নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ কালীন সময়ের অন্যতম ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সংগ্রামমুখর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আব্দুর রাজ্জাক বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, শান্তি ও সামাজিক মুক্তির আন্দোলনে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রথমসারির সংগঠক ও নেতা। তিনি ছিলেন '৭১-এর ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের আজ ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪২ সালের এই দিনে তিনি শরীয়তপুরে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিন এই নেতার জন্য আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
রাজনীতিবিদ আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ০১ আগস্ট শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ইমাম উদ্দিন এবং মাতার নাম বেগম আকফাতুন্নেছা। তিনি ১৯৫৮ সালে ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি হন। ১৯৬০-৬২ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬২-৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র-ছাত্রী সংসদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের সময়ে তিনি প্রথম গ্রেপ্তার হন এবং ’৬৫ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন। কারাগার থেকেই মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং পরে মাস্টার্স পাস করেন। ১৯৬৩-৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্রলীগের সহ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ৬ দফা আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে ’৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। এরপর তিনি এলএলবি পাস করেন এবং ১৯৭৩ সালে আইনজীবী হিসেবে বার কাউন্সিল’র নিবন্ধিত হন। আব্দুর রাজ্জাকের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ৫০’র দশকের শেষের দিকে ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি পর পর দুই বার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ থেকে ’৭২ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাসেবক বিভাগের প্রধান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার (মুজিব বাহিনীর ৪ সেক্টর কমান্ডারের একজন) ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনীর একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন। তিনি দেরাদুনে ভারতের সেনাবাহিনীর জেনারেল উবানের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। মুজিব বাহিনী গঠনে অন্যতম রূপকার ছিলেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম বারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। ১৯৯১, ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে ২টি ক'রে আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন। আব্দুর রাজ্জাক ১৯৬৬-১৯৬৭ ও ১৯৬৭-১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রাজনীতিবীদ আব্দুর রাজ্জাক লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৯ বছর। মৃত্যুর আগে তিনি লন্ডনের কিংস হসপিটালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডাক্তারদের পরামর্শে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়ার পর ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় আবদুর রাজ্জাকের মরদেহ। ২৬ ডিসেম্বর বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি রেখে যান স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক এবং দুই পুত্র নাহিম রাজ্জাক ও ফাহিম রাজ্জাক। মৃত্যুর পূর্বাবধি তিনি শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একটি উন্নত সমৃদ্ধ সুখী সুন্দর অসামপ্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের অনন্য অবদান বাঙালি জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। আজ এই রাজনীতিবীদ নেতার ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। বর্ষীয়ান ওই জননেতার জন্মদিনে তাঁর জন্য আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধুতরার ফুল,
মহান নেতার জন্ম দিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০০
প্রোলার্ড বলেছেন: ২৫.০৩.১৯৭১ হতে ১৬.১২.১৯৭১ - যুদ্ধের সময় উনি কোথায় ছিলেন ( সে সময়ে উনার বয়স ছিল ২৯ বছর) ? আপনার লিখায় সেটা নজরে পড়েনি বলে জানতে চাইছি।
০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জনাব প্রোলার্ড ২৫মার্চ ১৯৭১ হতে ১৬ ডিসেম্বর ৭১ ছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযু্দ্ধ কালীন সময়। প্রবন্ধের ২য় প্যারায় উল্লেখ করা হয়েছে " মুক্তিযুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার (মুজিব বাহিনীর ৪ সেক্টর কমান্ডারের একজন) ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনীর একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন।" আশা করি বিষয়টি ক্লিয়ার !!
৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১১
চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: ]প্রোলার্ড: আপনি ভালো করে পোস্টটি আরেকবার পড়ুন।
জন্মদিনে এই মহান নেতাকে শুভেচ্ছা । ধন্যবাদ নুরু ভাই।
০১ লা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ চিটাগং এক্সপ্রেস
চমৎকার মন্তব্য করার জন্য
৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৬
প্রোলার্ড বলেছেন: " মুক্তিযুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ভারতের মেঘালয়ে মুজিব বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার (মুজিব বাহিনীর ৪ সেক্টর কমান্ডারের একজন) ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনীর একজন সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষকও ছিলেন।"
০ মুক্তিযুদ্ধ কি ভারতের মেঘালয়েও হয়েছিল নাকি ? মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানকে ১১ টি (সম্ভবত) সেক্টরে ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল । মেঘালয় বাংলাদেশের কোন কোন জেলা নিয়ে সেক্টর হয়েছিল ? উনি যে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক ছিলেন উনার কি যুদ্ধ করার অভিজ্ঞতা ছিল বা সামরিক ট্রেনিং নেওয়া ছিল ?
সর্বোপরি - উনি কি কোথাকার কোন অখ্যাত মেজর জিয়ার মত সন্মুখ সমরে যুদ্ধে নেমেছিলেন ? যুদ্ধের সময় তো সবকিছু জায়েজ । নাকি প্রশিক্ষক বলে উনার সন্মুখ সমরে নামা যুদ্ধের নিয়মের খেলাফ হত । যেখানে কৃষক শ্রমিক জনতা কোন কিছু না ভেবে সন্মুখ সমরে নেমেছিল সেখানে রাজ্জাক সাহেব তো একজন বড় মাপের নেতা - উনার তো আরও আগে নামা উচিত ছিল সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ।
আর বঙ্গবন্ধু তো বলেই দিয়েছিলেন যার যা কিছু আছে তা দিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে । মেজর জিয়া , কর্নেল অলি , মীর শওকত এদের না হয় অস্ত্র বা প্রশিক্ষণ ছিল ; কৃষক বা ছাত্র বা শ্রমিক এরা অস্ত্র কোথায় পেল ? সেরকমভাবে কি রাজ্জাক সাহেবরা নামতে পারতেন না ? যেখানে মায়ার মত নেতারা মাঠে নেমেছিল সেখানে উনার মত বড় মাপের নেতা মাঠে না নামার কারণ কি ?
০২ রা আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি অহেতুক বিতর্কের পায়তারা করছেন,
সবাই সমরে যুদ্ধ করতে হয় না, পরিচালনা ও
পরামর্শদাতাও থাকে যুদ্ধকালীন সময়ে।
জাতির পিতাকে কি আপনি
মুক্তিযোদ্ধা বলবেন না ?
৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২
চিটাগং এক্সপ্রেস বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধালীন প্রবাসী সরকারকে আপনি তাহলে কি বলবেন?
০২ রা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রোলার্ড ভাইকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে,
কি বলেন?
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯
ধুতরার ফুল বলেছেন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা ।