নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা, চিত্রগ্রাহক,প্রযোজক এবং পরিচালক মেল গিবসনের ৫৯তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫


প্রতিভাবান অস্ট্রেলীয় অভিনেতা, দক্ষ চলচ্চিত্র পরিচালক ও সফল প্রযোজক মেল গিবসন। তিনি একজন অসামান্য প্রতিভাধর মানুষ। প্রচন্ড বুদ্ধিমান, চৌকষ ও স্মার্ট। মেল গিবনসের জীবন, জীবিকা ও তার কাজ নিয়ে অনলাইনে এত বেশী তথ্য রয়েছে যে, তার প্রায় ৯০ ভাগ যদি কেটে ছেটেঁ বাদ দেওয়া হয়, তারপরও যে আর্টিকেল হবে, সেটা একজন সাধারন মানুষের পূর্ণাংগ জীবনীর চাইতেও বড় হবে। মেল গিবসন দীর্ঘদিন আন্তর্জতিক তারকা এবং হলিউডের পাওয়ারফুল ব্যাক্তিদের তালিকার শীর্ষে ছিলেন। শুধু তাই নয় হলিউডের সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষনীয় ব্যাক্তিদের তালিকার শীর্ষেও ছিলো তার নাম। মেল গিবসন অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও হলিউড এর চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর অভিনিত ম্যাড ম্যাক্স সিরিজের ছবি দি রোড ওয়ারিয়র এর জন্য তিনি সর্বপ্রথম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেন। গিবসন পরবর্তীকালে লেথাল উইপন, ব্রেভহার্ট, কন্সপিরেসি থিওরি - ইত্যাদি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০০৩ খ্রীস্টাব্দে যীশু খ্রীস্টের জীবন নিয়ে তাঁর প্রযোজনায় তৈরি হয় দি প্যাশন অফ দি ক্রাইস্ট। মেল গিবসনের বিশ্বজোড়া খ্যাতি পান নিখাদ ব্রিটিশবিরোধী ছবি ‘ব্রেভহার্টের’ জন্য। মায়ের কাছেই বালক মেল শুনেছিল স্কটিশ আর আইরিশদের ওপর ব্রিটিশদের অমানবিক শাসন-শোষনের ইতিবৃত্ত। এই ছবিটি করার জন্য তিনি সেরা অভিনেতা এবং সেরা পরিচালকের দু দুটি অষ্কার পুরষ্কার জিতে নেন। বিভিন্ন দেশে ব্রেভহার্টের জয় জয়কার পরে যায়। সেরা পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রগ্রাহক এবং অভিনেতা হিসেবে সারা দুনিয়ার খ্যাতি পান তিনি। 'উই ওয়্যার সোলজারস' নামে ভিয়েতনাম যুদ্ধের ওপর একটি ছবি নির্মান করেছেন গিবসন। ছবিটিও যুদ্ধবিরোধী। ১৯৫৬ সালের আজকের দিনে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেনমেল গিভসন। আজ তার ৫৯তম জন্মবার্ষিকী। জনপ্রিয় অভিনেতা, চিত্রগ্রাহক, প্রযোজক এবং পরিচালক মেল গিবসনের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

