নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

১১ মে, আজ ঐতিহাসিক কুরআন দিবস

১১ ই মে, ২০২০ সকাল ১১:৫৮


ঐতিহাসিক কুরআন দিবস আজ। প্রতিবছর ১১ মে এটি পালিত হয়ে থাকে। ১৯৮৫ সালের ১১ মে কুরআনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে সংঘটিত হয় এক পৈশাচিক, নারকীয় হত্যাকান্ড। ১৯৮৫ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আটজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দিনটিকে স্মরণে রাখার জন্য সেই থেকে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। ঘটনার সূত্রপাত ভারতে ১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল। এদিন ভারতের দুইজন উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদী নাগরিক পদ্মপল চোপরা ও শীতল সিং কোরআনের সকল আরবি কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি রীট আবেদন করে। রীটে বলা হয়, কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে যেখানে কাফির ও মুশরিকদের হত্যা এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেরণা দেয়া হয়েছে, তারা কুরআনে উল্লেখিত সূরা বাকারার ১৯১নং আয়াত ও সূরা তওবার ৩১ নং আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে মামলা দায়ের করেছিল। কোরআন যেহেতু কাফের মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা, তাদের হত্যা করার কথা বলেছে সেহেতু কুরআন একটি সাম্প্রদায়িক উস্কানী দাতা গ্রন্থ
এবং এই গ্রন্থ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্ম দিতে পারে। তাই একে বাজেয়াপ্ত করার দাবি তুলে মামলা দায়ের করে। ভারতীয় সংবিধানের ২২৩ নং ধারা সি আর পিসি ১১৫(ক) ও ২৯৫ (ক) উদ্ধৃতি দিয়ে তারা আল কোরআনকে ভারতীয় সংবিধান বিরোধী বলে উল্লেখ করে। বিচারপতি মিসেস পদ্মা খাস্তগীর মামলা গ্রহণ করেন। তিনি ১২ই এপ্রিল এ বিষয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় গোটা ভারতে মুসলমানদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশ এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

