নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশিষ্ট কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ১০৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৪৯


বাংলা সাহিত্যের পঞ্চকবির অন্যতম বিশিষ্ট বাঙালি কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। সুরকার, কবি ও নাট্যকার হিসেবে দ্বিজেন্দ্রলাল বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করেছেন। ডি. এল. রায় নামে যিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিখ্যাত গানঃ ধনধান্যে পুষ্পে ভর, বঙ্গ আমার!, জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ, ইত্যাদি আজও সমান জনপ্রিয়। তিনি প্রায় ৫০০ গান রচনা করেন। এই গানগুলি বাংলা সংগীত জগতে দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত। এ ছাড়াও তিনি অনেকগুলি নাটক রচনা করেন। তাঁর নাটকগুলি চার শ্রেণীতে বিন্যস্ত - প্রহসন, কাব্যনাট্য, ঐতিহাসিক নাটক ও সামাজিক নাটক। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত নাটকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একঘরে, কল্কি-অবতার, বিরহ, সীতা, তারাবাঈ, দুর্গাদাস, রাণা প্রতাপসিংহ, মেবার-পতন, নূরজাহান, সাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, সিংহল-বিজয় ইত্যাদি। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে জীবদ্দশায় প্রকাশিত আর্যগাথা (১ম ও ২য় ভাগ) ও মন্দ্র বিখ্যাত। ১৯১৩ সালের আজকের দিনে মৃত্যুবরণ করেন এই গুণী শিল্পী। কালজয়ী কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের আজ ১০৭তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

(স্বামী বিবেকান্দ রোডে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বসত বাড়ি)
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্ম ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। তাঁর পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজবংশের দেওয়ান এবং তাঁর মা প্রসন্নময়ী দেবী ছিলেন অদ্বৈত আচার্যের বংশধর। বাল্যকালে একটি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে লালিত হয়েছিলেন দ্বিজেন্দলাল রায়। পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র ছিলেন একজন বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ, খেয়াল গায়ক ও সাহিত্যিক। দ্বিজেন্দ্রলালের দুই অগ্রজ জ্ঞানেন্দ্রলাল রায় ও হরেন্দ্রলাল রায় - দু'জনেই ছিলেন লেখক ও পত্রিকা সম্পাদক এবং এক বৌদি মোহিনী দেবীও ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যস্রষ্টা। তাঁর বাড়িতে বহু গুণীজনের সমাবেশ হত। গৃহে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, দীনবন্ধু মিত্র প্রমুখের যাতায়াত ছিল। এই বিদগ্ধ পরিবেশ বালক দ্বিজেন্দ্রলালের প্রতিভার বিকাশে বিশেষ সহায়ক হয়। কৈশোরেই তিনি কবিতা রচনা শুরু করেন।

দ্বিজেন্দ্রলাল ১৮৭৮-এ প্রবেশিকা পরীক্ষায় বৃত্তি লাভ করেন। এফ. এ. পাস করেন কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে। পরে হুগলি কলেজ থেকে বি.এ. এবং ১৮৮৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে এম.এ. পাস করেন। এরপর কিছুদিন ছাপরা'র রেভেলগঞ্জ মুখার্জ্জি সেমিনারীতে শিক্ষকতা করার পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ড যান কৃষিবিদ্যা শিক্ষা করার জন্য। রয়্যাল এগ্রিকালচারাল কলেজ ও এগ্রিকালচারাল সোসাইটি হতে কৃষিবিদ্যায় FRAS এবং MRAC ও MRAS ডিগ্রি অর্জন করেন। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ১৮৮৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর একমাত্র ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ Lyrics of Ind। এই বছরই দেশে প্রত্যাবর্তন করে সরকারি কর্মে নিযুক্ত হন দ্বিজেন্দ্রলাল। ভারতবর্ষে ফিরে তিনি জরিপ ও কর মূল্যায়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন, এবং মধ্যপ্রদেশে সরকারী দপ্তরে যোগ দেন। পরে তিনি দিনাজপুরে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পান। কিন্তু তিন বছর বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে প্রায়শ্চিত্ত করতে অসম্মত হলে তাঁকে নানা সামাজিক উৎপীড়ন সহ্য করতে হয়।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন, যা 'দ্বিজেন্দ্রগীতি' নামে পরিচিত। ১৯০৫ সালে তিনি কলকাতায় পূর্নিমা সম্মেলন নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৩ সালে তিনি ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে আর্যগাথা (১ম ও ২য় ভাগ) ও মন্দ্র বিখ্যাত। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত নাটকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একঘরে, কল্কি-অবতার, বিরহ, সীতা, তারাবাঈ, দুর্গাদাস, রাণা প্রতাপসিংহ, মেবার পতন, নূরজাহান, সাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, সিংহল-বিজয় ইত্যাদি। দ্বিজেন্দ্রলালের সাহিত্যে তাঁর দেশপ্রেমের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো ছাড়া তিনি সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধাদিও রচনা করেছেন। তাঁর সাহিত্য সম্পর্কিত প্রবন্ধাবলীর মধ্যে একটি বিশিষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়- ‘কালিদাস ও ভবভূতি’ গ্রন্থটি। হাস্যরসেও তিনি অসামান্য পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন। কৌতুক বিদ্রূপ সৃষ্টি, কাব্য ও নাটক রচনায় বাংলা সাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলালের অবদান চিরস্মরণীয়।

১৮৮৭ সালে প্রখ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক প্রতাপচন্দ্র মজুমদারের কন্যা সুরবালা দেবীকে বিবাহ করেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। ১৮৯০ সালে বর্ধমান এস্টেটের সুজামুতা পরগনায় সেটেলমেন্ট অফিসার হিসাবে কর্মরত অবস্থায় কৃষকদের অধিকার বিষয়ে তাঁর সাথে বাংলার ইংরেজ গভর্নরের বিবাদ ঘটে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ১৯১৩ সালে সরকারী চাকরী হতে অবসর নেন এবং সে বছরই ১৭ই মে তারিখে কলকাতায় দ্বিজেন্দ্রলালের জীবনাবসান ঘটে। আজ তার ১০৭তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।

১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গভীর রাতে কবিকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ খানসাব। সব কুশলতো!!

২| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:১৯

আল-ইকরাম বলেছেন: বেশ লিখেছেন। পড়ে অনেক বিষয়ে জ্ঞাত হলাম। শুভেচ্ছা অগনিত।

১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধনবাদ আল-ইকরাম
লেখাটি মনোযোগ সহকারে
পাঠ করার জন্য।

৩| ১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


একদা নন্দ করিল ভীষন পণ ...

১৭ ই মে, ২০২০ রাত ১:৫২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি ঠিক ধরেছেন!!
ছাত্র খারাপ না
দশে আট!!
কারন ভুল আছে পংক্তিতে

নন্দলাল তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ-
স্বদেশের তরে, যা করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।
সকলে বলিল, 'আ-হা-হা কর কি, কর কি, নন্দলাল' ?
নন্দ বলিল, 'বসিয়া বসিয়া রহিব কি চিরকাল ?
আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই দেশ ?'
তখন সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা বাহবা বেশ !'

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.