নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘোষিত প্রথম বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ জগৎজ্যোতি দাস। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার পর বীরশ্রেষ্ঠদের তালিকা থেকে তাঁর নাম উধাও হয়ে যায়! যার কারনে তিনি আজ বিস্মৃত ও প্রতারিত এক বীরযোদ্ধা। নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণে ধীরে ধীরে প্রশিক্ষিত চৌকস যোদ্ধাদের নিয়ে দাসের নেতৃত্বে গঠিত হয় গেরিলা দল। নাম দেয়া হয় ফায়ারিং স্কোয়াড ‘দাস পার্টি’। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ‘দাস পার্টি’ ছিলো পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে এক আতঙ্কের নাম। জগৎজ্যোতি ছিলেন সেই ‘দাস পার্টি’র নেতা। মুক্তিযুদ্ধে ভাটি এলাকায় মানুষের মুখে মুখে ছিলো ‘দাস পার্টি’র বীরত্বের কাহিনি। অসংখ্য লড়াইয়ে শত্রুকে ধরাশায়ী করেছেন জ্যোতি। জগৎজ্যোতির শেষ যুদ্ধের অন্যতম সাথী আবদুল কাইয়ুমের বয়ানে জানা যায়, দাস পার্টি নামটি জনগণের দেয়া নাম নয়, দাস পার্টির অফিসিয়াল দলিল ছিল এবং পার্টি কমান্ডার হিসেবে জগৎজ্যোতি স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর হবিগঞ্জের বাহুবলের পথে বদলপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসরদের ফাঁদে পড়ে সম্মুখযুদ্ধে প্রাণ হারান একাত্তরের এ বীর সেনানী। মুক্তিযুদ্ধে জ্যোতির বীরত্বের জন্য পরাধীন দেশের অস্থায়ী সরকার সর্বোচ্চ খেতাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলো। জগৎজ্যোতি তার কথা রেখেছেন। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীনতা এতে দিয়েছেন। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে তাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করা হয়। এ পুরস্কারও বাস্তবে প্রদান করা হয় আরও ২ যুগ পর। হবিগঞ্জের এ সূর্য সন্তনের নাম নতুন প্রজন্ম ভুলে যেতেই বসেছে। হবিগঞ্জে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদগণের স্মৃতিফলক স্তম্ভেও তার নাম উঠানো হয় আন্দোলন করে। পরে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা তার নামে স্মৃতিস্তম্ভ করে। আজ জগৎজ্যোতি দাসের ৭১তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে তিনি হবিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বীর বিক্রম জগৎজ্যোতি দাসের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
জগৎজ্যোতি দাস ১৯৪৯ সালের ২৬ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জীতেন্দ্র চন্দ্র দাস ও মা হরিমতি দাস। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আদরের জ্যোতিই সবার ছোট। সবাই আদর করে ডাকতো শ্যাম বলে। রাজমিস্ত্রি বাবার অভাবের সংসার, তবু জ্যোতি প্রাইমারি পেরিয়ে স্থানীয় বিরাট গ্রামে ‘আজমিরিগঞ্জ বীরচরণ হাইস্কুল’ থেকে ১৯৬৮ সনে দ্বিতীয় বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ন¤্র-ভদ্র আচরণের জন্য শিক্ষকসহ গ্রামের সবাই তাকে স্নেহ করতেন। অভাবের সংসার আর তো সামর্থ্য নেই, বাপ-ভাইয়ের ইচ্ছা চাকুরিতে ঢুকে সংসারের হাল ধরতে। কিন্তু জগৎজ্যোতির মনে অন্য আগুন জ¦লছে তাই ভাবলেন আরও লেখাপড়া করতে হবে।