কুরআনকে বাজেয়াপ্ত করার মামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কলকাতাসহ সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। ১০ মে জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে হাজার হাজার ইসলামী ছাত্র-জনতার মিছিল ও সমাবেশে মিলিত হলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সারাদেশের মত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজন করা হয় এক প্রতিবাদ সমাবেশ। ১১ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। এদিন্ ইসলামী জনতা শুধুমাত্র দোয়া করার অনুমতি চাইলে তা না দিয়ে জনতার উপর গুলী বর্ষণ করে পুলিশ। এতে স্কুল ছাত্র, কৃষক, রিক্সাওয়ালা ও রেল শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ জন শাহাদাত বরণ করেন। ঘটনার দিন বেলা ১১ টার সময় সমাবেশের আহবায়ক মাওলানা হোসাইন আহমদকে এসপি অফিসে ডেকে সমাবেশ বন্ধ করার জন্য চাপ দেয়া হয়। কিন্তু ইসলামী জনতা দলে দলে আসতে থাকে ঈদগাহ ময়দানের দিকে। উপায় না দেখে ঈদগাহ ময়দানে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। শুধুমাত্র দোয়া করে জনতাকে শান্ত করে চলে যাবো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সেই আবেদনও শুনেনি ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা। এসময় ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা সেই সুযোগ দেয়া হবে না বলে গালিগালাজ করতে থাকে, ব্যাটা মৌলবাদীদের দেখে নেবো বলেও প্রকাশ্য হুমকি দেয়। এসময় ইসলামী জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়লে ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লার নির্দেশে এলোপাতাড়ি গুলী বর্ষণ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের গুলীতে প্রথমেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র শিবির কর্মী আব্দুল মতিন। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় শীষ মোহাম্মদ, রশিদুল হক, ৮ম শ্রেণীর ছাত্র সেলিম, সাহাবুদ্দীন, কৃষক আলতাফুর রহমান সবুর, রিক্সা চালক মোক্তার হোসেন ও রেল শ্রমিক নজরুল ইসলাম শহীদ হন। আহত হয় অর্ধ শতাধিক মানুষ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাসপাতালে তিল ধারণের ঠাঁই না থাকায় আহতদের চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে পাঠানো হয়। ন্যক্কারজনকভাবে রাজশাহী নেয়ার পথেও আহতদের ওপর পুনরায় আক্রমণ চালানো হয়। বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয়। নতুন করে পুলিশি নির্যাতনের পাশাপাশি মামলা দায়ের করা হয়। কুরআনের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যেখানে সকল মুসলমানের কর্তব্য সেখানে ইসলামী জনতার উপর গুলী বর্ষণ করে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় রচনা করেছিল বাংলাদেশের কিছু মুসলমান নামধারী পুলিশ। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের নিদের্শদাতা ম্যাজিষ্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। বর্বরোচিত এই হত্যাকান্ডের বিচারতো হয়ইনি, বরং উল্টো হয়রানি করা হয়েছিল মুসলিম জনতাকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী পরদিন ১২ মে সকল বাধা উপেক্ষা করে কারফিউ ভেঙে জুমার নামাজের পর নৃশংস হত্যা বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করতে রাজপথে নেমে আসে । এ দিকে সারা বাংলাদেশে এমন নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানানো হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এমন ঘটনা সারা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৩ মে প্রশাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কুরআনপ্রেমিক মানুষ। মুসলমানরা বিশ্বব্যাপী এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের প্রতিবাদে ফেটে পড়লে ভারত সরকার তটস্থ হয়ে হাইকোর্ট রায়টি প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলে ১৩ মে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি বিসি বাসকের আদালতে স্থানান্তরিত করে এটি খারিজ করে দেয়া হয়। মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআন বাজেয়াপ্ত করার সাধ্য দুনিয়ার কারো নেই। কারণ পবিত্র এ গ্রন্থে আল্লাহ নিজেই হেফাজতকারী। হযরত মুহাম্মদ (সা) এর পূর্বে যে সকল নবী ও রাসূলের কাছে ওহি নাজিল করা হয়েছিল পরবর্তী অনুসারীরা নিজেদের স্বার্থ ও পছন্দ মাফিক তা কাটছাঁট করে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু কুরআন নাজিলের পর এর পরিবর্তনের জন্য ইসলামবিদ্বেষী চক্র যারপরনাই চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি। ১৪ শ’ বছর পর্যন্ত চেষ্টা করেও এর কোনো কিনারা তারা করতে পারেনি। আল্লাহ তা’য়ালা এ প্রসঙ্গে বলেন, “উহারা কি দাবি করে যে কুরআন (আপনার) বানানো? তোমরা যদি তোমাদের দাবিতে সত্যবাদী হও তাহলে একটি সূরা অন্তত তৈরি করে নিয়ে এসো। আর এ ব্যাপারে আল্লাহ ব্যতীত যাদের প্রয়োজন বোধ কর, সাধ্যমত তাদেরকেও ডেকে আন।” (সূরা ইউনুস : ৩৮) তিনি পবিত্র কোরআনে আরও বলেনঃ “আপনি ঘোষণা করে দিন, জগতের সমগ্র মানব ও জিন জাতি মিলেও যদি এ ধরনের একখানা কুরআন তৈরির চেষ্টা করে, তাহলেও তা পারবে না, যদিওবা তারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে।” (সূরা বনি ইসরাইল : ৩৮) ওই ঘ্টনর ৩৫ বছর পার হলেও আজ এ ঘটনার কোন বিচার হয়নি।মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। যদিও জাল প্রমাণপত্র দাখিলের দায়ে তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হয়। শহীদের রক্তে যারা হলি খেলে আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল তাদের বিচার যদি এই দুনিয়ার আদালতে না হয় তদের বিচার আখেরাতের আদালতে হবে এই ভেবে নিজেদের শান্তনা খুঁজে শহীদের স্বজনেরা। এ দিনটিকে স্মরণ করতে প্রতি বছর ‘কোরআন দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: দুনিয়াতে কত যে দিবস??
এক সময় দেখা যাবে ৩৬৫ দিনে ৭০০ দিব পালন করা হচ্ছে। একদিনে তিনটা দিবসও পালন হবে।
এত এত দিবস।
এইসব দিবস পালন করে লাভ টা কি? একদিনের জন্য কনফারে্নস, মিটিং মিছিল আর মানব বন্দন।

১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বারো মাসে তের পার্বণের মতো
দিবসেরও শেষ নাই। তবে বিশেষ
কতগুলো দিবস আমাদের পালন
করতেই হয়।

২| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৪৭

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: ভালো এট্টা দিবস

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দিনটা ভালো নয়
এটি একটি পৈশাচিক হত্যাাণ্ডের দিন।
তবে এ দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে
পালিত হয় কোরআ্ন দিবস।

৩| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৫৭

আল-ইকরাম বলেছেন: মোবারকবাদ আপনাকে। আল্লাহ্ রব্বুল ইজ্জত আমাদের সকলকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে পরিচালিত করুন। আল-কুরআন পড়তে, বুঝতে ও এর অতি মূল্যবান বাণী গুলোকে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের পাথেয় হিসেবে কাজে লাগিয়ে ইহকাল ও পরকালে আমরা সফল কাম যেন হতে পারি মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে সেই সুযোগ দান করুন।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: পবিত্র করোনান হেফাজতকারী স্বয়ং আল্লাহ
চৌদ্দশ’ বছর অতিক্রান্ত হলেও আজ পর্যন্ত কোরআনের
একটি বিন্দু-বিসর্গ পর্যন্ত কেউ পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতে
পারেনি। আর পারবেও না। কারণ এই কোরআন সংরক্ষণের
দায়িত্ব নিয়েছেন আল্লাহ্ তা’লা নিজে । তিনি বলেন:
আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ’ নাজিল করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক (সূরা আল-হিজর-৯)

৪| ১১ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:৪৬

কল্পদ্রুম বলেছেন: ভাই,এইসব "দিবস" আবিষ্কার করে নেওয়া কি ইসলাম সম্মত?নবীজী কি কোন শহীদ,যুদ্ধ বা অন্য কোন কারণে কোন বিশেষ দিবস পালন করেছেন বা পালন করার উপদেশ দিয়েছেন?

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ইসলামেও বহু দিবস আছে। কোরআন পাকে আল্লাহ বেলেনঃ
আর তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিবসসমূহকে স্মরণ করিয়ে দিন।
নিশ্চয়ই উক্ত দিবসসমূহের মধ্যে প্রত্যেক ধৈর্যশীল-শোকরগোযার বান্দাদের
জন্যে নিদর্শনাবলী (নিয়ামত) রয়েছে।”
[সূরা ইবরাহীম শরীফ, আয়াত শরীফ: ৫]
১। ১০ই মুহররম পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররাম শরীফ।
২। ছফর মাসেরশেষ বুধবার: পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ।
৩। ১২ রবিউল আউয়াল হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জন্ম ও ওফাত দিবস
৪। ১১ই রবীউছ ছানী শরীফ: পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম শরীফ।
৫। ২৭শে রজব শরীফ: পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার মহিমান্বিত রাত্রি।
৬। ২৭শে রমাদ্বান শরীফ: দোয়া কবুলের বিশেষ রাত্রি (পবিত্র শবে ক্বদর শরীফ)।
৭। ৯ই যিলহজ্জ শরীফ: পবিত্র ইয়াওমুল আরাফা শরীফ।
এছাড়াও আল কুদস দিবস ইত্যাদি

৫| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:১৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
একটা ভিন্ন দেশে এক পাগলের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে নিজ দেশে হাংগামা উম্মাদনা হানাহানি করে ৮ জনের জীবনহানি কোন ভাল উদাহরন হতে পারে না। আবার ইহা নিয়া "দিবস" আবিষ্কার করে নেওয়া আরেক পাগলামি।
আর ইসলামি দিবসই যদি করেন তাহলে আরবী মাস থুয়ে ইংরেজি মাস ১১ মে কেন?

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কালবৈশাখী ভাই আমরা অনেক দিবসই পালন করি। যেগুলো তুচ্ছ ঘটনা নয়। নূর হোসেন দিবস, ডাঃ মিলন দিবস, ফেলানী দিবস এগুলো পাগলামী নয়। এগুলো আবেগ,ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার দিবস। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের দেশের ঘটনা তা নিয়ে বিশ্বে কেন মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়?
আমাদের প্রিয় নবীর জন্ম সাল ৫৭০ খ্রিষ্টাদ ব্যবহার করা হয়। আটই ফাল্গুন যেমন একুশে ফেব্রুরীতে পালিত হয়।

