নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমরেড জ্যোতি বসুর ১০৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:০৩


ভারতীয় বাঙালি রাজনীতিবিদ সিপিআই (এম) দলের সদস্য এবং পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। এক শিক্ষিত উচ্চবিত্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। তিনি লেখাপড়া করেছেন কলকাতার অভিজাত স্কুল ও কলেজে। ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স নিয়ে বিএ পাশ করেছেন প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে। তাঁর পরিবারের মধ্যে স্বদেশী ও বৃটিশ বিরোধী চেতনাবোধ ছিল, যা স্বাভাবিক কারণেই বালক ও তরুণ জ্যোতি বসুর মধ্যে সঞ্চায়িত হয়েছিল। তাঁর পিতার সঙ্গে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী অনুশীলন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে তাঁর পৈত্রিক পরিবারের যোগাযোগ ছিল। তিনিই ছিলেন ভারতের দীর্ঘতম মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একটানা তেইশ বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।এছাড়াও ১৯৬৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন।জ্যোতি বসু তাঁর জীবদ্দশাতেই একজন কিংবদন্তী কমিউনিস্ট নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। কমিউনিস্ট আন্দোলনে জ্যোতি বসুর মতো আর এমন কোনো নেতা নেই যাকে গোটা দেশের মানুষ জানতেন এবং শ্রদ্ধা করতেন। ১৯৯৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম বিবেচিত হলেও, তিনি পার্টির সিদ্ধান্তে সেই পদ প্রত্যাখ্যান করেন। এ থেকেই বোঝা যায় যে, জ্যোতি বসু ছিলেন আসলেই এক ব্যতিক্রমী নেতা। আাজ এই নেতার জন্মবার্ষিকী। ১৯১৪ সালের আজকের দিনে তিনি কলকাতার ৪৩/১ হ্যারিসন রোডস্থ (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) বাসভবনে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ১০৬তম জন্মবার্ষিকী। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমরেড জ্যোতি বসুর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

(নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার অন্তর্গত বারদী গ্রামে জ্যোতি বসু'র পৈতৃক বাসভবন)
জ্যোতি বসু ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতার হ্যারিসন রোডের একটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের আদি বাসস্থান বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার বারোদি গ্রামে। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় জ্যোতিকিরণ বসু। স্কুলে ভর্তির সময় তাঁর নাম থেকে 'কিরণ' শব্দটি ছেঁটে দেওয়া হয়। কিন্তু মেধা ও কৃতিত্বের কারণে কিরণ শব্দটি তাঁর জীবনেরই সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদর করে তাঁকে ডাকা হতো 'গনা'। বাবা নিশিকান্ত বসু। মা হেমলতা বসু। নিশিকান্ত বসু ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উচ্চতর শিক্ষালাভ করে তিনি কলকাতায় এসে প্র্যাকটিস শুরু করেন। এই সময় তাঁদের পরিবার বেশ কিছুদিন কাটিয়েছেন ধর্মতলায় হিন্দুস্থান বিল্ডিং-এর ভাড়া বাড়িতে। ১৯২৪ সালে নিশিকান্ত বসু হিন্দুস্থান পার্কে নিজে বাড়ি তৈরি করে সেখানে সপরিবারে বসবাস শুরু করেন। ছোটবেলা থেকে তিনি বিপ্লবীদের জীবনী পড়তে খুব পছন্দ করতেন। একের পর এক জানতে শুরু করেন ভারতের স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের সংগ্রামী জীবনের কথা। আর এভাবে বিপ্লবীদের জীবনী পড়তে পড়তে একসময় নিজেই জড়িয়ে পড়েন লড়াই-সংগ্রামে। মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেন তিনি। মার্ক্সবাদী রাজনৈতিক দর্শনের আলোকে গড়ে তুলেছিলেন নিজেকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সর্বভারতীয় রাজনীতিতেই অনুকরণীয়, অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব জ্যোতি বসু।
জ্যোতি বসুর পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। প্রাথমিক পাঠ শেষে তাঁর বাবা তাঁকে ১৯২০ সালে কলকাতার লরেটো স্কুলে ভর্তি করে দেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর। লরেটো স্কুলের পাঠ্যক্রম ছিল চার বছর মেয়াদী। খুব মেধাবী হওয়ায় তিনি 'ডাবল প্রমোশন' পেয়ে তিন বছরে এই স্কুলের পাঠ্যক্রম সমাপ্ত করেন। ১৯২৫ সালে তাঁকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। এই স্কুল থেকেই তিনি নবম শ্রেণী পাস করেন। ম্যাট্রিকুলেশন পাস করার পর ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে প্রেসিডেন্সী কলেজে অনার্স ভর্তি হন । ১৯৩৫ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অনার্স পাস করার পর তাঁর বাবা ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য তাঁকে বিলেত পাঠান। মূলত এ সময় থেকেই জ্যোতি বসু কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। বিলেতে 'ভারত লীগ' ও 'ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টস ইন গ্রেট বৃটেনে'র সদস্য ও 'ভারত মজলিসে'র সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পালন করেন তিনি। ১৯৩৭ সালেই তিনি 'ভারত লীগে'র সদস্য হন। ১৯৩৮ সালে জ্যোতি বসু ও তাঁর সহকর্মীদের উদ্যোগে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর বিলেত সফরের সময় এক সভার আয়োজন করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিলেত সফরকালেও একই ধরনের উদ্যোগ নেন জ্যোতি বসু। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থনে জনমত গঠনই ছিল 'ভারত লীগে'র মুখ্য কাজ। এই সময় বিলেত, কেমব্রিজ, অক্সফোর্ডে তৈরি হয় কমিউনিস্ট গ্রুপ। কিন্তু ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হওয়ায় তখন প্রকাশ্যে কমিউনিস্ট পার্টি করা যেত না। ১৯৪০ সালে তিনি ব্যারিস্টার হয়ে দেশে ফেরেন।

