নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ঊনিশ শতকের ষাট দশকে আবির্ভূত অন্যতম কবি, গবেষক ও সাহিত্য-সম্পাদক আব্দুল মান্নান সৈয়দ। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, উপন্যাসিক, অনুবাদক, নাট্যকার ও গবেষক। পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় ধরে বাংলা সাহিত্যকে নানান দিকে দিয়ে ঋদ্ধ করেছেন। একসময় তিনি বাংলা গদ্যে প্রচুর নিরীক্ষা করেছেন, ঠিক তেমনি কবিতায় নিজস্ব একটি ধারা ও স্বাতন্ত্র বজায় রেখেছিলেন। অনুবাদেও ছিলেন তিনি সহজ ও সরল। পরিশ্রমী এই লেখক সাহিত্যের সব শাখায় ছিলেন সমান পারদর্শী। প্রায় ৩০০টিরও বেশী গ্রন্থ তিনি লিখেছেন। কবিতা ছাড়াও তিনি গল্প, উপন্যাস, সমালোচনা, নাটক ইত্যাদি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় সুপ্রসার ও সুগভীর অবদান রেখেছেন। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অনন্যসাধারণ শিল্পী। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, আলাওল পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে তিনি সম্মানতি হয়েছেন। আজ তাঁর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১০ সালের আজকের দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুবার্ষিকীতে আব্দুল মান্নান সৈয়দকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
১৯৪৩ সালের ৩রা আগস্ট অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার ইছামতি নদী থেকে অনতিদূরে জালালপুর নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল মান্নান সৈয়দ। তাার পিতা সৈয়দ এ. এম. বদরুদ্দোজা ছিলেন সরকারী চাকুরে ; সাহিত্যের বিশেষ অনুরাগী। মাতা কাজী আনোয়ারা মজিদও সাহিত্যের অনুরাগী ছিলেন। জন্মের কয়েক বছরের মধ্যে, ১৯৪৬-এ, কলকাতায় হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গা হয় এবং পরের বছর ১৯৪৭-এ বৃটিশ শাসিত ঔপনিবেশিক ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান ও ভারত রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। ১৯৫০-এ ভয়াবহ আরেকটি দাঙ্গা হয় পশ্চিম বঙ্গে। তখন তার পিতা নৌকোয় করে পালিয়ে সপরিবার পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকা শহরে চলে আসেন। ঢাকায় এসে তারা গোপীবাগে বসবাস করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে গ্রীন রোডে জমি কিনে তাঁর পিতা স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলেন। সে সময় গ্রীন রোডের নাম ছিল "কুলি রোড"। ৫১ গ্রীন রোডই ছিল তাঁর আমৃত্যু ঠিকানা। তার পিতা মান্নান সৈয়দের লেখালেখির জন্য গ্রীন রোডের বাসায় উঠানের একপাশে আলাদা দোচালা ঘর তুলে দিয়েছিলেন। ১৯৫৮ খৃস্টাব্দে ঢাকার নবাবপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬০ খৃস্টাব্দে। অত:পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৬৩-তে স্নাতক সম্মান এবং ১৯৬৪-তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।শিক্ষা-জীবন শেষে তিনি সিলেটের মুরারীচাঁদ কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। সারা জীবন প্রধানত: অধ্যাপনা ক'রে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। কর্মজীবনে তিনি ফরিদপুর শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ, সিলেটের এম. সি. কলেজে, এবং ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ডিসট্রিক্ট গেজেটিয়ারে। ঢাকার জগন্নাথ কলেজে দীর্ঘ কাল অধ্যাপনা করার পর ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত মেয়াদের জন্য তিনি নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের পদে অধিষ্ঠিত হন।
