নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের ওপর আমার নি‘আমত সম্পূর্ণ করলাম; আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৩] তিনি এই আয়াতে আরও স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি আমাদের জন্য ইসলামকে আমাদের দীন হিসেবে পছন্দ করেছেন, তাই এই দীনের প্রতি তিনি কখনো অসন্তুষ্ট হবেন না। আর এ কারণেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কারও নিকট থেকে তিনি ইসলাম ব্যতীত কোনো কিছু গ্রহণ করবেন না। তিনি বলেন, “কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনও গ্রহণ করা হবে না এবং সে হবে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]। একজন মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কি করবে, কিভাবে করবে তার সম্পূর্ণ সুনির্দিষ্ট বিবরণ দেয়া আছে কোরআন ও সুন্নাহতে, মোট কথা ইসলামে। ইসলামের আভিধানিক অর্থ আনুগত্য, আত্মসমর্পণ, নিঃশর্ত হুকুম পালন। ইসলামের পারিভাষিক অর্থ হলো : ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের বিধান। ইসলাম মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত জীবন যাপন পদ্ধতি। ইসলাম মানুষের সামগ্রিক জীবনের শান্তি, কল্যাণ ও সাফল্যের পথ।আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেনঃ "নিশ্চয় ইসলাম হলো আল্লাহর একমাত্র মনোনীত জীবনব্যবস্থা।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত: ১৯) মূলত ইসলাম হলো মানবজাতির জন্য আল্লাহর একমাত্র মনোনীত দ্বিন। তাই আল্লাহর কাছে জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলাম ছাড়া কোনো মতাদর্শ গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ কাম্য। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদতে মগ্ন হলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুকে দ্বিন হিসেবে গ্রহণ করবে, তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না, সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫) আল্লাহ মানবজাতির কাছে ইসলামের বিধি-বিধান পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপনের জন্য প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে পাঠিয়েছেন। তাই রাসুলের সব কথা ও কাজকর্ম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তিনি মনোবৃত্তি থেকে কোনো কথা বলেন না। এটি তো তাঁর কাছে পাঠানো ওহি।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩-৪)। মুমিন নিজে যেমন সৎকর্মশীল হবে, তেমনি অন্যদেরও ভালো কাজের নির্দেশনা দেবে। নিজের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সবাইকে পর্যায়ক্রমে কল্যাণের পথের নির্দেশনা দেওয়া মুমিনের অন্যতম দায়িত্ব। আমলের ক্ষেত্রে সব মুমিন সমান সওয়াব লাভ করে। সৎকর্মের প্রতিদান দুনিয়ায় যেমন থাকবে, তেমনি আখিরাতেও এর ফল ভোগ করবে। মূলতঃ ইসলাম একটি দ্বীন ও একটি জীবনব্যবস্থা। মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘এবং আমি তোমাদের জন্য মনোনীত করলাম ইসলামকে দ্বীন হিসেবে।’ (সূরা মায়িদা :৩)আল কুরআনে দ্বীন শব্দটি ছয়টি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছেঃ (১) দ্বীন মানে প্রতিদানঃ ‘প্রতিদান দিবসের মালিক’ (সূরা ফাতিহা : ১-৪)। ‘তুমি কি তাকে দেখেছো, যে প্রতিদান (দিবসকে) অস্বীকার করে?’ (সূরা মাউন : ১)। (২) দ্বীন মানে আইনঃ ‘আল্লাহর আইন কার্যকর করার ব্যাপারে তাদের দু’জনের প্রতি যেনো তোমাদের দয়া না হয়।’ (সূরা নূর :২) (৩) দ্বীন মানে রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থাঃ ‘(ফেরাউন বললো) আমি আশঙ্কা করছি সে (মূসা) তোমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে পাল্টে দেবে অথবা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।’ (সূরা মুমিন :২৬)। (৪) দ্বীন মানে ধর্ম ও নৈতিকতাঃ (৫) দ্বীন মানে আনুগত্য এবং (৬) দ্বীন মানে জীবন যাপন ব্যবস্থা। ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর মনোনীত জীবনব্যবস্থা হলো ইসলাম (সূরা আল ইমরান :১৯) ‘আজ আমি পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের জন্য তোমাদের জীবনব্যবস্থা (সূরা আল মায়িদা : ৫:৩)। আল কুরআনের ঘোষণা অনুযায়ী ইসলাম একটি জীবন ব্যবস্থা ও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবার দেখা যাক কোন জীবনব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গ বলা যায় এবং কখন? পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার শর্তাবলি হলোঃ তাতে স্রষ্টার পরিচয় এবং সৃষ্টির উদ্দেশ্য সম্পর্কে যুক্তিসঙ্গত ও সন্তোষজনক বক্তব্য থাকতে হবে। তাতে অদৃশ্য বস্তুগুলো সম্বন্ধে জবাব থাকবে হবে। মানুষের মৃত্যুর পর কী হবে, যে বিষয়ের সঠিক, যুক্তিসঙ্গত ও সন্তোষজনক বক্তব্য থাকতে হবে। সেটি অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এবং গোপন এবং প্রকাশ্য সর্বজান্তা ও সর্বজ্ঞানীর প্রদত্ত হতে হবে। তাতে মানব জীবনের সাফল্য ও ব্যর্থতা সংক্রান্ত সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকতে হবে। তাতে মানব জীবনের সাফল্যের সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারিত থাকতে হবে এবং তা মানুষের মানসিক প্রশান্তির কারণ হতে হবে। তাতে মানব জীবনে উদ্ভূত সব সমস্যা সমাধানের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা ও মূলনীতি থাকতে হবে। সমাজ ‘সৃষ্টি যার বিধান তাঁর’ এই শাশ্বত মূলনীতির ভিত্তিতে হতে হবে। তাতে মানুষের জৈবিক, নৈতিক, আধ্যত্মিক চাহিদা পূরণের বিধি-বিধান থাকতে হবে। জীবনের সব বিভাগ পরিচালনার মূলনীতি ও নির্দেশিকা থাকতে হবে। অর্থাৎ পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আইনি, আন্তর্জাতিকসহ সব বিষয়ের মূলনীতি ও দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। তা সর্বজনীন ও সব মানুষের উপযোগী হতে হবে। তা সর্বকালীন উপযোগী হতে হবে। তা অনুশীলন ও অনুসরণ করার ও বাস্তবায়ন করার উপযোগিতার নমুনা থাকতে হবে। তাতে যুগ সমস্যার সমাধানের উপযোগী নীতিমালা থাকবে। তাতে সততা, ন্যায়নীতি, পুণ্যকর্ম, পরোপকার ও ধার্মিকতার জন্য পুরস্কার লাভের নিশ্চিত ব্যবস্থা থাকবে। তাতে অন্যায়, অপরাধ ও দুষ্কর্ম, পাপাচার ও জুলুমের জন্য উপযুক্ত শাস্তি ও দণ্ডের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেটির একজন সার্বভৌম এবং সর্বশক্তিমান অর্থরিটি থাকবে। তার সম্পূর্ণ অবিকৃত ও শাশ্বত জ্ঞানের উৎস থাকতে হবে।
পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার এ সব শর্তাবলী একমাত্র ইসলামেই রয়েছে পূর্ণমাত্রায়। বিশ্বের সব ধর্ম ও মতবাদকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে ওই মানদণ্ডে প্রত্যেকটি ধর্ম ও মতবাদে কোনো না কোনো অভাব রয়েছে। আল কুরআনে বলা হয়েছে : ‘আজ আমি পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম তোমাদের জন্য তোমাদের জীবন ব্যবস্থা। তোমাদের ওপর পূর্ণ করে দিলাম আমার নিয়ামত (আল-কুরআন) এবং তোমাদের জীবনব্যবস্থা মনোনীত করলাম ইসলামকে। (সূর আল মায়িদা : ৫:৩) যে কোনো এক বোধসম্পন্ন ব্যক্তি নির্মোহভাবে পাক কুরআন ও হাদিসসমূহ পঠিত বিশ্লেষণ করে দেখলে, অবশ্যই দেখবেন একমাত্র ইসলামেই রয়েছে : বিশ্বাসগত পূর্ণতা। অদৃশ্য বিষয় সমূহের সন্তোষজনক জবাব; জীবনের অখণ্ডতার ধারণা (ইহকালীন ও পরকালীন)। শাশ্বত নৈতিক দৃষ্টিকোণ, বৈবাহিক ও পারিবারিক জীবনের পবিত্র মূলনীতি; সামাজিক সুবিচার ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের মূলনীতি; সামগ্রিক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং রাজনৈতিক মূলনীতি; অর্থনৈতিক পূর্ণাঙ্গ ও সুষম নীতিমালা; আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতিমালা, চিরন্তন হালাল ও হারামের বিবরণ, উত্তরাধিকার বিধান; আইন ও বিচার বিধান; সমর নীতি, সত্য ও বাস্তব মানব ইতিহাস; সর্বপ্রকার বৈজ্ঞানিক তথ্য ও তত্ত্ব; মানুষের মুক্তি ও সাফল্যের পথ নির্দেশ; উদারনীতি এবং চিন্তা গবেষণা ও ইজতিহাদ করার অবকাশ; উন্নয়নের নীতিমালা। এতে দেখতে পাওয়া যায় ইসলামের বিধানগুলো সর্বজনীন ও সর্বকালীন; ইসলামেই রয়েছে যুগ জিজ্ঞাসার সমাধান; ইসলামেই রয়েছে এক অদ্বিতীয় সার্বভৌম আল্লাহতে বিশ্বাস। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়ই রয়েছে শাশ্বত মডেল- মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সা:। এসব কষ্টিপাথরের বিশ্লেষণে দেখা যাবে ইসলামই রয়েছে নির্ভুল, শাশ্বত ও অবিকৃত সোর্স অব নলেজ অর্থাৎ আল কুরআন ও সুন্নাহ। বর্তমান বিশ্বে যত ধর্মই প্রচলিত আছে তার কোনোটিই পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা নয়। ইসলাম ছাড়া সব ধর্মই কেবল কতিপয় নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উপদেশই দিয়ে থাকে। মানব জীবনের বিশাল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক, বৈজ্ঞানিক আইন ও বিচার বিভাগীয়, কৃষি ও শিল্পনীতি সম্পর্কীয় কোনো বিধানেই সেগুলোতে পাওয়া যায় না। অপরদিকে বিশ্বে যে ধর্মহীন আধুনিক মতবাদ প্রচলিত আছে সেগুলোর সবগুলোরই ভিত্তি স্রষ্টা ও ধর্মবিবর্জিত বস্তুবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তা তার প্রত্যেকেরই কোনো একটি খণ্ডিত দার্শনিক চিন্তা ভিত্তিক। মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবনকে নিয়ে সেগুলোর কোনো বক্তব্য নেই। সে হিসেবে বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্ম, ইহুদীবাদ, খ্রিষ্টবাদ কিংবা অন্যান্য ধর্ম, এ ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, হেগেলীয় ইতিহাস দর্শন, ডারউইনের বিবর্তনবাদ, মার্কসীয় কম্যুনিজম, সোস্যালিজম, ফ্রয়েডীয় যৌনবাদ এবং অন্যান্য দার্শনিক মতবাদ কোনোটাই মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা তো নেই, সাধারণ জীবনব্যবস্থা হওয়ারই যোগ্য নয়। মানুষের জীবনব্যবস্থাও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হওয়ার শর্ত ও বৈশিষ্ট্য এসবগুলো মতাবাদেই অনুপস্থিত। ফলে সব মতবাদ কালের স্রোতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অবশিষ্ট আছে শুধু ইসলাম। ইসলােমের কিছু বিধান সমূহঃ
