নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহলান সাহলান মাহে রামাদানঃ রোযা প্রত্যেক ঈমানদার নর-নারীদের জন্য ফরয

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:০২


আহলান সাহলামন মাহে রামাদান। বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল শনিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হলো সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। আজ দিবাগত রাতে এশার নামাজের পরে তারাবি নামাজের মধ্যদিয়ে শুরু হবে সিয়াম সাধনা ও তাকওয়া অর্জনের মাস রামাদান। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবারে এক ভিন্ন আমেজে শুরু হচ্ছে পবিত্র কোরআন শরিফ নাজিলের এই মাসটি। পবিত্র রমজান মাসের এই উৎসবেও পড়েছে করোনার করাল ছায়া। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই দোরগোড়ায় পবিত্র রমজান। শত শত বছর ধরে চর্চা করে আসা এই দেশের মুসলিমরা রোযার রাখার পূর্বে তারাবি নামাজ পড়তে অভ্যস্ত। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্বেই মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ রয়েছে। শুধু নিজেকে রক্ষা নয়, সেই সঙ্গে নিজের পাশে থাকা মুসলিম ভাইকে রক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আগামীকাল শনিবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হবে মুসলিমদের জন্য সবচাইতে পবিত্র মাস রমযান। আর এই মাসকে ঘিরে আবারো বিতর্ক শুরু হয়েছে মসজিদে নামাজ পড়ার বিষয়ে। করোনা সংক্রমণ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১০ জন মুসল্লি ও দু’জন হাফেজসহ মোট ১২ জন রমজান মাসে মসজিদগুলোতে এশা ও তারাবির নামাজ আদায়ের সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনও বলছে, স্টাফ ছাড়া অর্থাৎ খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেমরা ছাড়া কেউ মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করতে পারবেন না। ঘরেই নামাজ আদায় করতে হবে। নভেল করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় পবিত্র রমজান মাসে তারাবির নামাজ মসজিদের পরিবর্তে ঘরে পড়ার জন মুসল্লিদের আহ্বান জানিয়েছে সরকার। অন্যথায় স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন) দেলোয়ারা বেগম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয়েছে।করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুই পবিত্র মসজিদ মসজিদুল হারাম ও হারামাইন শরিফাইনে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে তারাবির নামাজ। মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীতে ১০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। বিশ রাকাতের স্থলে তারাবি হবে পাঁচ সালামে মোট দশ রাকাত। দুই পবিত্র মসজিদে ইতিকাফও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে মুসল্লিদের তারাবি, ইফতার ও ঈদের নামাজও ঘরে আদায়ের পরামর্শ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বেতরের নামাজে কুনুতের দোয়া সংক্ষেপ তবে অর্থবহ করে উপস্থাপন করা হবে