সব্যসাচী লেখক আব্দুল মান্নান সৈয়দে বাংলা সাহিত্যের যে শাখাতেই চর্চা করেছেন সেখানে সাফল্য ও কীর্তি ধরা দিয়েছে অবলীলায়। বলা হয় এদেশে তাঁর মতো পরিশ্রমী লেখক নেই। সমসাময়িককালে তাঁর মতো বড় মাপের লেখক দেখা যায় না। দুই বাংলাতেই তাঁর মতো সাহিত্যসমালোচক খুঁজে পাওয়া যায় দুষ্কর। বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে ছিল তাঁর অগাধ ধারণা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় তাঁর সৃজনশীলতা অসাধারণ। প্রচণ্ড তোলপাড় করা শক্তি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। যে কোন লেখার মধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। বাংলা কবিতায় কবিতায় তিনি যুক্ত করেছিলেন পরাবাস্তববাদী দিগন্ত। তাঁর উদ্ভাবনী শক্তি ও ব্যঞ্জনা সৃষ্টি তাঁর ভাষাকে করে তুলেছে ব্যতিক্রমী। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় প্রচৃর কাজ করলেও ভগ্নস্বাস্থ্য উপেক্ষা করে তিনি আরো কাজ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। সব্যসাচী লেখক মান্নান সৈয়দ কথাসাহিত্যেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ, জোৎস্না রৌদ্রের চিকিৎসা, সংবেদন ও জলতরঙ্গ, পরাবাস্তব কবিতা, মাছ সিরিজ, সকল প্রশংসা তাঁর, আমার সনেট, সত্যের মতো বদমাশ, মৃত্যুর অধিক ক্ষুধা লাল, কলকাতা, পোড়া মাটির সংসার, শুদ্ধতম কবি, জীবনানন্দ দাশের কবিতা, করতলে মহাদেশ, চেতনায় জলপড়ে শিল্পের পাতা নড়ে, দশ দিগন্তের স্রস্টা ,মাতাল মানচিত্র, বুদ্ধদেব বসুর সুনির্বাচিত কবিতা, আমার বিশ্বাস প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। প্রতীকী এবং পরাবাস্তবতাবাদী পরিচর্যা আবদুল মান্নান সৈয়দের ছোটগল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রথম পর্বের গল্পের ভাষারীতিতে আরোপিত আধুনিকতা দ্বিতীয় পর্বে পরিত্যক্ত হয়েছে; ফলে, গল্পস্রোত হয়েছে অনেক বেশি সাবলীল ও স্বচ্ছন্দ। সত্যের মত বদমাস, চল যাই পরোক্ষে এবং মৃত্যুর অধিক লাল ক্ষুধা ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ। শুধু কবিতা-কথাসাহিত্য নয়, তিনি লিখেছেন, কাব্যনাট্যপ্রহসন, একাঙ্ক, শ্রুতিনাট্য, পূর্ণাঙ্গ নাটক, অনুবাদ নাটক, ইত্যাদি। ১৯৯২ খৃস্টাব্দে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত হয় তাঁর নাট্যগুচ্ছ। ২০০৯-এ প্রকাশিত হয় নাট্যধর্মী সকল লেখার সঙ্কলন নাট্যসমগ্র। তিনি ছোটগল্পের নাট্যরূপ দিয়েছেন। তাঁর কয়েকটি কাব্য নাট্যের নামঃ বিশ্বাসের তরু, জ্যোৎস্না-রৌদ্রের চিকিৎসা, ঈশ্বরপ্রাপ্তির ছোট্ট গাঁথা, চাকা, কবি ও অন্যেরা এবং আটতলার ওপরে।