সালাত/ নামাযের বিধানঃ সালাত/ নামায কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যাহারা রুকু করে তাহাদের সহিত রুকু কর। (সূরা বাকারা আয়াত ৪৩)। রুকু অর্থ মাথা নত করা। শরীয়তের পরিভাষায় সালাতের একটি রুকন। এই আয়াতের ফরয সালাত জামা’আতের একটি রুকন। এই আয়াতে ফরয সালাত জামাআতের সঙ্গে কায়েম। করাও নির্দেশ রয়েছে। “নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরয করা হইয়াছে। (সূরা নিসা আয়াত ১০৩)। হযরত জিবরাইল আ: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট মদীনা মুনাওয়ারার বাবে জিব্রাইল গেটের কাছে দুই দিনে ১০ বার আসেন, ফজর নামাযের শুরু সময় (আউওয়াল ওয়াক্ত ও ফজর নামাজের শেষ ওয়াক্তে আখের সময়); যোহর নামাযের শুরুর সময় ও শেষ সময়; আসর নামাযের শুরু সময়ে ও শেষ সময় মাগরিবের নামাযের শুরুর সময় ও শেষ ওয়াক্ত; এশার নামাযের শুরু ওয়াক্তে ও শেষ ওয়াক্তে , এবং ১০ বার রসুল (স) নামায পড়ার শিক্ষা দেন ও রসুল (স) কে বলেন যে, আপনার উম্মতের জন্য নামায পড়ার সর্বোত্তম সময় হলো প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্তে শুরুর সময় ও ওয়াক্ত হওয়ার মধ্যবর্তি সময় যেমন বর্তমানে ফজর নামাযে আযান হয়, ৪-৩০ মিনিট, ফজর নামাযের জামাত হয় ৫:০০, ফজরের নামাযের শেষ সময় ৫:২৫ মিনিট; কিন্তু আহলে হাদীস ভাইগণ সাধারতঃ হানাফী মাযহাবের ফরজ নামায শুরুর ১৫-২০ মিনিট আগে ফরজ নামায আদায় করেন। যেমন ফজর নামাযের জামাত বর্তমানে ৪:৪০-৪:৪৫ মিনিট এর মধ্যে জামাত শেষ করেন।
নারী ও পুরুষের নামাজের বিধানঃ পুরুষের খালি মাথায় নামায পড়া কিংবা কনুই খুলে নামায পড়া মাকরুহ। হাফশার্ট পরিহিত অবস্থায় হোক কিংবা আস্তিন গুটানো হোক সর্বাবস্থায় মাকরুহ পৃষ্ঠা-৪৩৭ তাফসীর মারেফুল কোরআন এবং মহিলাগণের মাথায় কাপড় দেওয়া প্রসঙ্গে। “(বনী আদম) প্রত্যেক সালাতের সময় তোমরা সুন্দর পরিচ্ছেদ পরিধান করিবে, আহার্য করিবে ও পান করিবে কিন্তু অপচয় করিবে না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদিগকে পছন্দ করেন না।” সূরা আরাফ: আয়াত ৩১, পারা ৮। ব্যাখ্যা: কাফিরগণ হজ্জ ও উমরার সময় উলংগ হইয়া কা’বা শরীফের তাওয়াফ করিত। বিধি মোতাবেক পোষাক পরিধান করিয়া ইবাদত করিতে এই আয়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাফসীরে মা’আরেফুল কুরআন পৃষ্ঠা-৪৩৭। ৩১নং আয়াতের ২য় মাসলা, পোষাককে জিনাত সাজ-সজ্জার মাধ্যমে ইশারা করা হয়েছে যে, নামাযে শুধু গুপ্ত অংঘ আবৃত করা ছাড়াও সাধ্য অনুযায়ী সাজ-সজ্জার পোশাক পরিধান করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিশাদভাবে বর্ণনা করেছেন যে, পুরুষের গুপ্ত অংগ নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের গুপ্ত অংগ মুখমন্ডল, হাতের তালু এবং পদযুগল বাদে সমস্ত দেহ। হাদীস সমূহে বর্ণিত রয়েছে-নাভীর নীচের অংশ অথবা হাঁটু খোলা থাকলে পুরুষের জন্য এরুপ পোশাক এমনিতেও গর্হিত এবং এতে নামায আদায় হয় না। এমনিভাবে নারীর মস্তক, ঘাড় অথবা বাহু অথবা পায়ের গোছা খোলা থাকলে এরূপ পোশাক এমনিতে নাজায়েজ এবং নামাযও আদায় হবে না। নামাযে শুধু গুপ্ত অংগ গোপন করাই কাম্য নয়, বরং সাজ সজ্জার পোশাক পরিধান করতেও বলা হয়েছে। তবে গরীব মানুষ যার শরীরে কোন কাপড় নাই ও মাথায় টুপি নাই, কেনার মত সামর্থ নাই তারা খালি শরীরে ও খালি মাথায় নামায আদায় করলে নামায মাকরুহ হবে না।