রামাদান, কল্যাণ ও বরকতের মাস; রহমত, মাগফিরাত এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস রোযা রাখার মাস। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফযীলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন। তবে এই রোযা কবে থেকে চালু হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ পাওয়া খুবই মুশকিল। আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে বলেন,
" হে ঈমানদারগণ! তোমদের উপর রোযা ফরয করে দেয়া হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার ।’’ (সূরা আল-বাকারাহঃ ১৮৩)
এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, মুহাম্মদ (স.)-এর পূর্ববর্তী উম্মতগণের ওপরও রোজা ফরজ ছিল।
(ফাতহুল বারী ৪র্থ খণ্ড ১০২-১০৩ পৃষ্ঠা) বর্ণিতঃ হযরত আদম (আঃ) যখন নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন এবং তারপর তাওবাহ করেছিলেন তখন ৩০ দিন পর্যন্ত তাঁর তাওবাহ কবুল হয়নি। ৩০ দিন পর তার তাওবাহ কবুল হয়। তারপর তাঁর সন্তানদের উপরে ৩০টি রোজা ফরজ করে দেয়া হয়।
মুসলমানদের জন্য সিয়াম পালন তথা রোযা রাখা ফরয এবং ইসলামের একটি অন্যতম রুকন। পবিত্র রামাদান মাসে যেসব দায়িত্ব ও কাজ শরীয়ত কর্তৃক অর্পিত হয়েছে কিংবা যা পালনে শরীয়ত আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে ও যা বর্জন করতে নির্দেশ দিয়েছে। তা নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। রামাদান মাসে শরীয়ত যে নির্দেশ দিয়েছে সেগুলো হলোঃ রমাদান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজই হল সিয়াম। সিয়াম হল ফজরের উদয়লগ্ন থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়্যাতসহ পানাহার ও যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা।
১) রামাদান আল-কুরআনের মাসঃ আল্লাহ এই মাসকে কুরআন নাযিলের মর্যাদাপূর্ণ মাস হিসেবে চয়ন করেছেন। তিনি বলেন-রামাদান মাস – এতে কুরআন নাযিল হয়েছে।’’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫)
২) পবিত্র এ মাসে জান্নাতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত রাখা হয়, জাহান্নামের দ্বারসমূহ রুদ্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তান ও দুষ্ট জিনদের শৃংখলিত করে রাখা হয়।
৩) এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল ক্বদেরর ন্যায় বরকতময় রজনী, শান্তিময় এ রজনী, ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল-ক্বদরঃ ৩-৫) মহান আল্লাহ বলেন-লাইলাতুল ক্বদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।এ রাত্রে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হন প্রত্যেক কাজে, তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।
৪) এ মাস দো‘আ কবুলের মাসঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘(রামাদানের) প্রতি দিন ও রাতে আল্লাহর কাছে বান্দার দো‘আ কবুল হয়ে থাকে এবং বহু বান্দা জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। সহীহ সনদে ইমাম আহমদ কতৃক বর্ণিত, হাদীস নং ৭৪৫০)। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে, তারা যেন এ মাসে রোযা পালন করে।’’ (সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৫)। রোযার গুরুত্ব আরো প্রকটিত হয় সে সব ফযীলতের দ্বারা, যাদ্বারা একে বিশেষত্ব দান করা হয়েছে। সে সবের মধ্যে রয়েছেঃ
১. রোযার পুরস্কার আল্লাহ স্বয়ং নিজে প্রদান করবেনঃ
একটি হাদীসে কুদসীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-আল্লাহ বলেন, ‘‘বনী আদমের সকল আমল তার জন্য, অবশ্য রোযার কথা আলাদা, কেননা রোযা আমার জন্য এবং আমিই এর পুরস্কার দিব।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫, ৫৫৮৩ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬০)
২. রোযা রাখা গোনাহের কাফফারা স্বরূপ এবং ক্ষমালাভের উপায়ঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রামাদান মাসে রোযা রাখবে, তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯১০ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮১৭)
৩. রোযা জান্নাত লাভের পথঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে যাকে বলা হয় ‘রাইয়ান’ – কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে রোযাদারগণ প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না….. রোযাদারগণ প্রবেশ করলে এ দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৯৭ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৬ )
৪. রোযাদারের জন্য রোযা শাফায়াত করবেঃ
