নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম ফরজ ইবাদত হলো সিয়াম বা রোজা পালন করা। নিজ কু-প্রবৃত্তিকে দমন ও আত্মশুদ্ধির সর্বোত্তম মাস হলো রমজান। এ মাসে হেদায়াতের আলোকবর্তিকা আল-কোরআন নাজিল হয়েছে। এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। একজন ঘোষণাকারী ভাল কাজের আহ্বান জানাতে থাকে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে। সাথে সাথে এটা হল মাগফিরাতের মাস, জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর যা হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ। রমজানে যা করনীয় আমরা যখন এ মাসের গুরুত্ব অনুভব করলাম তখন আমাদের কর্তব্য হয়ে দাঁড়াল কীভাবে এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায় সে প্রচেষ্টা চালানো।
প্রথমতঃ সিয়াম সাধনায় আল্লাহর নির্দেশ পালন করা হয়। দ্বিতীয়তঃ রোজা দ্বারা সংযমী হওয়া যায়। তৃতীয়তঃ রোজা দ্বারা অতীতের গুনাহসমূহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের সর্বোত্তম পন্থা হলো সিয়াম সাধনা। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- "হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। [সূরা বাকারা : ১৮৩]"
মহান আল্লাহ রমজান মাসে সিয়াম পালনকে আমাদের উপর অত্যাবশকীয় করে দিয়েছেন এই জন্য যে এই মাসে অবতীর্ণ হয়েছে পবিত্র আল-কুরআন যা বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়াত এবং নিদর্শন ও সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী বিধান গ্রন্থ। আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, "রমজান মাস যে মাসে অবতীর্ণ হয়েছে আল-কুরআন, যা মানবজাতির জন্য হেদায়াত এবং হেদায়াতের সুষ্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী বিধান। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে এই মাসটি পাবে, সে রোজা রাখবে। আর যে অসুস্থ অথবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গননা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না, যাতে তোমরা গননা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়াত দান করার দরুন আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো"। [সূরা বাকারাহ : ১৮৫] উক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, সিয়াম সাধনার দ্বারা তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জিত হয়।
রমজান আমাদেরকে সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়। সিয়াম সাধানার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি হালাল খাদ্য ও পানীয়কে আল্লাহর নির্দেশের কারণে বর্জন করে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করে। সেই সাথে তারাবীহ, তাহাজ্জুদ, দান-সদকাহ, কুরআন তিলাওয়াতসহ অন্যান্য ইবাদত করার মাধ্যমে তার আত্মার পরিশুদ্ধতা অর্জিত হয়। শুধুমাত্র পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে দিনের বেলায় বিরত থাকাই সংযম নয় বা এটাই সিয়াম সাধনার মূল উদ্দেশ্য নয়। এই পবিত্র মাসকে পূর্ণভাবে আল্লাহর রহমত, বরকত ও নাজাত প্রাপ্তির জন্য আমাদের কিছু করণীয় আছে এবং সেই সাথে কিছু বর্জনীয় কার্যাবলী রয়েছে যা পরিত্যাগ করার মাধ্যমে আমরা রমজান মাসকে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পালন করতে পারব।
প্রকৃতপক্ষে রমজান মাসে সার্বক্ষণিক নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করা সম্ভব। আমাদের ভুলে গেলে হবে না যে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টুকু রোজার অন্তুর্ভূক্ত নয়; বরং দিন ও রাত্রি উভয় সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সিয়াম সাধনার প্রকৃত আত্মতৃপ্তি লাভ করা সম্ভব। পবিত্র রমজান মাসে হাদিসে উল্লেখিত কতিপয় আমল দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি। যেমনঃ
১। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত লাভের উদ্দেশ্যে সিয়াম সাধনা করাঃ
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন, যখন রমজান মাস আসে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অপর বর্ণনায় রয়েছে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয় এবং শয়তানকে শৃংখলিত করা হয়। অপর বর্ণনায় আছে, রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। [বুখারী ও মুসলিম]
রমজান মাসে যেহেতু বেহেশতের ও রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় সেহেতু রোজা রেখে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাঁর রহমতের আশা করব।
২। মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখাঃ
পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজের মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। মিথ্যা, অশ্লীল কথাবাতা, গালিগালাজ, গীবত, পরনিন্দা, অভিশাপ দেয়া ও চোগলখোরীসহ অন্যান্য অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। হাদিসে এসেছে-
অবু হুরায়রা রাঃ হতে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কর্ম পরিত্যাগ করেনি, তার পানাহার ছেড়ে দেয়াতে আল্লাহর কোন কাজ নেয়। [মিশকাত : ১০৮৯, বুখারী]
৩। নিয়মিত তারাবীহর নামাজ আদায় করাঃ
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারাবীহ পড়তে হবে। কেননা, যে ব্যক্তি রমজানে তারাবীহ নামাজ পড়বে তার অতীতের সগীরা গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। হাদিসে এসেছে-
"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা. রমজান মাসের নামাজ কাযেম করার জন্য উৎসাহ দান করতেন; কিন্তু তিনি এ বিষয়ে খুব তাকীদ করতেন না। বরং এরূপ বলতেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের নিয়তে রমজান মাসে নামায কায়েম করবে তার পূর্ববর্তী (সগীরা) গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে।" [মুসলিম]
৪। কুরআন তিলাওয়াত করাঃ
নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হলো কুরআন তিলাওয়াত করা। যেমন হযরত নুমান বিন বাশির রা. হতে বর্ণিত নবী করীম সা. ইরশাদ করেন -
"আমার উম্মতের সবচেয়ে উত্তম ইবাদত কুরআন তিলাওয়াত করা। [বায়হাকী, শুআবুল ঈমান :হা. ১৮৬৯, মুসনাদুস শিহাব : ১১৯৫]
অন্য হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করবে সে ঐ ব্যক্তির সমান হলো যে, অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। [মিশকাত :১৮৬৮]
সুতরাং রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা অধিকতর সওয়াবের অধিকারী হবো।
৫। নিজে ইফতার করার পাশাপাশি রোজাদারদের ইফতার করানোঃ
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, "হযরত যায়েদ বিন খালেদ জুহানী রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করালো তাকে রোজাদারের অনুরূপ সওয়াব দান করা হবে। কিন্তু রোজাদারের সওয়াবের কোন কমতি হবে না"। [তিরমিযী : ৮০৭]
৬। মিসওয়াক করাঃ
হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, "আব্দুল্লাহ বিন রবিআ রা. তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সা. কে রোজা অবস্থায় অসংখ্যবার মিসওয়াক করতে দেখেছি"। [তিরমিযী: হা.৭২৫]
৭। সেহরী খেয়ে রোজা রাখাঃ
সেহেরী খাওয়া সুন্নত। সেহেরী খেয়ে রোজা রাখার মধ্যে বরকত নিহিত রয়েছে। হাদিস শরীফে এসেছে, " আনাস বিন মালেক রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন- তোমরা সেহেরী খাবে। কেননা, সেহরীতে বরকত রয়েছে"। [বুখারী, মুসলিম]
৮। ইফতারের পূর্বে ও ইফতারের সময় দোয়া করাঃ
হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. যখন ইফতার করতেন নিম্নের দোয়াটি পড়তেন, " হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার রিজিক দিয়ে ইফতার করছি। তুমি আমার এই রোজাকে কবুল কর। নিশ্চয় তুমি সর্বজ্ঞ, সর্বশ্রোতা"। [তাবারানী : ৮৪৫]
০৯। শীঘ্রই ইফতারী করাঃ
হাদিস শরীফে বর্ণিতঃ "হযরত সাহল ইবনে সা’দ রা. বলেন, আল্লাহ রাসূল সা. বলেছেন, মানুষ কল্যানের সাথে থাকবে যতকাল তারা শীঘ্রই ইফতার করবে।" [বুখারী ও মুসলিম]
অন্য হাদিসে আছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে আমার কাছে তারাই বেশি প্রিয় যারা শীঘ্রই ইফতারী করে। [তিরমিযী, মিশকাত : ১৮৯৬]
১০। খেজুর অথবা পানি দিয়ে ইফতার করাঃ
হযরত সালমান আমের রা. বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে, কেননা এতে বরকত রয়েছে। যদি খেজুর না পায়, তবে যেন পানি দ্বারা ইফতার করে, এটি পবিত্রকারী। [আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, দারেমী]
১১। বেশি করে ইসতেগফার ও দোয়া করাঃ
এই রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত্রি হলো লাইলাতুল কদর। হাদিস মোতাবেক রমজানের শেষের দশদিন বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করার কথা বলা হয়েছে। এই জন্য যে মহান আল্লাহ দেখতে চান লাইলাতুল কদরের বরকত ও ফজিলত লাভের উদ্দেশ্যে তার কোন বান্দা বেশি ইবাদত করে।
রাসূল (সাঃ) এই শেষ দশকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন তা নিম্নোক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূল সা. কে লাইলাতুল কদরের কথা জিজ্ঞাসা করলাম, আজ কি দোয়া পাঠ করব? তিনি বললেন নিম্নের দোয়াটি পাঠ করবে:
"হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমাশীলতাকে ভালবাস। অতএব আমাকে ক্ষমা করো। [তিরমিযী : হা. ৩৫১৩, মুসনাদে আহমদ : ১/১৭১]
১২। মসজিদে এতেকাফ করাঃ
রমজানের শেষের দশদিনে এতেকাফ করা সুন্নত। পুরুষরা মসজিদে এবং স্ত্রীলোকেরা আপন ঘরে একটি স্থান ঘিরে নিয়ে তথায় এতেকাফ করবে। হাদিসে এসেছে-
"হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত যে, নবী করীম সা. রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন, যাবৎ না আল্লাহ তাকে উঠিয়ে নিয়েছেন এবং তাঁর পর তাঁর স্ত্রীগণও এতেকাফ করেছেন। [বুখারী ও মুসলিম]
১৩। বেশি বেশি করে নফল নামাজ আদায় করাঃ
হাদিস মোতাবেক রমজান মাসে একটি নফল ইবাদত করলে একটি ফরজ ইবাদতের সমান মর্যাদা পাওয়া যায়। হাদিসে এসেছে, হযরত আলী রা. বলেন, আমাকে হযরত আবু বকর রা. বলেছেন আর তিনি সত্য বলেছেন তিনি বলেছেন আমি রাসূল সা.কে বলতে শুনেছি যে, কোন ব্যক্তি গুনাহ করবে অতঃপর ওঠে আবশ্যকীয় পবিত্রতা লাভ করবে এবং নফল নামাজ পড়বে; তৎপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। [তিরমিযী, ইবনে মাজাহ]
১৪। বেশি করে আল্লাহর জিকির ও তাসবীহ-তাহলীল করাঃ
রমজান মাসে বেশি করে তাসবীহ পাঠ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্ঠা করতে হবে। মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, "আর যারা কোন অশ্ল¬ীল কাজ করে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করে আল্ল¬াহকে স্মরণ করে, অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্ল¬াহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে ? আর তারা যা করেছে, জেনে শুনে তা তারা বার বার করে না" । [সূরা আল-ইমরান : ১৩৫]
১৫। রমজান মাসে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করাঃ
রমজান মাসের শেষের দশদিনের বেজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদরের জন্য বেশি করে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে এবং সারা বিশ্ববাসীর শান্তি, ক্ষমা ও স্থিতিশীলতার জন্য দোয়া করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, "লাইলাতুল কদর এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম"। [সূরা কদর : ৩]
১৬। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করাঃ
রমজান মাসে এমন কিছু করা যাবে না যা শরীয়তপরিপন্থী। যেমন রোজাদারহীন ব্যক্তি রোজাদারদের সামনে পানাহার করা। সেই সাথে অশ্লীল ও অনৈতিক কার্যাবলী থেকে বিরত থাকতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন-" আর অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হবে না, তা থেকে যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে"। [সূরা আন-আম : ১৫১]
হাদিস শরিফে বর্নীত,"যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই"। বোখারি
হাদিসটি দ্বারা স্পষ্ট বুঝে আসে যদি মূর্খতা পরিহার না করা হয় তবে সিয়াম আল্লাহর কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আর মূর্খতা ত্যাগ করা যাবে শুধু শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে।
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত ও সৎকর্মের মাধ্যমে এই রমজানের ফজিলত আমরা পূর্ণভাবে অর্জন করতে পারি। মহান আল্লাহ এই রমজান মাসে আমাদের উপর রহমত, রবকত ও মাগফেরাত প্রদান করুন এবং আমাদের জাহান্নাম থেকে নাজাত প্রদান করুন। আমিন।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক
[email protected]
০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:২৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীসাব আপনি তর্ক করবেন জানি, তার পরেও বলি
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে,
জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে
শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়’। (বুখারী, মুসলিম)
এ মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্টু জীনদেরকে বন্দী করে রাখা হয় এবং জাহান্নামের দরজা
সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। কোন দরজাই সেখানে খোলা থাকে না। আর জান্নাতের সব দরজা
খুলে দেয়া হয়, একটিও (রমজান মাসের শেষ পর্যন্ত) বন্ধ করা হয় না। যাতে মানব জাতি অভিশপ্ত
শয়তানের কুমন্ত্রণার বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে মুক্ত অবস্থায় এবাদত বন্দেগি করতে পারেন।
মু’মিন মুসলমানরা পরম কাক্সিক্ষত আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভ করতে পারেন।
(সহীহ : বুখারী ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম ১০৭৯, নাসায়ী ২০৯৯, ২০৯৭, ২১০২, আহমাদ ৭৭৮০,
মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ৭৩৮৪, ৭৭৮১, ৯২০৪, শু‘আবূল ঈমান ৩৩২৬, সহীহ ইবনু হিববান ৩৪৩১।)
২| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, সেটা ভালো; তারপর, আমার প্রশ্নটা সোজা: বেহেশতের দরজা কেন খোলা রাখা হয়? দরজা খোলা রাখলে, কেহ চাইলে কি ওখানে ঢুকে পড়তে পারেন?
০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তা নয়!! তবে দোজখের দরজা বন্ধ থাকে, শয়তান শৃৃঙ্খলিত থাকে আর বেহেসতের সব
দরজা খোলা থাকার কারনে পৃথিবীতে একটা স্বর্গীয়ভাব বিরাজ করে। এসময় মানব জাতি
অভিশপ্ত শয়তানের কুমন্ত্রণার বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে মুক্ত অবস্থায় এবাদত বন্দেগি করে যাতে
মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের পথ সুগম হয়।
৩| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নূরু ভাই ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
কিন্তু সমস্যা হলো আমরা যে বিশ্বাসটাকেই সঠিক ভাবে অন্তরে ধারন করিনা।
তাইতো রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়ে!
যেখানে কমে যাবার কথা। মানুষ এক বেলা আহার্য ত্যাগ করলে তার বিশাল প্রভাব পরার কথা বাজারে।
কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে উল্টো। কারন কি?
মানুষ সত্যটা বোঝে নি! ধারন করেনি বা পালন করছে না।
যে ত্যাগ, যে উৎসর্গের শিক্ষা রমজানে লাভ করার কথা, তা হয়ে পড়ছে দূরপরাহত।
তাইতো বহ্যিকতায় আমরা যতটা নামধারী মুসলিম, পোষাকে, লোক দেখানো উপাসনায় যতটা মুসলিম
আল্লাহ বিচারে, রাসুল সাল্লে আলার বিচারে ততটাই ব্যার্থ।
আত্মার জাগরণ হোক। আচারে, আচরণে মুসলিম হোক সকল মনন,
ত্যাগ হোক আত্মার সন্তুস্ঠির জন্য লোক দেখানোর জন্য নয়। জ্ঞান হোক মুক্তির পথ।
তবেই রমজানের বাকী রহমত এর আশা করতে পারবো।
০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৫৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ দাদা। তার পরেও রমজানে কিন্তু
অ্ন্যান্য মাসের চেয়ে পাপ কার্য তুলনামূলকভাবে
হ্রাস পায়। সম্ভবত এমাসে শয়তান শৃৃঙ্খলিত থাকে
বলেই পাপাচার কমে যায়। তবে বিচ্ছিন্ন ঘটনাতো
থাকবেই।
৪| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১২
রাজীব নুর বলেছেন: ১। ভালো কাজ করলেই আত্মশুদ্ধি হয়।
২। বেহেশ পাওয়ার আশায় যারা ইবাদত বন্দেগী করে তারা নাম্বার ওয়ান দুষ্টলোক।
৩। যা খারাপ কাজ তা সব সময়ের জন্যই বর্জন করতে হবে। রোজার মাস বলে বর্জন করতে হবে- এমন কোনো কথা নেই।
০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১১:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রতিটি মানুষ ইহ জগত ও পরকালে পুরস্কৃত হবার বাসনায়
কাজ করে। চাকরী করে যদি বলেন আমার টাকা দরকার নাই
তা হলে আপনাকে জ্ঞানী বলা যাবেনা। পাগলেরও টাকা প্রয়োজন।
সৃষ্টিকর্তা মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছন কিছু কাজ দিয়ে। সুষ্ঠ ও সুচারুরূপে
সে কাজ সম্বাপদন করতে পারলে তার কাছ থেকে পুরস্কারের ঘোষণা করা
হয়েছে। আর না করতে পারলে শাস্তি। আপনি ভালো কাজ করে তার পুরস্কার
না নিলে তিনি ডান্ডা মারবেন। ওহহো আপনিতো আবার দোজখে যেতে চান (নাউজুবিল্লাহ)
রোজার মাসে নেকী যেমন বেশী গুনাহ ও তেমন বেশী সম্ভবত ৭০-গুন। তা্ই গুনাহ ছেড়ে দিতে হবে।
৫| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৩৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: শৃঙ্খল, দরজা এসকল কথা কি পবিত্র কোরানে কোথাও আছে?থাকলে জানাবেন।
০৭ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নুরুলইসলা০৬০৪ এগুেলো হাদিসের বানী
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে,
জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে
শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়’। (বুখারী, মুসলিম)
কুরআন মানলে হাদিসও মানতে হবে।
৬| ০৮ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ,।
০৮ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ফিরে এসে আবার মন্তব্য প্রদানের জন্য
আপনাকে ধন্যবাদ খানসাব।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
"এই মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়", বলতে আপনি কি বুঝায়েছেন? কেহ সুযোগ পেলে খোলা দরজা হয়ে ভেতরে চলে যেতে পারেন? একটু ব্যাখ্যা করেন।