আহারের বিধানঃ নিষিদ্ধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছু অবৈধ নয়। পানাহারে সীমালংঘন বৈধ নয়। ক্ষুধা ও প্রয়োজনের চাইতে অধিক পানাহার করাও সীমালংঘনের মধ্যে গণ্য। তাই ফেকাহবিদগণ উদর পূর্তির অধিক ভক্ষণ করাকে না-জায়েয লিখেছেন।
আহকামুল- কোরআন, একটি কেতাবে দেখেছি উদর পূর্তির পর অধিক ভক্ষণ করার চেয়ে উক্ত খাদ্যকে প্রদান করা উত্তম। সূরা আল-আরাফ আয়াত নং ৩১ এর ২য় অংশের ব্যাখ্যায় বলা হয় পানাহারে মধ্য পন্থায় দ্বীন ও দুনিয়ার জন্য উপকারী (পৃষ্ঠা ৪৩৮)। হযরত ওমর (রাঃ) বলেন বেশী পানাহার থেকে বিরত থাক। কারণ অধিক পানাহার দেহকে নষ্ট করে, রোগের জন্ম দেয় এবং কর্মে অলসতা সৃষ্টি কতা’য়ালা স্থল দেহী আলেমকে পছন্দ করেন না। তিনি আরও বলেন: মানুষ ততক্ষণ ধ্বংস হয় না, যতক্ষণ না সে মানসিক প্রবৃত্তিকে ধর্মের উপর অগ্রাধিকার প্রদান করে। (রুহুল-মা’আনী)। হযরত বায়হাকী বর্ণনা করে, একবার রসূলুল্লাহ (স) হযরত আয়েশা (রাঃ) কে দিনে দু’বার খেতে দেখে বললেন: হে আয়েশা, তুমি কি পছন্দ কর যে, আহার করাই তোমার একমাত্র কাজ হোক? এই ৩১ নং আয়াতে পানাহার সম্পর্কে যে মধ্যবর্তিতার নির্দেশ হয়েছে, তা শুধু পানাহারের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নহে, বরং পরিধান ও বসবাসের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মধ্যপন্থা পছন্দনীয় ও কাম্য। হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন: যা ইচ্ছা পানাহার কর এবং যা ইচ্ছা পরিধান কর। তবে শুধু দু’টি বিষয় থেকে বেঁচে রে। পানাহারের মধ্য পন্থা অবলম্বন কর। এটা দৈহিক সুস্থতার জন্য উপকারী এবং অপচয় থেকে দূরে রাখে। তিনি আরও বলেন: আল্লাহ থাক। (এক) তাতে অপব্যয় অর্থাৎ প্রয়োজনের চেয়ে বেশী না হওয়া চাই। এবং (দুই) গর্ব ও অহংকার না থাকা চাই। আজকাল বিয়ে সাদির অনুষ্ঠানে প্রয়োজনের চেয়ে অধিক খাদ্য ও মাংস চাপিয়ে দেওয় হয় যা খাওয়া সম্ভব হয় না এবং প্লেট মুছে ও হাত মুছে খাওয়ার সুন্নাতও বেশীর ক্ষেত্রে আদায় করা সম্ভব হয় না। বিয়ে সাদিতে অনেক খাবার অপচয় হয় যা সুন্নতের আমলের পরিপন্থি, যা আমাদের সকলেরই বর্জন করা উচিত ও যতটুকু খাওয়া যায় ততটুকু সরবরাহ করা উচিৎ যাতে বরকত হয়। ৩১নং আয়াতের শেষে ৮টি মাসআলা উদ্ভব হয়। (এক) যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পানাহার করা ফরয। (দুই) শরীয়তের কোন প্রমাণ দ্বারা কোন বস্তুর অবৈধতা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সব বস্তুই হালাল। (তিন) আল্লাহ তায়ালা ও রাসুল (স) কর্তৃক নিষিদ্ধ বস্তু সমূহ ব্যবহার করা অপব্যয় ও অবৈধ। (চার) যে সব বস্তু আল্লাহ তা’য়ালা হালাল করেছেন, সেগুলোকে হারাম মনে করাও অপব্যয় ও মহাপাপ। (পাঁচ) পেট ভরে খাওয়ার পরও আহার করা নাজায়েয। (ছয়) এতটুকু কম খাওয়া অবৈধ যদ্দরুন দুর্বল হয়ে ফরয কর্ম সম্পাদন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। (সাত) সর্বদা পানাহারের চিন্তায় মগ্ন থাকাও অপব্যয়। (আট) মনে কিছু চাইলেই তা অবশ্যই খাওয়া অপব্যয়। উৎকৃষ্ট পোশাক সুস্বাদু খাদ্য বর্জন করা ইসলামের শিক্ষা নয়; সে সব লোক দন্তনীয় যারা আল্লাহর হালালকৃত উৎকৃষ্ট অথবা পবিত্র ও সুস্বাদু খাদ্য কে হারাম মনে করে। সংগতি থাকা সত্তে্বও জীর্ণাবস্থায় থাকাও ইসলামের শিক্ষা নয় এবং ইসলামের দৃষ্টিতে পছন্দনীয়ও নয়। যেমন অনেক অজ্ঞ লোক মনে করে (পৃষ্ঠা ৪৩৮-৪৩৯) তাফসীর মা’আরেফুল কোরআন)