৬| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫

অদ্বিত বলেছেন: পুলিশ গুলি চালিয়ে অন্যায় করছে, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল - আল্লা যদি নিজেই কোরানের হেফাজত করে তাহলে কোরান অবমাননার প্রতিবাদ করা কেন ? কোরানের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব তো আল্লাহর। তাই না ?
কোরানের মত সূরা তৈরি করার চ্যালেঞ্জটা হাস্যকর। এরকম দাবী যে কেউ করতে পারে। কবি নজরুল যদি দাবী করে, "পারলে আমার মত একটা কবিতা লিখে দেখাও।" কেউ পারবে না নজরুলের মত কবিতা লিখতে । হুমায়ূন আহমেদ যদি দাবী করে, "পারলে আমার মত উপন্যাস লিখে দেখাও।" কেউ পারবে না উনার মত লিখতে। এটা ব্যর্থতা নয়। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। একজন মা্নুষ কখনো আরেকজন মানুষের মত লিখতে পারবে না। প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মত লিখবে, এটা স্বকীয়তা।
কোরান বাজেয়াপ্ত করার প্রয়োজনই নাই। সময়ের সাথে সাথে এমনিতেই সব ধর্ম আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
হত্যা করাটা ঠিক হয়নি। কোন পরিস্থিতিতেই 144 ধারা জারি করা ঠিক নয়। আইন যত কঠোর হবে, মানুষ তত বেশী চ্যালেঞ্জ feel করবে সেটা ভাঙার জন্য। 52 এর ভাষা আন্দোলনের 144 ধারা ভঙ্গ করেই হয়েছিল। এই ধারাই তুলে দেয়া উচিত।

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অদ্বিত দাদা
আপনার বোঝাতে কিছু ত্রু্টি রয়েছে।
অনেক ধর্মগ্রন্থ মানুষ নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে ফেলেছে।
তাই সেই ধর্মগ্রন্থগুলো এখন আর আল্লাহ্র নাযিলকৃত সেই কিতাব বলে
দাবি করা যায় না। কিন্তু মানুষ অনেক চেষ্টা করেও আল্লাহ্র কিতাব
কোরআনকে বিকৃত করতে পারেনি আর কিয়ামত পর্যন্ত পারবেও না।
তাই দেখা যায় পৃথিবীর যে কোনো এক প্রান্তের কোরআনের সঙ্গে অপর
প্রান্তের কোরআনের হুবহু মিল। সারা দুনিয়ায় কোরআন একটাই।
অথচ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থগুলো একই কিতাব বিভিন্ন ধরনের পাওয়া যায়।
আল্লাহ্ তায়ালা কোরআন হেফাজত করার জন্য অনেক বিস্ময়কর পদ্ধতি
অবলম্বন করেছেন। কোরআনের শব্দ, অর্থ, বানানপদ্ধতি, বাস্তবপ্রয়োগ,
কোরআনের ভাষা, কোরআনের পরিবেশ, যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে সেই নবীর
জীবনী এবং কোরআন প্রথম যাঁদেরকে সম্বোধন করেছে তাদের জীবনী
পর্যন্ত সব কিছু নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করেছেন আল্লাহ তায়ালা। যে কারণে
চৌদ্দশ’ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও আজ পর্যন্ত এই
কোরআনে কেউ এক তিল পর্যন্ত রদবদল করতে পারেনি। হাজারো চেষ্টা
করা হয়েছে কিন্তু প্রতিটি চেষ্টা মাঠে মারা গিয়েছে। কেউ সফল হতে পারেনি,
আর কিয়ামত পর্যন্ত পারবেও না।

৭| ১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

কোরানকে কি ভাবে বাংলাদেশের সংবিধান করা সম্ভব?
কোন ব্যাখ্যা আছে কি আপনার কাছে?

১১ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এ্ই সাধারন বিষয়টি আপনার অজানা তা ভাবতে অবাক লাগে!!
যা হোক মহা পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআ্ন মানবজীবনের জন্য একটি
পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এমন কোন প্রশ্ন নাই যার উত্তর এই গ্রন্থে নাই।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন “যা’লিকাল কিতাবু লা’রাইবা
ফিহি হুদাল্লিল মুতাক্কিন”
সুরা বাকারা, আয়াত-০২। অর্থঃ ইহা সেই কিতাব
যাহাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই, আর এটি খোদাভীরুদের জন্য পথনির্দেশিকা।

তাই “আল্লাহ প্রদত্ব জীবন-বিধান(আল-কুরআনের বিধি-নিষেধ সমুহ) রাসুর (সাঃ) এর
পন্থায় সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে আল্লাহর সন্তোশ অর্জনের মাধ্যমে দুনিয়া ও
আখেরাতে শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব"।

৮| ১১ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৬

কল্পদ্রুম বলেছেন: 14:4
And We did not send any messenger except [speaking] in the language of his people to state clearly for them, and Allah sends astray [thereby] whom He wills and guides whom He wills. And He is the Exalted in Might, the Wise.

