নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলা গানকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে যিনি মিষ্টি কণ্ঠে সুর মেলাতেন, তিনি খালিদ হাসান মিলু। তাকে বলা হতো স্বর্ণকণ্ঠ গায়ক। গত শতাব্দির ৮০-র দশকের প্রথম দিকে সঙ্গীত জগতে যাত্রা করেন খালিদ হাসান মিলু। তখন তার প্রথম অ্যালবাম ‘ওগো প্রিয় বান্ধবী’ প্রকাশিত হয়। প্রথম অ্যালবামই শ্রোতামহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। পাঁচ হাজার গানের কণ্ঠ শিল্পী মিলূর ক্যারিয়ারে ১২টি একক এবং বহু মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। তার একক অ্যালবামের মধ্যে ‘প্রতিশোধ নিও’, ‘নীলা’, ‘শেষ ভালোবাসা’, ‘আয়না’, ‘মানুষ’ ও ‘শেষ খেয়া’ অন্যতম। একক অ্যালবাম ছাড়াও খালিদ হাসান মিলু প্রায় ২৫০টি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮২ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্যে কণ্ঠ দেওয়া শুরু করেন এবং ১৯৯৪ সালে ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবির শিরোনাম গান গেয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তার কালজয়ী গানগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ ‘অনেক সাধনার পরে আমি’, ‘কতো দিন দেখি না মায়ের মুখ’, ‘আমার মতো এতো সুখী’, ‘নিশিতে যাইও ফুলবনে’, ‘আমায় এতো রাতে কেন ডাক দিলি’, ‘নীলা তুমি আবার এসো ফিরে’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’ এবং ‘যে ব্যথা দিয়েছো’ ইত্যাদি। আজ অকালপ্রয়াত কণ্ঠ শিল্পী খালিদ হাসান মিলুর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৫ সালের এই দিনে নন্দিত এ কণ্ঠজাদুকর অগণিত শ্রোতা-ভক্তকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
খালিদ হাসান মিলু ১৯৬২ সালে ৩ এপ্রিল বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার আদর্শপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। মিলুর বাবা মোদাচ্ছের আলী মিয়া। তিনি স্থানীয় ‘গুনাইবিবি’ পালা গানের সাথে জড়িত ছিলেন। বাবা গানের মানুষ হিসেবে ছোট্ট মিলুরও ছিলো গানের প্রতি বিশেষ এক ঝোঁক। এর কারণে তাঁর গানের প্রতিভাও বিকশিত হয় দ্রুত। বাবার হারমোনিয়াম দিয়েই মিলুর গানের সাধনা শুরু। তিনি ওস্তাদ রবীন দাস,সুরেশ দাস সহ আরো কয়েকজনের কাছে সংগীত বিষয়ে তালিম নেন। তার তালিম নেয়া তখন পূর্নতা পায় যখন তিনি ১৯৭৮ সালে খুলনা বেতারে তালিকাভুক্ত শিল্পি হন। খুলনায় তিনি ‘স্পার্টান’ একটি ব্যান্ডও গঠন করেন। সংগীতে নিজেকে আরো বিকশিত করতে খালিদ হাসান মিলু ১৯৮৩ সালে ঢাকায় চলে আসেন। সে বছরই আকবর কবির পিন্টু পরিচালিত আলী হোসেনের সুরে ‘কালো গোলাপ’ ছবিটির মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে গান করেন। খালিদ হাসান মিলু এদেশের দর্শক শ্রোতাদের কাছে প্রথম আলোচিত হন ১৯৯১ সালে এহতেশাম পরিচালিত ও আনোয়ার পারভেজের সুরোরপিত ‘চাঁদনী’ ছবিটির অভাবনীয় সাফল্যের পর। ছবিতে তার গাওয়া গান দর্শক শ্রোতারা দারুণ ভাবে গ্রহন করে। তার ঠিক দুই বছর পর অথাৎ ১৯৯৩ সালে ‘মৌসুমী’ চলচ্চিত্রের ‘সেই মেয়েটি আমাকে ভালোবাসে কিনা’ গানটি তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তায় নিয়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে তিনি গাইতে থাকেন একের পর এক সব চলচ্চিত্রে। ১৯৯৪ সালে শাহাদাত হোসেন পরিচালিত ও জালাল আহমেদের সুরোরপিত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবির ‘ভালোবাসা ভালোবাসা মানেনা কোন পরাজয়’ গানটির মাধ্যমে পান শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৯৭ সালে মোরাম্মদ হান্নান পরিচালিত ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে ‘প্রানের চেয়ে প্রিয়’ ছবির ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে জীবনে অমর হয়ে রয়’ গানটি অমর হয়ে থাকার মতই একটি গান।
