নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
কিংবদন্তি শিশুসাহিত্যিক হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন (Hans Christian Andersen)। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, নাট্যকার ও কবি। এ্যান্ডারসন বিখ্যাত মূলত দু’টি কারণে, তার রূপকথার জন্য তো তিনি বিখ্যাতই, আরেকটি তার ভ্রমণ ডায়েরির জন্য (ট্রাভেলগ)। তার বিখ্যাত কিছু কবিতাও আছে। তার সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতাটার নাম জেগ এর এন স্ক্যান্ডিনেভ, ইংরেজি করলে হয় আই এম এ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান। তবে শিশুসাহিত্যিক হিসাবেই তিনি অধিক পরিচিত। রূপকথার জাদুকর বলা হয় তাকে। ছোটদের জন্য তিনি তৈরি করেছেন কল্পনার এক আশ্চর্য জগৎ। শিশুদের জগত বড়দের চেয়ে আলাদাই শুধু নয়, অনেক অনেক রঙিন আর প্রাণবন্তও। বিশ্বের ও বাংলা ভাষার অনেক শিশুসাহিত্যিক এই রংদার জগতটাকে ফুটিয়ে তুলেছেন আকর্ষণীয় করে। আমাদের সকলের মনে আছে তার সেই কুৎসিত হাঁসের ছানা কিংবা থাম্বেলিনা, স্নো হোয়াইট অথবা ছোট্ট মৎস্যকুমারীর গল্প। ডেনমার্কের হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এ্যান্ডারসন তার রূপকথাগুলোর জন্যই অমর হয়ে আছেন। তাঁর রূপকথাগুলো একেবারেই মৌলিক। তাঁরলেখার ভেতর দিয়ে নতুন একটি ধারার সৃষ্টি হয়। ১৮০৫ সালের সালের আজকের দিনে ডেনমার্কের অডেন্সে জন্মগ্রহন করেন। আজ শিশুসাহিত্যের কিংবদন্তি লেখক হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন ২১৫তম জন্মবার্ষিকী। রূপকথার শিশুসাহিত্যিকের জন্মদিনে তাকে স্মরণ করছি ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায়।
(হান্স কিশ্চিয়ান এন্ডারসন, মা এনা মারি এন্ডারসন এবং খালা ম্যাগডালিন জুলিয়ান রাসমুসেন, ছবিটি ১৯১৪ সালে আমেরিকাতে আগমনের সময় তোলা)
হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন ১৮০৫ সালের ০২ এপ্রিল ডেনমার্কের অডেন্সে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা হ্যান্স এন্ডারসন (Hans Andersen) ছিলেন জুতোর কারিগর, আর মা এনি মারি এন্ডারসন (Anne Marie Andersen) ধোয়ামোছার কাজ করতেন। এ্যান্ডারসন ছিলেন বাবা-মার একমাত্র সন্তান। ছোট্ট থাকতেই ওদের পড়াশোনা করা বাদ দিয়ে চাকরির খোঁজে বেরিয়ে পড়তে হয়। শিক্ষানবিস হিসেবে প্রথমে কাজ করলেন এক কাপড়ের কারিগরের কাছে, এরপর এক নাবিকের কাছে। এর মধ্যেই কিন্তু এ্যান্ডারসনের একটা কবিতা বেশ বিখ্যাত হয়ে গেছে। ইংরেজিতে কবিতাটির নাম- দ্য ডাইং চাইল্ড। কবিতাটি তিনি লিখেছিলেন ১৮২৭ সালে। আর তখনকার কোপেনহেগেনের শীর্ষস্থানীয় সাহিত্য পত্রিকাতেও নিয়মিতই তার কবিতা ছাপা হচ্ছিল। ১৮৩৫ সালে তিনি ছোট ছোট রূপকথা প্রকাশ শুরু করেন। রূপকথা লেখার জন্য রূপকথার জাদুকর নামে অভিহিত করা হয়। বিশ্বসাহিত্যর বিস্তীর্ন অঙ্গন জুড়ে সাজানো রয়েছে মনোমুগ্ধকর রূপকথার পসরা। প্রতিটি দেশ ও ভাষায় এ এক অর্পূব রত্নভান্ডার। জাতির শৌর্য-বীর্য আশা আকাঙ্খা ও আনন্দ বেদনার স্বপ্নীল আবেশ বিস্তৃত হয় রূপকথায়। আপাত দৃষ্টিতে এর কাহিনী অলীক ও অবিশ্বাস্য মনে হলেও শিশু মনের কৌতুহল ও স্বপ্ন এতে ফুটিয়ে তোলা হয় অপূর্ব বর্ণনাশৈলীতে। জ্বীন- পরী ও সুন্দরী রাজকন্যা , দৈত্যদানব, রাক্ষস- ক্ষোকস,যাদুর চেরাগ এসবের কাহিনী সম্পূর্ণ অবাস্তব মনে হতে পারে , কিন্তু চিন্তাশীল মানুষের জীবনের স্বপ্ন আকাঙ্খা,বাধা বিপত্তি ,বীরত্ব ও সাহসিকতা এবং সাফল্য- ব্যর্থতার কাহিনী রুপক হিসেবে এসেছে রূপকথার স্বপ্নীল রাজ্যে। এ রাজ্য তাই শিশুমনের সব ধরণের স্বপ্ন ও ভাবনা ব্যঙ্গময় হয়। শিশুর অবচেতন মনে যেসব ভাবনার উদ্রেক ঘটে এক বর্ণাঢ্য অভিব্যক্তি পাওয়া যায় তার রূপকথায়। যা শিশু মনে স্বপ্নীল আবেশে উদ্বেলিত হয়। আর এখানেই রূপকথার সার্থকতা। শিশুতোষ কাহিনী হিসেবে তাই রূপকথার আবেদন আজকের এই বিজ্ঞানের যুগেও ম্লান হয়ে যায়নি।