উত্তম সনদে ইমাম আহমাদ ও হাকেম বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘‘রোযা এবং কুরআন কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোযা বলবে, হে রব! আমি তাকে দিবসে পানাহার ও কামনা চারিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি।
অতএব, তার ব্যাপারে আমাকে শাফায়াত করার অনুমতি দিন…..।’’ (মুসনাদ, হাদীস নং ৬৬২৬, আল-মুস্তাদরাক, হাদীস নং ২০৩৬)
৫. রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তমঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তার শপথ! রোযাদারের মুখের গন্ধ কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মিসকের চেয়েও সুগন্ধিময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৪ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬২)
৬. রোযা ইহ-পরকালে সুখ-শান্তি লাভের উপায়ঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-রোযাদারের জন্য দু’টো খুশীর সময় রয়েছে।
একটি হলো ইফতারের সময় এবং অন্যটি স্বীয় প্রভু আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার সময়।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫ ও সহীহ মুসলিম, হদীস নং ২৭৬৩)
৭. রোযা জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তিলাভের ঢাল স্বরূপঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোযা রাখে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বৎসরের দূরত্বে নিয়ে যান।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৮৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৭ )
ইমাম আহমাদ বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেন – রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘রোযা ঢাল স্বরূপ-যদ্বারা বান্দা নিজেকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করতে পারে, যেভাবে তোমাদের কেউ একজন যুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করে।’’ (মুসনাদ, হাদীস নং ১৭৯০৯)
সিয়ামের সাথে সংশ্লিষ্ট আমল সমূহঃ
১. রোযার নিয়্যাতঃ
রাতেই রোযার নিয়্যাত করতে হবে। সুনান আন-নাসাঈ গ্রন্থে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘যে ব্যক্তি ফজর উদয়ের পূর্বে, রাতেই রোযার নিয়্যাত করেনা, তার রোযা হবে না।’’ (সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস নং ২৩৩২)
২. দেরী করে সেহেরী খাওয়াঃ
সেহেরী খাওয়া একটি বরকতময় বৈশিষ্ট্য যা আল্লাহ এ উম্মাতকে দান করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘আমাদের রোযা ও আহলে কিতাবের রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহেরী খাওয়া।’’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৪)। সেহেরী বরকতময় হওয়ার প্রমাণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী-‘‘তোমরা সেহেরী খাও, কেননা সেহেরীতে রয়েছে বরকত।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২৩ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৩ )। দেরী করে সেহেরী খাওয়ার দলীল হল, আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু যায়েদ বিন সাবেত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন,‘আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সেহেরী খেয়েছি। অত:পর তিনি নামাযে দাঁড়ালেন।’’ আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন জিজ্ঞাসা করলেন, আযান ও সেহেরীর মধ্যে কতটুকু সময়ের পার্থক্য ছিল? যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘‘পঞ্চাশটি আয়াত পরিমাণ।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২১ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৬ )
৩. তাড়াতাড়ি ইফতার করাঃ
সূর্য অস্ত যাওয়া নিশ্চিত হলে তাড়াতাড়ি ইফতার করা রোযাদারের জন্য মুস্তাহাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের উপর থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা অনতিবিলম্বে ইফতার করবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৫৬ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৬০৮)
৪. কি দিয়ে ইফতার করতে হবেঃ
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘রুতাব’ (শুকনা নয় এমন) খেজুর দিয়ে নামাযের আগে ইফতার করতেন, রুতাব পাওয়া না গেলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাও পাওয়া না গেলে তিনি কয়েক ঢোক পানি পানে ইফতার করতেন।’’ (উত্তম সনদে ইমাম আহমাদ, হাদীস নং ১২৬৭৬ ও আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৫৬)
৫. রোযাদারকে ইফতার করানোঃ
সহীহ সনদে তিরমিযী ও আহমাদ বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করায়, সে উক্ত রোযাদারের সাওয়াবের কোনরূপ ঘাটিত না করেই তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে।’’ (সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ৮০৭ ও মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১৭০৩৩)
