নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের ১০১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৪৬


বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বাঙালি কবি অক্ষয়কুমার বড়াল। উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি হিসেবে তিনি সর্বজন বিদিত। বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে তিনি বড়াল কবি নামে পরিচিত। তাঁর কাব্য রচনার মূল বিষয় ছিল নিসর্গ, সৌন্দর্যবাদ, কল্পনামূলক প্রেম, শোক এবং মানববন্দনা। নারীপ্রেমের শান্তরস তাঁর কাব্যের প্রধান বিশেষত্ব। তিনি মৃতা স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করে এষা কাব্যগ্রন্থটি লিখেছিলেন। তিনি মার্জিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার অনুসারী ছিলেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিদূর না এগোলেও আমৃত্যু তিনি জ্ঞান আহরণে ব্রতী ছিলেন। এ হিসেবে তাকে একজন স্বশিক্ষিত মানুষ বলে আখ্যায়িত করা যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয়কুমার বড়ালকে "বিহারীলালের সাক্ষাৎ ভাবশিষ্য" নামে আখ্যায়িত করা হয়। প্রাক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পর্বে বাংলা সাহিত্যে কাব্য রচনায় যারা আধুনিকতার ধারাটিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অক্ষয়কুমার বড়াল অন্যতম।অক্ষয়কুমার তৎকালীন বিখ্যাত কবি বিহারীলালের ভক্ত ছিলেন। বিহারীলাল ছিলেন বাংলা গীতিকবিতার প্রবর্তক। পরে তাঁরই অনুপ্রেরণায় কবিতা লেখা শুরু করেন। বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৮৯ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তাঁর প্রথম কবিতা রজনীর মৃত্যু প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে তিনি অজস্র কবিতা রচনা করেছেন। আজ এই কবির ১০১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯১৯ সালের ১৯ জুন তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

অক্ষয়কুমার বড়াল ১৮৬০ সালে বর্তমান ভারতের কলকাতার চোরবাগানে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কলকাতার হেয়ার স্কুলে। কিন্তু পড়াশোনায় তিনি উন্নতি করতে পারেননি। তাই তিনি স্কুল শিক্ষা সমাপ্ত করতে পারেননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিদূর না এগোলেও আমৃত্যু তিনি জ্ঞান আহরণে ব্রতী ছিলেন। এ হিসেবে তাকে একজন স্বশিক্ষিত মানুষ বলে আখ্যায়িত করা যায়। হেয়ার স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় অক্ষয়কুমার বড়াল বিহারীলাল চক্রবর্তীর কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। বিহারীলাল ছিলেন বাংলা গীতিকবিতার প্রবর্তক। তার অনুপ্রেরণায়ই বড়াল কবিতা রচনা শুরু করেছিলেন। বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৮৯ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তাঁর প্রথম কবিতা রজনীর মৃত্যু প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং অক্ষয়কুমার বড়ালকে "বিহারীলালের সাক্ষাৎ ভাবশিষ্য" নামে আখ্যায়িত করা হয়। অক্ষয়কুমার বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে বড়াল কবি নামে পরিচিত। তিনি মার্জিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার অনুসারী ছিলেন। তার কাব্য রচনার মূল বিষয় ছিল নিসর্গ, সৌন্দর্যবাদ, কল্পনামূলক প্রেম, শোক এবং মানববন্দনা। নারীপ্রেমের শান্তরস তাঁর কাব্যের প্রধান বিশেষত্ব। তিনি মৃতা স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করে এষা কাব্যগ্রন্থটি লিখেছিলেন। সুকুমার সেনের মতে ছন্দের চাতুর্যের দিকে বেশি ঝোঁক না থাকায় ভাবের প্রকাশ অকুন্ঠিত হয়েছে। তবে ভাবাবেগের তীব্রতায় কবি ভাষার উপর সর্বত্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে পারেন নি। কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের স্বরচিত গ্রন্থ সমূহঃ ১। প্রদীপ (১৮৮৪), ২। কনকাঞ্জলি (১৮৮৫), ৩। ভুল (১৮৮৭), ৪। শঙ্খ (১৯১০), ৫। এষা (১৯১২) ৬। চণ্ডীদাস (১৯১৭)
সম্পাদিত গ্রন্থঃ ১। রাজকৃষ্ণ রায়ের কবিতা (১৮৮৭), ২। গিরীন্দ্রমোহিনী দাসীর অশ্রুমালা (১৮৮৭)

কর্মজীবনে স্কুল ত্যাগের পর অক্ষয়কুমার দিল্লি অ্যান্ড লন্ডন ব্যাংকের হিসাব বিভাগের কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে কয়েক বছর চাকরি করার পর নর্থ ব্রিটিশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে হিসাব সহিব পদে যোগ দেন। এই পদ থেকেই তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন। ১৯১৯ সালের জুন ১৯ তারিখে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন কবি অক্ষয় কুমার বড়াল। আজ এই কবির ১০১তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের পাঠকদের জন্য তাঁর "বঙ্গভূমি" ও " শত নাগিনীর পাকে" কবিতা দু'টি সংযোজিত হলো। আশা করি পাঠকদের ভালো লাগবে।
বঙ্গভূমি
অক্ষয় কুমার বড়াল

