নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন পাকিস্তানি সৈন্য তাদের পরাজয়ের একেবারে চূড়ান্ত মূহুর্তে তাদের এদেশী দোসরদের সাহায্য দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিয়ে গিয়ে বধ্যভূমিতে হত্যা করে। বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের ওপর তৎকালীন পাকিস্তানি প্রশাসন এবং তাদের দোসরদের এই নিপীড়ন নির্যাতনের কারণ তারা বাঙালিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধচলা কালে ন ‘মাস ধরেই যে হত্যাযজ্ঞ চলে অবরুদ্ধ বাংলাদেশে তার অন্যতম শিকারে পরিণত করা হয় বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের। ২৫শে মার্চের কালরাত্রিতে যে ক জনের ওপর আক্রমণ চালানো হয় তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা। জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক অবস্থায় কর্মরত থাকাকালীন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবনে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩০ মার্চ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবীর ৪৯তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মৃত্যুৃবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
(১৯২১ সালে দশ মাস বয়সে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা)
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ১৯২০ সালের ১০ জুলাই তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের (বর্তমানের বাংলাদেশ) ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কুমুদচন্দ্র গুহঠাকুরতা ও মাতা সুমতি গুহঠাকুরতা উভয়ে ছিলেন স্কুলশিক্ষক; চাকুরিসূত্রে যখন তাঁর মা ময়নসিংহ শহরের অধিবাসী তখন সেই শহরেই জন্মগ্রহণ করেন জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা। তাঁর পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বানারীপাড়ায়। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সংস্কৃতিবান পরিবারের সন্তান জ্যোতির্ময়ের বিদ্যাশিক্ষায় হাতেখড়ি ঘটে সেখানেই। ১৯৩৬ সালে তিনি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি চলে যান কলকাতা; প্রেসিডেন্সি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং এক বছর পড়াশুনা করেন। কিন্তু টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেন না। পরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯৩৯ সালে প্রথম বিভাগে এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
(জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র থাকাকালীন - ১৯৪০-৪১ সাল)
এইচ,এস, সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হন এবং ১৯৪২ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এ. অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। অনার্স পরীক্ষায় ইংরেজীতে অত্যন্ত কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করায় এবং সাবসিডিয়ারী বিষয় দর্শনে রেকর্ড নম্বর পাওয়ায় তিনি পোপ মেমোরিয়েল স্বর্ণপদক লাভ করেন। । অনার্স পরীক্ষায় ইংরেজীতে খুব ভাল ফলাফল করায় এবং সাবসিডিয়ারী বিষয় দর্শনে রেকর্ড নম্বর পাওয়ায় তিনি পোপ মেমোরিয়েল স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৪৩ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এমএ পাস করার পরই ১৯৪৪ সালে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা কিশোরগঞ্জের নবপ্রতিষ্ঠিত গুরুদয়াল কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে ইংরেজী বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে ছয় মাস শিক্ষকতার পর ১৯৪৬ সালে তিনি চলে আসেন ঢাকায়, যোগ দেন ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। সেখানে তিন বছর শিক্ষকতার পর ১৯৪৯ সালের ১২ নভেম্বর অস্থায়ী প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে। ১৯৫০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর পদ স্থায়ী হয় । ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯৬৩ সালে বিলেত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি ঐ পদেই ছিলেন। এই পদে প্রায় দুই দশক শিক্ষকতা করার পর তিনি পিএইচডি করতে বিলেত যান ১৯৬৩ সালে। লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণাকালে ১৯৬৪ সালের ১০ জুলাই তিনি যোগ দেন হেইগে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিস্ট অ্যান্ড এথিক্যাল ইউনিয়নের সম্মেলনে। ১৯৬৭ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পিএইচডি শেষে ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে ফিরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে রিডারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি আমৃত্যু ঐ পদেই ছিলেন। এরপর ১৯৭০ সালের ২০শে এপ্রিল জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
(শহীদ অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুরতা এবং কন্যা মেঘনা গুহঠাকুরতা)
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা মানবেন্দ্রনাথ রায়ের রেডিকেল হিউম্যানিজমে মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য, রাজনীতি ও সমাজচিন্তামূলক অনেক প্রবন্ধ লেখেন। দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী সমাজে তিনি অগ্রগন্য বিবেচিত হতেন। সুইনবার্ণ, স্টার্জ মুর অ্যান্ড এলিয়ট নামের যে অভিসন্দর্ভ তিনি পি.এইচ.ডি-র জন্য লেখেন, তা ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবনে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩০ মার্চ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ তাঁর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মৃত্যুৃবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১:৩৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনারা জ্ঞানীগুণী মানুষ
উন্নত দেশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায়
নিয়ন বাতির নিচে বসে শুয়ে দেশের কথা
ভাবেন। দেশের মানুষের কথা নিয়েতো
লিখবেন আপনারা। আমরা সাধারণ মানুষ
তাতে পুলকিত হয়ে আপনাদের গুনগান করবো
এইতে নিয়ম।
২| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি বলেছেন, "আমরা সাধারণ মানুষ তাতে পুলকিত হয়ে আপনাদের গুনগান করবো এইতে নিয়ম। "
-লিখতে হয় সাধারণ মানুষকে নিয়ে, তঁদের সংগ্রাম নিয়ে; আমি যখন যেখানে থাকি না কেন, কি নিয়ে পোষ্ট লিখছি, সেটা আপনার কাছে অবিদিত নয়।
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি আমার ট্রাক পরি্বর্তণ করতে চাইনা।
গুনীজনদের নিয়ে ছিলোম, আছি এবং থাকবার
আশা করি। তবে মাঝে মধ্যে অসঙ্গতি দেখলে
সেখানে কথা চলতেই থাকবে। আপনিও রেহাই
পাবেন না। আমি সাধারণ নয় জেনারেলদের নিয়ে
লিখি।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার সম্পর্কে
আপনার কোন ধারণা আছে ?
৩| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:৫২
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মৃত্যুৃবার্ষিকীতে
...........................................................................................................................................
আমার গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ স্বপ্নের শঙ্খচিল
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও
শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মৃত্যুৃবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
৪| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:৫৮
শের শায়রী বলেছেন: অনেক পুরানো একটা পোষ্ট আপনার খুজতে খুজতে পেয়ে গেলাম ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশালঃ ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ বরিশাল আমার গর্ব । বাই দ্যা ওয়ে আমারো জন্ম স্থান ওই একই জায়গায়।
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ্
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই,
আমি বরিশালের উজিরপুরের বাসিন্দা।
আপনি ?
৫| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৫:১১
কুকরা বলেছেন: প্রোফাইল পিক চেন্জ করছেন নাকি ভাই?
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
স্বাগতম ভাই নতুন কুকরা
আমি ভুল করেছিলাম বুঝতে
যে আপনি সেই কুকরা না!!
সময়ের দাবীতে আমার প্রপি
চেইঞ্জ করলাম। যেমন সব মোবাইল
অপারেটর করেছেঃ স্টে হোম। গৃহবন্দি থাকো !! হাহাহাহা
৬| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩
কুকরা বলেছেন: আমি নতুন কুকরা না, আমিই পুরাতন কুকরা।
৭| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
সাধারণ মানুষের বর্তমান অবস্হা নিয়ে লেখার শুরু করেন।