যে সকল আমলের মাধ্যমে মু’মিন ব্যক্তি রামাদান মাসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে, তন্মধ্যে কিয়ামুল লাইল সবচেয়ে উত্তম। কিয়ামুল লাইল তারাবীহ, তাহজ্জুদ এবং রাতের যে কোন নফল নামায এর অন্তর্ভূক্ত। কিয়ামুল লাইল ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবীদের নিয়মিত আমল। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-‘‘কিয়ামুল লাইল ত্যাগ করো না। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা ত্যাগ করতেন না। অসুস্থ হলে কিংবা অলসতা বোধ করলে তিনি বসে নামায পড়তেন।’’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২৬১১৪ ও সুনান আবি দাঊদ, হাদীস নং ১৩০৭)। রামাদানে কিয়ামুল লাইলের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘যে ব্যক্তি রামাদান মাসে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় (রাতের নামাযে) দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮১৫)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামায”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ২৮১২)। রাতের নামাযের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন-‘‘রহমানের বান্দাহ তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খ ব্যক্তিরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে কথা বলে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’ এবং যারা রাত্রিযাপন করে তাদের পানলকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে’’। (সূরা আল-ফুরকান: ৬৩-৬৪) আল্লাহ অন্যত্র বলেন-‘‘রাতের কিয়দংশে তারা নিদ্রা যেত এবং রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।’’ (সূরা আয-যারিয়াত: ১৭-১৮)
রামাদান মাসে কুরআন তেলাওয়াতে ফজিলতঃ
রামাদান মাস কুরআন নাযিলের মাস। এমাসে কুরআন তেলাওয়াত করা এবং এর মর্ম উপলব্ধি করায় অন্যান্য মাসের চেয়ে বেশী নেকী পাওয়া যায়। অর্থ না বুঝে, চিন্তাভাবনা না করে অন্তরে আল্লাহ ভীতি ও বিনম্রভাব সৃষ্টি না করে কবিতার মত কুরআন আবৃত্তি করে যাওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ নিজেই বলেন-‘‘এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিগণ গ্রহণ করে উপদেশ।’’ (সূরা সোয়াদ: ২৯) আল্লাহ তালা আরো বলেন-"সুতরাং যে আমার দেয়া হিদায়াতের পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং দু:খ কষ্টে পতিত হবে না।’’ (সূরা ত্বা-হা: ১২৩)।
এ মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরীলের সাথে কুরআন পাঠ করতেন। তাঁর সীরাত অনুসরণ করে প্রত্যেক মু’মিনের উচিত এ মাসে বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করা, বুঝা এবং আমল করা। ইবনু আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-“জিবরীল রামাদানের প্রতি রাতে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাকে নিয়ে কুরআন পাঠ করতেন”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৪৮)
যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, তার ব্যাপারে আল্লাহ এ নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, সে দুনিয়ায় ভ্রষ্ট হবে না এবং আখিরাতে দুর্ভাগা – হতভাগাদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু রামাদানে প্রতিদিন একবার কুরআন খতম করতেন। সালাফে সালেহীন নামাযে ও নামাযের বাইরে কুরআন খতম করতেন। রামাদানের কিয়ামুল লাইলে তাদের কেউ তিনদিনে, কেউ সাতদিনে এবং কেউ দশদিনে কুরআন খতম করতেন।
রামাদান মাসে দান খয়রাত ও সদকা প্রদানঃ
পবিত্র রামাদান মাসে আল্লাহর রাস্তায় বেশী বেশী দান ও সদকা করা আল্লাহর রাস্তায় দান-সদকা ও ব্যয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এ মাসে সামর্থবান ব্যক্তিবর্গ এ ইবাদাত পালন করে সে ব্যাপারে ইসলাম ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করেছে। কেননা রামাদান মাসে এ ইবাদাতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব আরো বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। ইমাম বুখারী ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন যে, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল মানুষের চেয়ে বেশী দানশীল ছিলেন।
আর রামাদান মাসে যখন জিবরীল তার সাথে সাক্ষাতে মিলিত হতেন তখন তিনি আরো দানশীল হয়ে উঠতেন"। জিবরীলের সাক্ষাতে তিনি বেগবান বায়ুর চেয়েও বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৪৮)
রামাদান মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দানশীলতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ মূলত তিনটিঃ
১। রামাদান মাসে দান-সদকাসহ সকল উত্তম আমলের সাওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। কুরআনের বহু আয়াতে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন-‘‘কে সে, যে আল্লাহকে করযে হাসানা প্রদান করবে? অত:পর তিনি তার জন্য তা বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন।’’ (সূরা আল-বাকারাহ : ২৪৫)
২। “যারা নিজেদের ধনসম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস্যবীজ, যা সাতটি শীস উৎপাদন করে, প্রত্যেক শীষে একশত শস্যদানা । আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন।আর আল্লাহ দানশীল সর্বজ্ঞ।’’ (সূরা আল-বাকারাহ: ২৬১)
‘‘দেখ, তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে। অথচ তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত।’’(সূরা মুহাম্মাদ: ৩৮)
৩। রামাদানের প্রতি রাতে জিবরীলের সাক্ষাতে তিনি ভীষণভাবে দান করতে অনুপ্রাণিত হতেন। যেমন সহীহ বুখারীর বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে।
রামাদান মাসে উমরা পালনের ফজিলতঃ
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘রামাদান মাসে উমরা করা হজ্জের সমতুল্য’’ অথবা ‘‘আমার সাথে হজ্জ করার সমতুল্য’’। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং১৬৯০ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৫৬)
ইতেকাফঃ রামাদান মাসের শেষ দশদিন ইতেকাফে বসা অতি উত্তম ইবাদাত। শুরুতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাদানের প্রথম দশদিন ইতেকাফে বসেন। এরপর লাইলাতুল ক্বদরের অনুসন্ধানে মাঝের দশদিন ইতেকাফে বসেন। এরপর যখন লাইলাতুল ক্বদর শেষ দশদিনে হওয়া স্পষ্ট হয়ে গেল, তখন থেকে তিনি শেষ দশদিন ইতেকাফে বসতে লাগলেন। অত:পর তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীগণ ইতেকাফে বসেন। হাদীসে এসেছে, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাদানের প্রথম দশদিন ইতেকাফ করেন। (সাহাবারা বলেন) আর আমরাও তার সাথে ইতেকাফ করলাম। এরপর জিবরীল আসলেন এবং বললেন, যা আপনি অনুসন্ধান করছেন তা আপনার সামনে রয়েছে। এরপর তিনি মাঝের দশদিন ইতেকাফ করলেন। (সাহাবারা বলেন)আমরাও তার সাথে ইতেকাফ করলাম। এরপর জিবরীল আসলেন এবং বললেন, যা আপনি অনুসন্ধান করছেন তা আপনার সামনে রয়েছে। তারপর বিশ রামাদান নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবা দিলেন এবং বললেন, যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ইতেকাফ করেছে সে যেন ফিরে আসে…..”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৮০)
রামাদানের শেষ দশদিনে লাইলাতুল ক্বদরের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত থাকাঃ এ সম্পর্কে আরো বহু হাদীস রয়েছে যার সারকথা হলো – লাইলাতুল ক্বদর রামাদানের শেষ দশদিনের যে কোন রাত্রে হতে পারে। তবে বেজোড় রাত্রিসমুহের যে কোন একটিতে হুওয়ার সম্ভাবনা বেশী। অনেক উলামার মতে – সবচেয়ে বেশী সম্ভাবনাময় হল ২৭ তম রাত্রি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় ক্বদরের রাত্রিতে (নামাযে) দাঁড়ায়, তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হল”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০২)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাদানের শেষ দশ রাতে নিজে লাইলাতুল ক্বদরের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত থাকতেন এবং পরিবার পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। ইমাম মুসলিম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন-‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাদানের শেষ দশদিনে আল্লাহর ইবাদাতে এতটা পরিশ্রম করতেন যা তিনি অন্য সময় করতেন না”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৪৫) সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-‘‘যখন রামাদানের শেষ দশদিন এসে যেত, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরনের কাপড় মজবুত করে বাঁধতেন। (অর্থাৎ দৃঢ়তার সাথে প্রস্তুতি নিতেন) এবং নিজে রাত্রে জাগতেন এবং পরিবার পরিজনকেও জাগাতেন”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯২০ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৪৪) তিনি সাহাবাদেরকেও লাইতুল ক্বদর অনুসন্ধান এ ব্যাপৃত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-“তোমরা শেষ দশদিনের বেজোড় রাতে এ রাত্রি তালাশ করো”। (সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ৭৯২)
রামাদান মাসে বেশী বেশী দো‘আ, যিকর এবং ইস্তেগফার করার ফজিলতঃ
রামাদান মাস দো‘আ কবুল হওয়ার খুবই উপযোগী সময়, যেমন প্রবন্ধের শুরুতে একটি হাদীসের বর্ণনায় বলা হয়েছে। রামাদানের দিনগুলোতে পুরো সময়টাই ফযীলতময়। তাই সকলের উচিত এ বরকতময় সময়ের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা- দো‘আ, যিকর ও ইসস্তেগফারের মাধ্যমে। তাই পবিত্র রামাদান মাসে সকল প্রকার ইবাদতে নিজেকে ব্যাপৃত রাখা উত্তম। সালাফে সালেহীনও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুকরণে এ মাসকে অধিক গুরুত্ব দিতেন এবং সকল ইবাদাতের জন্য অবসর হয়ে যেতেন। এমন কি ইমাম মলেক রাহেমাহুল্লাহ ও ইমাম যুহরী রাহেমাহুল্লার ন্যায় ব্যক্তিবর্গও শিক্ষাদান ও ফাতওয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছেড়ে বিশেষ ইবাদাত যা ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে – তার জন্য নিজেদের নিয়োজিত রাখতেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রামাদান মাসে অন্য মাসের চেয়েও বেশী বেশী ইবাদাত করতেন। আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. বলেন, ‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ছিল রামাদান মাসে সকল ধরনের ইবাদাত বেশী বেশী করা। তিনি ছিলেন সবচেয়ে দানশীল এবং রামাদানে আরো বেশী দানশীল হয়ে যেতেন, কেননা এ সময়ে তিনি সদকা, ইহসান ও কুরআন তেলাওয়াত, নামায, যিকর ও ইতেকাফ ইত্যাদি সকল প্রকার ইবাদাত অধিক পরিমাণে করতেন। তিনি রামাদানে এমন বিশেষ ইবাদাত সমূহ পালন করতেন যা অন্য মাসগুলোতে করতেন না। (যাদুল মাআ‘দ ১/৩২১)
এমাসের বিশেষ সতর্কতাঃ
রামাদান মাস ফযীলতের মাস এবং আল্লাহর ইবাদাতের প্রশিক্ষণ লাভের মাস হওয়ায় এ মাসে সর্বপ্রকার গোনাহের কাজ পরিত্যাগ করা অধিক বাঞ্ছনীয়। কেননা রামাদান মাসে সৎকাজের সওয়াব ও নেকী বহুগুণে বৃদ্ধি পায়, তাই রামাদানের সম্মান ও ফযীলতের কারণে এ মাসে সংঘটিত যে কোন পাপের শাস্তি অন্য সময়ের তুলনায় ভয়াবহ হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই পবিত্র এ মাসে শরীয়ত সকল প্রকার পাপ কাজ বর্জন করতে নির্দেশ দিয়েছে। শরীয়তের পক্ষ থেকে মূলত: ছোট-বড় সকল গোনাহ ও পাপ সর্বদা বর্জন করার নির্দেশ এসেছে। এজন্যেই রোযাদারদের উচিত তাকওয়া বিরোধী সকল প্রকার মিথ্যা কথা ও কাজ পরিপূর্ণভাবে বর্জন করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘যে ব্যক্তি (রোযা রেখে) মিথ্যা কথা ও সে অনুযায়ী কাজ করা বর্জন করে না তবে তার শুধু খাদ্য ও পানীয় বর্জন করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৪) ‘‘মিথ্যা কথা ও তদনুযায়ী কাজ’’ কথাটি দ্বারা মূলত: রোযা অবস্থায় উম্মতের সকলকে পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে সাবধান করা হয়েছে। আর ‘‘আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই’’ কথাটি দ্বারা রোযা অসম্পূর্ণ হওয়ার, কিংবা কবুল না হওয়ার অথবা রোযার সওয়াব না হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
অন্য আরেকটি হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘‘তোমাদের কেউ রোযার দিনে অশ্লীল কথা যেন না বলে এবং শোরগোল ও চেঁচামেচি না করে। কেউ তাকে গালমন্দ করলে বা তার সাথে ঝগড়া করলে শুধু বলবে, আমি রোযাদার ।’’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮০৫)
উপরোক্ত হাদীস দু’টোর আলোকে সারকথায় আমরা বলতে পারি যে, আমাদের ঈমান, আমল ঠিক রেখে ইসলামী বিরোধী সকল কাজ বিশেষভাবে রামাদানে এবং আমভাবে সর্বদাই বর্জন করতে হবে। তাহলে আমাদের সিয়াম সাধনা হবে অর্থবহ এবং এ সাধনার মূল লক্ষ্য তাকওয়া অর্জন করা হবে সহজসাধ্য।
উপসংহারে বলা যায় ত্বাকওয়া অর্জনের এ মুবারক মাসে মুমিনদের উপর অর্পিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, সৃষ্টি হয়েছে পূণ্য অর্জনের বিশাল সুযোগ এবং প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে মহান চরিত্র অর্জনের সুন্দর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। মুমিনদের উপর এ মাসের অর্পিত দায়িত্ব পালন এবং সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আজ সারা বিশ্বের মুসলিমদের উচিত চারিত্রিক অধ:পতন থেকে নিজেদের রক্ষা করা, নেতিয়ে পড়া চেতনাকে জাগ্রত করা এবং সকল প্রকার অনাহুত শক্তির বলয় থেকে মুক্ত হয়ে হক প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞাকে সুদৃঢ় করা, যাতে তারা রিসালাতের পবিত্র দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে এবং কুরআন নাযিলের এ মাসে কুরআনের মর্ম অনুধাবন করতে পারে, তা থেকে হিদায়াত লাভ করতে পারে এবং জীবেনের সর্বক্ষেত্রে একেই অনুসরণের একমাত্র মত ও পথ রূপে গ্রহণ করতে পারে।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র রামাদান মাসের সকল ফজিলত ও বরকত দান করুন এবং তার সকল আদেশ নির্দেশ মেনে তাকওয়া অর্জন নসিব করুন। আমিন-