প্রণামি তোমারে আমি, সাগর-উত্থিতে,
ষড়ৈশ্বর্যময়ী, অয়ী জননী আমার!
তোমার শ্রীপদ-রজঃ এখনো লভিতে
প্রসারিছে করপুট ক্ষুব্ ধ পারাবার |
শত শৃঙ্গ-বাহু তুলি হিমাদ্রি-শিয়রে
করিছেন আশির্বাদ স্হির নেত্রে চাহি ;
শুভ্র মেঘ-জটাজাল ছলে বায়ুভরে,
স্নেহ-অশ্রু শতধারে ঝরে বক্ষ বাহি |
জ্বলিছে কিরিট তব নিদাঘ-তপন
ছুটিতেছে দিকে-দিকে দীপ্ত রশ্মি-শিখা ;
জ্বলিয়া-জ্বলিয়া উঠে শুষ্ক কাশবন,
নদীটত-বালুকায় সুবর্ণ-কণিকা |

মূর্তিমতী হয়ে সতী, এসো ঘরে-ঘরে
রাখো ক্ষুদ্র কপর্দকে রাঙা পা দুখানি!
ধান্য-শীর্ষ স্বর্ণ-ঝাঁপি লও রাঙা করে
ভুলে যাই সর্ব দৈন্য, সর্ব দুঃখ গ্লানি!

.................................................
শত নাগিনীর পাকে
অক্ষয় কুমার বড়াল

শত নাগিনীর পাকে বাঁধ' বাহু দিয়া
পাকে পাকে ভেঙে যাক্ এ মোর শরীর !
এ রুদ্ধ পঞ্জর হ'তে হৃদয় অধীর
পড়ুক ঝাঁপায় তব সর্বাঙ্গ ব্যাপিয়া !

হেরিয়া পূর্ণিমা-শশি টুটিয়া লুটিয়া
ক্ষুভিয়া প্লাবিয়া যথা সমুদ্র অস্থির ;
বসন্তে বনান্তে যথা দুরন্ত সমীর
সারা ফুলবন দলি' নহে তৃপ্ত হিয়া |

এদেহ পাষাণ ভার কর গো অন্তর!
হৃদয়-গোমুখি-মাঝে প্রেম-ভাগীরথী,
ক্ষুদ্র অন্ধ পরিসরে ভ্রমি' নিরন্তর
হতেছে বিকৃত ক্রমে, অপবিত্র অতি |
আলোকে-পুলকে ঝরি, তুলি' কলস্বর
করুক তোমারে চির স্নিগ্ধ-শুদ্ধমতি !


নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ আপনাকে খানসাব
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

আপনার গুরুর দেখানাই কেন?
শরীর ভালোতো?

২| ২০ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:১৩

বিজন রয় বলেছেন: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের ১০১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি!

আমি ওনার বড় ভক্ত।

২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:


কবি অক্ষয়কুমার বড়ালের
বড় ভক্তকে ধন্যবাদ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

৩| ২০ শে জুন, ২০২০ সকাল ৭:১৪

বিজন রয় বলেছেন: নূরু ভাই আপনার কাছে এ পর্যন্ত কত মানুষের জীবনী জমা হলো।

আপনি তো জীবন্ত জীবনীকার!!!!

২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ আপনাকে। তবে এর জন্য অনেকের
ব্যঙ্গাত্বক বানীও হজম করতে হয়েছে !!!

৪| ২০ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: উনি কোথায় গেলেন বুঝতে পারছি না। অসুস্থ নাকি? আজকের দিনটা দেখি।

২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আতি উদ্বিঘ্ন!! উনি সবসময় ব্লগারদের
খোঁজ খবর নেন। আজ দুই দিন ওনার
কোন খবর নাই!! চিন্তার বিষয়!! আবার
জেনারেল নয়তো!! কারো এক পোস্টে
দেখেছিলাম তার দুইটি মন্তব্য মুছে
দিয়েছে শ্রদ্ধেয় মডারেটর !

৫| ২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

বিজন রয় বলেছেন: যারা লেখাপড়া করে না, যারা দেশকে, সমাজকে পিছিয়ে দিচ্ছে শুধু তারাই ব্যঙ্গাত্বক বানী দিতে পারে।
আপনি যেসব মনীষী বা বিখ্যাত মানুষের জীবনী নিয়ে পোস্ট দেন অনেকেই তো তাদের নামই জানে না।

ওসব কথায় আপনি কান দিবেন না।
নিজের কাজ নিজে করুন।

২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ দাদা পাশে থাকার জন্য।
বড়ই প্রীত হলাম আপনার উৎসাহ
ব্যাঞ্জক বানীর জন্য। আশাা করি এই
মনোভাব কখনো পরিবর্তন হবেনা।
অন্যদের মাঝেও এ্ই বোধ জাগ্রত হোক।
শুভকানা ও নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.