১৯৪৬ সালে মাত্র বত্রিশ বছর অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রাদেশিক আইনসভায় নির্বাচিত হন জ্যোতি বসু। এই সময় থেকেই আইনসভায় বিরোধী নেতার ভূমিকা পালন করতে থাকেন বসু। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বামপন্থীরাই বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতার পূর্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, তেভাগা আন্দোলন ও বঙ্গবিভাগ নিয়ে আইনসভায় বিভিন্ন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীনোত্তর পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলন, বন্দীমুক্তি, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত আন্দোলনের পুরোভাগে থাকেন জ্যোতি বসু। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ঔপনিবেশক শাসনের অবসান হলো, স্বাধীন হলো ভারত। স্বাধীনতা লাভের উৎসব শেষ হলে নতুন উদ্যমে সংগঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করলেন জ্যোতি বসু। কমিউনিস্ট পার্টির নতুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিটি বা 'পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি' গঠন করা হলো - জ্যোতি বসু এ কমিটির অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হলেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে মার্চ তারিখে কংগ্রেস সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো। পরদিন জ্যোতি বসুকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলো। প্রেসিডেন্সী জেলে শুরু হলো জ্যোতি বসুর প্রথম কারাজীবন। তিন মাস পর মুক্তি পেলেন তিনি। কারামুক্ত হয়ে আবার রেলওয়ে ট্রেড ইউনিয়নের কাজে মনোনিবেশ করলেন তিনি। বম্বে যাওয়ার পথে ট্রেনে উঠে পুলিশ তাকে আবার গ্রেপ্তার করলো। আলিপুর কোর্টে জামিন মিললো না; তাঁকে যেতে হলো আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। তবে অচিরেই খালাস পেলেন তিনি। এর পর ১৯৫২'র বিধানসভার নির্বাচনে বরাননগর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে জয় লাভ করেন জ্যোতি বসু। ১৯৫৩-৫৪ সাল পর্যন্ত ষষ্ঠ রাজ্য সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ কমিউনিস্ট পর্টির রাজ্য কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে বরানগরে কংগ্রেস প্রার্থী কানাইলাল ঢোলকে পরাস্ত করে তৃতীয়বারের জন্য নির্বাচিত হন জ্যোতি বসু। ১৯৬২ সালের নির্বাচনে জ্যোতি বসু চতুর্থবারের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে অনুষ্ঠিত তেনালী কনভেনশনেরও অন্যতম শীর্ষ সংগঠক ছিলেন জ্যোতি বসু। কলকাতায় পার্টির সপ্তম কংগ্রেসের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। এই কংগ্রেসে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটি তথা পলিট ব্যুরোর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে সি পি আই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্র পিপলস ডেমোক্র্যাসি আত্মপ্রকাশ করলে জ্যোতি বসু হন তাঁর প্রথম সম্পাদক। ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ৪র্থ সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের আধিপত্য খর্ব হলো। গঠিত হলো অ-কংগ্রেসী কোয়ালিশন সরকার। ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের ২রা মার্চ জ্যোতি বসু দ্বিতীয় বারের মতো পশ্চিম বঙ্গের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। ১৯৭২ সালে কংগ্রেস নির্বাচনের নামে পুরোপুরি প্রহসন শুরু করে। জ্যোতি বসু ওই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তিনিই নির্বাচনে জয়ী হন। এর পরে ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আবির্ভাব হয়। সাতগাছিয়া কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বিধানসভায় ফিরে এলেন জ্যোতি বসু। এবার তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলেন। তখন তাঁর বয়স ৬৩ বছর। ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্টের আমলে জ্যোতি বসুকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব উঠলে তিনি দলের সিদ্ধান্তে তা প্রত্যাখান করেন অকপটে। পরে তাঁকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলে তাতেও সায় দেয়নি তাঁর দল।

