নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ২ কোটি নারী-পুরুষ আত্মহননের পথ বেছে নেয়। এর মধ্যে মারা যায় প্রায় ৮ লাখ। বাকিরা আত্মহত্যা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। সংস্থাটির মতে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। এরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ গুণ মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এ সংখ্যার মধ্যে সারা বিশ্বে প্রায় এক লাখ কিশোর আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। মারা যায় প্রায় ৪০ হাজার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আগামীতে এ প্রবণতা আরও বাড়ার আশংকা রয়েছে। আত্মহননের সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ২৮ জন ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। বাংলাদেশে প্রতি এক লক্ষে ৭ দশমিক ৮ জন আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশে অভাবগ্রস্ত, মাদকাসক্ত, প্রেমে বর্থতা, বিচার না পাওয়াসহ নানা কারণে মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে। দেশে এসব বিষয়ে কাজ করছে এমন মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিওর দেয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করছে। এর মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। তাদের বয়স ১৪ থেকে ৩০-এর মধ্যে। বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনের দেয়া তথ্যে ৫ বছরে দেশে ৫০ হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ আত্মহত্য করেছে। সামাজিক অবক্ষয়, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অভাব-অনটন, প্রেমে ব্যর্থতা, ধর্ষণ কিংবা এর ফলে সমাজপতিদের বিচারের নামে অপমান সইতে না পেরে অনেকেই আত্মহত্যা করছে। আত্মহত্যার অধিকাংশের নেপথ্যে রয়েছে কারও না কারও প্ররোচনা। এসব ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা ছাড়াও প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে শাাস্তি হয়েছে এ সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। সাম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে বিচার চাইতে গিয়ে অপমানিত হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্য করেন মা-মেয়ে। এ ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ধর্ষকদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে। এছাড়া আত্মহত্যার নেপথ্যে প্ররোচনার অভিযোগ উঠলেও কারও সাজা হওয়ার দৃষ্টান্ত একেবারেই হাতেগোনা। এই ভয়াবহতা রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস পালন করে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘Take a minute, change a life’ (একমিনিট ভা্বো, পরিবর্তন আনো জীবনে)। অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, কলম্বিয়া, ফিজি, ঘানা, হংকং, ভারত, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পাকিস্তান, স্কটল্যান্ড, শ্রীলংকা, সুদান, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ আত্মহত্যা প্রতিরোধে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস পালন করে। এসব দেশ আত্মহত্যা প্রতিরোধে নানাবিধ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও আমাদের দেশে তা করা হচ্ছে না।
সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিচার্জ বাংলাদেশের হিসাব মতে, বংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করে থাকে। ২০১৩ সাল থেকে সংস্থাটি সারা দেশে ৮ লাখ ১৯ হাজার ৪২৯ জনের ওপর এক জরিপ চালায়। এতে দেখ যায়, শহরের চেয়ে গ্রামে আত্মহত্যার প্রবণতা ১৭ গুণ বেশি। সংস্থাটির হিসাব মতে, যারা আত্মহত্যা করছেন তাদের বেশিরভাগই অশিক্ষিত ও দরিদ্র। আর আত্মহত্যা ঝুঁকিতে রয়েছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী নারীরা। মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের গবেষণার হিসাব মতে, প্রতিদিন বাংলাদেশে গড়ে ২৮ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করে থাকে। পুলিশ সদর দফতরের হিসাবও প্রায় একই রকম। সদর দফতরের দেয়া তথ্যে প্রতি বছর ১০ হাজার ১২৯ জন নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করে থাকে। এর মধ্যে ফাঁসিতে ঝুলে ও বিষ পান করে আত্মহত্যা করে বেশি। বাকিরা ঘুমের ওষুধ খেয়ে, ছাদ থকে লাফ দিয়ে কিংবা রেল রাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকে। এছাড়া দীর্ঘদিন রোগে ভোগে কিছু ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। তবে তার সংখ্যা খুবই কম। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। আত্মহত্যার চরম ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে ঝিনাইদহ পরিচিত? স্থানীয় পুলিশ ও হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহে ২০১০ সালে আত্মহত্যা করে ৩৮০ জন। আর চেষ্টা করে ২ হাজার ১০৯ জন। ২০১১ সালে আত্মহত্যা করে ৩০৯ জন, চেষ্টা করে ২ হাজার ৮৪৯ জন। ২০১২ সালে আত্মহত্যা করে ২৯৫ জন, চেষ্টা করে ২ হাজার ৫৮৩ জন। ২০১৩ সালে আত্মহত্যা করে ৩১১ জন, চেষ্টা করে ২ হাজার ৬৩৯ জন। ২০১৪ সালে করে ৩০৩ জন, আর চেষ্টা করে ২ হাজার ৪০৯ জন। ২০১৫ সালে করে ৩৬৩ জন, আর চেষ্টা করে ২ হাজার ৬০০ জনের ওপরে। ঝিনাইদহে প্রতি বছর গড়ে আত্মহত্যা করে ৩৫০ জন। আর চেষ্টা করে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। যারা আত্মহত্যা করেন তাদের অধিকাংশই নারী। অবিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য হওয়া অথবা স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর গর্ভধারণের কারণে অনেকে আত্মহত্যা করেন। বেশির ভাগ নারী আত্মহত্যা করেছেন গলায় দড়ি দিয়ে। আর পুরুষরা কীটনাশক খেয়ে। বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বেশ গুরুত্ব পায়। এর মধ্যে একজন মডেল আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্টের মাধ্যে সুইসাইড নোট দিয়েছিলেন। এমনকি ভিডিওতে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টাও দেখান। এরপরেই তিনি আত্মহত্যা করেন। বাংলাদেশে ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা এটাই প্রথম।বিশিষ্ট মনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক একটি সংগঠনের বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সুইসাইড প্রিভেনশন বাংলাদেশের (এসএসপিডি) মহাসচিব ড. মুহিত কামালের মতে, আবেগপ্রবণ ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ১৩ জনের আত্মহত্যার প্রবণতা থাকে। এসব ব্যক্তিকে যদি শনাক্ত করা যায় তবে এ সংখ্যা কমানো সম্ভব। মুহিম কামাল বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে একটি হেল্পলাইন করা যেতে পারে। যদিও ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ‘কান পেতে রই’ নামে একটি হেল্পলাইন চালু হয়েছে। এখানে বিষাদগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে সমাধানের পথ বলে দেয়া হচ্ছে। বিনাশ্রমে রাত জেগে স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন হেল্প লাইনটি পরিচালনা করছে। তিনি এ ধরনের হেল্পলাইন বেশি করে খোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ ৯৭০টি ঘটনা পর্যালোচনা করে নারীদের বেশি আত্মহত্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করেছে। তাদের মতে, বাংলাদেশে নারীদের ওপর শারীরিক, যৌন ও মানসিক নির্যাতন এবং ইভটিজিংয়ের ঘটনা বাড়ায় অনেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে আত্মহত্যা করছেন। আত্মহত্যার বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, সাধারণত দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যার কারণে মারা গেলে অপমৃত্যুর মামলা হয়। আর সে মামলা তদন্তে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী বের হয়ে আসতে পারে। আর যদি তদন্তে তেমন কিছু না পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ আদালতে অপমৃত্যুর প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলাটি তখনই নিষ্পত্তি হয়ে যায়। তবে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলাগুলো বিচারের জন্য আসছে এবং সাজার নজিরও আছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রমাণ হয় যে, প্ররোচনায় নয়, নিজেই আত্মহত্যা করেছেন।
আত্মহত্যার পূর্ব লক্ষণঃ
১. কেউ যদি কথায় বা লেখায় মৃত্যু, মরে যাওয়া বা আত্মহত্যার বিষয়টি প্রকাশ করে।
২. খুব হতাশ বা খুব মন খারাপ; সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসা।
৩. হঠাৎ হঠাৎ খুব রেগে যাওয়ার লক্ষণ ও প্রতিশোধ নিতে চাওয়া।
৪. ফাঁদে আটকা পড়েছি, বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই- এমন মনে হওয়া।
৫. খুব দুশ্চিস্তা ও মানসিক চাপ এবং না ঘুমানো অথবা অতিরিক্ত ঘুমানো।
৬. হঠাৎ অতিরিক্ত মুড বা ব্যবহারের পরিবর্তন।
৭. ক্রমে ক্রমে নেশাগ্রস্ততা বাড়তে থাকা (অ্যালকোহল, ড্রাগ প্রভৃতি )।
এ রকম লক্ষণ দেখা গেলে অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বা চিকিৎসকের কাছে পাঠাতে হবে।
