নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ৮:৫৯


আশুতোষ মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় নামটা অনেকেরই কমবেশি জানা। জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। শরৎ চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুণী মুখোপাধ্যায়, নিমাই ভট্টাচার্য’র মতো এই কথাশিল্পীর বইও সাধারণ বুকস্টলে শোভা পেতো। তিনি প্রচুর উপন্যাস, ছোট গল্প লিখেছেন। বলা চলে দু’হাতে লিখেছেন। অন্তত শতাধিক উপন্যাস ও ছোট গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়েছে তার। প্রথম গল্প ‘নার্স মিত্র’র কাহিনীতেই তৈরী হয়েছিল সিনেমা ‘দীপ জ্বেলে যাই’। বহু বাংলা, হিন্দি সুপারহিট ছবির কাহিনিকারও তিনি। ভারতীয় বাংলা সুপার-হিট সিনেমা ‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘দীপ জ্বেলে যাই’, ‘চলাচল’, ‘পঞ্চতপা’, ‘আমি সে ও সখা’এসব তারই কাহিনী থেকে নির্মিত। তার ছোটগল্পগ্রন্থ ও উপন্যাসের সংখ্যা শতাধিক। তার বহু উপন্যাস হিন্দি ও ভারতীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর সৃষ্ঠ উপন্যাস ও ছোটো গল্প মানুষের মধ্যেকার সম্পর্ক ও ভালবাসার কথা লেখা আছে। বিশেষ করে তিনি তাঁর অধিকাংশ উপন্যাসে নারী চরিত্রকে একটি শক্তিশালী বুনেটের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার সৃষ্ট বিখ্যাত বাঙালী কাল্পনিক চরিত্র পিনডিদা। খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আজ ৩১তম মৃ্ত্যুবার্ষিকিী। ১৯৮৯ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের কোলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সাহিত্যিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৯২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বজ্রযোগিনীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা স্কুল পরিদর্শক পরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মাতা তরুবালা। পিতা মাতার ১০ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। তাঁর প্রথম জীবনের অনেকখানি কেটেছে উত্তরবঙ্গের নানাস্থানে। পিতা সরকারী চাকরির কারণে তত্কালীন পশ্চিম ও উত্তরবাংলার অনেক স্কুল-কলেজে পড়াশুনা করেছিলেন। সেই সূত্রে বহু উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবার সম্পর্কে খুঁটিনাটি অভিজ্ঞতা ছিলোস্কু-কলেজের শিক্ষা হুগলিতে। হুগলির মহসিন কলেজ থেকে বি.কম.পাশ করেন তিনি। পড়াশুনাে পুরােটাই পশ্চিমবঙ্গে। সায়েন্স এবং কমার্সের ছাত্রটির সাহিত্যের আঙিনায় পা রাখা। সেসময় মােটেই সহজসাধ্য ছিল না। গুরুগম্ভীর প্রবল। ব্যক্তিত্বের ‘এডুকেশনিস্ট’ পিতৃদেবের যে আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছার নাম আসলে ‘আদেশ’ সেই ‘ডাক্তার হও’ হুকুমকে। উপেক্ষা করে অবাধ্য সন্তানের প্রথম জেহাদ-“আর। বিজ্ঞান পড়ব না”। তিক্ত-বিরক্ত পিতার নিরুপায় দ্বিতীয়। ‘অলটারনেটিভ’ কমার্স-পাঠক্রমে ভর্তি হয়েও তা বর্জন। ভবিষ্যতের ভাবী সাহিত্যিক, সাহিত্যের সারস্বত সাধনায়। ব্রতী হওয়া যার অমােঘ পরিণতি, সে কী করে বিচরণ । করবে স্বাভাবিক নিয়মের গতিবাঁধা ছকে? তবে, ছােট থেকেই বড়বেলা পর্যন্তও অদম্য ঝোক ছিল খেলাধূলার। প্রতি। হকি-ক্রিকেট-ফুটবল, গাদাগাদা কাপ-মেডেল ছিনিয়ে আনা, এবং তখনকার দিনে একটি টেনিস ক্লাবের পত্তন। পর্যন্ত করে ফেলে তার মধ্যমণি হওয়া। একই সঙ্গে ক্রীড়াপ্রেমিক এই স্মার্ট ছেলেকে সবার অলক্ষ্যে নিবিড়। বাঁধনে বেঁধে ফেলেছিল একেবারে বিপরীতধর্মী একটি বস্তুবই, গল্পের বই এবং বড়দের বই, যা তখনকার দিনে। ওই বয়সের ছেলেমেয়েদের কাছে ‘নিষিদ্ধ’। গল্প-উপন্যাসের 'প্রতি তেরাে চোদ্দ বছরের ছেলের অদম্য আকর্ষণ এবং | প্রেমই তার মধ্যে তার নিজেরও অগােচরে বপন করে। চলেছিল ভবিষ্যৎ কথাশিল্পী হওয়ার অমােঘ বীজ। যার। প্রথম ফলন ১৯৪৩ সালে, যদিও খুব অপটুভাবে। প্রথম তিনটি উপন্যাস ‘কালচক্র’, ‘আর্তমানব জীবনতৃয়া। কিন্তু সাহিত্য-স্বীকৃতি মিলল না। চতুর্থ উপন্যাস ‘চলাচল। এবং এর থেকেই সাহিত্যিক হিসাবে খ্যাতি, নামডাক, যশ ও স্বীকৃতির জয়যাত্রা, যা কখনও ব্যাহত হয়নি জীবনের। একেবারে শেষ দিনটা পর্যন্ত। ইংরেজি ১৯৮৯,। ৪মে, প্রয়াণের আগের দিন অবধি লিখে গেছেন। কর্মজীবনে তরুণ বয়সে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এবং নিজ ব্যয়ে চলচ্চিত্র তৈরির কাজে ব্রতী হন। অসফল হয়ে গেঞ্জির ব্যবসায়ে নামেন। চাকরিতে অনীহা ছিলো তার। প্রথম জীবনে একে একে ন'টি চাকরিতে প্রবেশ এবং পরিত্যাগ। শেষে সংবাদপত্রের সাহিত্য বিভাগে সম্পাদনার কাজে স্থিতি এবং কালক্রমে সম্পাদক। এরপর স্থায়ীভাবে 'ম্যানুস্ক্রিপ্ট' নামে এক প্রকাশনা সংস্থা গড়ে তোলেন। 'বসুমতী' ও 'যুগান্তর' পত্রিকায় বিচিত্র জীবিকায় মানুষদের নিয়ে লিখতে আরম্ভ করেন। 'বসুমতী'তে তাঁর প্রথম গল্প 'নার্স মিত্র', পরে যা'দীপ জ্বেলে যাই' নামে চলচ্চিত্রায়ণ হয়েছিল। এই পত্রিকায় প্রথম উপন্যাস 'স্বাহা' - পরিবর্তিত নাম 'রূপের হাটে বিকিকিনি'।১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে 'যুগান্তর' পত্রিকায় যোগ দেন ও ক্রমে রবিবাসরীয় বিভাগের প্রধান হন।

তিনি প্রায় দু-শোর মতো বই লিখেছেন। তার মধ্যে এক-শো কুড়ি-পঁচিশটি উপন্যাস। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় তাঁর অনেক বই অনূদিত হয়েছে। শিশু সাহিত্য জগতেও তিনি আদৃত এক লেখক। তাঁর প্রথম গল্প নার্স মিত্র। যা থেকে পরবর্তী কালে সিনেমা তৈরী হয় দীপ জ্বেলে যাই। তাঁর কিছু বিখ্যাত উপন্যাসঃ চরাচর, বলাকার মন, সাত পাঁকে বাধা, পঞ্চতপা, বাজিকর, বকুল বাসার, মানুষের দরবারে, সে অজান খোঁজে, পায়ে পায়ে প্রতিধ্বনী. লীলাবতি. নগরপারে রূপনগর, কাল তুমি আলেয়া, বাবার বদলে, শতরূপে দেখা, নগরপারে রূপনগর, সোনার হরিন নেই. একাল ওকাল. তিন পুরুষ, এক রমণীর যুদ্ধ. আমি সে ও সখা, যার যেথা ঘর. দিনকাল, চেনা মুখের মিছিল, পরকপালে রাজা রানী. সূর্যস্নান, মিন ও রাখি, রক্ত আগুন প্রেম. সবুজ তোরণ ছাড়িয়ে, আলোর ঠিকানা, প্রণয় পাশা. হঠাৎ সেদিন, হিসাব মেলাতে, আজ এক সাঁজে, আশ্রয়. তবু কোকিল ডাকে, মালবি মালঞ্চ উল্লেখযোগ্য। তার গল্প ও উপন্যাস থেকে যেগুলি সিনমা হয়েছে তা হলোঃ চলাচল(হিন্দিতে সফর), পঞ্চতপা, আমি সে ও সখা(হিন্দিতে বেমিসল),কাল তুমি আলেয়া, অমর কন্টক. সাত পাকে বাধা( হিন্দিতে কোরা কাগজ), আলোর ঠিকানা, আরো একজন, নবরাগ, শঙ্খবেলা (১৯৬৬) সন্দেশ নামক ছোটো গল্প থেকে সিনেমাটি তৈরী হয়। এছাড়াও তার কিছু ছোটো গল্প সংকলন রয়েছে যথাঃ নব নায়িকা, মহুয়া কথা, সাঁজের মল্লিকা, বিদেশিণী, রাত্রির ডাক, জানলার ধারে, প্রতিহরিণী, কুমারী মাতা, মনমধুচন্দ্রিকা, প্রতিবিম্ব. রোশনাই. পিকপয়েন্ট, উত্তর বসন্তে, মুখোমুখি, দুজনার ঘর, ফেরাই অতীত. চলো জঙ্গলে যাই. মডেল, রূপসী বাংলার মুখ, সোনালি রেখা, ত্রিবর্ণ, একজন মিসেস নন্দী, কথামালা, মীনা রাখি সাধিকা, সন্দেশ ইত্যাদি।

ব্যাক্তিগত জীবনে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে মমতা দেবীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আজ খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আজ ৩১তম মৃ্ত্যুবার্ষিকিী। ১৯৮৯ সালের ৪ মে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে তিনি ভারতের কোলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: বাঙ্গালী এই লেখককে আমি চিনি। তার বইও পড়েছি।

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১০:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খানসাব আপনার তাকে চেনার কথা নয়।
তাকে জানা সম্ভব, গোলামাল পাকিয়ে তুললেন।
যা হোক কোথায় দেখা হয়েছিলো তার সাথে আপনার?
স্বর্গে না মত্যে !!

২| ০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ৯:৩৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নূরু,




আমার প্রিয় এক ঔপোন্যাসিক।
তাঁর উপন্যাসের মূল চরিত্রগুলো অত্যন্ত ঋজু মননের হয়। একটা আলাদা চটক আছে তার লেখায়, টেনে রাখে। তাঁর উপন্যাস "কাল তুমি আলেয়া"র চলচ্চিত্রটি কতোবার যে দেখেছি!
ছাত্রজীবন থেকেই আশুতোষ আমার পছন্দের লেখক।

মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১১:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জী এস ভাই,
তার সাত পাকে বাধার মধ্যে
আজো বাধা পরে আছি!!
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.