আব্দুল মান্নান সৈয়দ দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। ২৭ আগষ্ট ২০১০ চ্যানেল আই নামক টেলিভিশনে আয়োজিত একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে হঠাৎ করে অসুস্-থ হয়ে পড়েন তিনি। নিকটস্থ ঢাকা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসা লাভ করেন তিনি। সেই থেকে বাসায়ই অবস্থান করছিলেন কবি। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ ইফতারীর কিছু আগে ঘুমের ভিতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। বাসার অদূরে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে ডাক্তাররা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরদিন ৬ আগস্ট জনাজা শেষে তাঁর লাশ আজিমপুর গোরস্থানে সমাধিস্থ করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে সমকালীন বাংলা সাহিত্য এক অপূরণীয় শূন্যতায় নিমজ্জিত হলো এবং এমন একটি সংকট তৈরী হলো যা দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হবে। তাকে মূল্যায়ণ করতে হলে পূর্ণাঙ্গ মান্নান সৈয়দকেই সামনে রাখতে হবে। এই পরিপূর্ণ আবদুল মান্নান সৈয়দ সৃষ্টির প্লাবনে যে ভূখণ্ডের অধিশ্বর তা থেকে তার বিলয় নেই। তার সৃষ্টির গুনেই আজ তিনি আমাদের সাহিত্যের এক অনন্য পুরুষ। আব্দুল মান্নান সৈয়দ ছিলে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম "পোয়েট ইন রেসিডেন্স"। তাঁকে স্কলার-ইন-রেসিডেন্স পদমর্যাদায় নিয়োগ করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংগ্রামী জীবনকে গ্রোথিত করে পূর্ণাঙ্গ নজরুলজীবনী রচনার দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে সাহিত্য কর্মে যে তুলনারহিত সৃজনশক্তির স্বাক্ষর তিনি রেখে গেছেন তার মূল্য জীবদ্দশায় যথাযথভাবে স্বীকৃত হয় নি। স্বীয় বিশ্বাসে রাজনৈতিক ঔদার্য়ের কারণে তাঁকে প্রায়শঃ রাষ্ট্রীয় উপেক্ষার শিকার হতে হয়েছে।
সব্যসাচী লেখক মান্নান সৈয়েদের আজ ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। মুত্যুদিনে কবিকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
পাঠকরে জন্য আব্দুল মান্নান সৈয়দের সত্যের মত বদমাস গল্পটি সংযোজন করলামঃ
তারা দুজন, মা আর ছেলেঃ মা-র মুখমণ্ডল তৈলাক্ত করুণ ও লম্বিত আর ছেলেটার গোলমুখ বিস্ময় আনন্দ ও কৌতূহলে ভরা, তারা দুজন এক মুষ্টি অথচ সমুদ্রসমান এই গ্রহের মেলার মধ্যে এসে ঢুকলো। এতো লোকজন, আলো হাসি-গান, বাঁশি বাজছে ঐদিকে, কুকী মেয়েদের নাচ দেখার জন্য সাতজন মহাহল্লা করতে করতে পরস্পরের পিঠে চড়ে চলে গেলো। তার পাশ দিয়ে গলাগলি করে শূন্যে তেইশটি বেলুন উড়ছে যেন চাঁদে যাবে; কিন্তু কী এক বিষাদ পেয়ে বসলো ছেলেটিকে।
‘মা, এ কোন রাজা?’ ছেলেটির কণ্ঠে ঝরে পড়লো বিপন্ন বিস্ময়।
‘কেন, এখানেই তুই তো আসতে চেয়েছিলি।’ বিব্রত মা বললেন, ‘আমি তো তোকে এখানেই আনবো বলেছিলাম।’
‘তখন ভেবেছিলাম আমার ভালো লাগবে, কিন্তু এখানে এসে অবধি ভয় লাগছে। এ আমাকে কোথায় নিয়ে এলে, মা? আমি তো চাইনি এখানে আসতে, আমি কখনো চাইনি, কক্ষণো না।’
‘ভয় করিসনে খোকা। দেখছিস না কতো লোকজন ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কতো আলো দেখছিস না, কতো ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে লাফিয়ে উঠছে খুশিতে, খেলা করছে আনন্দে ধুলোর উপর মা-বাপের হাত ধরে, ওরাও তোর মতো বেড়াতে এসেছে মেলায়।’
‘তা তো দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু আমার বুকের মধ্যে ভয় এলে আমি কি করবো, বলো।’ মা-র আর তার শরীরের পশ্চাতে মুক্তি ও প্রতিরোধহীন জন্তুর মতো কী একটা দেখতে পেয়ে শিউরে উঠলো সে, তোমার পিছনে আমার পিছনে ওটা কী?’