14:5
And We certainly sent Moses with Our signs, [saying], "Bring out your people from darknesses into the light and remind them of the days of Allah ." Indeed in that are signs for everyone patient and grateful.

14:6
And [recall, O Children of Israel], when Moses said to His people, "Remember the favor of Allah upon you when He saved you from the people of Pharaoh, who were afflicting you with the worst torment and were slaughtering your [newborn] sons and keeping your females alive. And in that was a great trial from your Lord.

বুঝতেই পারছেন আপনি যে আয়াত দিয়েছেন তা একেবারেই out of context.দিবস বলতে আপনার এই লম্বা লিস্টের কোনটাকেই বুঝানো হয়নি।

যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার জন্য বেশি বেশি দোয়া করেন।এসব দিবস আবিষ্কার করে কেন দেশে দলাদলি বাড়াতে চান!

১৩ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মহানবী (সঃ) রোগ মুক্তির দিনও কিন্তু পালিত হয়।
যা আখিরী চাহার শোম্বা নামে পরিচিত।
সে যাহোক আমরা হাগ ডে, কিস ডে, রোজ ডে
কত কিছুইতো পালন করি, তা হলে কোরআন দিবস
পালনে এত অনিহা কেন? এই সুযোগে একটা দিন
কোরআন নিয়ে আলোচনা হলে কিইবা এমন ক্ষতি !!

৯| ১৩ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:০৪

জাফরুল মবীন বলেছেন: আল্লাহ নিহতদের সকল গুণাহ ক্ষমা করে জান্নাত নসীব করুন।

১৩ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমিন। আপনর প্রার্থনা
আল্লাহর দরবারে কবুল হোক।

১০| ১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩

কল্পদ্রুম বলেছেন: হাগ ডে,কিস ডে আছে বলেই "কুর'আন ডে" বানাতে হবে এই যুক্তিটা ঠিক না।আমি নিজে ধর্ম বিদ্বেষী না হলেও,খুব ধার্মিক তাও নই।কিন্তু 'কুর'আন ডে' এবং অন্যান্য যে তথাকথিত ইসলামি অনুষ্ঠানের নাম লিখলেন এগুলো যে একই কাতারে পড়ে না এটা চিন্তা করলে আপনিও বুঝতে পারতেন।

আখেরি চাহার শোম্বা সম্পর্কে একজন ইসলামিক স্কোলারের লেখা দিলাম।

"হজরত নবী করিম (সাঃ) দুনিয়া হইতে বিদায় নিবার পূর্ববর্তী সফর মাসের শেষ সপ্তাহে ভীষণভাবে রোগে আক্রান্ত হইয়াছিলেন। অতঃপর তিনি এই মাসের শেষ বুধবার দিন সুস্থ হইয়া গোসল করতঃ কিছু খানা খাইয়া মসজিদে নববীতে হাজির হইয়া নামাজের ইমামতি করিয়াছিলেন। ইহাতে উপস্থিত সাহাবীগণ অত্যন্ত আনন্দিত হইয়াছিলেন। আর খুশীর কারণে অনেকে অনেক দান খয়রাত করিয়াছিলেন। বর্ণিত আছে হজরত আবু বকর (রাঃ) খুশীতে ৭ সহস্র দিনার এবং হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) ৫ সহস্র দিনার, হজরত ওসমান (রাঃ) ১০ সহস্র দিনার, হজরত আলী (রাঃ) ৩ সহস্র দিনার এবং হজরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রাঃ) ১০০ উট ও ১০০ ঘোড়া আল্লাহর ওয়াস্তে দান করিয়াছিলেন। তৎপর হইতে মুসলমানগণ সাহাবীগনের নীতি অনুসরণ ও অনুকরন করিয়া আসিতেছে। হজরত নবী করিম (সাঃ) এর এই দিনের গোসলই জীবনের শেষ গোসল ছিল। ইহার পর আর তিনি জীবিতকালে গোসল করেন নাই। তাই সকল মুসলমানের জন্য এই দিবসে ওজু গোসল করতঃ ইবাদত বন্দেগী করা উচিত এবং হজরত নবী করিম (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ শরীফ পাঠ করতঃ সওয়াব রেছানী করা কর্তব্য… ”। [বার চান্দের ফজীলত- পৃষ্ঠা ১২]