মেল গিবসন ১৯৫৬ সালের ৩ জানুয়ারি নিউইয়র্কের পিকস্কিল-এ জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম মেল কলামসিলে জেরারড গিবসন। তার পিতা হাটন গিভসন এবং মাতা অ্যানি রেইলি গিভসন। অর্থনৈতিক কারণেই হাটন গিবসন ১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সিডনিতে চলে যান। তখন গিবসনের ১২ বছর বয়েস। সেখানেই তার বড় হওয়া। বালক মেল পড়াশোনা করেছে মিশনারী স্কুলে পরে সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটিতে। অভিনয়ের প্রতি টান হয়তো তখন থেকেই ছিল। এক ভাই অভিনয় করত। তা ছাড়া পরিবারে অভিনয়ে ইতিহাস আছে। পরবর্তীতে মেল ভর্তি হলেন সিডনির ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অভ ড্রামাটিক আর্ট-এ। প্রতিষ্ঠানটিতে ছিল ব্রিটিশ থিয়েটার ঐতিহ্য। ১৯৭৭ সালে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অভ ড্রামাটিক আর্ট থেকে পাস করে বেরুলেন গিবসন। কলেজ জীবন শেষ করেই মেল গিবসন অনেক টিভি অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছেন। তবে চলচ্চিত্রে তারকা বনে যান ‘ম্যাড ম্যাক্স’ (১৯৭৯) ছবিতে অভিনয় করে। একই সালে টিম ছবিতে অভিনয় করেও রাতারাতি সুপার স্টার হয়ে যান। টিম ছবিতে অভিনয়ের জন্যে তিনি অস্কার এর সমতুল্য অষ্ট্রেলীয়ান ফিল্ম ইনষ্টিটিউট এ্যাওয়ার্ড এ সেরা অভিনেতার পদক জিতেন। তারপর গালিপলি (১৯৮১) ছবির জন্য ২য় বারের মতো সেরা অভিনেতার পদক পান এএফআই থেকে। এর পর শুধুই সাফল্যের দিকে পথ চলা, দূর্দান্ত অভিনয় দিয়ে একের পর এক পদক জিতে নিয়েছেন তিনি। উপহার দিয়েছেন দি বাউন্টি (১৯৮৪), লেথাল উইপন(১৯৮৭), হ্যামলেট (১৯৯০), ফরইভার ইয়ং (১৯৯২), দি ম্যান ওয়েদাইট ফেস (১৯৯৩), ব্রেভহার্ট (১৯৯৫), দ্যা প্যাট্রিয়ট(২০০০), র‌্যানসম (১৯৯৬), পে ব্যাক (১৯৯৯), উই আর সোলজার (২০০২), দ্যা প্যাসন অব দি ক্রিশ্ট (২০০৪) এপোকেলিপ্টো(২০০৬) সহ অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্র।

ইহুদি বিদ্বেষী বক্তব্যের কারণে মেল গিবসন'এর ক্যারিয়ারে ধ্বস নামে। তা তিনি কিছুতেই পুনরুদ্ধার করতে পারেননি। ২০০৬ সালে ইহুদি বিদ্বেষী বক্তব্যের কারণে মেল গিবসন হয়েছেন সমালোচিত, নিন্দিত ৷এরপর তাঁর বেশ কয়েকটি ছবি ফ্লপ না করলেও কোন ছবিই ব্যবসা করেনি ৷অনেকদিন পর, মেল এবার হাতে নিলেন নতুন ছবি ‘দ্য ম্যাকাবিস'৷আশা এই ছবিটি যদি তাঁর ক্যারিয়ারকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারে ৷‘দ্য ম্যাকাবিস' ছবিতে মূলত ইহুদিদের হিরো হিসেবে দেখানো হয়েছে ৷কিন্তু একই কাজ তিনি করলেন ‘দ্য ম্যাকাবিস' ছবির সুটিং-এর সময় ৷ছবির স্যুটিং চলাকালে মেল গিবসন আবারো বেশ কিছু মন্তব্য করেন ইহুদি ধর্ম নিয়ে ৷ ব্যাস! তাতেই যা হওয়ার হয়৷ ছবির কাজ বন্ধ করে দেয় ‘ওয়ার্নার ব্রাদার্স'৷ চিত্রনাট্যের দায়িত্বে ছিলেন বেসিং ইন্সটিঙ্কট'এর জো এস্থারহাস৷ তিনিও বেকে বসেন৷ মেল গিবসনকে সরাসরি বেশ কিছু অভিযোগ করে চিঠি লেখেন তিনি৷ এমনকি সেই চিঠিগুলো তিনি একটি ওয়েবসাইটেও তুলে দেন এবং মেল গিবসনের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করেন ৷ মেল গিবসন অবশ্য এর উত্তর দেন অন্যভাবে। তিনি জানান, জো যা বলছেন তার কোনটাই সত্য নয়। ছবির তৈরি কেন বন্ধ হল? এ প্রশ্নের উত্তরে মেল জানান, ‘‘প্রথমত ছবির চিত্রনাট্য এসে পৌঁছেছে নির্ধারিত সময়ের আরো অনেক পরে। আর ওয়ার্নার ব্রাদার্স এবং আমি কেউই ছবির চিত্রনাট্যটা পছন্দ করিনি। ড্রাফট দেখে আমরা হতাশ হয়েছি।'' তবে একটি কথা সত্যি তা হল, মেল গিবসন চিঠির শেষে লিখেছেন ,‘‘জো, আমি মনে করি যে তোমার সঙ্গে এটাই আমার শেষ যোগাযোগ''। আশার কথা দ্যা ম্যাকাবিস ছবিটি আলোর মুখ না দেখলেও অনলাইন পত্রিকা 'ক্যাচ নিউজ' এর বরাতে জানা গেছে আগামী বছরে একই ছবিতে দেখা যেতে পারে হলিউড ও বলিউডের দুই তারকা মেল গিবসন ও আমির খানকে।'মহাভারত' অবলম্বনে একটি ছবি তৈরির জন্য অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করে আসছেন আমির। সেখানেই একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কথা চলছে মেল গিবসনের সঙ্গে। ছবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকবেন আমির নিজেও। অভিনেতার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ছবির প্রি-প্রোডাকশন শুরু হয়ে গেছে। চূড়ান্ত হয়েছে বেশ কয়েকজন ভারতীয় অভিনেতা। সব ঠিক থাকলে ২০১৭ সালের শুরুর দিকেই কাজ শুরু হবে। ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসহ ছবির বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিং হবে যুক্তরাষ্ট্রে। কয়েকজন ভারতীয় প্রযোজকের সঙ্গে ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনার দায়িত্বে থাকবে হলিউডের বিখ্যাত একটি স্টুডিও। তবে এ বিষয়ে আমির খানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইংল্যান্ডের এমপায়ার ম্যাগাজিনের জরিপ মোতাবেক, পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ১০০ জন মুভি তারকার ভেতর মেল গিবসনের র‌্যাংকিং ছিলো ১২ নম্বর। একই ম্যাগাজিনের অন্য একটি জরিপে সর্বকালের সবচাইতে যৌনাবেদনময়ী তারকার কাতরেও তার অবস্থান ছিলো ৩৭। এছাড়াও, আমেরিকার পিপল ম্যাগের ভোটে তিনি হয়েছিলেন “পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর মানুষের” একজন। একই ম্যাগাজিনের অন্য একটি জরিপে তিনি প্রথম জীবিত সবচাইতে যৌনাবেদনময়ী পুরুষের স্বীকৃতি পান। ২০০৪ এ সেলিব্রেটি ১০০ এর র‌্যাকিংয়ে প্রথম হন। ২০০৫ সালে তার বিতর্কিত চলচ্চিত্র প্যাশন অফ খ্রিষ্টের মুক্তি পাবার পরপরই ১৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ৫,৪০০ একর জায়গা জুড়ে বিশাল একটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দীপপুঞ্জ ক্রয় করেন। এটি ফিজির মাগো দ্বীপ। তিনি সেখানে বিলাসবহুল অনেক কিছুই তৈরি করেছেন।