‘ওটা ছায়া।’
‘ছায়া? ছায়া কী?’
‘ছায়া সব সময় তোর সঙ্গে-সঙ্গে ঘুরবে, হয় পিছনে না হয় সম্মুখে, ছায়া নেই এরকম কোনো মানুষ আমি দেখিনি। ভয় কি, অমন করে উঠলি কেন?’
‘না মা, আমি ছায়া চাই না।’
‘না চাইলেই তো ও চলে যাবে না। অন্ধকার থেকে আমরা আসি কি না, তাই আমাদের শরীরের সঙ্গে ছায়া জড়িয়ে থাকে। ভয় পাসনে খোকা, এতো লোক কেউ ভয় পায় না, তুই কি সবার থেকে আলাদা হতে পারবি? ছায়াকে আর ফেরত দেয়া যায় না। কিন্তু খোকা, তুই কোনো মানুষ থেকে আলাদা হতে পারবি না, তুই একা একরকম হবি তা হয় না, মানুষ কোনো দিন অসাধারণ হতে পারে না_খামাখা এসব বাজে বকছিস কেন, ভয় পাচ্ছিসই বা কেন? তার চেয়ে দ্যাখ দোকানে দোকানে লাল নীল সবুজ কতো আলো জ্বলছে, বেলুন উড়ছে ফুর্তিতে, ঘুরছে নাগরদোলা। এই দ্যাখ আমাদের পাশে খেলনার দোকান : কতো রকমের পুতুল সাজানো রয়েছে : রিকশা, ট্যাঙ্ িএরোপ্লেন, আম, কাঁঠাল, সাহেব মেম।’
‘ওসব আমাকে কিনে দেবে না মা?’
‘দেবো, বাবা, দেবো। কোনটা তোর ভালো লাগে, কোনটা নিতে চাস তুই বল?’
‘আমি সবগুলো চাই।’
‘দূর বোকা সবগুলো কি নেয়া যায়, তাহলে দোকান চলবে কী করে? আচ্ছা ভালো দেখে আমিই একটা জিনিস পছন্দ করে দিচ্ছি তোকে। রেল গাড়ি নিবি, এই রেলগাড়িটা?’
‘নেবো, কিন্তু এই রেলগাড়িটাই বিশেষ করে তোমার পছন্দ হলো কেন মা?_যাকগে সে কথা। আচ্ছা মা, আসল রেলগাড়ি কি ছোটো, এই রেলগাড়ির মতো?’
‘হ্যাঁ, অবিকল এই রকম। এরকমই এঞ্জিন, কামরাগুলো দু-একটা মালগাড়িও আছে, পিছনে গার্ডের ঘর, গার্ডের হাতে সবুজ নিশান দোলে, কামরার জানলায় জানলায় সারি সারি মুখ দেখা যায়। তফাৎ শুধু একটু যে, এই রেলগাড়ি চলতে পারে না, সেই রেলগাড়ি কেবলি চলে, স্টেশনে স্টেশনে থামে অল্পক্ষণ, তারপরই আবার চলা, যে রেলগাড়ি চলতে পারে না সে আর রেলগাড়ি থাকে না_বাতিল হয়ে যায়।’
‘ওমা, দ্যাখো, দ্যাখো, কি সুন্দর নাগরদোলা।’ ছেলেটার মনোযোগ কেড়ে নিয়ে গেলো। নাগরদোলা উঠছে আর পড়ছে কী সুন্দরভাবে ঘুরছে। ‘আমি নাগরদোলায় চড়বো, মা।’
‘না, বাবা, তোমার মতো ছোটো ছেলেমেয়ে কেউ চড়ছে না, দেখছো না? তুমি বড়ো হও, তারপরে চড়ো।’
‘কি মজা, বড়ো হলে আমি নাগরদোলায় চড়বো! একবার উপরে উঠে যাও আকাশে, তারপর শাঁ করে নেমে এসো নিচে। লোকগুলোকে দ্যাখো, মা, উপরের দিকে যখন উঠছে, খুশিতে লাফাচ্ছে যেন, আর নিচে নামার সময় ভয়ে দু’চোখ বুজে ফেলছে। আমি বড়ো হয়ে নাগরদোলায় চড়বো।’
‘যতো মজা ভাবছিস, খোকা, অতো মজা নয়। ওই দ্যাখ, একজন লোক মাটিতে উবু হয়ে বসে বমি করছে।’
‘কেন, মা?’