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


করোনার সময়ে পানি কম খেলে ডি-হাইড্রশান হবে, এটা ভয়ানক সমস্যা; এবং সঠিক সময়ে খাওয়া উচিত; এইবার রোজা রাখা ঠিক হবে না।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীসাব যদিও প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি না খাওয়া শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিতে পারে, কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার '
উপর রোজার প্রভাব এতোটা সরাসরি নয়।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স-এর রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক একজন
গবেষক বলেন, সংক্রমণের বিরুদ্ধ লড়াই করার জন্য শরীরে প্রচুর শক্তির
প্রয়োজন। দীর্ঘ সময় ধরে খাবার এবং পানি পান না করলে শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রোজার সময়
শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে। এর ফলে শরীরের ভেতরে শ্বাস-প্রশ্বাস
নেবার জায়গা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু আপনি যদি পর্যাপ্ত ঘুম, ব্যায়াম
এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকেন তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
কার্যকরী থাকতে পারে। সুতরাং ইফতারের পর আপনি যেসব খাবার খাবেন
সেখানে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি থাকে সেটা নিশ্চিত করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এখানে দুটো বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে।

২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:১২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রোজার বরকতে যারা বেহেস্থে যাবে তাদের জন্য বেহেশতের একটা পৃথক দরজা আছে। যার নাম রাইয়ান। এক হাদিসে ৩ টি বিষয়ে রসুল (সাঃ) বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। ১। রোযা রাখা ২। রসুল (সাঃ) নাম শুনে দরুদ পরা ৩। বাবা মার খেদমত করা। যারা এগুলি অমান্য করবে তাদেরকে কঠোরভাবে হুশিয়ার করেছেন।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই, প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, রোজা মুমিনের জন্য
ঢাল স্বরূপ। (বুখারী: ১৯০৪)। ঢাল যেমন একজন যুদ্ধাকে তীর, গুলী বা যে
কোনো রকম নিক্ষেপণ অস্ত্রের আঘাত থেকে রক্ষা করে, তেমন রোজাও একজন
মুমিন ব্যক্তিকে সবধরনের গুনাহ থেকে হেফাজত করে। মহান রাব্বুল আলামিনের
কাছে রোজাদারের মর্যাদা এত বেশী যে, রাসুল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন
রোজাদারের জন্য রাইয়ান নামক দরজা থাকবে, যার ভেতর দিয়ে কেবল
রোজাদাররা বেহেশত প্রবেশ করবে। এ ছাড়া অন্যকেউ এ দরজা
দিয়ে প্রবেশ করবে না। (বুখারী :৩৪০৪)।

৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:৪০

মেটালক্সাইড বলেছেন: রামাদান করিম - নুরু ভাই।
সিয়ামের সাথে সংশ্লিষ্ট আমলসমূহ - অন্তর পরিশুদ্ধতার বিবরণ দেওয়া জরুরি ছিল, যার কিছু উপাদান সিয়াম ভঙ্গের কারণ হয়ে যায়।
আয়াত ও হাদীসের রেফারেন্স থাকায় লেখাটা এককথায় খুব ভাল হয়েছে।এই ধরনের লেখায় বিতর্ক করা নির্বুদ্ধিতার সামিল তাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি লেখাটি উপহার দেওয়ার জন্য।
সবাই যেন তাক্বওয়া ও ইস্তেগফার করতে পারে এই রামাদানে সেই কামনা করছি।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মেটালক্সাইড ভাই।
এমনিতেই লেখাটি অনেক বড় হয়ে গেছে। সে যাই হোক
রোজার রাখার পড়ে এমন কোনো কাজ করা যাবে না যার জন্য রোজা ভেঙে যেতে পারে। তাই রোজা রাখার পর কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে। অনেক কারণে রোজা ভঙ্গ হতে পারে। আসুন জেনে নেই যেসব কারণে রোজা ভাঙে।
কেউ যদি রোজা থাকা অবস্থায় কোন প্রকার পানাহার বা ধূমপান করে তাহলে নিঃসন্দেহে তা রোজা ভঙ্গের একটি কারণ হবে। ডুবে ডুবে পানি খাওয়ার মতো করে যদি কেউ সবার অজান্তে লুকিয়ে পানাহার করে সেক্ষেত্রেও রোজা ভেঙ্গে যাবে।
ওযু করার সময় অসর্তক হলেঃ ওযু করার সময় গড়গড়া করা যাবে না। আর নাকে পানি দেওয়ার সময় সাবধান থাকতে হবে যেন পানি ভেতরে চলে না যায়। ইচ্ছাকৃত ভাবে পানি ঢোকালে রোজা ভেঙ্গে যাবে, অনিচ্ছাকৃত হলে সেটা আলাদা।
স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলেঃ রোজা রাখা মানে শুধু পানাহার থেকে না, ইন্দ্রীয় তৃপ্তি থেকেও নিজেকে বিরত রাখা। সেই অর্থে রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ সহবাস করে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। এক্ষেত্রে তাকে কাজা ও কাফফারা দুটোই করতে হবে।
বমি করলেঃ অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়ে থাকে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভেঙে যায় না। বমি করার পর সমস্ত মুখ ভালো করে পানি দিয়ে কুলি করে ধুয়ে নিতে হবে। মুখের কোথাও বিন্দুমাত্র খাবারের কণা জমে না থাকে।
হস্তমৈথুনঃ হস্তমৈথুন বা অন্য কোনভাবে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে বীর্যপাত ঘটায় তাহলে তা রোজা ভঙ্গের কারণ হবে। এক্ষেত্রে যদি কেউ কামভাবে স্ত্রীকে স্পর্শ করার মাধ্যমেও বীর্যপাত ঘটায় তাহলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গবে না।
ঋতুস্রাবঃ রোজা রাখা অবস্থায় যদি মহিলাদের মাসিকের রক্ত দেখা দেয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। এমনিভাবে প্রসবজনিত রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে যে কয়টি রোজা নষ্ট হবে সে কয়টি পরে কাজা করে নিতে হবে।
শক্তিবর্ধক ইনজেকশনঃ ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে জীবনী শক্তি বৃদ্ধি করার জন্যে কিংবা অন্য কোন কারণে শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো হলে রোজা ভেঙে যাবে।

৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


করোনর ফলে অনেক মানুষ হঠাৎ করে দরিদ্র হয়ে গেছে; দরিদ্র মানুষদের খাদ্য প্রাপ্তি পুরোপুরি অনিশ্চিত, দিনের কোন সময় এরা খাবার যোগাড় করতে পারবে, কখন পারবে না, ইহা এখন অনিশ্চিত; অভুক্ত অবস্হায় ডি-হাইডরেশন ভয়ানকভাবে শরীরকে দুর্বল করবে; এই অবস্হায় রোজা রাখা কোনভাবেই ঠিক নয়।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজীসাব এর আগেও বহু দেশে অনেক মহামারী. দুর্ভিক্ষ হয়েছে
এবং সে সকল দেশে রোজাও এসেছে তার নিয়ম নীতিতে। তাই
বলে মা্নুষ রোজা রাখেনাই এমন ইতিহাস নাই। মানুষ অভ্যাসের
দাশ সুতরাং রোজা আসবে, রোজা যাবে, কেউ রাখবে কেউ রাখবেনা
এটাই নিয়ম। করোনায় আক্রান্ত হতে পারে যেনেও অনেকে বাসায়
থাকার নিয়ম পালন করেনা।

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন। আমাদের সকলকে হেদায়ত নসিব করুন। রমজান আমাদেরকে তার তাৎপর্য বুঝায়ে সঠিক আমলদার করে উত্তম চরিত্রের একজন মুমিন করেন যেনো দোয়া করবেন।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমিন। আল্লাহ সবাইকে তার হুকুম আহকাম মেনে চলার 'তৌফিক দান করুন
মাহমুদুর রহমান সুজন ভাই আপনাকে ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আমি রোজা রাখবো না।
এই দুর্যোগে কারো ই রোজা রাখা ঠিক হবে না।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খানসাব আপনি রোজা রাখবেন কি রাখবেন না তা
আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। কোন বান্দা যদি আল্রাহর
নির্দেশ না মানে তাতে তার কিছু আসে যায়না, তেমনি
মানলেও তার কোন লাভ নাই। তবে তিনি খুশি হন তার
উপদেশ মান্য করলে। মুসলমান প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর
জন্য রোজা রাখা ফরজে আইন। অস্বীকার করলে
কাফের ও না রাখলে ফাসেক হিসেবে গণ্য হবে।

৭| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: রোজা রাখতে পারলে ভাল।সকল ধর্মেই উপবাসের কথা আছে। তবে এবছর বয়স্কটের জন্য রোজা না রাখাই ভাল। বিশেষ করে আমার,আপনার মতো যাদের বয়স।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন,
‘প্রত্যেক প্রাণিকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদের
পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপর যাকে দোজখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং
জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই হবে সফলকাম। "আর পার্থিব জীবন ধোঁকার
বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।" [সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৮৫]

সুতরাং কেউ বাঁচতে পারবেনা এক সেকেন্ড বেশী যা তার জন্য নির্ধারিত আছে।

৮| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, " ... কিন্তু আপনি যদি পর্যাপ্ত ঘুম, ব্যায়াম
এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকেন তাহলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
কার্যকরী থাকতে পারে। সুতরাং ইফতারের পর আপনি যেসব খাবার খাবেন
সেখানে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি থাকে সেটা নিশ্চিত করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। "

-আপনাকে অনেক "যদি" ব্যব হার করতে হয়েছে; করোনা ফুসফুস ও কিডনী আক্রমণ করে, সেজন্য কোনভাবে ডি-হাইড্রেশন অবস্হায় যাওয়া ভয়ংকর হতে পারে; বেশীরভাগ মুসলিম দেশে আধা দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে।

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: গাজীসাব আপনাকে আগে জানতে হবে জীবন মরনের মালিককে।
'আল্লাহই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তোমাদের সমস্ত কাজই,
তোমরা যা কিছুই কর না কেন, আল্লাহ সবকিছুৃই দেখেন।’
[সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৫৬]

‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু অবশ্যই তোমাদেরকে
পাকড়াও করবে। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও।’
[সুরা আন নিসা : আয়াত- ৭৮]

‘আপনি কি তাদেরকে দেখননি, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে
গিয়েছিলেন? অথচ তারা ছিল হাজার হাজার। তারপর আল্লাহ তাদেরকে বললেন
মরে যাও। তারপর তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর
অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না।’
[সুরা বাকারা : আয়াত ২৪৩]

এর পরেও কি তর্কের অবকাশ থাকে!!

৯| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

রাজীব নুর বলেছেন: ফরয আমার দরকার নাই।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ঠিক আছে, ফরজ দরকার না হলে
আপনি নফল নিয়ে থাকুন।
তাও যদি মনে না চায় তা হলে
কামরূপ কামাক্ষায় জপ তপ
শুরু করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.