হলিউড তারকা মেল-গিবসনের ও রবিন গিবসনের বিবাহ বিচ্ছেদ ছিল হলিউড ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঝড় তুলে দেওয়া বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের আগেই মেল গিবসন স্বীকার করেন যে, তার রাশিয়ান গায়িকা ওকসানা গ্রিগোরিভার গর্ভে জন্ম নেওয়া একটি সন্তান রয়েছে। কন্যা লুসিয়া ছাড়াও সাবেক স্ত্রী রবিন গিবসনের সাথে বিবাহিত জীবনে তারা লাভ করেছেন ৭ পুত্রসন্তান। মেল ও রবিনের বিয়েটা ২৮ বছরের হলেও তার কোনো চুক্তি ছিল না। ফলে মেলের সম্পত্তির অর্ধেক মালিকানা এবং তার মুভিগুলোরও কিছু অংশ রবিনের ভাগে চলে যায়। পরে সন্তানদের ভরণপোষণ হিসেবে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার চান রবিন। ডিভোর্সের বিচারকাজ দুই বছর ধরে চলার পর একটা সময় সমাপ্তিতে আসতেই হয় বিচারককে। ৪২৫ মিলিয়ন ডলারে দফা হয় ব্যাপারটার। আজ প্রতিথযশা এই চলচ্চিত্রকারের ৫৯তম জন্মবার্ষিকী। জন্মদিনে তার জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

পারভেজ উদ্দিন হৃদয় বলেছেন: আমার প্রিয় ব্যাক্তি, ধন্যবাদ তার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানানোর জন্য

২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৭

প্রামানিক বলেছেন: গিবসন নিয়ে পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৫

অন্তু নীল বলেছেন: মেল-গিবসন আমারো একজন প্রিয় ব্যাক্তিত্ব। তার অনেক মুভিই দেখেছি.। ধন্যবাদ পোস্টের জন্য।

৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫০

লিও কোড়াইয়া বলেছেন: আমার প্রিয় একজন অভিনেতা। ব্রেভহার্ট দেখার পর থেকেই ফ্যান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.