উপরের এই কাহিনীটিই কমবেশি সমাজে প্রচলিত এ বিভিন্ন গ্রন্থে লেখা রয়েছে। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেও কোন সহীহ বা জয়ীফ হাদিসে এই ঘটনার কোনপ্রকার উল্লেখ পাইনি। হাদিস তো দুরের কথা, কোন ইতিহাস বা জীবনী গ্রন্থেও আমি এ ঘটনার কোন উল্লেখ পাইনি।ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়া অন্য কোন মুসলিম সমাজে ‘সফর মাসে শেষ বুধবার’ পালনের রেওয়াজ বা এই কাহিনী প্রচলিত আছে বলে আমার জানা নেই।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সর্বশেষ অসুস্থতাঃ

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সফর বা রবিউল আউয়াল মাসের কত তারিখ থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কত তারিখে ইন্তিকাল করেন সে বিষয়ে হাদীস শরীফে কোনরূপ উল্লেখ বা ইঙ্গিত নেই। অগনিত হাদিসে তাঁর অসুস্থতা, অসুস্থতাকালীন অবস্থা, কর্ম, উপদেশ, তাঁর ইন্তিকাল ইত্যাদির ঘটনা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোন ভাবে কোন দিন, তারিখ বা সময় বলা হয়নি। কবে তাঁর অসুস্থতা শুরু হয়, কতদিন অসুস্থ ছিলেন, কত তারিখে ইন্তেকাল করেন সে বিষয়ে কোন হাদীসেই কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

২য় হিজরী শতক থেকে তাবিয়ী ও তাবি-তাবিয়ী আলিমগন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনের ঘটনাবলী ঐতিহাসিক দিন তারিখ সহকারে সাজাতে চেষ্টা করেন। তখন থেকে মুসলিম আলিমগণ এ বিষয়ে বিভিন্ন মোট পেশ করেছেন।

তাঁর অসুস্থতা সম্পর্কে অনেক মোট রয়েছে। কেউ বলেছেন সফর মাসের শেষ দিকে তাঁর অসুস্থতার শুরু। কেউ বলেছেন রবিউল আউওয়াল মাসের শুরু থেকে তাঁর অসুস্থতার শুরু। দ্বিতীয় হিজরী শতকের প্রখ্যাত তাবিয়ী ঐতিহাসিক ইবনু ইসহাক (১৫১হি/৭৬৮ খ্রি) বলেনঃ “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে অসুস্থতায় ইন্তিকাল করেন, সেই অসুস্থতার শুরু হয়েছিল সফর মাসের শেষ কয়েক রাত থাকতে, অথবা রবিউল আউয়াল মাসের শুরু থেকে।”[ইবনু হিশাম, আস-সীরাহ আন- নববিয়্যাহ ৪/২৮৯]

কি বার থেকে তাঁর অসুস্থতার শুরু হয়েছিল, সে বিষয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন শনিবার, কেউ বলেছেন বুধবার এবং কেউ বলেছেন সোমবার তাঁর অসুস্থতার শুরু হয়।

কয়দিনের অসুস্থতার পরে তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, ১০ দিন, কেউ বলেছেন ১২ দিন, কেউ ১৩ দিন, কেউ বলেছেন ১৪ দিন অসুস্থ থাকার পর রাসুল (সাঃ) ইন্তিকাল করেন। তিনি কোন তারিখে ইন্তকাল করেছেন সে বিষয়েও মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছনে ১লা রবিউল আউয়াল, কেউ ২রা রবিউল আউয়াল, এবং কেউ বলেছেন ১২ই রবিউল আউয়াল তিনি ইন্তেকাল করেন।

