নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
কল্পবিজ্ঞানের জনক, ঔপন্যাসিক হারবার্ট জর্জ ওয়েলস সংক্ষেপে এইচ জি ওয়েলস। একজন বহুমুখী ইংরেজ লেখক। তিনি মূলত তাঁর কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস ও ছোটোগল্পগুলির জন্য সমধিক পরিচিত। জুল ভের্নের সঙ্গে তাঁকেও "কল্পবিজ্ঞানের জনক" আখ্যা দেওয়া হয়। তিনি সমসাময়িক উপন্যাস, ইতিহাস, রাজনীতি ও সামাজিক বিষয়গুলি নিয়েও বহু গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ঔপন্যাসিক এইচ জি ওয়েলসের আজ ১৫১তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৬৬ সালের আজকের দিনে তিনি ইংলান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। কল্পবিজ্ঞানের জনক এইচ জি ওয়েলসের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
এইচ জি ওয়েলস ১৮৬৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি কমার্শিয়াল অ্যাকডেমিকে লেখাপড়া করেন এবং হিসাবরক্ষন বিদ্যা বা বুককীপিং এ সার্টিফিকেট পান। এর পর ১৮৮৪-১৮৮৭ এ লন্ডনের রয়াল কলেজ অফ সায়েন্স পড়াশুনা করেন। পরে ১৮৮৭ সালে শিক্ষকতা পেশা গ্রহণ করেন । তিন বছর এভাবেই কাটান এইচ জি ওয়েলসে। ১৮৯০ সনে তিনি ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে বিএসসি ডিগ্রি পান। ১৮৯৩ সনে পুরোপুরি লেখক বনে যান। ব্যক্তিগত জীবনে ২ বার বিয়ে করেন এইচ জি ওয়েলস। ১৯২২ থেকে ১৯২৩ ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের পক্ষে পার্লামেন্টের লেবার নির্বাচন প্রার্থী হন। ১৯০৩ থেকে ১৯০৮ পর্যন্ত ফেবিয়ান সোসাইটির সদস্য ছিলেন। ১৯৩৬ এ ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে ডক্টরেট অফ লিটারেচার সম্মান লাভ করেন। এইচ জি ওয়েলসের উল্লেখযোগ্য রচনাঃ ১। দ্য টাইম মেশিন, ২। দ্য আয়ল্যান্ড অফ ডক্টর, ৩। মেরো, ৪। দ্য ইনভিজিবল ম্যান, ৫। দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস, ৬। দ্য ফার্স্ট ম্যান ইন দ্য মুন, ৭। ইন দ্য ডেজ অফ দ্য কমেট, ৮। দ্য ল্যান্ড আয়রনক্ল্যাডস ইত্যাদি। লেখকের ‘দ্য ল্যান্ড আয়রনক্ল্যাডস’ সায়েন্স ফিকশনটি প্রথম প্রকাশ হয় ১৯০৩ সালে ডিসেম্বর মাসে। লেখক তাঁর গল্পে আগামী দিনের যুদ্ধযান ট্যাঙ্কের একটি রূপক বর্ণনা দেন। এইচ জি ওয়েলসের বিভিন্ন গল্প, উপন্যাসচলচ্চিত্রে রূপ পেয়েছে।
এইচ জি ওয়েলসের দু্'টি বইটির সারসংক্ষেপঃ
১। টাইম মেশিনঃ
৮০২,৭০১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ টাইম মেশিনে উঠে পড়ে স্টার্টিং লিভারটা হাতে নিলেন তিনি……. “নিঃশ্বাস নিয়ে দাঁতে দাঁতে চেপে ধপ শব্দ করে অপসৃত হলাম। বাতি নেবানোর মতো করে রাত্রি নেমে এলো। পর মুহূর্তেই আগামীকাল এসে হাজির হলো। গতি বাড়লে কালো ডানার ঝাপটানিন মতো করে দিনের পর রাত নেমে এলো। তারপরে রাত দিনের দ্রুত আবর্তন একত্রে লীন হয়ে নিরবচ্ছিন্ন ধূসরতায় পর্যবসিত হলো।” যখন তিন থাকলেন তখন তিনি ভবিষ্যৎ কারে আটশত হাজার বছর পরিভ্রমণ করেছেন। সেখানে তিনি কী দেখতে পেয়েছিলেন সেটাই হয়ে উঠেছে সর্বকালের সেরা বিজ্ঞান কাহিনীগুলোর অন্যতম। এক ভিক্টোরীয় বিজ্ঞানী যখন ৮০২,৭০১ খ্রিস্টর্বাব্দে পদার্পণ করেন প্রথমে তিনি আনন্দিত হন। কারণ দেখতে পান যে দুর্ভোগ সেখানে সৌন্দর্য, পরিতৃপ্তি আর শান্তির দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। প্রথমটায় মানুষ থেকে উদ্ভুত বামন এক প্রজাতি এলয়রা তাকে আনন্দে অভিভূত করে ফেলে। শীঘ্রই তিনি বুঝতে পারেন যে এক সময়ের মহান কিনা এখন দুর্বল এবং শিশুদের মতো অন্ধকারের প্রতি ভীত।