‘নাগরদোলা ওর সহ্য হয়নি, হয়তো ও মরে যাবে।’
‘ম’রে যাবে। তাহলে আমি কিছুতেই নাগরদোলায় চড়বো না, বুঝলে মা, আমি চড়বো না। কিছুতেই না, আমি মরে যেতে চাই না, পৃথিবী যতো দিন থাকে আমি ততো দিন বেঁচে থাকবো, মা।’
‘তোমাকে ওরা জোর করে নাগরদোলায় তুলে দেবে।’
‘কারা মা? তুমি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো?’
‘তোকে আবার আমি ভয় দেখাতে যাবো কেন রে? কিন্তু ওরা ভারি বদ্লোক। ঐ দেখছিস না, নাগরদোলার গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে চারজন লোক, একেকটা কোঠা নেমে এলেই জোরে দিচ্ছে ঠেলে_ওরা।’
‘তাই তো, এখন বুঝতে পারছি; এতোক্ষণ ভাবছিলাম নাগরদোলাটা ঘুরছে কী করে, ও, ওদের চালাকি। কেমন চুপি চুপি ঠেলছে, যেন কেউ দেখতে না পায়। আমি নাগরদোলায় কিছুতেই উঠবো না, তবু ওরা জোর করে তুলে দেবে আমাকে? মা তুমি উত্তর দিচ্ছো না কেন?’
‘ঐ দ্যাখ, কী সুন্দর টিয়েপাখি।’
‘তুমি আমাকে ভোলাতে চাচ্ছো?’
‘দূর, তা না। ঐ দ্যাখ, টিয়েপাখিটা কথা বলছে। ওর চারপাশে ভিড় জমে আছে। চল ওদিকে যাই।’
‘বা-বা! কী চমৎকার লাল ঠোঁট নেড়ে নেড়ে কথা বলছে। কি বলছে, মা?’
‘কেন, বুঝতে পারছিস না? বলছে, সোজা পথে চলো।’
‘সোজা পথে চলো।’ কী আশ্চর্য কথা! ‘সোজা পথে চলো।’ এমন বিশ্রী কথা কেউ কোনো দিন বলেনি।
‘খারাপ কথা কেন, কথাটা তো খুব ভালো। খোকা, এদিকে আয়, তোর কানে কানে বলি : আর কখনো যেন এসব কথা বলিস না, বুঝেছিস? শুনতে পেলে, এখানে যারা ভিড় করে আছে রেগে যাবে তারা। আর ঐ বুড়ো লোকটাও।’
‘শাদা দাড়ির বুড়ো লোকটা আমার দিকে কী ভীষণভাবে তাকিয়ে আছে, দ্যাখো মা, যেন আমার মনের সব কথা জেনে ফেলেছে লোকটা। আমার ভয় লাগছে, লোকটা আমার দিকে অমন করে তাকিয়ে আছে কেন?’
‘ওকে সালাম করো, খোকা। টিয়েপাখিটা বন থেকে এনে উনিই পুষেছেন, কথা বলতে শিখিয়েছেন।’
‘ও, টিয়েপাখি যে কথা বলছিলো, তাহলে এই লোকটার। কথাটা এখন আমার আরো খারাপ লাগছে। ওকে আমি কিছুতেই সালাম করবো না।’
‘জেদ করো না খোকা। কেন সম্মান করবে না ওকে? দেখছো না সবাই ওকে ঘিরে আছে, কথা বলছে।’
‘আশ্চর্য তো, মা। অমন সুন্দর পাখিটাকে ভুলে সবাই কিনা ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছে, কান দিয়ে যেন ওর কথাগুলো খাচ্ছে।’
‘চোখের ইশারায় তোকে উনি ডাকছেন, খোকা, আয়, ভিড় ঠেলে ভিতরে যাই।’
‘না, মা, আমি যাবো না, তুমি চলে এসো। চলো, এই ভিড় থেকে আমরা পালিয়ে যাই ওদিকে। টিয়েপাখি এমন ভীষণ ফাঁদ পেতে রেখেছে, আমি তা কখনো ভাবিনি। এসো মা।’
‘আমার হাত ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস, খোকা?
‘চলো না, ওদিকে পশুশালা দেখা যাচ্ছে। পশুরা এদের চেয়ে অনেক ভালো, তারা কথা বলতে পারে না, আর এরা এমন বদমাশ যে পাখিদেরও কথা বলতে শেখায়। আচ্ছা মা, তুমিই বলো আমার গা ছুঁয়ে, যে পাখি কথা বলতে শেখে, সে কি আর পাখি থাকে? সে তো একটা বদমাশ হয়ে যায়।’
‘খোকা, দেখতে পাচ্ছিস, ওদিকের ওই ছোটো ঘরটায় দুটো বাঘ রয়েছে। তুই তো ওদের ভালো বলছিলি, কিন্তু দ্যাখ, আমরা কতো দূরে রয়েছি, তবুও ওখান থেকে এসে ওদের গায়ের কটু গন্ধ আঘাত করছে আমাদের। ওদিকে ছোটো ছোটো ডালের সঙ্গে চেন দিয়ে বাধা কতো বাঁদর উঠছে বসছে, চুল খুঁটে দিচ্ছে একে অপরের।’
‘ওদিকে কালো মিশমিশে ভালুক। ওদিকে কেমন সুন্দর শিঙ উঁচিয়ে আছে হরিণেরা। আর পাখি, ছোটো ছোটো কাগজের বলের মতো ফুটফুটে পাখি_নাচছে, ঝরছে, একটি মাত্র পাতা নিয়ে বুনে তুলছে।
‘দেখা হলো তো, এবার চলো ফিরে যাই।’
‘আমার ভীষণ খিদে পেয়েছে, মা!’
‘বাড়ি চলো, আমি বানিয়ে দেবো। এখানকার জিনিস খেলে অসুখ করবে। উঃ!’
‘কী হলো মা, পা মাড়িয়ে দিয়েছে? কে তুমি আমার মা-র পা মাড়িয়ে দিলে? ভারি বদমাশ লোক তো তুমি। কখন থেকে দেখছি, তুমি আমাদের পিছু পিছু ঘুরছো। মা বলেছিলো ছায়া, তাই আমি কিছু বলিনি। এখন দেখছি তুমি একটি বদমাশ, শয়তান। আবার পায়ে পায়ে আঁধারে মিলিয়ে যাচ্ছে, দ্যাখো।’
‘ছি খোকা, অমন করে বলতে নেই, উনি একজন ভদ্রলোক।’
‘ভদ্রলোক কাদের বলে, মা, যারা লুকিয়ে লুকিয়ে খারাপ কাজ করে তাদের?’
‘ভদ্রলোক কাদের বলে! আমি… আমি তো ঠিক… ঠিক বলতে পারি না। যারা দামি জামা জুতো পরে, আমি তো দেখি, তাদেরই লোকে ভদ্রলোক বলে, হ্যাঁ, শুধু তাদেরই।’
দেখেছো মা, লোকটা আস্তে আস্তে সরে পড়লো, নিশ্চয়ই বদ মতলবে ঘুরছিলো আমাদের সঙ্গে সঙ্গে। তা তুমি এমন করছো কেন মা, তোমার চোখ-মুখ, আমি কি তোমাকে ব্যথা দিলাম? ও বাবাগো মা-মা-মা মাগো!’