সর্বাবস্থায় কেউ কোনভাবে বলছেননা যে, অসুস্থতা শুরু হওয়ার পরে মাঝে কোনদিন তিনি সুস্থ হয়েছিলেন। অসুস্থ অবস্থাতেই, ইন্তিকালের কয়েকদিন আগে তিনি গোসল করেছিলেন বলে সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বুখারী সংকলিত হাদিসে আয়েশা (রাঃ) বলেন: “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন আমার গৃহে প্রবেশ করলেন এবং তাঁর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার উপরে ৭ মশক পানি ঢাল…; যেন আমি আরাম বোধ করে লোকদের নির্দেশনা দিতে পারি। তখন আমরা এভাবে তাঁর দেহে পানি ঢাললাম…। এরপর তিনি মানুষদের নিকট বেরিয়ে যেয়ে তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন এবং তাদেরকে খুৎবা প্রদান করলেন বা ওয়াজ করলেন।” [সহীহ বুখারী ১/৮৩, ৪/১৬১৪, ৫/২১৬০]

এখানে স্পষ্ট যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর অসুস্থতার মধ্যেই অসুস্থতা ও জ্বরের প্রকোপ কমানোর জন্য এভাবে গোসল করেন, যেন কিছুটা আরাম বোধ করেন এবং মসজিদে যেয়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় নসীহত করতে পারেন।

এই গোসল করার ঘটনাটি কত তারিখে বা কি বারে ঘটেছিল তা হাদীসের কোন বর্ণনায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে আল্লামা ইবনু হাযার আসকালানী সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের অন্যান্য হাদীসের সাথে এই হাদীসের সমন্বয় করে উল্লেখ করেছেন যে, এই গোসলের ঘটনাটি ঘটেছিল ইন্তিকালের আগের বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ইন্তিকালের ৫ দিন আগে (ইবনু হাযার, ফাতহুল বারী ৮/১৪২)। ১২ই রবিউল আউয়াল ইন্তিকাল হলে তা ঘটেছিল ৮ই রবিউল আউয়াল।

উপরের আলোচনা থেকে আমাদের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, সফর মাসের শেষ বুধবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুস্থ হওয়া, গোসল করা এবং এ জন্য সাহাবীগনের আনন্দিত হওয়া ও দান-সদকা করার এ সকল কাহিনীর কোনরূপ ভিত্তি নেই। আল্লাহই ভাল জানেন।
যেহেতু মূল ঘটনাটিই প্রমানিত নয়, সেহেতু সেই ঘটনা উদযাপন করা বা পালন করার প্রশ্ন উঠে না। এরপরও আমাদের বুঝতে হবে যে, কোন আনন্দের বা দুঃখের ঘটনায় আনন্দিত ও দুঃখিত হওয়া এক কথা, আর প্রতি বছর সেই দিনে আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশ করা বা ‘আনন্দ দিবস’ আ ‘শোক দিবস’ উদযাপন করা সম্পূর্ণ অন্য কথা। উভয়ের মধ্যে আসমান যমীনের পার্থক্য।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনে অনেক আনন্দের দিন বা মুহূর্ত এসেছে, যখন তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন, শুকরিয়া জ্ঞাপনের জন্য আল্লাহর দরবারে সিজদাবনত হয়েছেন। কোন কোন ঘটনায় তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবীগণও আনন্দিত হয়েছেন ও বিভিন্নভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু পরের বছর বা পরবর্তী কোন সময়ে সেই দিন বা মুহূর্তকে তারা বাৎসরিক ‘আনন্দ দিবস’ হিসেবে উদযাপন করেননি। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশ বা সাহাবীদের কর্ম ছাড়া এইরূপ কোন দিন বা মুহূর্ত পালন করা বা এইগুলিতে বিশেষ ইবাদতকে বিশেষ সওয়াবের কারণ বলে মনে করার কোন সুযোগ নেই।


আখেরী চাহার শোম্বাঃ

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, সফর মাসের শেষ বুধবারের কোন প্রকার বিশেষত্ব হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয়।এই দিনে ইবাদত, বন্দেগী, সালাত, সিয়াম, জিকির, দোয়া, দান, সদকা ইত্যাদি পালন করলে অন্য দিনের চেয়ে বেশী বা বিশেষ কোন সওয়াব বা বরকত লাভ করা যাবে বলে ধারনা করা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা।


লেখকঃ ডঃ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর | সূত্রঃ বই- হাদীসের নামে জালিয়াতি

১৪ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ কল্পদ্রুম
অনেক কিছু জানলাম।
ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.