নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগামীর পথে প্রবীণের সাথে প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ ১ অক্টোবর পালিত হচ্চে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস

০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:২১


বিংশ শতাব্দীতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি, সচেতনতা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন মৃত্যু হার যেমন হ্রাস করেছে তেমনি মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ফলে, বিশ্ব সমাজে বয়স্কদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি হিসাবে জানা গেছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৭.৪ শতাংশ প্রবীণ। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ৮ শতাংশ, ২০৩৫ সালের মধ্যে তা বেড়ে গিয়ে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ হবে এবং ২০৫০ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হবে। আর ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন (ডবিস্নউএইচও) এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের নাগাদ মানুষের গড় আয়ু হবে ৭৭ বছর। বিশ্বে ৬০ বছরের বেশি মানুষের সংখ্যা হবে শতকরা ২০ ভাগ। জাতিসংঘ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ৬০ বছর ও তদূর্ধ্ব এবং উন্নত অঞ্চলের জন্য ৬৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের প্রবীণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রবীণ জনগোষ্ঠী সমাজে সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। তাই জীবনসায়াহ্নে মর্যাদার সঙ্গে তাঁদের পরিচর্যা ও কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা রাষ্ট্র, পরিবার তথা সমাজের অবশ্য কর্তব্য। প্রবীণদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বার্ধক্যের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ প্রতিবছর পহেলা অক্টোবর আন্তর্জাতিক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। বার্ধক্যকে মানবজীবনের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে এ সমস্যা সম্পর্কে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘ ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর ১ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালন করে আসছে। এবার প্রবীণ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ‘টেক এ স্ট্যান্ড অ্যাগিনিস্ট এইজইজম বা বয়স বৈষম্য দূর করুন’। বার্ধক্যের বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। স্বাভাবিক নিয়মেই একদিন প্রবীণত্বকে বরণ করতে হয়। ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবীণদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সমাজে প্রবীণদের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে, আজকের একক পরিবারে তাঁদের একাকিত্ব দূর করতে আমাদের সকলের উচিত তাঁদের প্রতি সহমর্মী হওয়া এবং তাঁদের সমস্যা বুঝে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। জীবনসায়াহ্নে মর্যাদার সঙ্গে প্রবীণদের পরিচর্যা ও কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা রাষ্ট্র, পরিবার তথা সমাজের অবশ্য কর্তব্য। প্রবীণদের নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সমাজ গঠনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করা গেলে, তারা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন। সাথে-সাথে জাতীয় উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে। আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস সেই দায়িত্ববোধের কথা মনে করিয়ে দেয়।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেন রয়েছে। আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ প্রবীণদের সংখ্যা হবে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। ২০৫০ সালে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি এবং ২০৬১ সালে প্রবীণ জনগোষ্ঠী হবে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি। প্রবীণ জনগোষ্ঠী দেশের মোট জনসংখ্যার একটি সংবেদশীল ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। কর্মময় জীবনে নিজ নিজ পরিবার, সমাজ ও দেশ গঠনে তাঁরা অত্যন্ত নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করেছেন। আজকের এই সমাজ বিনির্মাণে প্রবীণদের ভূমিকাই মুখ্য। তাঁদের মেধা, মনন ও কর্মময় জীবনের পথ বেয়েই সভ্যতা ও উন্নয়ন এগিয়ে চলেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অধিকাংশ বৃদ্ধ মানুষই সমাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে খুবই অবহেলিত। এর ফলে তাদের মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে সীমাহীন কষ্ট ও মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। সমাজের এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই তাদের চলার পথকে আরও কঠিন করে তুলছে। তাই প্রবীণদের কল্যাণে সরকার ছাড়াও সমাজ কল্যাণমূলক সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছেঃ "আগামীর পথে, প্রবীণের সাথে"। তাই প্রবীণ ব্যক্তিদের যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান প্রদানসহ তাঁদের স্বস্তিদায়ক জীবন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। বাংলাদেশ সরকার প্রবীণদের সার্বিক কল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বয়স্কভাতা কর্মসূচি, জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ এবং পিতামাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রবীণদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তার প্রতিটি খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি সমাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এছাড়া প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গঠনের মাধ্যমে প্রবীণসেবা কর্মসূচি আরো গতিশীল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রবীণরা পরিবার, সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের অভিশাপ বা বোঝা নয়, বরং তাঁরা আশীর্বাদ। আজ প্রবীণ দিবসে ভবিষ্যৎ অগ্রসরে সমাজে প্রবীণদের দক্ষতা, অবদান এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে "আগামীর পথে, প্রবীণের সাথে" চলার অঙ্গীকারাবদ্ধ হই সবাই।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৮

তারেক ফাহিম বলেছেন: হুম, নোয়াখালীতেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রবীণের সাথে একই প্রতিপাদ্য নিয়ে, র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পোষ্ট দিবো দিবো করে সময় পুরালো তাই দিলাম না।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।


০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ফাহিম তারেক
আপনার অসামপ্ত কাজটি
আমিই করে দিলাম।
ভালো থাকবেন

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫

নীরদ অর্ণব বলেছেন: প্রবীণদের দুরাবস্থা সামনে আরও বাড়বে

০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সম্মানের সাথে প্রবীণদের সেবা দিন,
নিজেদের বার্ধক্যের প্রস্ততি নিন।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৩

অর্ক বলেছেন: খুব সাধুবাদ জানাই আপনাকে নূরু ভাই। আজ যে নবীন, কাল সে প্রবীণ। প্রবীণদের প্রতি আমাদের সকলের সদয় হওয়া উচিৎ। এটা জীবনের একটি পর্যায়। বেচে থাকলে আমরা সবাই সেখানে যাবো।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ অর্ক
লেখাটির গুরুত্ব অনুধাবন করে
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.