‘ভয় পেয়েছিস বুঝি, খোকা, খোকা! এই তো আমি, তোর মা, খোকা! আমার দিকে তাকা। কী, ভয় পেলি কেন এতো, খোকা?’
‘মা, আমার পায়ের তলায় একটি সাপ মনে হলো।’
‘কই দেখি। ও, এই তো, আরে এ তো কাগজের সাপ; দূর পাগল, ওতো কাগজের; তুই ভেবেছিলি বুঝি সত্যিকার। কেউ হয়তো কিনেছিলো, পড়েটড়ে গেছে কি করে। এই দ্যাখ, কাগজের সাপ আমি ধরে আছি দেখছিস না? ও কামড়াতে পারে না রে।’
‘না মা, ফেলে দাও, ফেলে দাও। হোক কাগজের আমার কেন যেন ভয় লাগছে। কিংবা হয়তো কাগজের বলেই ভয় লাগছে আমার, সত্যিকার সাপ হলে আমার হয়তো একটু ভয় লাগতো না। আমার ভয় লাগছে মা, তুমি ছুড়ে ফেলে দাও ওটাকে। আমি চোখ বুজছি; চোখ বন্ধ করে আমি এক দুই তিন বলবো, তুমি তিন বলার আগেই ফেলে দেবে, তারপর আমি চোখ খুলবো। তারপর আমরা বাড়ি চলে যাবো, আমার কিছুই ভালো লাগছে না, চারিদিক থেকে যেন শুঁড় তুলে আসছে ভয়। মা, আমি চোখ বুজলাম এইবার_তুমি ফ্যালো_এক_কাগজের সাপটাকে তুমি ফেলে দাও ছুড়ে, ফেলে দাও_দুই_ফেলে দিয়েছো তো মা? কাগজটাকে ফেলে দিয়েছো তো? এইবার আমি তিন বলবো, তারপরই চোখ খুলবো, তুমি তাড়াতাড়ি ফেলে দাও, কথা বলছো না কেন মা, এইবার আমি তিন বলেই চোখ খুলবো যে দাও ফেলে_তিন। কই! একি, মা কই! মাকে তো দেখতে পাচ্ছি না মা, মা, মা-গো! কোথায় তুমি মা সাড়া দাও। আমার মা কই, আমার মা কি হারিয়ে গেলো! মা, মা, এতো লোকজনের মধ্যে তুমি কোথায় চলে গেলে, মা। তুমি ছাড়া আমি যে বাঁচবো না, মা। ঈশ আমার মা আর নেই, আমার মা কোথায় হারিয়ে গেছে, হায় ঈশ্বর! মার মুখের পাণ্ডুর আদলটুকুও কী দ্রুত ভুলে যাচ্ছি আমি, আমার কি উপায় হবে, মা, তুমি ফিরে এসো, একবার অন্তত একবার, তোমার মুখ আমি গেঁথে নেবো মনে।_এই তো কয়েকজন লোক দেখছি, আরে, এরাই তো নাগরদোলা ঠেলছিলো সেই চারজন লোক। আচ্ছা, তোমরা আমার মা কে দেখছো কি কেউ, খুব ভালো আমার মা-কে, সবচেয়ে সুন্দর আমার মা-কে?’
