা ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সকিতে জন্মগ্রহণ করেন। ম্যান্ডেলার বাবা গাদলা হেনরি মপাকানইসা ম্ভেজো থেম্বু গ্রামের মোড়ল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ম্যান্ডেলার পিতার ছিলো চারজন স্ত্রী, ও সর্বমোট ১৩টি সন্তান (৪ পুত্র, ৯ কন্যা)। ম্যান্ডেলার মা নোসেকেনি ফ্যানি ছিলেন হেনরি ম্পাকানইসার ৩য় স্ত্রী। ফ্যানি ছিলেন ম্পেম্ভু হোসা গোত্রের ন্কেদামার কন্যা। নানার বাড়িতেই ম্যান্ডেলার শৈশব কাটে। তাঁর ডাক নাম "রোলিহালালা"র অর্থ হলো "গাছের ডাল ভাঙে যে", অর্থাৎ দুষ্ট ছেলে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তাঁর গোত্রের দেয়া মাদিবা নামে পরিচিত। ম্যান্ডেলা তাঁর পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময়ে তাঁর শিক্ষিকা ম্দিঙ্গানে তাঁর ইংরেজি নাম রাখেন "নেলসন"। মেন্ডেলা প্রথমে ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও পরে উইট ওয়াটারসরেন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। ১৯৪২ সালে তিনি আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেন।১৯৪৪ সাল পর্যন্ত তিনি ন্যাশনাল পার্টির দমন-পীড়ন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন এবং ১৯৫৬-৬১ সাল পর্যন্ত কারাবরণ করেন। ১৯৬২ সালে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মুক্তির পথ নিয়ে রচিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘নো ইজি ওয়াক টু ফ্রীডম’ ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৯০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি তিনি কারামুক্ত হন। এর পর তিনি তাঁর দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে ১৯৯৪ সালেগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর ১৯৯৪ হতে ১৯৯৯ পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি। পৃথিবীর অনুপ্রেরণা নেলসন ম্যান্ডেলা সারা জীবন যে সংগ্রাম ও ত্যাগ করেছেন তা অতুলনীয়। তাঁর সারাজীবনের ত্যাগ, তিতিক্ষা ও সংগ্রামের ফলেই গণতন্ত্র ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগ করে তিনি অনুকরনীয় দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের সাথে শান্তি আলোচনায় অবদান রাখার জন্য ম্যান্ডেলা এবং রাষ্ট্রপতি এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্ককে ১৯৯৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়। গত চার দশকে ম্যান্ডলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার পেয়েছেন। তাছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারের অভিষেকে পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে ম্যান্ডেলা ৩ বার বিয়ে করেন। তাঁর ৬টি সন্তান, ২০জন নাতি-নাতনি এবং অনেক প্রপৌত্র রয়েছে। থেম্বুর উপজাতীয় নেতা মান্দলা ম্যান্ডেলা হলেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি। ৯৫ বছর বয়স্ক বিশ্বের বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের প্রবাদপ্রতিম চরিত্র নেলসন ম্যান্ডেলা ফুসফুসের জটিল সংক্রমণের শিকার হয়ে ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ বছর।
দক্ষিণ আফ্রিকার গণতন্ত্রের জনক, শান্তি প্রতিষ্ঠায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আজীবন সংগ্রামী শ্রদ্ধাভাজন প্রবীন নেতা নেলসন ম্যাণ্ডেলার আজ ১০২তম জন্মবার্ষিকী, দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মুক্তির অগ্রদূত নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
২১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ শঙ্খচিল ভাই
ভালো থাকবেন।
২| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৫১
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই ।
২১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ গোফরান ভাই
শুভেচ্ছা জানবেন
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:০০
চাঁদগাজী বলেছেন:
জ্ঞানী লোক ছিলেন।
২১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সেই জন্যই তিনি নোবেল বিজয়ী হয়ে ছিলেন।
ধন্যবাদ আপনাকে তার মূল্যায়ন করার জন্য।
৪| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেটম্যান।
২১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার গুরু তাই বলেছে
আপনি তার কথার বাইরে যাবেন না
তা আমি জানি।
৫| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নূরু ,
প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতা দিয়েই তাকে স্বাগত জানাই -
"অরণ্য ডাকে ওই যাই
হেইডি হাইডি হাই
সিংহের নোখে ধার, সিংহের দাঁতে ধার
চোখে তার মৃত্যুর রোশনাই।
বুনোপথ বিভীষিকা বিঘ্ন
আমাদেরও বল্লম তীক্ষ্ণ
কাপুরুষ সিংহ তো মারতেই জানে শুধু
আমরা যে মরতেও চাই
হেইডি হাইডি হাই..........."
নেলসন দেখিয়ে গেছেন , স্তিমিত দীর্ঘ পরমায়ু লালন করার চেয়ে সুতীক্ষ্ণ বল্লম হাতে সিংহের সাথে লড়ে মৃত্যুবরণ করা অনেক সম্মানের। তার বিখ্যাত একটি কোট -
"আমার সাফল্যকে গুনতি করে আমায় বিচার করো না। আমি কতোবার মাটিতে পড়ে গেছি আর কতোবার সেখান থেকে আবারও উঠে দাঁড়িয়েছি, বিচার করো তা দিয়ে।"
তবে ম্যান্ডেলার বিখ্যাত যে বইয়ের কথা আপনি বললেন " নো ইজি ওয়াক টু ফ্রীডম" সেটা কি ঠিক আছে ?
ঐটাতো " লং ওয়াক টু ফ্রীডম " হওয়ার কথা। এই বইটাই সবচেয়ে সাড়া জাগানো। "নো ইজি ওয়াক টু ফ্রীডম" বইটি ১৯৬৫ সালের আর "লং ওয়াক টু ফ্রীডম" বইটি তার আগে ১৯৬৪তে প্রকাশিত। কে জানে!!!!!!!!!
২১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জিএস ভাই আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে ম্যান্ডেলার
No Easy Walk to Freedom বইটি ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত আর
Long Walk to Freedom বইটি ১৯৯৪ সালে।
আমার ধারনা
" নো ইজি ওয়াক টু ফ্রীডম" এবং
" লং ওয়াক টু ফ্রীডম " যে লাউ সেই কদু!!
স্বাধীনতার জন্য হাটা সহজ নয় আবার একই কথার পুনরাবৃত্তি
স্বাধীনতার জন্য হাটতে হবে বহুদূর।
No Easy Walk to Freedom
‘There is no easy walk to freedom anywhere and many of us will have to pass through the valley of the shadow of death again and again before we reach the mountain tops of our desires.’
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৫৯
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের মুক্তির অগ্রদূত নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিনে
..............................................................................................
থাকল আমার ফুলেল শুভেচ্ছা।