নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বখ্যাত ফরাসী লেখক ও সাংবাদিক এমিল জোলার ১৭৯তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮


ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশ্ববিখ্যাত ফরাসী লেখক ও সাংবাদিক (Emile Zola) এমিল জোলা। ফ্রান্সের রাজনৈতিক উদারনৈতিকতার জন্য সবসময় কাজ করেছেন এমিল জোলা। শুরুতে তিনি ফরাসি শুল্ক বিভাগের একজন করণিক ছিলেন। পরে জীবন জীবিকার প্রয়োজনে এমিল বিভিন্ন পত্রিকায় ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা শুরু করেন। এই সময়ে তিনি ফ্রান্সের পরিবেশবাদী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সাহিত্যে প্রকৃতিবাদী চিন্তাধারার অত্যন্ত জোরালো প্রবক্তা ছিলেন তিনি। ১৮৭১ হতে ১৮৯৩ সালের মধ্যে তাঁর ২০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ সমূহের মধ্যে রয়েছে ‘নিনা’, ‘লা তেরা’, ‘লা মিরর’ প্রভৃতি। দ্য আর্থ (বাংলায় অনুদিত গ্রন্থ মাটি) বা দ্য জার্মিনাল (বাংলায় অনুদিত গ্রন্থ অঙ্কুর) এর মতো উপন্যাস সহ আরো অনেক কালজয়ী উপন্যাসের রচয়িতা ছিলেন এমিল জোলা। বিশ্বের “ঔপন্যাসিকদের ঔপন্যাসিক” হিসেবে খ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক এমিল জোলা ১৮৪০ সালের আজকের দিনে প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। আজ এই বিখ্যাত লেখকের ১৭৯তম জন্মদিন। প্রথিতযশা ফরাসী লেখক ও সাংবাদিক এমিল জোলার জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

এমিল জোলা ১৮৪০ সালের ২ এপ্রিল প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফ্রেন্সকোসিস জোলা ছিলেন ইতালিয়ান প্রকৌশলী এবং মা ফ্রান্সের মেয়ে এমিল অবার্ট। ১৮৪৭ সালে জোলার বয়স যখন মাত্র সাত, তখন তার বাবা মারা যান। এরপর তিনি মায়ের কাছেই বড় হতে থাকেন। ১৮৫৮ সালে তিনি পড়াশোনার জন্য পাড়ি জমান প্যারিসে। সেখানে বন্ধু হিসেবে পান বিখ্যাত চিত্রকর পল সেজানকে। এ সময় তিনি রোমান্টিক ধাঁচে লেখালেখি শুরু করেন। জোলার মায়ের পরিকল্পনা ছিল ছেলেকে আইন পড়াবেন এবং আইনেই তার ক্যারিয়ার গড়বেন; কিন্তু লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় জোলা স্নাতক পরীক্ষায় ফেল করেন।পরর্বতী সময়ে তার আর আইন পড়া হয়ে ওঠেনি। লেখালেখির শুরুতে জোলা লেখেন ছোটগল্প ও গদ্য, চারটি নাটক এবং তিনটি উপন্যাস। তার প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৮৬৪ সালে। ১৮৬৫ সালে তার জীবনীগ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি পুলিশের তোপের মুখে পড়েন। লেখক হিসেবে পরিচিতির আগে তিনি কাজ করতেন একটি জাহাজ কোম্পানির কেরানি হিসেবে। তখনো তিনি পত্রিকায় সাহিত্য ও শিল্প সমালোচনা লিখতেন সাংবাদিকদের মতো।

১৮৬৭ সালে প্রকাশিত হয় তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘থেরেস রিকুইন’। এরপর এমিলি দ্বিতীয় ফরাসি সম্রাটের পরিবার নিয়ে দীর্ঘ ধারাবাহিক লিখতে শুরু করেন। জোলা এবং সেজানের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব ছিল। কিছুটা ছন্নছাড়া ভবঘুরে জীবনযাপন করতেন জোলা আর সেজান। একটি উপন্যাসে জোলা তাদের ছন্নছাড়া শিল্পী জীবনের জীবনচিত্র আঁকার পর তাদের জীবনে কিছুটা পরির্বতন আসে। জোলার জীবনে অপরাধীদের সঙ্গে মেশার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটার ঘটনাও আছে। তিনি বলতেন, ‘সত্য সর্বদা চলমান এবং তাকে কখনোই থামিয়ে রাখা যায় না। ‘ তিনি সব সময় একটি নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতেন। ১৮৯৮ সালের ১৩ জুলাই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে তিনি একটি খোলা চিঠি লেখেন এবং দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় তা প্রকাশিত হয়। একজন আর্টিলারি অফিসারের বেআইনি কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলেন ওই চিঠিতে। এছাড়া বিচার ব্যবস্থার কিছু ত্রুটি এবং মামলার গুরুত্বপূর্ণ দলিল মুছে ফেলার কথাও তিনি বলেন। ফলে রাজরোষে পড়েন এবং ১৮৯৮ সালে তাকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। তিনি কারাদণ্ড এড়াতে ইংল্যান্ডে আত্মগোপন করেন এবং দেশে ফেরেন তার পরের বছর।