‘তোর মা-কে পাচ্ছিস না বুঝি’ প্রথমজন বললো।
‘ও, বুঝেছি, এ কাদের কাজ’ দ্বিতীয়জন বললো।
‘তোর মা-কে নিয়ে ওরা খুব মজা লুটছে এখন’ তৃতীয়জন বললো।
‘তুই ভাবিস না কিছু, তোর মা-রও এতে মনে মনে শায় আছে’ চতুর্থজন বললো।
‘কী আজেবাজে কথা বলছো তোমরা। আমার মাকে তোমরা কেউ চেনো না; অতো সুন্দর আমার মাকে তোমরা কি চিনতে পারো?_তোমরা তো বদমাশ! দেখি সরো, মাকে খুঁজে বের করবো।’
‘পয়সা পড়ে গেলে খুঁজে পাওয়া যায়, মানুষ পড়ে গেলে কখনো পাওয়া যায় না’ চতুর্থজন বললো।
‘আমি খুঁজে বের করবো মাকে। তোমরা চারজন চারদিক থেকে ঘিরে আছো কেন আমাকে? সরো, আমি মার কাছে যাবো।’
‘তোর মা-র কাছে তোকে পেঁৗছে দেবার জন্যই তো এসেছি আমরা, চল আমাদের সঙ্গে’ তৃতীয়জন বললো।
‘না, আমি তোমাদের সঙ্গে যাবো না, তোমরা বদমাশ। আমার গা ধরছো কেন তোমরা, দাও ছেড়ে দাও আমাকে।’
‘তোর মা-কে পাইনি, তোকে দিয়েই সেই কাজ চলবে আমাদের’ দ্বিতীয়জন বললো।
‘একি, আমাকে তোমরা কাঁধের উপর তুললে কেন? কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাকে? মা, তোমাকে কারা ধরে নিয়ে গেছে, আমাকেও ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’
‘তোর মাকে পাইনি, তোকে দিয়েই সেই কাজ চলবে আমাদের’ প্রথমজন বললো।
‘ইশ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছে এরা আমাকে, এরা কি সেই নাগরদোলায় জোর করে আমাকে চড়িয়ে দেবে? মা_মা-গো!’
নিরুত্তর চারজন লোক তাকে কবরে যাবার খাটিয়ার চারটি পায়ার মতো বয়ে নিয়ে গেলো।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা,
লেখকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা
করার জন্য। ভালো থাকবেন।
২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলী
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ছবি আপু, ধন্যবাদ আপনাকে
সব্যসাচী লেখক আব্দুল মান্নান সৈয়দের
৭ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য।
৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৩
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: আবদুল মান্নান সৈয়দ আমার প্রিয় লেখকদের একজন।
তিনি তার কবিতার মাধ্যমে নতুন এক কাব্যরুচির পাঠক তৈরি করেছিলেন।
তিনি তার রচনায় একটি ভিন্ন ভাষাকাঠামো আয়ত্ত করে নতুন চিন্তা ও কল্পনার প্রকাশ ঘটিয়ে ছিলেন।
তার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধার সাথে।
০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আকন্দ ভাই,
সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন।
ভালো থাকবেন।
৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৪
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
নূরু ভাই... কেমন আছেন? অনেক দিন পর আপনার স্টাইলে পোস্ট পেলাম। ভালো থাকবেন
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:২১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ মইনুল ভাই
আল্লাহর অশেষ কৃপায়
কুশলে আছি, তবে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
নানা আনুসঙ্গিক সমস্যায়
দিনাতিপাত করছি। দোয়া করবেন।
৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫১
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
নূরু ভাই... আপনি ও আপনার একনিষ্ঠতা অনেকের প্রেরণার উৎস।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেহের যত্নও বাড়াতে হয়। আশা করি সেটি করে যাচ্ছেন। ভালো থাকুন এবং ব্লগে লেখতে থাকুন, এটি মনের খোরাক - এবং মানসিক ওষুধ।
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার পরামর্শের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
দিনে দিনে আমরা সৌজন্যতা, ভদ্রতা এবং
আন্তরিকতা বিসর্জন দিতে বসেছি। মানবিক
গুণাবলী জলাঞ্জলি দিয়েছি তাইতো কারো
কষ্টে কাতর হওয়ার অনুভূত হয়না।
আপনার আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
তিনি সাহিত্য গগনতলের অন্যতম নক্ষত্র! লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তার বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করছি!