সমাজ ও পরিবারের সহযোগিতায় আত্মহত্যার প্রবণতা থেকে অবশ্যই প্রিয়জনকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সবাই মিলে এ মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সেমিনার, মুক্ত আলোচনা, ফিচার, প্রবন্ধ, নাটক, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখা উচিত, যাতে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারী ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখা, তাদের কথা মনোযোগের সঙ্গে শোনা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব। লোকলজ্জা ও সামাজিক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে পারলে অমূল্য জীবনের অকাল মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা যেখানে মিডিয়ার দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। সামাজিক দ্বন্দ্ব, মানসিক অশান্তি , হতাশা, বিষণ্নতা ও ব্যক্তিত্ব গোলোযোগের কারণে অনেকে আত্মহত্যা করে থাকেন। যে আত্মহত্যা করে মারা যায় তার জন্য হয়তো কিছু করার থাকে না। অথচ আত্মহত্যা প্রতিরোধ্য। বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্ভব। আত্মহত্যা প্রতিরোধে সবার আগে করণীয় হলো আত্মহত্যাপ্রবণ লোকদের শনাক্ত করতে হবে। তারপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের স্বাস্থ্য সেবা এবং সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে বিভিন্ন সংগঠন আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাজ করে। কান পেতে রই, ব্রাইটার টুমরো এর মধ্যে অন্যতম। আত্মহত্যা প্রতিরোধে অবশ্য কিছু বাধা রয়েছে। প্রথমত, সারাবিশ্বে আত্মহত্যা প্রতিরোধের বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব পায় না। অনেক সমাজেই আত্মহত্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনাকে নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষেরা এর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারে না। আত্মহত্যা সম্পন্ন হয়ে গেলে যেহেতু কিছুই আর করার থাকে না সেহেতু এ জন্য প্রতিরোধই একমাত্র কার্যকর পন্থা। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে সচেতনতা আত্মহত্যা প্রতিরোধে অন্যতম ভূমিকা রাখে। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানীর সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। কারো মাঝে আত্মহত্যার লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে এড়িয়ে না গিয়ে বরং তার সঙ্গে কথা বলা বা মিশে যাওয়া, যাতে করে ওই ধ্বংসাত্মক ইচ্ছা থেকে ফিরে আসতে পারে। তার সঙ্গে মিশে গিয়ে তাকে বোঝার চেষ্টা করুন। তার কষ্ট বা বেদনার সঙ্গে মিশে যান এবং মনে শক্তি জোগান। একটি পথ বন্ধ হলে দশটি পথ খুলে যায়- এ অনুভূতি তৈরি করুন। তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ান ও মনোবিদের কাছে নিয়ে যান। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষ আত্মহননের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যদি কারো সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান, তবে সেই পথ থেকে তার ফিরে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। "হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না,কিন্তু পরস্পরের সম্মতির ভিত্তিতে তোমাদের মধ্যে ব্যবসা বৈধ এবং তোমরা নিজেদের হত্যা করো না,আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়াময়।" সূরা আন নিসা; আয়াত (২৯-৩০) পবিত্র কোরআনে আত্মহত্যাকে এভাবেই নিষেধ করা হয়েছে। তেমনিভাবে প্রধান অন্যান্য ধর্মেও (হিন্দু, বৌদ্ধ) আত্মহত্যা পাপের, বর্জনীয় এবং গর্হিত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আত্মহত্যা সবসময়ই একটি সম্ভাবনার অপার মৃত্যুর, একটি জীবন, একটি ইতিহাসের অবসান এবং তা কখনো কাম্য নয়। তাই আত্মহত্যা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির এখনই সময়।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে মলাসইলমুইনা,
মনোযোগসহকারে লেখাটি পড়ার জন্য।
সবাই মিলে এ মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে
এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৭
ডার্ক ম্যান বলেছেন: দারুন পোস্ট । আজ সমকাল পত্রিকার একটি ঘটনা দেখলাম, স্ত্রী স্বামীকে ভিডিও কল করে আত্মহত্যা করছে । স্বামী বাঁচানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু পারে নি।
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ডার্কম্যান ধন্যবাদ দিবো নাকি দুঃখ প্রকাশ করবো বুঝতে পারছিনা,
আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে অনাকাঙ্খিত এই দুঃখজনক ঘটনা।
৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১৪
বিভ্রান্ত নাবিক বলেছেন: যারা অনেক চেষ্টা করেও জীবনে উপভোগের কিছু পায়না, তাদের সসম্মানে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত, বেচে থাকতেই হবে , এমন বাধ্যবাধকতাও কি আছে?
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সৎভাবে জীবনযাপন করেও যারা জীবনে কিছু পায়না
তাদের জন্য পরকালের সুসংবাদ।
আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না।
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৬
মলাসইলমুইনা বলেছেন: আত্মহত্যার পূর্ব লক্ষণগুলো পড়ে ভয় পেলাম | দেশের অর্ধেক মানুষেতো এই লক্ষণ অনুযায়ী যে কোনো সময় আত্মহত্যা করতে পারে ! দেশটাও নাকি আত্মহত্যা করে বসে ঝামেলার ষোলো কলা পূর্ণ করে !