কেরানী থেকে লেখক হয়ে ওঠা এমিল জোলা ১৯০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ৬২ বছর বয়সে ঘরের চিমনি বন্ধ হয়ে বিষাক্ত কার্বন-মনোঅক্সাইড জনিত গ্যাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর জন্য তার শত্রুদের দায়ী করা হলেও কোনো প্রমাণ ছিল না। তবে বলা হয়ে থাকে, শত্রুরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই তার ঘরের চিমনি বন্ধ করে দিয়েছিল। জোলাকে প্যারিসে সমাহিত করা হয়; কিন্তু মৃত্যুর ছয় বছর পর অর্থাৎ ১৯০৮ সালের ৪ জুলাই তার স্মরণে তাকে সর্বদেবতা মন্দিরে সরিয়ে নেওয়া হয়। ১৯৩৭ সালে জোলার জীবনী নিয়ে তৈরি করা হয় চলচ্চিত্র ‘দ্য লাইফ অব এমিলি জোলা’। মুভিটি একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পায়। প্রথিতযশা ফরাসী লেখক ও সাংবাদিক এমিল জোলার ১৭৯তম জন্মদিন আজ। বিশ্বখ্যাত ফরাসী লেখক ও সাংবাদিক এমিল জোলার জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের মুন্সিগঞ্জে জোলা কাদের বলে জানেন??

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

মুসলিম তাঁতিদের জুলা বা জোলা বলা হয় কারণ
সুতোর গোলা বা বলকে ফার্সি ভাষায় বলা হতো জুলাহ।
এটি কাপড় বোনার জন্য তাঁতিদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস।
এখান থেকেই জুলা নাম টি এসেছে।

তবে জোলাদের থেকে মুসলমান তাঁতীদের কওম স্বতন্ত্র।
তাঁতীরা বানায় জামদানি বা নকশা তোলা কাপড়। আর
জোলারা বানায় মোটা মসলিন। একসঙ্গে এরা খাওয়া-দাওয়া
করলেও এদের মধ্যে বিয়েশাদি হয় না। তাঁতীদের জোলা বললে
ভীষণ চটে যায়। কারিগর কিংবা জামদানি তাঁতী বললে খুশি হয়।

জোলা’রা সাধারণত বোকা হয় (!) প্রমান আপনি, আপনি অনেক বোকা ।
বোকা জোলা আর শেয়ালের গল্প জানেন?
এক বোকা জোলা ছিল। সে একদিন কাস্তে নিয়ে ধান কাটতে গিয়ে খেতের মাঝখানেই ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুম থেকে উঠে আবার কাস্তে হাতে নিয়ে দেখল, সেটা বড্ড গরম হয়েছে।
কাস্তেখানা রোদ লেগে গরম হয়েছিল, কিন্তু জোলা ভাবলে তার জ্বর হয়েছে। তখন সে ‘আমার কাস্তে তো মরে যাবে রে!’ বলে হাউ-হাউ করে কাঁদতে লাগল।
পাশের খেতে এক চাষা কাজ করছিল। জোলার কান্না শুনে সে বললে, ‘কি হয়েছে?’
জোলা বললে, ‘আমার কাস্তের জ্বর হয়েছে।’
তা শুনে চাষা হাসতে-হাসতে বললে, ‘ওকে জলে ডুবিয়ে রাখ, জ্বর সেরে যাবে।’
জলে ডুবিয়ে কাস্তে ঠাণ্ডা হল, জোলাও খুব খুশী হল।

তারপর একদিন জোলার মায়ের জ্বর হয়েছে। সকলে বললে, ‘বদ্যি ডাক।’ জোলা বললে, ‘আমি ওষুধ জানি।’ বলে, সে তার মাকে পুকুরে নিয়ে জলের ভিতরে চেপে ধরল। সে বেচারী যতই ছটফট করে, জোলা ততই অারো চেপে ধরে, আর বলে, ‘রোস, এই তো জ্বর সারছে।’
হাহাহা

২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ফরাসী ভাষা শেখা কি দরকারী?

০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রাক্তন ইংরেজ উপনিবেশ বা কমনওয়েলথ দেশগুলো বাদে
ইংরেজি তেমন প্রচলিত ভাষা নয়। কানাডার কেবেক প্রদেশ
অথবা ইউরোপে বসবাসকারী বাঙ্গালীরা এটা হাড়ে হাড়ে টের পায়!
ভাষাভাষীর সংখ্যা বিচারে ফরাসি পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃহত্তম ভাষা।
জাতিসংঘ সচিবালয়ের দু’টো দাপ্তরিক ভাষার মধ্যে ফরাসি অন্যতম।
ফ্রান্সের দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যার হেতু ২০২৫ নাগাদ জার্মান
ভাষাকে ছাপিয়ে ফরাসিই হবে ইউরোপের সর্ববৃহৎ ভাষা।
ইংরেজি ভাষার অধিকাংশ শব্দ কিন্তু ফরাসি ভাষা থেকে এসেছে!

এখন আপনি ঠিক করুন ফরাসী ভাষা শেখা দরকার কিনা!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.