নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অমৃতের বরপুত্র, পঞ্চাশের দশকের অন্যতম প্রধান কবি ও কথাশিল্পী সৈয়দ শামসুল হকের মহাপ্রয়াণে গভীর শোকাহত আমরা

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৬


সব্যসাচী লেখক হিসেবে খ্যাত বিখ্যাত বাংলাদেশী কবি ও কথাশিল্পী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প তথা সাহিত্যের সকল শাখায় সাবলীল পদচারণার জন্য তাঁকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। বিচিত্র রচনায় পঞ্চাশের দশক থেকে সৈয়দ শামসুল হক সমৃদ্ধ করে গেছেন বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার। এ পর্যন্ত তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান সৈয়দ শামসুল হক। বাংলা একাডেমী পুরস্কার পাওয়া সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এ পুরস্কার লাভ করেছেন। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রোজ মঙ্গলবার বিকেল ৫:২৭ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মহাপ্রয়াণ হয় অমৃতের বরপুত্র সৈয়দ শামসুল হকের। পঞ্চাশের দশকের অন্যতম প্রধান কবি ও কথাশিল্পী সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত।
সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও মাতা হালিমা খাতুন। শামসুল হক কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর তিনি ভর্তি হন কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে। এরপর ১৯৫০ সালে গণিতে লেটার মার্কস নিয়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ১৯৫২ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে মানবিক শাখায় পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। কলেজ পাসের পর ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। পরবর্তীতে স্নাতক পাসের আগেই ১৯৫৬ সালে সেখান থেকে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে বেরিয়ে আসেন। সেই থেকে লেখালেখিকে তিনি একমাত্র ব্রত করে নিয়েছেন।
জনাব হকের ভাষ্য অনুযায়ী, মাত্র এগারো-বারো বছর বয়সে বাড়ির রান্নাঘরের পাশে সজনে গাছে একটি লাল টুকটুকে পাখি দেখে তার প্রথম পদটি তিনি লিখেছিলেনঃ 'আমার ঘরে জানালার পাশে গাছ রহিয়াছে/ তাহার উপরে দুটি লাল পাখি বসিয়া আছে'। এর কিছুদিন পর তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘’দেয়ালের দেশ’’ প্রকাশিত হয়। ১৯৫৪ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ 'তাস' প্রকাশের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাহিত্যাঙ্গনে স্থায়ী আসন করেন তিনি। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় 'শীত বিকেল', 'রক্তগোলাপ', 'আনন্দের মৃত্যু', 'প্রাচীন বংশের নিঃস্ব সন্তান', 'জলেশ্বরীর গল্পগুলো'সহ তার বিচিত্র বিষয়ের গভীর জীবনঘনিষ্ঠ রচনা। ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস 'এক মহিলার ছবি'। তার গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে 'নীল দংশন', 'খেলারাম খেলে যা', 'বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ', 'তুমি সেই তরবারি', 'নিষিদ্ধ লোবান'। ছোটদের জন্য লেখা 'সীমান্তে সিংহাসন', 'আবু বড় হয়' ও 'হাডসনের বন্ধু' পেয়েছে বিপুল পাঠকপ্রিয়তা। তার অতুলনীয় কাব্যনাট্য 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়', 'নূরলদীনের সারাজীবন' ইত্যাদি।
সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'একদা এক রাজ্যে' প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। সৈয়দ হকের ভাষা আর আঙ্গিকের উজ্জ্বল নিরীক্ষার পরিচয় উৎকীর্ণ হয়ে আছে 'বিরতিহীন উৎসব', 'অপর পুরুষ', 'বৈশাখে রচিত পঙ্ক্তিমালা', 'পরানের গহীন ভিতর'সহ বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থে। ম্যাকবেথ, টেম্পেস্ট, শ্রাবণ রাজা সহ বিশ্বসাহিত্যের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনাও বাংলায় অনুবাদ করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য শিশুসাহিত্য সীমান্তের সিংহাসন (১৯৮৮),আনু বড় হয়, হড়সনের বন্দুক ইত্যাদি। এছাড়াও তার নিষিদ্ধ লোবান অবলম্বনে তৈরী হয়েছে গেরিলা চলচ্চিত্র। লেখালেখি ছাড়াও সৈয়দ শামসুল হক বিবিসিতে সাংবাদিকতাসহ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে সাংবাদিকতার সঙ্গেও ছিলেন যুক্ত। পরে সাহিত্যচর্চাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য স্বাধীনতা-পূর্বকালেই অর্জন করেছেন আদমজী পুরস্কার। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদকসহ আরও সম্মাননা ও স্বীকৃতিতে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
এক ছেলে ও এক মেয়ের গর্বিত জনক জনাব হক ব্যক্তিজীবনে প্রথিতযশা লেখিকা ডাঃ আনোয়ারা সৈয়দ হকের স্বামী। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ৮১ বছর বয়সে গত মঙ্গলবার ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। পঞ্চাশের দশকের অন্যতম প্রধান কবি ও কথাশিল্পী সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



শুধু নাম শুনেছি, ১ টা বইও পড়া হয়নি। শ্রদ্ধা রলো।

কি নিয়ে লিখেছেন?

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

শরতের ছবি বলেছেন:

তাঁর বই আমারও পড়া হয়নি ।সময় হয় না পড়ার আজ-কাল ।তবে পড়ব সময় করে । গেরিলা চলচ্চিত্রটি দেখেছি ,মুক্তিযুদ্ধের উপর। গান গুলো শোনা হয় --কি যে অসাধারণ সৃষ্টি । আমি বিস্মিত হয়ে শুনি ।হিংসেও হয় তাঁকে । তিনি গুণী ,তিনি জীবদ্দশায় তাঁর কদর পেয়েছেন । আমরা গর্বিত তাঁকে ,তাঁর সৃষ্টিকে নিয়ে ।

তাঁর মাগফেরাত কাম্না করছি । আপনার সাথে একাত্বতা প্রকাশ করছি । আপনার লেখা ভাল হয়েছে। অনেক কিছু জেনেছি ।প্রিয়তে রেখে দিচ্ছি।

৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৪

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: দেশে তখন শান্তির সুবাতাস বহিতে শুরু করিয়াছে মাত্র। এমন সময় খবর আসিল শামসুল কা কা আর নেই। খুবই দুঃখজনক!

৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২

জুন বলেছেন:
এ বড় দারুণ বাজি, তারে কই বড় বাজিকর
যে তার রুমাল নাড়ে পরাণের গহীন ভিতর।।

অসাধারন এই বাজিকর কাব্য রচয়িতার মৃত্যুতে গভীর শোক জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.