নওগাঁ কলেজে ভর্তি হয়ে জ্যোতি এইচএসসি পাস করেন। বিএ পড়ার অদম্য ইচ্ছা জ্যোতির তবু হারানদার মন রক্ষার্থে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হয়ে হিন্দি ও ইংবেজি ভাষাটা ভালো করে রপ্ত করেন যা পরবর্তী জীবনে খ্যাতি এনে দিয়েছিলো। প্রশিক্ষণ শেষ, তবে চাকুরিতে যোগদানের দু’দিন আগে জ্যোতি সোজা আজমিরিগঞ্জ চলে এসে হারানদাকে চিঠিতে জানান আমি বিএ পাস করতে চাই এখনই চাকুরিতে আবদ্ধ হতে চাই না। এভাবেই জ্যোতির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া এবং পরবর্তী জীবনের সকল কর্মকাণ্ড চিন্তা-চেতনার ধারাবাহিকতা। কিন্তু নিজের আর্থিক অবস্থার জন্য অগত্যা স্থানীয় ‘কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক হাইস্কুলে’ ৭৫ টাকা বেতনে শিক্ষকতা শুরু করেন। তাও মূল কাজে রেহাই নেই, একবার স্থানীয় জমিদারের দখলে খাস জমি উদ্ধারে তাঁর গ্রুপ তৎপরতা চালান। জমিদারের প্রভাবশালী লোকজন একদিন একা পেয়ে তাকে আক্রমণ করলে খালি হাতে একাই সশস্ত্র আক্রমণ প্রতিহত করেন। আজমিরি এলাকায় বিষয়টি আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং জ্যোতি অপ্রতিরোধ্য ‘ছাত্রনেতা’য় পরিণত হন। আসলে জীবনযুদ্ধই জ্যোতিকে জীবনসংগ্রামী করে তুলেছে, যা পরবর্তী জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু বিএ পাস করা, উচ্চশিক্ষার কী হবে? তাই কিছু টাকা জমিয়ে প্রথমে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে ও পরে সুনামগঞ্জ কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হন। স্কুল জীবনেই জগৎজ্যোতি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৬৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পর সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্র ইউনিয়নে (মেনন গ্রুপ) যোগ দেন। শৈশব থেকে জ্যোতি শান্ত স্বভাবের হলেও ছিলেন প্রতিবাদী, জেদি, মেধাবী ও সাহসী। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিশেষ দায়িত্ব পালনে ভারতের গৌহাটির নওপং কলেজে ভর্তি হন। সেখানে অবস্থানকালে অনেকগুলো অঞ্চলের ভাষা আয়ত্ত করেন এবং ধীরে ধীরে নকশালপন্থীদের সঙ্গে জড়িত হন। এখানে অস্ত্র গোলাবারুদ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শপথ নেন জগৎজ্যোতি। যোগ দেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ইকো-১ ট্রেনিং ক্যাম্পে। বাংলার ভাটি অঞ্চল সুনামগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোনা এবং হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের ৭ নং সেক্টর। এ সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব পান তৎকালীন মেজর শওকত আলী। ৫ নং সেক্টরকে কয়েকটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অধীনে জগৎজ্যোতি বিভিন্ন আক্রমণে অংশগ্রহণ করে সফল্য পান। জগৎজ্যোতি ইংরেজি, হিন্দি, গৌহাটির আঞ্চলিক ভাষায় পারদর্শী হওয়ার সুবাদে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ সহজতর হয়। ফলে দাস পার্টির জন্য তিনি আধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহে সমর্থ হন। দাস পার্টির উল্লেখযোগ্য একটি অপারেশন ছিল পাকবাহিনীর বার্জ আক্রমণ। ১৯৭১-এর ১৬ অক্টোবর পাকবাহিনীর সেই বার্জটিতে আক্রমণ চালিয়ে নিমজ্জিত করে। দাস বাহিনীর গেরিলা অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তানী শত্রু ঘাঁটি ধ্বংস শুরু করে। পরবর্তীতে পাহাড়পুর অপারেশন, বানিয়াচংয়ে কার্গো বিধ্বস্ত করা, বানিয়াচং থানা অপারেশনসহ বেশ কটি ছোট-বড় অপারেশন দাস পার্টির যোদ্ধারা সফলভাবে সম্পন্ন করে। দাসপার্টির অব্যাহত অভিযানের মুখে পাকিস্তানিরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত নৌচলাচল বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। জগৎজ্যোতি যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে দিরাই, শাল্লা, রানীগঞ্জ ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় সফল অভিযান চালিয়ে অসংখ্য রাজাকার সদস্যদের আটক করে। গেরিলা যুদ্ধবিদ্যায় তিনি ছিলেন পারদর্শী। একক চেষ্টায় মাত্র একটি হালকা মেশিনগান নিয়ে তিনি জামালগঞ্জ থানা দখল করে নেন। মাত্র এক সেকশন (১০-১২ জন) গেরিলা যোদ্ধা নিয়ে তিনি শ্রীপুর ও খালিয়াজুরী শত্রু মুক্ত করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বিস্তীর্ণ ভাটি অঞ্চলে জগৎজ্যোতি ও তার দাসপার্টি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম ছিল।
মুক্তিযুদ্ধের স্বল্পতম সময়ে যার নেতৃত্বে এতগুলো বীরত্বপূর্ণ সফল অভিযান পরিচালিত হয়েছিল, সেই জগৎজ্যোতি দাস জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশের জন্য নিজেকে আত্মোৎসর্গ করেন ১৯৭১ সালের নভেম্বরের ১৬ তারিখ। সামান্য গোলা-বারুদ নিয়ে দাস-পার্টির সঙ্গে প্রশিক্ষিত পাক-বাহিনীর বিশাল বহরের এক অসম যুদ্ধ। গোলা-বারুদ কমে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যায় দলটি। পাক-বাহিনীর আক্রমণে এক সময়ে টিকতে না পেরে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় দাস-পার্টির সদস্যরা। এক পর্যায়ে তার সদস্যদের ফিরে যাবার নির্দেশ দেন, কিন্তু তিনজন সহযোদ্ধা তাকে অনুসরণ করে যুদ্ধ চালিয়ে যান। মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিঝরা এ দিনে ভাটি বাংলার অন্যতম অকুতোভয় গেরিলা কমান্ডার জগৎজ্যোতি দাস শ্যাম হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নিজ জন্মস্থান জলসুখা গ্রাম থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তরে বদলপুর গ্রামের দক্ষিণে কৈয়ার বিল নামক স্থানে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে এক সহযোদ্ধাসহ প্রাণ হারান। শত্রুরা তার প্রাণহীন দেহ নিয়ে মেতে উঠে উন্মত্ত খেলায়। খুঁটির সাথে পেরেক ঢুকিয়ে তাকে টাঙিয়ে রাখে দু’দিন। পরে এই বীরের দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয় কুশিয়ারা নদীতে। যে জগৎজ্যোতির বীরত্বপূর্ণ মৃত্যুতে সারাদেশের মুক্তিকামী মানুষ স্তম্ভিত স্তব্ধ ‘৭১’র অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের পক্ষে ‘স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র’, ‘আকাশবাণী বেতার কেন্দ্র’ ১৬ নভেম্বর রাতেই বিশেষ বুলেটিন প্রচার করে বলেছে- তাঁকে “বীরশ্রেষ্ঠ জগৎজ্যোতি দাস” নামে আখ্যায়িত করে মরণোত্তর সর্বোচ্চ খেতাবে ভূষিত করা হবে। কিন্তু পরে তা আর দেয়া হয়নি, কারণটাও জানা যায়নি। দেশের বিপদগ্রস্ত মুক্তিকামী মানুষ যে খরবটি শুনে চোখের জল মুছেছে সেই জগৎজ্যোতিকে ১৯৭৩ সালে খেতাব বণ্টনে আজ তিন নম্বর খেতাবে ‘বীর বিক্রম’ লিখা হচ্ছে। স্থানীয়, জাতীয় বিভিন্ন তালিকায় তাঁর নাম তিন নম্বরে কলঙ্ক ছড়াচ্ছে। আজ অকুতভয় মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ৭১তম জন্মবার্ষিকী। বীর বিক্রম জগৎজ্যোতি দাসের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই
লেখাটি গুরুত্বসহকারে পাঠঅন্তে বীর মুক্তিযোদ্ধার
প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭
মেঘশুভ্রনীল বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটি কষ্টসাধ্য ও তথ্যবহুল লেখার জন্যে। জগৎজ্যোতি দাস সম্পর্কে জানার আমার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। আপনি কি অনুগ্রহ করে আমাকে কিছু রেফারেন্স-এর সন্ধান জানাবেন? ধন্যবাদ।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মেঘশুভ্রনীল,
আপনার আগ্রহকে সাধুবাদ জানাই।
আপনি হাসান মোরশেদের দাস পার্টির খোঁজে পড়ে দেখতে পারেন। রকমারীতে অর্ডার দিলেই ঘরে বসে পেয়ে যাবেন।
তবে এই মূহুর্তে তাদের সার্ভিস খোলা আছে কিনা জানিনা।
উপরের লিংকে ক্লিক করে যেনে নিতে পারেন।
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পদক বঞ্চনা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে কেউ কি যোগাযোগ করেছিল? কারণ উদঘাটনের চেষ্টা করেছিল?
শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সশ্রদ্ধ অভিবাদন।
তার বিদেহী আত্মার পারলৌকিক কল্যানের শুভকামনা রইল।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ভৃগু দাদা।জগৎজ্যোতিকে প্রতিশ্রুত সম্মান কেন দেওয়া হলো না?
৪৮ বছরেও এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
এ নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে কিন্তু কোন ব্যত্যয় ঘটেনি সরকারী সিদ্ধান্তের।
ঘোষণা দিয়েও কেন জগৎজ্যোতিকে মরণোত্তর সর্বোচ্চ খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ স
ম্মানে ভূষিত করা হলো না সে প্রশ্ন আজও অমীমাংসিত। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে
অনেক মুক্তিযোদ্ধারও।
এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যায় আরেক অকুতোভয় যোদ্ধা মাহবুবুর রব সাদীর কথা।
হবিগঞ্জ জেলার এই তরুণ মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাপ্ত
বীরপ্রতীক খেতাব অবলীলায় প্রত্যাখ্যান করে জাতীয় দৈনিকে বিবৃতি দিয়েছিলেন।
তিনি ৪নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ছিল জালালপুর
সাবসেক্টর। ১৯৭২ সালে খেতাব ঘোষিত হওয়ার পরই তিনি খেতাব প্রত্যাখ্যান করে
সংবাদপত্রে বিবৃতি দেন। যদিও সে বিবৃতি ছাপা হয়নি সে সময়। ১৯৯২ সালে ২৩তম স্বাধী
জ’ পত্রিকায় দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সাদী বলেন, ‘বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব পেয়েছেন যে সাতজন,
তাঁদের সবাই সামরিক বাহিনীর সদস্য। তাহলে কি সামরিক বাহিনীর সদস্যের বাইরে অন্য
একজনও মুক্তিযুদ্ধে এমন মাত্রার বীরত্ব প্রদর্শন করেননি? আমি নিজে অন্তত তিনজনের কথা জানি,
যাঁদের বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব পাওয়া উচিত বলে মনে করি। এরা হলেন আমার সাব-সেক্টরের দ্বিতীয়
কমান্ডার শহীদ নিজাম উদ্দিন বীরউত্তম, তাঁর গাইড রফিক বীরপ্রতীক ও ৫নং সেক্টরের জগৎজ্যোতি দাস।’
৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১২
সোহানী বলেছেন: আমি জানতাম না। কেন এমন হলো? এমন একজন সূর্য্য সন্তানকে কেন আমরা অবহেলা করছি?
অনেকগুলো কেন এর উত্তর খুঁজছি। কেউ কি এর উত্তর জানে??
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সোহানী আপু
আমি জানিনা কি জন্য ঘোষণা দিয়েও তাকে বীর শ্রেষ্ঠ খেতাব দেওয়া হলো না। তবে এটুকু জানি
‘কেউ কথা রাখেনি’ —তেত্রিশ বছর কেটে যাওয়ার পর এমন আক্ষেপ করেছিলেন
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। জগৎজ্যোতি দাসের জন্য সে আক্ষেপ পঁয়তাল্লিশ বছরের।
৪৮ বছরের প্রতীক্ষার পরও জগৎজ্যোতি দাসকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ই বেতারবার্তায় জগৎজ্যোতিকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব প্রদানের ঘোষণা
দেওয়া হলেও ৪৮ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২২
Mkjoudge বলেছেন: আসলেই অনেক অজানা রয়ে গেল।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি।
সুযোগ এখনো আছে। জানতে
চাইলে দ্বার খোলা, পড়ুন, জানুন।
৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আমার মন মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়েছে আছে।
ব্লগে আমি তো কাউকে বাজে মন্তব্য করি না। তাহলে আমাকে কেন ------------
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমিও দুঃখিত রাজীব খা্ন। আজ যেমন্ আপনার মন খারাপ হয়েছে
তেমনি আমারও হয়ে ছিলো আপনার পোস্টে আমার বিরুদ্ধে
কয়েক জনার কুৎসিত মন্তব্যে। আপনি তখন তাদের প্রশ্রয়
দিয়েছিলেন। আমি কাউকে প্রশ্রয় দেইনা এবং ন্যায্য কথা
বলতে পিছপা ও হইনা। ভুলে যান দুষ্ট লোকেদের যা স্বভাব
তাই করেছে। তেতুল গাছে মিষ্টি আম পাওয়ার আশা ছাড়ুন্।
আল্লাহ তাদের হেদায়েত নসীব্ করুন। আমিন
৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৯
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: এই খবর তো জানা আছিল না গুরু
নতুন জিনিস জানলাম। আচ্ছা এইডা কী জানেন, ক্যামনে কইরা এই বিশয়গুলা নির্ধারণ করে; মানে কে বীরশ্রেষ্ঠ আর কে বীর বিক্রম আর কেই বা বীর উত্তম???
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ক্ষুদ্র খাদেম আপনার অবগতির জন্য বলছি
বীর শ্রেষ্ঠ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরষ্কার।
যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী
যোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়।
আর বীর উত্তম বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরষ্কার।
জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় উপাধি
দেওয়া হয়- ৩ ধরনের (বীর উত্তম, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক)
৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৯
জোবাইর বলেছেন: বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে ঘোষণা পাওয়া বীর বিক্রম জগৎজ্যোতি দাসের তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টের জন্য নূরু ভাইকে ধন্যবাদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের ব্যাপারে আমাদের মিডিয়াও অনেকটা নীরব। অন্যান্য শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রতি বছর স্বাধীনতা/বিজয় দিবসে আলোচনায় আসলেও জগৎজ্যোতি দাসের নাম চোখে পড়ে না ।
আমি যতটুকু জানি, স্বাধীনতার পরপরই সরকার নতুনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, 'বীরশ্রেষ্ঠ' খেতাব শুধু মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সাথে লড়াই করা সামরিক বাহিনীর লোকদের দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে সম্ভবত সামরিক বাহিনীর প্রভাব ছিল! যার কারণে 'বীরশ্রেষ্ঠ' পেয়েছেন যে সাতজন, তাঁদের সবাই সামরিক বাহিনীর সদস্য। আসলে খেতাব দেওয়ার সময় সামরিক-বেসামরিক ভেদাভেদ না করে মুক্তিযুদ্ধে কার অবদান কত বেশি ছিল সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিহত সবাইকে আমরা সন্মান জানানোর জন্য 'শহীদ' বলে থাকি। আমি যতটুকু জানি 'শহীদ' শব্দটি এখানে প্রতিকী হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধটি ছিল স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ, কোনো ধর্মীয় যুদ্ধ নয়। কিছু অতি উৎসাহী ধর্মান্ধ লোক আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা অমুসলিম মুক্তিযোদ্ধাদের 'শহীদ' বলার ব্যাপারে আপত্তি করে। আমার মনে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের নাম ভুলে যাওয়ার পেছনে এ ধরনের নীচ মন-মানসিকতা দায়ী।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৫১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জোবাইর ভাই আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকার
বিশ্লেষণের জন্য। দেশের জন্য দেশেে স্বার্থ
আছে এমন আন্দোলনে যারা প্রাণ উৎসর্গ
করে তারাই শহীদ। এখানে ধর্ম কোন
ইস্যু হতে পারেনা। সব ধর্মের লোকই
শহীদের মর্যাদা পায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি দাসের
বিষটা এখনো রহস্যাবৃত!!
৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫১
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: বীর বিক্রম জগৎজ্যোতি দাসের জন্মবার্ষিকীতে
................................................................
আমার থাকল ফুলেল শুভেচ্ছা।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:১৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ স্বপ্নের শঙ্খচিল ভাগ্য বিড়ম্বিত
বীর বিক্রম জগৎজ্যোতি দাসের জন্মবার্ষিকীতে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
১০| ২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: না, আপনাকে কেউ বাজে মন্তব্য করলে আমি তাকে ছেড়ে দিব না।
নিশ্চই আমার বিবেক আছে। ভালো মন্দ বুঝি।
২৭ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৩১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমরা সবাই অশ্লীল ও কুরিচিপূর্ণ্ ব্লগারদের বিরুদ্ধে
একজোট হলে ওরা লেজ গুটিয়ে পালাবে। ওদেরকে
শুধুই ঘৃনা ও থুথু !
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যারা যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যু বরন করেছে,তাদের কথা পড়তে গেলে মনটা আবেগ প্রবন হয়ে যায়।চোখের সামনে যুদ্ধরত অবস্থায় তকজনকে মরতে দেখেছি।এমন একটা পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।