১৮২৯ সালে অভিনীত হয় হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের প্রথম নাটক। বেশ জনপ্রিয়ও হয় নাটকটি। ১৮৩১ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতার বই। আর তার প্রথম ভ্রমণ ডায়েরিও প্রকাশিত হয় ওই বছরই। জার্মানি ঘুরে এসে তিনি তার সেই ভ্রমণকাহিনী প্রকাশ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার ভ্রমণবিষয়ক বইগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তিনি ১৮৩৩ সালে ভ্রমণের জন্য রাজার আর্থিক সহায়তাও পান। আর তা দিয়ে তিনি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ট্যুর দেন, জার্মানি-ফ্রান্স-ইতালি ট্যুর। ১৮৪৫ সালে তার লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে প্রকাশ করা শুরু হয়। জার্মান ভাষায় প্রথম তার লেখার অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৮৪৭ সালে। আর ফরাসী ভাষায় ১৮৪৮ সালে তার প্রথম যে লেখাটি অনুবাদ হয়, সেটি ছিল রূপকথা। তাঁর লেখা ১৫০টির বেশি রূপকথা তাঁকে দিয়েছে অমরত্ব। এসব রূপকথার মধ্যে 'দি টিন সোলজার', 'দি এমপেরর্স নিউ ক্লোদস', 'লিটল মারমেইড', 'দি টিনডারবক্স', 'দি স্নো কুইন', 'দি আগলি ডাকলিং' প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর লেখা এসব রূপকথা বিশ্বের ১২৫টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর রূপকথাগুলোর কাহিনী অবলম্বনে অসংখ্য চলচ্চিত্র, নাটক, ব্যালে নৃত্য, অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র প্রভৃতি নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে।
১৮৭৫ সালের ০৪ আগস্ট ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে এই মহান সাহিত্যিক মৃত্যুবরন করেন। তার নিজের মূর্তি আছে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক আর ক্যালিফোর্নিয়ায়; আছে স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্তাভা শহরেও। জাপানে তার নামে একটা থিম পার্কই আছে। আর পোল্যান্ডে তার নামে আছে একটা থিয়েটার, যেখানে অভিনয়ের পাশাপাশি পাপেট শো-ও হয়। এছাড়াও ২০০৬ সালে চীনের সাংহাই শহরে প্রায় ১৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে তার নামে নির্মান করা হয়েছে থিম পার্ক বানানো হয়েছে। পার্কটি শুধু তার নামেই করা হয়নি, পার্কটির সবগুলো রাইড তার জীবন আর রূপকথার গল্প নিয়ে বানানো হয়েছে। আজ কিংবদন্তি লেখক হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের ২১৫তম জন্মবার্ষিকী। জন্মবার্ষিকীতে রূপকথার সুসাহিত্যিককে স্মরণ করছি ফুলেল শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের
রুপকথা পড়েননি এমন
পাঠক এ জগৎ সংসারে
আছে বলে আমার মনে
হয়না। আপনি পড়েন নি?
২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
রূপকথা ভালোবাসেন?
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এখনো রূপকথার মধ্য
দিয়েই অহর্নিিশি পার তরছি।
৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: মনে হয় পড়ি নি।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
না পড়লেও ক্ষতি নাই!!
আজ পড়ে নিন।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: কোথা থেকে যে এদের খুঁজে বের করছেন আপনি !!!