(খালিদ হাসান মিলু, তাঁর স্ত্রী ফাতেমা পলাশ ও তাদের দুই পুত্র প্রীতম হাসান ও প্রতীক হাসান)
ব্যক্তিগত জীবনে ভিষণ স্টাইলিশ, সুদর্শন ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ছিলেন শিলী খলিদ হাসান মিলু। এক কথায় নিপাট ভদ্রলোক। অবলীলায় সিনেমায় নায়ক হতে পারতেন। তবে, সে পথে পা বাড়াননি। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় অ্নুষ্ঠান ইত্যাদি-তে তাঁকে দেখা যেত। চিত্রায়নেও বরাবরই তার নায়কোচিত দর্শন প্রশংসিত হত। ১৯৯১ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘গ্রামকথা’ নাটকে নুরুজ্জামান শেখের লেখা ও বদরুল আলম বকুলের সুরে মিলুর গাওয়া সেই হৃদয়স্পর্শী গান ‘কতদিন দেখিনা মায়ের মুখ’ গানটি যেনো আমাদের গ্রাম বাংলার কথা মনে করিয়ে দেয়! জনপ্রিয় এই শিল্পী রোগ শোকে ও আর্থিক অনটনে একটা সময় পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাটাই ভীষণ কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। সেই অবস্থায় ইত্যাদিই তাঁকে সুযোগ দিয়েছিল। সুযোগ্য ছেলে প্রতীককে নিয়ে তিনি মঞ্চে উঠেছিলেন। দর্শক-শ্রোতাদের আবেগের জলধারায় ভাসিয়েছিলেন। যদিও, সেই লড়াইটা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। লিভার সিরোসিসে ভুগে ২০০৫ সালের ২৯ মার্চ তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে তাঁর চলে যাওয়াটা ছিল বিশাল এক ট্র্যাজেডি। খালিদ হাসান মিলুর যোগ্য উত্তরসূরী দুই ছেলে প্রীতম হাসান ও প্রতীক হাসান। দু’জনই গায়ক ও মিউজিক কম্পোজার। দু’জনই সঙ্গীতাঙ্গনে বেশ প্রতিষ্ঠিত। আজ স্বর্ণকণ্ঠ গায়ক খালিদ হাসান মিলুর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। অকালে ঝরে পড়া সকলের প্রিয় স্বর্ণকণ্ঠ শিল্পী খালিদ হাসান মিলু আমদের মাঝে চির অমর হয়ে থাকবে প্রাণে প্রাণে সুরে সুরে। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলুর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রায়শই তাই দেখা যায়।
জীবনভর দাপটের সাথে
অর্থ বিত্তে রাজ করলেও
শেষ জীবনে করুন পরিণতি
ভোগ করেন শিল্পীরা। এর
রহস্য কি কে জানে।
২| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:৩৮
কাছের-মানুষ বলেছেন: মৃত্যু তারিখটা ভূল দিয়েছেন ছবিটিতে!!!
আমাদের দেশের শিল্পিরাই মনে হয় শেষ বয়সে অর্থকষ্টে ভোগে! এর কাওরন সম্ববত সারা জীবন মোজ মাস্তি করে টাকা উড়ায় ভবিষ্যতের চিন্তা না করে নয়ত তাদের ইনকামই অনেক কম! অনেক বড় বড় পযোজ দেখেছি চিকিৎসার জন্য হাত পাততে, অথচ
একসময় পড়তাম কাগজে তারা কোটি টাকা খরচ করেও সিনেমা বানাতো!!
যাইহোক শিল্পীর আত্নার শান্তি কামনা করি।
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে কাছের মানুষ
আপনার মন্তব্যের জন্য।
আল্লাহই ভালো জানেন।
শিল্পীর আত্মার শান্তি
কামনা করছি।
৩| ৩০ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৬:৫০
ইসিয়াক বলেছেন: আমার প্রিয় গায়ক।
শুভকামনা নুরু ভাই।
৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ইসিয়াক
শিল্পী খালিদ হাসান মিলুর
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: শেষমেশ শিল্পীদের মৃত্যুটা অন্য রকম হয়।