ভীত হওয়ার যথেষ্ট কারণও তাদের আছে: তাদের স্বর্গজগতের নিচে গভীর সড়ঙ্গের ভিতরে মানুষ থেকে উদ্ভুত আরেক জাতি ওত পেতে আছে-অশুভ মরলক তারা। আর যখন সেই বিজ্ঞানীর টাইম মেশিনটা হারিয়ে যায় তখন একটা ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে যায় যে নিজ সময়কালে যদি পত্যাবর্তন করতে হয় তাহলে এই সুড়ঙ্গগুলোর ভিতরে তাকে অবশ্যই তল্লাশী চালাতে হবে।
২। ইনভিসিবল ম্যানঃ
এইচ. জি. ওয়েলস এর লেখা অসামান্য সায়েন্স ফিকশন ইনভিসিবল ম্যান প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৭ সালে। প্রকাশের সাথে সাথে এটি বিপুলভাবে পাঠক নন্দিত হয়। এটিও বিশ্ব সাহিত্যের একটি সেরা সম্পদ। ইনভিসিবল ম্যান বইটির সারসংক্ষেপঃ
দি ইনভিজিবল ম্যান একজন বিজ্ঞানীর গল্প। যে কিনা অদৃশ্য হওয়ার রহস্য আবিস্কার করে ফেলে। আর নিজের উপর সে প্রক্রিয়া প্রক্রিয়া প্রয়োগ করে অদৃশ্য হয়ে যায়। এক ঝড়ের রাতে শহরের ছোট্ট হোটেলটাতে এসে ওঠে লোকটা। নাম গ্রিফিন। পেশায় সে বিজ্ঞানী। লম্বা হাতার ভারী কোট পড়ে থাকে সবসময়। রাতেবেলায়ও মোটা গগলসের আড়ালে চোখ ঢাকা থাকে তার। শরীরের উন্মুক্ত অংশগুলো ব্যন্ডেজে মোড়ানো। মোটেও বন্ধুসুলভ নয় সে। হোটেলে দরজা জানালা বন্ধ করে বসে থাকে সারাদিন আর ক্যমিকেলের শিশি আর যন্ত্রপাতি নিয়ে খুটখাট করে। গভীর রাতে সুনসান রাস্তায় একাকী ঘুরে বেড়ায়। কারোও সাথে মেশে না। কিন্তু কেন? কেন সে সারা দিনরাত মোটা গগলস পড়ে থাকে? কেনইবা হোটেলের অন্যান্য বোর্ডাররা ধীরে ধীরে তাকে সন্দেহ করতে শুরু করে?
ওয়েলস ছিলেন একজন ঘোষিত সমাজবাদী। তিনি শান্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, তিনি যুদ্ধকেই সমর্থন করেন। পরবর্তীকালে তাঁর রচনা বিশেষভাবে রাজনৈতিক ও নীতিবাদী চরিত্র লাভ করে। তাঁর লেখক জীবনের মধ্যপর্বের (১৯০০-১৯২০) রচনাগুলির মধ্যে কল্পবিজ্ঞান উপাদান কম। এই পর্বের রচনাগুলির মধ্যে বিধৃত হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত সমাজের জীবন (দ্য হিস্ট্রি অফ মি. পলি), "নব্য নারীসমাজ" ও নারী ভোটাধিকার (অ্যান ভেরোনিকা)।
১৯৪৬ সনের ১৩ই আগস্টে লন্ডনের ইম্পিরিয়েল কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সম্মানজনক সদস্যপদে থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন ঔপন্যাসিক, শিক্ষক, ঐতিহাসিক ও সাংবাদিক এইচ জি ওয়েলস। আজ তাঁর ১৪৯তম জন্মবাষর্ষিকী। কল্পবিজ্ঞানের জনক এইচ জি ওয়েলসের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মাদ নূরু
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য্
ভালো থাকবেন সর্বদা।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৬
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: কল্পবিজ্ঞানের জনক, ঔপন্যাসিক, শিক্ষক এবং ঐতিহাসিক এইচ জি ওয়েলসের ১৫১তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।