সালাত/ নামাযের বিধানঃ সালাত/ নামায কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যাহারা রুকু করে তাহাদের সহিত রুকু কর। (সূরা বাকারা আয়াত ৪৩)। রুকু অর্থ মাথা নত করা। শরীয়তের পরিভাষায় সালাতের একটি রুকন। এই আয়াতের ফরয সালাত জামা’আতের একটি রুকন। এই আয়াতে ফরয সালাত জামাআতের সঙ্গে কায়েম। করাও নির্দেশ রয়েছে। “নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফরয করা হইয়াছে। (সূরা নিসা আয়াত ১০৩)। হযরত জিবরাইল আ: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট মদীনা মুনাওয়ারার বাবে জিব্রাইল গেটের কাছে দুই দিনে ১০ বার আসেন, ফজর নামাযের শুরু সময় (আউওয়াল ওয়াক্ত ও ফজর নামাজের শেষ ওয়াক্তে আখের সময়); যোহর নামাযের শুরুর সময় ও শেষ সময়; আসর নামাযের শুরু সময়ে ও শেষ সময় মাগরিবের নামাযের শুরুর সময় ও শেষ ওয়াক্ত; এশার নামাযের শুরু ওয়াক্তে ও শেষ ওয়াক্তে , এবং ১০ বার রসুল (স) নামায পড়ার শিক্ষা দেন ও রসুল (স) কে বলেন যে, আপনার উম্মতের জন্য নামায পড়ার সর্বোত্তম সময় হলো প্রত্যেক নামাযের ওয়াক্তে শুরুর সময় ও ওয়াক্ত হওয়ার মধ্যবর্তি সময় যেমন বর্তমানে ফজর নামাযে আযান হয়, ৪-৩০ মিনিট, ফজর নামাযের জামাত হয় ৫:০০, ফজরের নামাযের শেষ সময় ৫:২৫ মিনিট; কিন্তু আহলে হাদীস ভাইগণ সাধারতঃ হানাফী মাযহাবের ফরজ নামায শুরুর ১৫-২০ মিনিট আগে ফরজ নামায আদায় করেন। যেমন ফজর নামাযের জামাত বর্তমানে ৪:৪০-৪:৪৫ মিনিট এর মধ্যে জামাত শেষ করেন।
অমুসলিম ও অনুগত নাগরিকের প্রতি ইসলামের বিধানঃ
অসলিম ও অনুগত নাগরিকের প্রতি কোন অত্যাচার করবে না। অতিরিক্ত কর ধার্য নহে, অনুগত অমুসলিমদের মত ও তুষ্টি ছাড়া তা কোন জিনিস হস্তগত করলে রাসুলুল্লাহ (স) নিজে বাদী হয়ে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে মামলা-নালিশ দিবেন। (মেশকাত শরীফ) কোন অমুসলিম নাগরিককে কোন মুসলমান হত্যা করলে হত্যাকারী বেহেশতের গন্ধও পাবে না (হলি বারী শরীফ পৃ: ৩৫৪)। নিরাশ্রয়, অসহায়, এতিম, বিধবা ও নিঃস্বদের প্রতিপালন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। মূলত : একমাত্র ইসলামই মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। মানুষের জীবনব্যবস্থা এবং পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হওয়ার সব শর্ত ও বৈশিষ্ট্য কেবল ইসলামেই রয়েছে। তাই দীর্ঘ ১৪০০ বছর ধরে কুরআন-সুন্নাহ অবিকৃত রয়েছে। ষষ্ঠ শতাব্দীর গোড়ার দিকে প্রবর্তিত হওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিশাল ভূখণ্ড ও বিশাল জনগোষ্ঠী ইসলামকে তাদের পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং আজো গ্রহণ করছে।
অসুস্হতা ও ওষুধের বিধনঃ
আধুনিক যুগে আরাম-আয়েশ ও রোগমুক্তির উপায়-উপকরণের প্রাচুর্য সত্ত্বেও আমরা রোগব্যাধিকে হার মানাতে পারছি না। একজন মুসলমান হিসেবে আমরা যদি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান পবিত্র কোরআন এর দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে বলেছেন, আমি কোরআনে এমন বস্তু নাজিল করেছি, যা মুমিনদের জন্য নিরাময় ও রহমত। (সুরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ৮২) তাহলে প্রশ্ন হলো আমরা কি রহমত-বরকত অন্বেষণ করছি! হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে যারা পবিত্র কোরআন এর পথে চলছে, তারা কি অসুস্থ হবে না? আমরা সুস্থ থাকার জন্য কত কিছুই না করি! যারা কখনো অসুস্থ হননা তারা হয়তো অবাক হবেন; কেননা