নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
পরিচয়ঃ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রকাশ কালঃ শান্তিনিকেতন, ১৩ মাঘ, ১৩৪৩
'ভাটার গভীর টানে
তরীখানা ভেসে যায় সমুদ্রের পানে।
নূতন কালের নব যাত্রী ছেলেমেয়ে
শুধাইছে দূর হতে চেয়ে,
'সন্ধ্যার তারার দিকে
বহিলা চলিছে তরণী কে?
সেতারেতে বাঁধিলাম তার,
গাহিলাম আরবার,
'মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,
আমি তোমাদেরই লোক,
আর কিছু নয়
এই হোক শেষ পরিচয়"।
বাংলা সাহিত্যের দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। দু-চার দশক নয়, এক শতাব্দীও নয়- তার জন্মের দেড় শ বছর পেরিয়ে গেছে কবেই। দীর্ঘ সময় পরিক্রমায় পরিবর্তন হয়ে গেছে কত কিছু! পাল্টে গেছে মানচিত্র, জন্ম নিয়েছে নতুন দেশ। কিন্তু জন্মের দেড়শ বছর পেরিয়েও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দেদীপ্যমান। বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই দিন। আজ সোমবার, পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯তম জন্মজয়ন্তী। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের হাতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, শিল্পকলা ও শিল্প চেতনা নতুনভাবে ও নতুনরূপে বিকশিত হয়েছে। বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তিনি বিশ্বকবি ও কবিগুরু হিসেবে সম্মানিত ও খ্যাত। স্বদেশের অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ছাড়িয়ে বিশ্বমাঝে তিনি ছড়িয়ে গেছেন তার জাদুর পরশ। রবীন্দ্রনাথ মানেই গল্প, গান কবিতা, যা সব বাঁধনের সীমা অতিক্রম করে গেছে। পড়লেই মন জুড়িয়ে যায়। শুনলেই মুগ্ধ হয়ে যায় মন। তিনি আছেন গানে, কবিতার আড্ডায়, গল্পের উপমায়। ছবির ক্যানভাসে। তাকে ছাড়া ছোটগল্প, কবিতা, গান কল্পনা করা যায় না। কোথায় নেই তিনি? সবুজের মাঠ পেরিয়ে গোধূলি বিকেল। টাপুর টাপুর বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা। বৃক্ষের সজীবতায়। আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে। সবখানেই তার বিচরণ। তার লেখনীতে উঠে এসেছে প্রত্যাশা, হতাশা, বিচ্ছিন্নতা, বৈরাগ্য। তার কবিতায় প্রেম বিবৃত হয়েছে সার্থকভাবে। উপমা ও চিত্রকল্পে তিনি প্রকৃতিনির্ভর উপাদান জীবনকেন্দ্রিক ছবি তুলে ধরেছেন এবং দেশপ্রেম তার কবিতায় অন্যতম উপাদান।
বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তার সারা জীবনের কর্মে সমৃদ্ধ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাহিত্য হচ্ছে তার কবিতা ও গান। অবশ্য উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, ভ্রমণ কাহিনী এবং নাটক রচনায়ও তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। কবিতা ও গান বাদ দিলে তার সবচেয়ে প্রভাবশালী রচনা হচ্ছে ছোটগল্প। তাকে বাংলা ভাষায় ছোটগল্প রচনাধারার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার সাহিত্যকর্মের ছান্দসিক, আশাবাদী ও গীতিধর্মী রূপ সহজেই সকলকে আকৃষ্ট করে। সাধারণ মানুষের জীবনই ছিল তার প্রধান উপজীব্য। তাঁর সকল সৃষ্টির মতো ছোটগল্পগুলোও এককথায় অসাধারণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার। আসলে বাংলা ভাষায় ছোটগল্প তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বলাই, শোভা, পোস্টমাস্টার, ছুটি, যোগাযোগ, ঘরে বাইরে, একরাত্রি এমন অসংখ্য ছোটগল্প আজও মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযোগ্য নাটক ডাকঘর, যেখানে একটি বালক তার দৈনন্দিন আবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি চায় ও অবশেষে ঘুমিয়ে পড়ে (যেটা তার দৈহিক মৃত্যুকেই নির্দেশ করে)। সার্বজনীন আবেদনমূলক ডাকঘরের এ গল্পে (ইউরোপে যা প্রভূত সাড়া ফেলেছিল) যে মৃত্যু দেখানো হয়েছে, তা রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘জাগতিক স্তুপিকৃত সম্পদ ও প্রচলিত বিশ্বাস’ থেকে ‘আধ্যাত্মিক মুক্তি’।
রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে তাঁর গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রথম এশীয় হিসাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তার সারা জীবনের কর্মে সমৃদ্ধ হয়েছে। বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তিনি বিশ্বকবি ও কবিগুরু হিসেবে সম্মানিত ও খ্যাত। তিনি বিশ্বের একমাত্র কবি যিনি দু’টি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ এবং ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারত ভাগ্যবিধাতা’ উভয়টির রচয়িতাই রবীন্দ্রনাথ। জীবনের শেষ চার বছর রবীন্দ্রনাথের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা ছিল ও তার এই দুরারোগ্য অসুস্থতা মোট দুই বছর বজায় ছিল। ১৯৩৭ সালের শেষ দিকে তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন ও এরপর দীর্ঘ সময় মুমূর্ষু অবস্থায় কোমায় ছিলেন। তিন বছর পর ১৯৪০ সালে আরেকবার ভাল রকমের অসুস্থ হয়ে পড়েন যা থেকে আর আরোগ্য লাভ করতে পারেন নি। এসময় রচিত কবিতাগুলো তার জীবনের অন্যতম প্রধান রচনা হিসেবে খ্যাত। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তারিখে (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮) জোড়াসাকোর ঠাকুর বাড়ির উপর তলার একটি কক্ষে তিনি প্রাণত্যাগ করেন যে ঘরে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন।
আজ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৯ তম জন্মজয়ন্তী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এদিনে তৎকালীণ ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার জোড়াসাঁকোতে ধনাঢ্য ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আমাদের লোক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ ইকরাম ভাই
প্রথম মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা জানবেন।
২| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৫৩
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সালমানের সবচেয়ে প্রিয় গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীত যেটি সে আজকে ও গুনগুনিয়ে গেয়ে। এই গান শুনার পর মা ডেকে তার আম্মুকে সম্বোধন করে। শ্রদ্ধাঞ্জলি রইলো কবি গুরুর প্রতি। তিনি হৃদয়ের কথা বলে গেছেন কবিতায় গানে। তিনি আমাদের মননে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন।
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সেলিম ভাই
মধ্যরাতে কবিগুরুকে
জন্মবার্ষিকীর শুভেচ্ছা
জানানোর জন্য।
৩| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: বিকল্পহীন রবীন্দ্রনাথ।
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৪৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ খানসাব
কবি গুরুকে শুভেচ্ছা
জানানোর জন্য
৪| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১:৪৬
রামু দাস বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ রামু দাদা
আমার ব্লগে আসবার জন্য। শুভেচ্ছা ও
স্বাগতম।
৫| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ৩:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: করোনার কারণে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না মনে হয়। শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা ।
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মনেরঅনুষ্ঠান রুখিতে
পারে সাধ্যকার
৬| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ৩:৫৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ‘সেই সত্য যা রচিবে তুমি,
ঘটে যা তা সব সত্য নহে।
রবি ঠাকুর
০৮ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সত্যই সুন্দর
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৪৫
আল-ইকরাম বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম। অনেক বিষয় জানা হলো। ভাল লাগলো। শুভ কামনা রইল।