টানা ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে অবসর নেন বসু। তখন তিনি বলেছিলেন, "আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অবসর নিচ্ছি - তবে রাজনীতি থেকে নয়। কমিউনিস্টরা অবসর নেয় না। যতদিন শরীর অনুমতি দেবে ততদিন মানুষের মুক্তির সংগ্রামে কাজ করে যাবো"। ২০০৬ সালের ১৪ নভেম্বর বাড়িতে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পান তিনি। এর পর২০০৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে ও মাথায় আঘাত পান বসু। ৭ সেপ্টেম্বর ভর্তি হন হাসপাতালে। ১২ নভেম্বর আবার বাড়িতে পড়ে গিয়ে আহত হন বসু। ২০০৯ সালের ১৩ মে বাথরুমে পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ে আঘাত পান বসু। সে বছর ১২ জুলাই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন অ্যাডভান্সড মেডিকেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (আমরি হসপিটাল)। ২০০৯ সালে ইন্দিরা ভবনের বাইরে বেরনোর মতো অবস্থা ছিল না তাঁর। তবু সেখানে বসেই পার্টির তথা সরকার পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, নানা ধরনের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন জ্যোতি বসু । তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 'যত দূর মনে পড়ে'। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি বসু বিধাননগরের অ্যাডভান্সড মেডিকেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (আমরি হসপিটাল) ভর্তি হন। ১৬ জানুয়ারি তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে এবং তাঁর একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যেতে থাকে। পরের দিন ১৭ জানুয়ারি কমরেড জ্যোতি বসু ৯৬বছর বয়সে সল্ট লেকের 'AMRI Hospital' - এ মৃত্যুবরণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জ্যোতি বসুর শাসনকাল সাফল্য ও ব্যর্থতায় মিশ্রিত। বলা হয়েছে তাঁর আমলে পশ্চিমবঙ্গে স্থিতাবস্থা বিরাজ কররেও তেমন কোন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেনি।আপাদমস্তক মার্ক্সবাদী জ্যোতি বসুর পক্ষে পশ্চিমবঙ্গে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় নি। তবে বিলেত-ফেরত বাঙালি ভদ্রলোক সমাজের প্রতিনিধি জ্যোতি বসু ছিলেন এক অবিসংবাদী জননেতা ও নিজের দল এবং দলের বাইরেও এক বিশিষ্ট সম্মানের অধিকারী। ১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধীর অনশনের সময় একদিন জ্যোতি বসু স্কুলে না গিয়ে অনশনে যোগ দেন। ঐদিন তিনি খদ্দর পরে শহীদ মিনার ময়দানে সুভাষ বসুর ভাষণ শুনতে যান। একসময় পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। জ্যোতি বসু পালানোর পরিবর্তে পুলিশকে মোকাবেলা করেন । আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন, 'সেটাই বোধহয় রাজশক্তির বিরুদ্ধে আমার প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ'।আজ পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ১০৬তম জন্মবার্ষিকী। কমরেড জ্যোতি বসুর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: বসু সাহেব অনেক আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন। কিন্তু আপনার পোষ্টে কোথাও খুঁজে পেলাম না উনি পশ্চিম বঙ্গের মানুষের জন্য কি কি কাজ করেছেন?

২| ০৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৪০

লক্ষণ ভান্ডারী বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন স্যার।
রক্তিম অভিনন্দন রইলো।
জয়গুরু!

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৪৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা জ্যোতি বসু প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন ।

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

ইসিয়াক বলেছেন: পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমরেড জ্যোতি বসুর ১০৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা রইলো।
আপনার জন্য শুভকামনা।
শুভবিকাল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.