প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) বলেছেন, দোজখি লোক দেখার যাদের ইচ্ছা থাকে, তাদের বলো, যার কোনো দিন রোগ হয়নি তাকে যেন দেখে। অর্থাৎ অসুস্থতাও আমাদের জন্য বিশাল এক নিয়ামত। এখন যদি বলি অসুস্থতা-সুস্থতা দু’টিই আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাহলে আমরা অযথা ওষুধ খাচ্ছি কেন? ওষুধের কি কোনো ক্ষমতা নেই! হযরত মুসা (আ.) এক বার পীড়িত হয়েছিলেন। ইসরাইল বংশীয় অভিজ্ঞ লোকেরা বলেছিল, অমুক দ্রব্য এ রোগের ওষুধ, আপনি তাহা ব্যবহার করেন। তিনি বলেছিলেন, আমি ওষুধ সেবন করবো না, স্বয়ং আল্লাহ আমাকে আরোগ্য করবেন। তার রোগ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে লাগলো। তিনি কিছুতেই ওষুধ সেবনে সম্মত হলেন না, পীড়াও দূর হলোনা। ইতোমধ্যে ‘ওহী’ নাজিল হলো, হে মুসা! আমি নিজের গৌরবের শপথ করে বলছি, তুমি যতোদিন ওষুধ সেবন না করবে, আমি ততোদিন কিছুতেই তোমাকে আরোগ্য করবো না। অতঃপর তিনি ওষুধ সেবন করে স্বাস্থ্য পুনঃপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। হাদিস শরিফে আছে, হযরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, হে আল্লাহ! রোগ কি কারণে আর আরোগ্যই বা কি কারণে ঘটে? উত্তর এসেছিল, ‘উভয়ই আমার আদেশে ঘটে’। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, চিকিৎসক তবে কোন কাজের জন্য হয়েছে? উত্তর এলো, কতগুলো লোক চিকিৎসা কার্যে, ওষুধের উপলক্ষে জীবিকা পাবে এবং আমার বান্দাদের প্রফুল্ল রাখবে এ উদ্দেশে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষের উচিত, যিনি ওষুধ সৃষ্টি করেছেন তার প্রতি যেন ভরসা করে, ওষুধের ওপর যেন কিছুমাত্র ভরসা না করে, কেননা বহুলোক ওষুধ সেবন করেও মারা যাচ্ছে। (সৌভাগ্যের পরশমনি, ইমাম গাযযালী (র.)। আল্লাহ তাআলা যে বান্দার মঙ্গলের জন্য রোগ দেন এই কথাটাই আমরা মানতে নারজ বরং একটু অসুস্থ হলেই আমরা দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে দেই। মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে একটি রাত অতিবাহিত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে সদ্যজাত শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ করে দেবেন। সুতরাং রোগমুক্তির জন্য ব্যস্ত হয়ে যাওয়া ঠিক নয়। প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর কাছে কোনো এক সাহাবি তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ দিলে তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিনও এসে আবার সাহাবি বললেন, অসুখ আগের মতো বহাল রয়েছে। তিনি আবারো একই পরামর্শ দিলেন। তৃতীয় দিনও যখন সংবাদ এলো যে, অসুখের কোনো পার্থক্য হয়নি, তখন তিনি বললেন, আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য, ওষুধের কোনো দোষ নেই। রোগীর বিশেষ মেজাজের কারণে ওষুধ দ্রুত কাজ করেনি। এরপর রোগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে ওঠে। (তফসীর মা’আরেফুল কুরআন, পৃষ্ঠা-৭৪৭) বান্দার মেজাজ বা ধারণার ওপর আল্লাহ তাআলার ফয়সালা নির্ভর করে থাকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে বলেছেন, মৌমাছির পেট থেকে রঙ-বেরঙের পানীয় নির্গত হয়, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সুরা আন-নাহল, আয়াত ৬৯) আল্লাহ তাআলা যে জীবন বিধান দিয়েছেন তাই মানুষের সমগ্র জীবনের সর্বদিকের ওষুধ। রোগ নিরাময়ের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত চিকিৎসক, রোগ নির্ণয়, সঠিক ওষুধ এবং সঠিক সেবনবিধি। এ চারটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে রোগের চিকিৎসা। আল্লাহ তাআলা রোগ সৃষ্টি করেছেন, তার জন্য ওষুধও সৃষ্টি করেছেন। (বুখারি) সবশেষে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত মহানবী (সা.) এর একটি উক্তির মাধ্যমে লেখা শেষ করবো তা হলো, তোমরা দু’টি শেফাদানকারী বস্তুকে নিজেদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে নাও, একটি মধু (আহার্যের মধ্যে) এবং অপরটি আল কুরআন (কিতাবসমূহের মধ্যে) (মিশকাত শরীফ)।
তাই দেখা যায় জীবনের প্রতিটি বিভাগের জন্য ইসলাম প্রদত্ত মূলনীতি আজো ঠিক সে রকমই অভ্রান্ত এবং অনন্য, যেমনটা ছিল এর প্রথম যুগে। ইসলামের মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হওয়ার কারণে মুসলিম জাতির অধঃপতনের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশ্বের যে কোনো ধর্ম, বর্ণ ও জাতি গোষ্ঠীর লোকেরাই ইসলামকে তাদের জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে, তারা অবশ্যই বিশ্বের সেরা, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বসুন্দর মানব দলে পরিণত হবে। ইসলামের প্রথম দিকের হাজার বছরের ইতিহাস এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের বিধানগুলো মেনে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১১ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সমস্তটাই আছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আপনি প্রশ্ন করুন কোন বিষয়ে জানতে চান
আমি আমার সাধ্যমতো জবাব দেবার চেষ্টা করবো
আল্লাহ তৌফিক দান করলে।
২| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: বর্তমান দুনিয়াত কেউ কোরআন এবং হাদীসের নিয়ম অনুয়াযী চলছে না। তাতে দুনিয়ার কাজকর্ম কিছুই থেমে নেই।
গত সপ্তাহ আমি শুধু ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি আশাহত হয়েছি।
১১ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মানুষ যদি আল্রাহর হুকুক আহকাম না মেনে চলে
তাতে আল্লহর কোন ক্ষতি নাই এবং লাভও নাই।
মানুষ তার আদেশ নির্দেশ মানবে তার নিজের
জন্য। দুনিয়ার কাজকর্ম ততদিন চলবে যতদিন
আল্লাহ চা্ইব্নে তবে একদিন ঠিকই থেমে যাবে
সব যদি আমরা তা বিশ্বাস করি।
৩| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২১
কৃষিজীবী বলেছেন: সুন্দর উপস্থাপনা, জাযাকাল্লাহ খাইরান
১১ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৫১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ কৃষিজীবী। বেশ কয়েদিন
বিভিন্ন লেখায় আপনার জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য
আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আপনাকে
ধন্যবাদ।
৪| ১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৩:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তরে যা লিখেছেন- মন ভরলো না। বড্ড দুর্বল উত্তর দিয়েছেন।
১২ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এত এত নিয়ামত দেবার পরেও আল্লাহ তার বান্দাদের
খুশি করতে পারেন না। আমিতো তারই এক নগন্য গোলাম।
আমার পক্ষে কি করে সম্ভব তার বান্দাকে খুশি করা।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
একজন পরিবার প্রধানের 'পুনাংগ জীবন বিধান' কি হওয়া উচিত, কোরানে কতটুকু আছে?